নাগরিকত্ব বাতিল আইন ও মহামতি হিটলারের প্রত্যাবর্তন

লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৩:০৮:৫২ দুপুর

আমান আবদুহু

আওয়ামী লীগ নতুন একটি আইন প্রনয়ণ করার কাজ শেষ করে

এনেছে, নাম হলো 'বাংলাদেশ নাগরিকত্ব আইন, ২০১৪'।

এ নিয়ে এক পত্রিকা নিউজ করেছে 'বাতিল হবে প্রধান

বিচারপতির নাগরিকত্বও'। কারণ সুরেন্দ্র কুমার বাবু

শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন। এবং আইনে বাংলাদেশের

'স্বাধীনতাবিরোধীদের' নাগরিকত্ব বাতিল হওয়ার

প্রভিশন থাকছে।

সে খবরে একজন মো. বাঙালী ভাই মন্তব্য করেছেন 'রাখে

আল্লাহ মারে কে! সবে মাত্র খেলা শুরু ....'।

বাঙালীর এ বুদ্ধিদীপ্ত এবং আশাবাদী মন্তব্য দেখে

আজকের জন্য আনন্দে আউলা হয়ে গেলাম।

সব দেশে সব যুগে আইনের কিছু দর্শন থাকে। বাংলাদেশে

আওয়ামী লীগ কতৃক প্রযোজ্য আইনের দর্শন না বুঝলে মো.

বাঙালীর মতো এরকম আবুলমার্কা মন্তব্য এবং

চিন্তাভাবনাই চলতে থাকবে। সুতরাং বর্তমান এ আইনী

দর্শনের মূল পয়েন্টগুলো বুঝার কাজটা আজকের

বাংলাদেশে খুব জরুরী।

এক নাম্বার এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দর্শন হলো, আইন হলো

নিজের পকেটে থাকা টাকার মতো। তাকে দরকার হলে

প্রয়োগ করা যাবে, আবার চাইলে প্রয়োগ না করে বিরত

থাকা যাবে।

অর্থ্যাৎ, আইন প্রয়োগের ইখতিয়ার নিরংকুশভাবে

মালিকের মালিকানাধীন।

বিস্তারিত বললে বলা যায়, বাংলাদেশী আইন হলো

প্রতিপক্ষের জন্য, নিজের লোকদের জন্য আইন না। আইন হলো

শত্রুকে শায়েস্ত করার জন্য। অপরাধীকে শাস্তি দেয়া

আইনের কাজ না।

এ বিষয়টা আপনাকে আমাকে পুরোপুরি হৃদয়ঙ্গম করতে হবে।

কেবলমাত্র তাহলেই আলোচনা সামনের দিকে আগাতে

পারবে।

যেমন ধরেন, পাকিস্তানী সামরিক বাহিনীর হয়ে

সরাসরি যুদ্ধ করলেও নিজেদের লোক কর্ণেল আমজাদকে

রাষ্ট্রীয় র্মযাদা দিতে হবে। অন্যদিকে শান্তি কমিটির

কোন সদস্য যদি বর্তমানে শক্তিশালী কিংবা

উল্লেখযোগ্য রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ হয়ে থাকে, হয়তো

তিনি একাত্তরে যুদ্ধের সময় সীমিত সুযোগ সার্মথ্য কাজে

লাগিয়ে মানুষকে পাকিস্তানী বাহিনীর হাত থেকে

বাঁচানোর চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু সেইসব

বাস্তবতাকে কোন পাত্তা না দিয়ে তাকে ফাঁসি

দিতে হবে।

অথবা ধরেন, একাত্তরে পাকিস্তানী বাহিনীকে মুরগী

কিংবা খাদ্য সরবরাহের জমজমাট ব্যাবসা করে থাকলেও

বর্তমানে নিজেদের লোক শাহরিয়ার কবিরকে

চেতনাগুরুর মর্যাদা দেয়া হবে। অন্যদিকে একাত্তরে কিছু

না করেও বিপক্ষের লোক সাঈদীকে এসব আইনে শাস্তি

দেয়া হবে।

বাংলাদেশী আইনের এ মৌলিক দর্শন বুঝতে পারলে তখন

বাকী অনেক কিছু বুঝা আমাদের জন্য অনেক সহজ হয়ে

যাবে। এবং তখন মো. বাঙালীর মতো বেকুবমার্কা মন্তব্য

লেখা ও বলদমার্কা আশাবাদ পোষণ করা থেকে বেঁচে

থাকা যাবে।

আওয়ামী বাংলাদেশী আইনের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ দর্শন

হলো, আইন হচ্ছে জমিদারের বাসায় কাজের মেয়ে।

তাকে যথেচ্ছা ভোগ করা যাবে। অর্থ্যাৎ, ইখতিয়ারের

সাথে সাথে আইন প্রয়োগের ধরণও নিরংকুশভাবে

মালিকের মালিকানাধীন।

যেমন ধরেন, নিজেদের বিরোধী হলে তখন জামায়াত

নেতাকে গ্রেফতার করার জন্য ছুতো দরকার। সমস্যা নেই,

আইন আছে। তাকে ইসলাম ও মহানবী সা. কে অবমাননার

অভিযোগে গ্রেফতার করা যাবে। এবং পরবর্তীতে সে

অভিযোগের কি হলো তা নিয়ে কেউ কোনদিন প্রশ্ন

তুলবে না। সবাই বুঝে এগুলো হলো কেবলমাত্র ছুতো।

অন্যদিকে যারা সত্যিকার অর্থে ইসলাম ও ইসলামের

নবীকে জঘন্যভাবে অবমাননা করে তার যখন নিজেদের

লোক হবে তখন তাদেরকে রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা দেয় হবে,

সুযোগ সুবিধা দেয়া হবে, তাদেরকে রাষ্ট্রের টাকা

পয়সা দিয়ে পৃষ্ঠপোষকতা করা হবে, এবং তাদেরকে শহীদ

কিংবা বীর আখ্যা দেয়া হবে।

অথবা, বাংলাদেশী আইনে শত্রুর ছেলেমেয়েদেরকেও

শায়েস্তা করা যাবে।

এটি পৃথিবীর ইতিহাসে অবশ্য অভূতপূর্ব একটি ঘটনা। এতোটা

বর্বর এবং জংলী আইন কিংবা আইন নামের প্রহসন কোথাও

দেখা যায় না। আইনটির খসড়ায় বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে

মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারী, সহায়তাকারী এমনকি

তাদের সন্তানেরাও বাংলাদেশের নাগরিক হতে

অযোগ্য হবেন।

বাঘ যখন গাধাকে খেতে চায়, তখন তার দাদা কতৃক ভাটির

পানি ঘোলা করার সে অপরাধের কথা মনে পড়ে গেলো

আর কি। একজনের 'অপরাধে' অন্যজনকেও শাস্তি দেয়ার এ

মহান মাৎসান্যায় হিটলারও ভাবতে পেরেছিলো কি না

আমার জানা নেই। তবে হাসিনার বাংলাদেশে

যেহেতু আইন প্রয়োগের ধরণ তিনি কতৃক মালিকানাধীন,

সুতরাং এদেশে এটা সম্ভব।

ধরণের মধ্যে আরো বলা যায়, শায়েস্তা করার জন্য

প্রচলিত আইনে সুবিধা না থাকলে তখন সম্পন্ন হয়ে যাওয়া

ঘটনার জন্য সুবিধামতো আইন বানিয়েও শত্রুকে শায়েস্তা

করা যাবে। কাদের মোল্লার ফাঁসি সহ বিএনপি

জামায়াত নেতাদের ফাঁসির ক্ষেত্রে, রিভিউ পিটিশন

সহ বিভিন্ন সময়ে আইনকে ইচ্ছামতো প্রয়োগের এ বিষয়টি

দেখা গেছে। ধরেন আপনি আমাকে থাপ্পড় দিছেন।

আগের আইনের শাস্তি আমার পছন্দ না। এখন নতুন আইন

বানাবো, থাপ্পড় দেয়ার শাস্তি মৃত্যুদন্ড। তারপর

আপনাকে ফাঁসি দিলাম। আইনের শাসন সমুন্নত করলাম। মহুর্মুহু

জয় বাংলা স্লোগান হবে।

বাংলাদেশী আইনের তৃতীয় এবং শেষ গুরুত্বপূর্ণ দর্শনটাই

হলো প্রাণভোমরা। এ দর্শনের মাঝে উপরের দুটো

দর্শনকে সামারাইজ করা যায়। তা হলো, আইনের কাজ হচ্ছে

আওয়ামী লীগের সেবা করা।

এ সেবা করার ক্ষেত্রে এতোদিন এগিয়ে ছিলো

মিডিয়া এবং পুলিশ। সাংবাদিক সমাজ এবং পুলিশ

সদস্যরাই হলো আওয়ামী ক্ষমতার মূল দুইটি স্তম্ভ।

কিন্তু যে কোন সচেতন বাংলাদেশী এখন বুঝতে পারবে

যে, আওয়ামী ক্ষমতার স্তম্ভ যদি হয় চাটা সাংবাদিক

এবং দালাল পুলিশ, তবে সে ক্ষমতা দাড়িয়ে আছে

বিচার বিভাগের ফাউন্ডেশনের উপর। বাংলাদেশে

বিচারকরা হলো আওয়ামী লীগের সেরা দলদাস।

অনেকটা প্রাচীন রাজা-বাদশাদের প্রধান খোজা

অমাত্যের মতো। বাকি সাংবাদিক এবং পুলিশ হলো তার

ডান ও বাম হাতের ভৃত্য।

তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিল, ট্রাইবুনালের আইন প্রনয়ণ,

তথ্যপ্রযুক্তি আইন প্রয়োগ, এবং সাম্প্রতিক সংযোজন এই

নাগরিকত্ব আইন; বাংলাদেশের বিচার বিভাগ এ চারটি

আইনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে যে সেবা করেছে

তার নমুনা পৃথিবীর ইতিহাসে নেই।

এ সকল মাননীয় বিচারপতি, সংবিধান বিশেষজ্ঞ এবং

আইনজ্ঞদের কথা চিন্তা করেই মহান কবি রবীন্দ্রনাথ

লিখেছিলেন, দরজার পাশে দাঁড়িয়ে সে হাসে, দেখে

জ্বলে যায় পিত্ত! তবু মায়া তার ত্যাগ করা ভার, বড়ো

পুরাতন ভৃত্য।

এখন সে বিভাগের দুই উচ্চপদস্থ ভৃত্য সিনহা আর মানিকের

গৃহস্থালী কলহ দেখে যখন বিরোধী দলীয় কর্মীরা

আনন্দে আটখানা হয়, তখন বড়লোকের প্রাসাদে

পোলাও বিরানি রান্নার সুঘ্রাণ পেয়ে দেয়ালের

ওপাশে বস্তিবাসীর উৎফুল্ল হয়ে পরার মতো মনে হয় আর

কি।

সুতরাং আসুন সারসংক্ষেপে চোখ বুলাই। মনে রাখতে

হবে, বাংলাদেশে আইনের মূল দর্শন তিনটি। যথাঃ

১. আইন প্রয়োগ কিংবা বিরত থাকার ইখতিয়ার

নিরংকুশভাবে আওয়ামী লীগের মালিকানাধীন।

২. আইন প্রয়োগের ধরণ, কতটুকু করা হবে কিভাবে করা হবে,

ইত্যাদিও পুরোপুরি আওয়ামী লীগের মালিকানাধীন।

৩. আইনের কাজ হলো আওয়ামী লীগের সেবা করা।

এ তিনটি আইনী দর্শন হৃদয়ংগম করে থাকলে এবার আপনিই

বলুন, আপনি কি মনে করেন নতুন নাগরিকত্ব আইন নামের

কালাকানুন দিয়ে আওয়ামী পন্থীদের কোন সমস্যা হবে?

তথ্য প্রযুক্তি আইন দিয়ে জঘন্য গালিগালাজ করা,

ব্ল্যাকমেইলিং করা এবং অন্যদের উপর হামলা চালানো

সিপি গ্যাং এর কোন সমস্যা হয়েছে?

কিংবা ট্রাইবুনালের আইন দিয়ে রাজাকার বেয়াই

মোশাররফের কোন সমস্যা হয়েছে?

পত্রিকায় এসেছে, নাগরিকত্ব আইনে

স্বাধীনতাবিরোধীদের এবং তাদের সন্তানদের

নাগরিকত্ব বাতিল করা ও সম্পদ বাজেয়াপ্ত করা হবে।

তবে ভয়ের কারণ নেই। আপনাকে অথবা আপনাদের সবাই

এখনই একসাথে ধরা হবে না।

আইন প্রয়োগের ধরণের মালিকানা সংক্রান্ত দ্বিতীয়

আইনী দর্শন অনুযায়ী এইসব আইন যখন দরকার হবে কিংবা যখন

সুবিধা হবে তখনই প্রয়োগ করা হবে। তার আগে দীর্ঘদিন

যাবত চাষ করে জমি প্রস্তুত করা হবে।

আওয়ামী লীগ বহুদিন যাবত বলে আসছে জামায়াতকে

নিষিদ্ধ করা হবে। কিন্তু এখনো করছে না। বলে আসছে সম্পদ

বাজেয়াপ্ত করা হবে। কিন্তু করছে না। মাঝে মাঝে

আবার তাদের কেউ কেউ উল্টোটাও বলছে। এভাবে

সামনে পিছনে দোলাদুলি করতে করতে একসময় পকাৎ করে

কাজটা করে ফেলা হবে যখন তাদের দরকার হয়। সুতরাং

সময় পাবেন। অথবা যদি তাদের দরকার হয়, তাহলে নাও

পেতে পারেন। তবে তাদের ট্র্যাক রেকর্ড অনুযায়ী,

সবাইকে একসাথে ধরা হবে না। আলাদা আলাদা ভাবে।

ডিভাইড এবং কনকার হবে। খেলা হবে।

এক্ষেত্রে আরেকটা বিষয় হলো, আপনার বাবা কিংবা

মা সত্যিকারঅর্থে স্বাধীনতাবিরোধী হওয়ার দরকার

নেই।

যখন সিপি গ্যাং অথবা শাহবাগিদের সাথে নিজেদের

কারো ঝামেলা হয় তখন তারা নিজেদের সে লোককেও

কিন্তু স্বাধীনতাবিরোধীর সন্তান বা নাতি বানিয়ে

দেয়। এটা তাদের বেশ পুরনো এবং প্রচলিত একটি টেকনিক।

তারা নিজেদের নেতা ইমরান সরকারকেও রাজাকারের

নাতি বানিয়ে দিয়েছিলো।

এখন এইধরণের দুই একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনায় যদি তারা

নিজেদের দুই একজনের নাগরিকত্ব বাতিল করে, তাহলে

কি তাতে আপনি সেই উপরোক্ত মো. বাঙালীর মতো

আনন্দে গদগদ হয়ে যাবেন?

যদি বাংলাদেশী আইনের মৌলিক তিনটি দর্শন মনে

রাখেন, তা কিন্তু হওয়ার সুযোগ নেই।

নতুন এ আইনের মাহাত্ব্য বর্ণনা করে স্যার জাফর ইকবাল

থেকে আমরা একটি সাদাসিধে লেখা আশা করি। এর

মাধ্যমে কিভাবে বাংলাদেশ আবার কলংকমুক্ত হলো তা

আমাদের বুঝা দরকার। বাংলাদেশের আনাচে কানাচে

যে কত কলংক লুকিয়ে আছে তা আমাদের চিন্তায় কুলিয়ে

উঠতে পারিনা। এভাবেই না চিন্তা করা কলংকগুলো ধুয়ে

মুছে সাফ করার জন্য আমরা সরকার বাহাদুরের প্রতি কৃতজ্ঞ।

এখন একটা প্র্যাকটিকাল সমস্যা থেকে যায়।

স্বাধীনতাবিরোধী এবং তাদের সন্তানদের নাগরিকত্ব

বাতিল করে বাড়িঘর টাকাপয়সা নিয়ে নেয়ার পর তারা

কোথায় যাবে?

আমাদের চারপাশে ভারত। ভারত আমাদের বন্ধুপ্রতীম

দেশ। নিশ্চয় তাদেরকে আমরা ভারতে পুশব্যাক কিংবা

পুশফরোয়ার্ড করবো না।

অন্যদিকে ভারত পেরিয়ে পাকিস্তানও তাদেরকে গ্রহণ

করবে বলে মনে হয় না।

আশার বিষয় হলো এ সমস্যা সমাধানে মহামতি হিটলার

ইতিহাসে উদাহরণ রেখে গিয়েছেন। তিনি

নাজিবাদের আদর্শ প্রতিষ্ঠা করার জন্য ইহুদিদের সাথে

যা করেছেন, বাংলাদেশে স্বাধীনতার চেতনা রক্ষার

জন্য স্বাধীনতাবিরোধীদের সাথেও তা করা যেতে

পারে।

বিভিন্ন জায়গায় ঘেটো এবং কনসেনট্রেশন ক্যাম্প

বানিয়ে সকল স্বাধীনতাবিরোধীদেরকে, যারা জাফর

ইকবালের থিওরী অনুযায়ী স্বাধীনতার পক্ষের একমাত্র

বৈধ দল আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে না, তাদেরকে ঐসকল

স্থানে বসবাস করানো হোক। একইসাথে তাদের জন্য

বিশেষ পোষাক বাধ্যতামূলক করা হোক। সে পোষাকে

চাঁদ-তারা খচিত করে দেয়া হোক। তাদেরকে রাষ্ট্রের

বাধ্যতামূলক শ্রমের কাজে নিয়োজিত করা হোক।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ অনেক এগিয়ে যাবে। পৃথিবী

অবাক তাকিয়ে রইবে।

এইসব নির্দিষ্ট মার্কামারা পোষাক এবং তাদের

নির্দিষ্ট বাসস্থান দেখার মাধ্যমে বাংলাদেশীরা

সবসময় স্বাধীনতাবিরোধীদেরকে চিহ্নিত করতে

পারবে। বাংলাদেশ পুরোপুরি কলংকমুক্ত হওয়ার জন্য আইন

বাস্তবায়নের এ ধরণটি প্রয়োগে আওয়ামী লীগের ইচ্ছুক

হওয়া অনেক দরকারী।

সবশেষ কথা হলো, চেতনামন্ডিত এইসব আইনী দর্শন থেকে

বাংলাদেশীদের কি মুক্তি সম্ভব কোনদিন?

আমার মতামত হলো, নিকট ভবিষ্যতে সম্ভব না।

সম্ভব হতো যদি শক্তিশালী বিরোধী দল থাকতো।

যদি তারা বলতে পারতো, আওয়ামী লীগের পতনের পর

তাদের ফ্যাসিবাদী শাসনামলে করা প্রতিটি আইনের

রিভিউ করা হবে, এইসব কালাকানুন প্রনয়ণের জন্য দোষী

অপরাধীদের যথাযথ শাস্তি দেয়া হবে, তাহলে হয়তো

সম্ভব ছিলো।

কিন্তু বাংলাদেশের রীতি অনুযায়ী পরের সরকার

আগের সরকারের এসব কালাকানুনকে নিজেদের সুবিধার

জন্য ব্যবহার করে। জননিরাপত্তা আইন সহ অসংখ্য আইন এর

উদাহরণ আছে।

সম্ভব হতো যদি বাংলাদেশীরা চিন্তা করতে

পারতো এইসব আইন প্রতিরোধ করা দরকার। ব্রিটিশ

উপনিবেশবাদী শাসকদের বিরুদ্ধে

স্বাধীনতাসংগ্রামীরা যেভাবে আইন অমান্য

আন্দোলন করেছিলো, বাংলাদেশে আজ ঠিক সেরকম

আইন অমান্য আন্দোলন দরকার। যে আইনের দর্শন হলো

নিজেদের সুবিধা প্রতিষ্ঠা করা, তা কোন সভ্য আইন না।

সে আইনের প্রতিরোধ করাটাই সভ্যতা। সে আইনের

লাঠিয়াল বিচারক এবং পুলিশদের ধ্বংস করাটাই হলো

মানবিকতা।

কিন্তু সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো, কোনদিন যে আওয়ামী

লীগের পতন হবে সে কল্পনা করার শক্তিও বিএনপি-

জামায়াত নেতাদের এবং সাধারণ মানুষের মনে এখন আর

অবশিষ্ট নেই। সবাই এখন ফেরাউনের উপর সাগরের ঢেউ

আছড়ে পড়ার মতো অলৌকিক কারামতের আশায় দিন

গুনছে। এভাবে খেলা হয় না।

বিষয়: বিবিধ

৯০২ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

358376
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ বিকাল ০৫:৫০
হতভাগা লিখেছেন : আওয়ামী মেশিনে এখনই নিজের বাংলাদেশীত্ব ভেরিফাই করে নিতে হবে
358377
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সন্ধ্যা ০৬:০৪
আবু সাইফ লিখেছেন : আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..


http://www.firstbd.net/blog/blogdetail/detail/1768/ABUSAIF/73865

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
358384
০৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ রাত ০৮:২৫
শেখের পোলা লিখেছেন : কথাতো সঠিকই বললেন, কিন্তু শেষ হল সেই "রাখে আল্লাহ মারে কে দিয়ে৷"ধন্যবাদ৷
358443
০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ সকাল ০৮:৩৭
দিল মোহাম্মদ মামুন লিখেছেন : আপনার লিখাটা ভাল লাগলো, তবে লিখার সময় লাইন স্পেইজ না রাখাই মনে উত্তম হবে, ধন্যবাদ আপনাকে

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File