ক্রুসেড ও কিতাল : আদর্শিক লড়াইয়ে মিডিয়ার তথ্য সন্ত্রাস
লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ৩১ জানুয়ারি, ২০১৬, ০৮:১৯:২১ সকাল
মাওলানা মুহাম্মাদ ইসহাক খান
একটা সময় ছিলো যখন মুসলিমরা তাদের বীরত্ব নিয়ে
লজ্জাবোধ করতো না। পৃথিবীর শুরু থেকেই মানুষ
আত্মরক্ষার্থেই যুদ্ধ ও সংগ্রামকে অবলম্বন করে টিকে
আছে। নিজের যুদ্ধ সক্ষমতা না থাকলে পৃথিবী থেকে
বিলুপ্ত হওয়া ছিলো সময়ের ব্যাপার মাত্র।
যুদ্ধ শব্দের ফারসী হচ্ছে জঙ্গ। যোদ্ধাকে বলা হয় জঙ্গী। এক
সময় এই জঙ্গী বা যোদ্ধা শব্দটি ছিলো খুবই সম্মান সূচক।
আজকে যেমন আমরা বীর মুক্তিযোদ্ধা বলি,
মুক্তিযোদ্ধাদেরকে সবাই যেমন সম্মান, সমীহ করে
মুসলিমদের বিজয় ও বিশ্বনেতৃত্ব দেয়ার সেই সময় গুলোতে
উম্মাহ তাদের যোদ্ধা এবং জঙ্গীদেরকে তেমনই সম্মান
এবং সমীহ করতেন।
সারা বিশ্ব জুড়ে বর্তমানে মূলত: দু'টি আদর্শিক যুদ্ধ বা জঙ্গ
চলছে। এক 'ক্রুসেডার' অপর পক্ষ জিহাদী।
ইসলাম বিরোধী পাশ্চাত্য এবং কুফুরী শক্তি আজ
খৃষ্টবাদের ক্রুসের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ। লোকজন
নিজেদেরকে 'ক্রুসেডার' বা ক্রুশের সৈন্য বলে গর্ববোধ
করে। মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন রণক্ষেত্রে তারা
নিজেদের বুকে পিঠে 'ক্রুসেডার' লিখেই মাঠে নামে।
অতীতে বুশ এবং তাদের পরবর্তীরা মুসলিমদের বিরুদ্ধের
এই যুদ্ধকে 'পবিত্র ক্রুসেড' বলে প্রকাশ্য ঘোষণা দিয় পরে
আবার মিডিয়া থেকে শব্দটি আড়াল করে নেয়
নিজেদের চৌর্যবৃত্তি, কপটতা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে।
অপর পক্ষকে বিভ্রান্ত করার জন্য সাম্রাজ্যবাদী মিডিয়া
মুসলিমদের পবিত্র জিহাদ ও কিতাল থেকে তাদের বিরত
করতে আশ্রয় নিচ্ছে বহুবিধ প্রতারণার। পূর্বের মতো আজো
ইউরোপ-আমেরিকা নিজেদের জনগণকে 'ক্রুসেড' বলে
নিজ ধর্মীয় ক্রুশের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ করার প্রয়াস
নিলেও মুসলিমদের ব্যাপারে তারা আপ্রাণ চেষ্টা করে
যুদ্ধ থেকে কিতালকে আলাদা করে রাখার। কারণ তারা
জানে মুসলিমরা যদি তাদের লড়াই গুলোকে কিতাল
হিসেবে গ্রহণ করে তাহলে এই আদর্শিক যুদ্ধে সারা
পৃথিবী এক হলেও কোনো ক্রমেই মুসলিমদেরকে পরাজিত
করা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। কিন্তু তারা যদি প্রকাশ্যে
বলে যে কিতাল ভালো না, জিহাদ থেকে দূরে থাকো
তাহলে মুসলিমরা সহজেই তাদের ষড়যন্ত্র ধরে ফেলবে।
তাই তারা আশ্রয় নিয়েছে কিছু 'শব্দ সন্ত্রাসে'র। যার
অন্যতম হচ্ছে 'জঙ্গী' 'জঙ্গিবাদ' সন্ত্রাস -ইত্যাদি।
সারা পৃথিবীতে মতবাদ হিসেবে যুদ্ধ ক্রুসেডার আর
মুসলিমরা ছাড়া বর্তমানে অন্য কোথাও হচ্ছে না। কারণ
খৃষ্টানরা তাদের বিকৃত ধর্মীয় স্তম্ভ পবিত্র 'ক্রুশ' রক্ষার
নাম করে ধর্মের নামে যে যুদ্ধ মতবাদ বা আদর্শিক যুদ্ধ হচ্ছে
তার বিপরীতে মুসলিমরা কিতাল দ্বারা এই আগ্রাসন
প্রতিহত করছে। এখন কুফুরি শক্তি মিডিয়া সন্ত্রাস ও তথ্য
সন্ত্রাসের মাধ্যমে মুসলিম দেশ গুলোতে 'জঙ্গি' এবং
'জঙ্গিবাদ' বলতে কেবলমাত্র এবং একমাত্র মুজাহিদ ও
কিতালকেই বুঝিয়ে থাকে। দালাল মিডিয়া গুলোর
প্রতিদিনকার মিথ্যচার দেখার পরও এ বিষয়ে কোনো
সুস্থ্য বিবেক সম্পন্ন ব্যক্তির সন্দেহ থাকার কথা নয়।
লেজকাটা শেয়ালের কাছে লেজ খুব লজ্জার বিষয় হলেও
অন্যদের জন্য কিন্তু তা হওয়ার কথা নয়। শেয়ালের কাছে
মুরগীর প্রতিবাদ, প্রতিরোধহীন নি:র্শত আত্মসমর্পন ই তো
কাম্য। তেমনি ক্রুসেডারদের কাছেও মুসলিমদের জঙ্গ এবং
জঙ্গী খুবই আতঙ্কের বিষয়। তাই তারা এর বিরুদ্ধে প্রচার
করবে, মিথ্যাচার করবে, তথ্য সন্ত্রাস চালাবে -এটাই তো
স্বাভাবিক। তাই বলে কি আমরাও তাদের কথায় বিভ্রান্ত
হবো?
আমরাও তাদের প্রচারণায় নিজেরা এগিয়ে এসে দলে
দলে হুক্কা হুয়া রব তুলে পবিত্র কিতাল ও জঙ্গের বিপক্ষে
শ্লোগান তুলবো?
যে সকল নামধারী আলিম আজ জেনে বা না জেনে
পশ্চিমা মিডিয়ার তথ্য সন্ত্রাসের শিকার হয়ে লাখো
স্বাক্ষর সংগ্রহের ব্যর্থ নাটক করতে চাচ্ছেন তাদের
কাছে আমার জানার আগ্রহ, মুসলিমদের প্রথম কিবলা
বাইতুল মুকাদ্দাস বা মসজিদে আকসা খৃষ্টান ক্রুসেডারদের
হাত থেকে যিনি মুক্ত করেছিলেন সেই সুলতান সালাহ
উদ্দীন আইয়ূবী রহিমাহুল্লাহ যার অধীনে কিতাল শুরু
করেছিলেন সেই মহান মর্দে মুজাহিদ, উম্মাহর হৃদস্পন্দনে
সারা দানকারী সুলতান নূরুদ্দীন জঙ্গী রহ. নামটি কি
পরিবর্তন করা দরকার?
এজন্য কি কোনো স্বাক্ষর সংগ্রহ কার্যক্রম কেউ শুরু করবেন?
বিষয়: বিবিধ
১০৫৯ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন