মুক্তিযুদ্ধ ও আমার বিশ্বাস।
লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ২৬ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৯:৫১:২২ রাত
মুক্তিযুদ্ধের আগেই আমার জন্ম হলেও মুক্তিযুদ্ধের সময় কালের কোনও কথাই আমার স্মৃতিতে নেই। কারণ তখন আমার বয়স দুই কি আড়াই বছর। তবে ছোট্ট বেলায় বড়দের মুখে শুনে আর পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন লেখা পড়ে মুক্তিযুদ্ধের অনেক ইতিহাস জেনেছি। আমাদের এলাকায় মুক্তিযুদ্ধে হানাদারদের আক্রমণ তেমন তীব্র ছিলনা। যেটুকু ছিলো তাও থানা শহরের লেভেলে। এলাকার কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা আছেন যাদের বয়স ৭১ এ দশের ও কম ছিলো। একজন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এবং একজন রাজাকার কমান্ডারকে বেশ ভালো ভাবেই চিনি। তারা একই পাড়ার লোক। বছর দুয়েক হলো দুজনই ওপারে চলে গেছেন। উল্লেখ্য মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার এর এক মেয়ে এলাকায় 'পতিতা 'হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছে। অপর দিকে রাজাকার কমান্ডারের এক. ছেলে টমটম ড্রাইভার। দুটি পরিবারের কেউই আর্থিক দিক দিয়ে তেমন ভালো অবস্থায় নেই।
যাক সে কথা। আসলে একজন মুসলমান হিসেবে পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিভক্তি আমার কাছে ভালো লাগেনি। আমার কেবলই মনে হয়েছে বাংলাদেশের স্বাধীনতার পিছনে যতটা না পাকি শাসকদের অন্যায় অত্যাচার দায়ী তার চেয়ে বেশি দায়ী ভারতীয় হিন্দুত্ববাদের ষড়যন্ত্র। তাই পাকিস্তান জিন্দাবাদ স্লোগান পরিবর্তিত হয়ে পাকি আদলে 'বাংলাদেশ জিন্দাবাদ ' কে কথিত চেতনা বাদীরা গ্রহণ করেনি। তাদের কাছে ভারতের জাতীয় স্লোগান 'জয় হিন্দ 'এর আদলে 'জয় বাংলা 'টাই অধিক যুক্তিযুক্ত।
কিন্তু এই জয় বাংলা স্লোগান এর মাঝে আমি কট্টর হিন্দুত্ববাদ ছাড়া কিছুই দেখিনা। মুসলমানদের কোনো আনন্দ সূচক শব্দই 'জয় 'দিয়ে শুরু হয়না। 'জয় 'শব্দটি হিন্দুধর্মে খুবই গুরুত্ব বহন করে। অস্ত্র আর ক্ষমতার জোরে এটাকে যতই অসাম্প্রদায়িক বলে চালানো আমি তা মানছি না।
আসলে বাংলাদেশ জিন্দাবাদ স্লোগান ও যে অসাম্প্রদায়িক তা কিন্তু আমি বলছি না। আমি মুসলিম। আর মুসলমানদের ঐতিহ্যে আমার কাছে ভালো লাগবে এটাই স্বাভাবিক। ধর্ম নিরপেক্ষ হতে গিয়ে আমি হিন্দুয়ানী স্লোগান গ্রহণ করবো কেন?
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে ভালকথা। তাই বলে আমি ইসলামের সব কিছু ছেড়ে দেব কেন।
বিষয়: বিবিধ
৯৬৯ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
০ মুসলমান হলেও পশ্চিম পাকিস্তানীরা কিন্তু পূর্ব পাকিস্তানের লোকদের হয়ে করতো , নিঁচু চোখে দেখত । তারা নিজেদের আপ কান্ট্রির লোক বলে দাবী করতো । পূর্ব পাকিস্তান থেকে ক্রিমগুলো নিজেদের দেশে নিয়ে যেত , ঠিক যেমন করতো বৃটিশেরা । ১৯৪৭ এ শাসক বদল হলেও শোষন কিন্তু জারি ছিল ।
একজন মুসলমান হয়ে আরেকজন মুসলমানের প্রতি এরকম তাচ্ছিল্য বোধ , শোষন করা কি মুসলমানদের ধর্ম এলাউ করে ?
৭০ এর নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে বিজয়ী হবার পরেও মুসলমান ইয়াহইয়া ও ভূট্টো কেন আরেক মুসলমান মুজিবকে তার ন্যায্য পজিশন দিতে পড়িমসি করেছিলেন ? সেখানে কি ইসলামী মূল্যবোধ কাজ করেছিল নাকি ক্ষমতা পশ্চিম পাকিস্তানীদের হাত থেকে পূর্ব পাকিস্তানীদের তথা বাঙ্গালীদের হাতে চলে যাচ্ছে সেটাই পশ্চিম পাকিস্তানের মুসলমানদের পেইন দিচ্ছিল ?
মন্তব্য করতে লগইন করুন