আগাচৌঃ এক ভয়ঙ্কর নোংরা মানসিকতার বুদ্ধি বেশ্যার নাম!!
লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ২২ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০৯:১৩:১৬ সকাল
(সুপ্রিয় পাঠক, প্রথমেই আমি ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি এই কপি পোস্টটি করার জন্য। একজন নোংরা মানসিকতার কথিত বুদ্ধিজীবীকে নিয়ে গবেষণা কিংবা অনুসন্ধান করা আমার সাধ্যের একেবারেই বাইরে। তাই অন্যের অনুসন্ধান থেকেই লেখাটা লিখতে হচ্ছে। এজন্য আবারও ক্ষমা চাচ্ছি । )
আগাচৌ শুধু ডাঁহা মিথ্যাই বলেন না, সত্য বিকৃতির
ওস্তাদও বটে!!!
ড. এম মুজিবুর রহমান:
এক: ধর্ম বিদ্বেষী, ধর্মের অপব্যাখ্যাকারী, ধূর্ততার সাথে
সিলেট বিদ্বেষী কলাম লেখক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী
(আগাচৌ)কে অনেকেই জানেন ও চিনেন । তিনি মরা
মানুষের রেফারেন্স ছাড়া কোন কলাম লেখেন না। আর
যা জীবিতদের রেফারেন্স দেন তাদের নাম বলেন না।
রেফারেন্সের সবাই ঢাকা, নিউইয়ার্ক, মিউনিক, লন্ডন,
ব্রাসেলস থেকে তাকে ফোন করে আজগুবি সব তথ্য দেন,
তার ওপর ভিত্তি করে তিনি গাঁজার নৌকা পাহাড়তলী
পর্যন্ত টেনে নিয়ে যান। তিনি যে টাকার বিনিময়ে
লেখেন এটাও অনেক পুরানো খবর!
আমরা জানি আগাচৌ শুধু ডাঁহা মিথ্যাই লেখেন বা
বলেন না, সত্যেরও বিকৃতি ঘটানোর উস্তাদ। এই ব্যাপারে
তার ধূর্ততা অসাধারণ! গাঁজার নৌকা যে পাহাড়
ডিঙাতে পারে, আগাচৌ’র অধিকাংশ লেখাতেই তার
প্রমাণ থাকে। মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসীদের অবদান
সকলের জানা । বিশেষ করে যুক্তরাজ্য থেকে প্রবাসীরা
আন্দোলন সংগ্রাম করে বিশ্ব জনমত গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা
রাখার পাশাপাশি নিজেদের রোজগারের টাকা পয়সা
দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে সর্বাত্মকভাবে সাহায্য সহযোগিতা
করেছেন। যুক্তরাজ্যে এসব প্রবাসীদের দেশের ঠিকানাও
সকলের জানা। বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে
অবদানের পাশাপাশি ব্যবসা, শিক্ষা, রাজনীতি,
মিডিয়াসহ অনেক কিছুতেই বিলেতের মাটিতে
প্রবাসীদের আজকের শক্ত অবস্থান সৃষ্টিতে কাদের অবদান
রয়েছে তা আগাচৌ'র নজরে না আসলেও বাংলাদেশী
কমিনিউটির সকলে জানেন । বিলেতের কমিউনিটির
বেশিরভাগ মানুষজন বাংলাদেশের একটা জেলার
বিশেষ করে সিলেট জেলার হওয়াতে সিলেট বিদ্বেষী
আগাচৌ'র গাত্রদাহের কারণ । একটা অঞ্চলের মানুষ
হওয়াতে তাদেরকে হেয় বা কটাক্ষ করতে উঠেপড়ে
লাগার এক মাত্র কারণ পরশ্রীকাতর, ছিদ্রান্বেষী ও
বিদ্বেষী মনোভাব ।
সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে মহান আল্লাহ, ইসলাম
ধর্ম ও নারীর পর্দা নিয়ে কটুক্তিমূলক মন্তব্য করে ব্যাপক
সমালোচনায় পড়েছিলেন আগাচৌ । এবার জন্মদিন
উপলক্ষে লাইভ টেলিভিশনের অনুষ্টানে তিনি সিলেট
অঞ্চলের মানুষকে নিয়ে অতি চতুরতা ও ধূর্ততার সাথে
বিভিন্ন আপত্তিকর ও কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেন। আগাচৌ ও তার
কিছু অন্ধ সমর্থক তাকে বাংলা সাহিত্য বিশারদ মনে
করেন! কিন্তু কোনো ব্যক্তি বা গোষ্টিকে পরিচিত
করানোর ক্ষেত্রে অর্ধ শিক্ষিত, অশিক্ষিত, লাঙ্গল টু লন্ডন
কোনো রুচিশীল শব্দ কি না অথবা এসব শব্দের প্রয়োগ
পজিটিভ অর্থে ব্যাবহৃত হয় কি না সেটা কি আগাচৌ
জানেন না? না জেনে থাকলে তিনি সবচেয়ে বড় অজ্ঞ
আর জেনেশুনে বলে থাকলে তিনি সবচেয়ে বড়
নিমকহারাম ও সিলেট বিদ্ধেষী। তার আচরণ থেকে
আবারো প্রমানিত হলো 'নিজের দুর্বলতা ঢাকতে অন্যের
অনুগ্রহপ্রাপ্ত মানুষই পরবর্তী সময়ে নিষ্ঠুর ও ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে
'। আর এই সিলেট বিদ্ধেষী ব্যক্তিকে শুধু সিলেট অঞ্চলের
মানুষ নয় অন্য অঞ্চল বা এলাকার যে কোনো রুচিশীল
মানুষেরই ঘৃনা করা উচিত এবং যার যার অবস্থান থেকে এ
পরশ্রীকাতর লোকটিকে দেশে বিদেশে যুক্তরাজ্য
প্রবাসীদের অবদান জানিয়ে দেয়া উচিত। আর গত চল্লিশ
বছরে যুক্তরাজ্যে থেকে কমিনিউটির জন্য তার অবদানটুকুও
তাকে জিজ্ঞাসা করা উচিত। যেহেতু আগাচৌ টাকার
বিনিময়ে কারো পক্ষে বিপক্ষে পত্র পত্রিকায় লেখা
লেখি করে থাকেন তার উচিত হবে গত চল্লিশ বছরে এই
কমিনিউটির জন্য তার কি অবদান তা আমাদেরকে
জানানো।
আমাদের জানামতে এবং তার স্বীকারোক্তিমতে এই
কমিনিউটি থেকে তিনি অনেক উপকৃত হয়েছেন। কিন্তু
তিনি একজন সিলেট বিদ্বেষী মনোভাবাপন্ন ব্যক্তি
বিধায় কমিনিউটি সম্পর্কে ভালো লেখার মানসিকতা
তার নাই। এজন্যই তার লেখার পরবর্তী প্রতিক্রিয়া নিয়ে
তার এত ভয়। তার কথা থেকে এটাও পরিস্কার যে এই
কমিনিউটি সম্পর্কে লিখতে হলে বিলেতে একটি শক্ত
কমিনিউটি সৃষ্টি করতে যাদের অবদান আছে তাদের কথা
লিখতে হবে যা তার চিরাচরিত নীতির মধ্যে পড়ে না।
কারণ অনেকের মতে আগাচৌ একজন পরশ্রীকাতর ব্যক্তি,
বিভেদ, বিদ্বেষ ছড়ানো যার নেশা ও পেশা । এর চেয়েও
বড় বিষয় হলো গত চল্লিশ বছর ধরে এই কমিনিউটির আলো
বাতাস খেয়ে বড় হলেও কমিনিউটিতে তার অবদান
মাইক্রোস্কোপ দিয়েও খোজে পাওয়া যাবে কি না
সন্দেহ । আর তাই অন্য লোকদের ভালো কর্মকান্ড ও অবদান
লিখতে তার লজ্জা (যদিও লজ্জা বলতে তার কিছু আছে
কি না সন্দেহ !) ও ভয়।
দুই:
আগাচৌ বলেছেন তিনি বাকশালের সমালোচনা করেন
নাই কিন্তু ঐ সময়টা নিয়ে সমালোচনা করেছেন। আমরা
জানি দেশ ত্যাগের পূর্বে "ক্লান্তি আমায় ক্ষমা কর প্রভু "
বলে যে লিখাটি তিনি লিখেছিলেন তাতে বাকশাল
এবং শেখ মুজিবুর রহমানের বিরুদ্ধে তিনি তার বক্তব্য
ছিল। আর এখন বলছেন শেখ মুজিবুর রহমানের বাকশাল নিয়ে
সমালোচনা করেন নাই শুধু সময়টা নিয়ে তার আপত্তি ছিল ।
সময়ের সাথে নিজের অবস্থান পরিবর্তন তার চিরাচরিত
অভ্যাস।
আগাচৌ এক সময় এরশাদ সাহেবের কড়া সমালোচনা করে
কলাম লেখেন। কিন্তু কিছু দিন পর এরশাদ সাহেবের
সাক্ষাত পেয়ে (সাথে অবশ্য একটা এনভেলপ ছিল !) খুবই
ঘনিষ্ট হয়ে যান এবং ভোল পাল্টে লেখা শুরু যে এরশাদ
সাহেবেব মত এত বড় নেতা তিনি দেখেনি ! তার
সাক্ষাৎকার নিলেন প্রশংসা করলেন। এরশাদ যখন ক্ষমতা
হারালেন তার বিরুদ্ধে তখন আরার ক্ষুরধার লিখনি।
বানালেন এরশাদ মরিয়ম কেচ্ছা ! সমালোচনা করা অন্যায়
কিছু না কিন্তু নিজের স্বার্থ আর ফায়দা হাসিলের জন্য
ক্ষণে ক্ষণে ভোল পাল্টালে তার সম্পর্কে সজাগ
থাকাটা জরুরী। এ ধরনের লোক রাষ্ট্র, সমাজ তথা
কমিনিউটিতে বিভেদ, বিভক্তি আর বিদ্বেষ ছড়ানো
ছাড়া কিছুই দিতে পারে না।
টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্টানে আগাচৌ সিলেট
বাংলাদেশের একসময়কার অংশ ছিল বলে উল্লেখ করেন।
সিলেটতো সব সময়ই বাংলাদেশেশের অংশ ছিল।
নিজের মনিকোঠায় সিলেট বিদ্বেষী মনোভাবের
কারণে সিলেটকে বাংলাদেশের অংশ মনে করেন না
আগাচৌ ! সিলেটে না কি একটা সেক্টেরিয়ান গ্রুপ
আছে, যারা নিজেদের বাংলাদেশের মনে করে না ! কত
বড় ধাপ্পাবাজ আর সু কৌশলে আঞ্চলিকতার বিষ বাস্প
ছড়ানোর হীন চেষ্টা ।
আগাচৌ টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্ঠানে ব্যক্তিগতভাবে
যাদেরকে আক্রমন করে যে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন তার
জবাব তারা দিবেন অথবা তাদের মত করে বিষয়টি
হ্যান্ডেল করবেন । টেলিভিশনের লাইভ অনুষ্ঠানে কারো
বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলে কিভাবে সেটা মোকাবেলা
করতে হয় সে যোগ্যতা ও দক্ষতা তাদের আছে এটা
কমিউনিটির সবাই জানেন। তবে অনেকের মত এখানে
প্রখ্যাত জার্মান লুথেরান যাজক ফ্রিড্রিশ গুস্তাব এমিল
মার্টিন নেমলারের বিখ্যাত উক্তিটি উল্লেখ না করলেই
নয় ।
“যখন ওরা প্রথমে কমিউনিস্টদের জন্য এসেছিলো, আমি
কোন কথা বলিনি, কারণ আমি কমিউনিস্ট নই। তারপর যখন
ওরা ট্রেড ইউনিয়নের লোকগুলোকে ধরে নিয়ে গেল,
আমি নীরব ছিলাম, কারণ আমি শ্রমিক নই। তারপর ওরা যখন
ফিরে এলো ইহুদিদের গ্যাস চেম্বারে ভরে মারতে, আমি
তখনও চুপ করে ছিলাম, কারণ আমি ইহুদি নই। আবারও আসল ওরা
ক্যাথলিকদের ধরে নিয়ে যেতে, আমি টু শব্দটিও উচ্চারণ
করিনি, কারণ আমি ক্যাথলিক নই। শেষবার ওরা ফিরে
এলো আমাকে ধরে নিয়ে যেতে, আমার পক্ষে কেউ কোন
কথা বলল না, কারণ, কথা বলার মত তখন আর কেউ বেঁচে ছিল
না।”
মুক্ত মিডিয়ার দেশে বাক স্বাধীনতার সীমাবদ্ধতাও কি,
তা আইন ও অফকমের নীতিমালার মাধ্যমেও পরিস্কার
করে দেয়া হয়েছে । কিন্তু বিলেতে চ্যানেল এসকে আমি
ব্যক্তিগতভাবে শুধু একটি মিডিয়া হিসেবে দেখিনা।
চ্যালেল এস একটি প্রতিষ্ঠান। চ্যালেল এস বিলেতের
প্রবাসী কমিউনিটির সুখ-দু:খ্যের সাথী। চ্যানেল এস
বিলেতের বাংলাদেশী কমিউনিটির অর্জনকে সারা
বিশ্বের মধ্যে প্রচারের সুযোগ করে দিয়েছে। চ্যানেল
এস বিলেতের বাংলাদেশী কমিনিউটির
আত্মবিশ্বাসকে বাড়িয়ে দিয়েছে বহুগুন। চ্যানেল এস
বিলেতের বাংলাদেশী কমিউনিটির ব্যবসা
বানিজ্যের সাফল্য গাঁথা, শিক্ষায় আমাদের তরুণ
প্রজন্মের ঈর্ষনীয় সাফল্য প্রচার করে সবাইকে উত্সাহিত
করার পাশাপাশি মূলধারার রাজনীতিতে
বাংলাদেশীদের অবস্থান সুসংহত করতে চ্যানেল এস'র
রয়েছে এক অনবদ্য অবদান । সর্বোপরি বিলেতের মাটিতে
'এক খন্ড বাংলাদেশ' সৃষ্টিতে চ্যানেল এস এর রয়েছে
বিরাট ভূমিকা। চ্যানেল এস সহ সকল মিডিয়ার অবদানকে
অত্যন্ত গর্ব ভরে ও কৃতজ্ঞ চিত্তে আমাদের স্মরণ করা উচিত।
বিলেতের বাংলাদেশী কমিনিউটির এ অবদান ও অর্জন
আগাচৌ'র মত কিছু ছিদ্রান্বেষী, কমিউনিটিতে বিভেদ,
বিভক্তি ও বিদ্বেষ সৃষ্টিকারীর চোখে না পড়লেও, তা
আমাদের সকলের জানা।
তিন :
আগাচৌ'র জীবনের বেশির ভাগ অংশগুলো কুৎসিত এবং
অধিকাংশক্ষেত্রেই মিথ্যা তথ্যভান্ডারে ভরপুর । একজন
স্বার্থক দলান্ধ হিসেবে তার নাম বলা যেতে পারে।
সারা পৃথিবীতে দলীয় কলাম লেখক আছেন। তাদেরকে
বুদ্ধিজীবী না বলে বরং বলা হয়ে থাকে ‘পেইড রাইটার’।
মানে মালের বিনিময়ে কলম লেখেন। আগাচৌ সেরকম
একজন হলে কোন সমস্যা ছিলো না। মালের বিনিময়ে,
মানে নগদ টাকার বিনিময়ে অনেকেই অনেক কিছু করেন।
কেউ কলাম লিখলে দোষ কেন হবে? আগাচৌ'র সমস্যা
হচ্ছে তিনি সামান্য কিছু টাকার বিনিময়েও কলাম
লেখেন, তাও আবার যার তার জন্য। শুধু তাই নয়, প্রবল আ.লীগ
সমর্থিত আগাচৌ এক সময় জামাতের অর্থেও প্রতিপালন
হয়েছেন। তাদের জন্যও কলাম ধরেছেন। বাংলাদেশে যখন
যার পক্ষে বা বিরুদ্ধে তিনি কাগজে কলাম লিখেন।
কারো পক্ষে টাকা পেয়ে লিখেন আবার কারো
বিরুদ্ধে টাকা পাওয়ার জন্য লিখে থাকেন।
আগাচৌ'র দ্বি-চারিতার অজস্র উদাহন দেয়া সম্ভব।
এখানে কয়েকটি ঘটনার অবতারণা করা হলো মাত্র।
তিনি কথায় কথায় বাংলাদেশের সুশীলদের গালি দেন।
বলেন এরা ওয়ান ইলেভানের কুশীলব। এরা কিসের সুশীল?
যদি প্রশ্ন করা হয় ওয়ান ইলেভেনের সময় আগাচৌ কী
করেছিলেন? এক কথায় উত্তর দেওয়া যায়, তিনি সে সময়
সেনাবাহিনীকে তেলের সাগরে ভাসিয়েছেন। একেই
বলে হাওয়া বুঝে ছাতা ধরা। সে সময় তিনি তার কলমে
মঈনউদ্দীন-ফখরুদ্দীনকে এতোই তেল মেরেছেনে যে এক
স্থানে লিখেছিলেন , ‘এই প্রথম বাংলাদেশের একজন
সরকারপ্রধান জাতির উদ্দেশে দেয়া ভাষণে কবিগুরুর
উদ্ধৃতি দিয়েছেন’। অর্থ্যাৎ শাসক যদি স্বৈরাচার সেনা
শাসক হন তাতে সমস্যা নেই, যদি তিনি রবীন্দ্রনাথের
কথা বলেন। কী রকম নির্লজ্জ ভাড় কল্পনা করতে পারেন?
১৯৬১ সালে ছিল রবীন্দ্র জন্মশতবার্ষিকী। এ উপলক্ষে
তত্কালীন পূর্ব পাকিস্তানে বিপুল উত্সাহে নানান
কর্মসূচি পালিত হওয়ার পাশাপাশি রবীন্দ্রনাথের পক্ষে-
বিপক্ষে বিতর্কের ঝড় ওঠে। সে সময় আবদুল গাফ্ফার
চৌধুরী একদিন দৈনিক ইত্তেফাকে রবীন্দ্রনাথের পক্ষে
এবং পরদিন দৈনিক আজাদে রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে
কলাম লিখতেন। শুধু তাই নয় স্বাধীনতার পরও তিনি
পাকিস্তানের কাছ থেকে সংবর্ধনা নিয়েছেন। এই
আগাচৌ যে শেখ মুজিবুর রহমান বেঁচে থাকতেই
যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে লিখেছিলেন সে সম্পর্কেও দু চার
কলাম বলা যেতে পারে।
যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে তার কলাম সচল ছিলো সেই ৭৩-এ: ২২
মে ১৯৭৩ সালে ‘দৈনিক জনপদ’ পত্রিকার কলামে আবদুল
গাফফার চৌধুরী লিখেছিলেন,
আমার দুর্ভাগ্য আওয়ামী লীগ সরকারের সমর্থক, বঙ্গবন্ধুর
নেতৃত্বে আস্থাশীল হয়েও আজ আমাকে এই সরকারের
কোনো কোনো নীতি ও কাজের সমালোচনা করতে
হচ্ছে। কোলাবরেটর আইনের অপপ্রয়োগ বাংলার ঘরের
ঘরে হাহাকার তুলেছে। ভাইয়ে ভাইয়ে, বাপে
ছেলেতে সন্দেহ ও শত্রুতা সৃষ্টি করেছে এবং
স্বাধীনতার পর যখন অনড় জাতীয় ঐক্যের প্রয়োজন, তাকে
ভেঙ্গে শতধা বিভক্ত করেছে। কোলাবরেটর আইনকে
হাতিয়ার করে ক্ষমতাসীন দলের এক শ্রেনীর লোক
রাতারাতি ভাগ্য গড়েছে। .... কোলাবরেটর আইনের
অপপ্রয়োগ দেশের জাতীয় ঐক্য ধ্বংস করেছে।
কোলাবরেটর আইনের অপপ্রয়োগ বাংলার ঘরে ঘরে
হাহাকার তুলছে।
আর এখন তিনি হয়েছেন সব থেকে বড় যুদ্ধাপরাধীদের
বিচারের সমর্থক।
৭০ ও ’৭১ – এ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী বিজয়কে ভন্ডুল
করার জন্যে এই আগাচৌ কলম চালিয়েছিলেন হামিদুল হক
চৌধুরীর পত্রিকায়। আহাজারি করেছিলেন ‘মোনায়েম
খানের পতনে লাভ কি হলো’ বলে? হামিদুল হক ছিলেন
স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় সব থেকে বড় কোলাবরেটর।
গাফফার চৌধুরী ’৭৪ সালের ১৮ জুন লিখেছেন,
১৯৭২ সালের মাঝমাঝি সময়ে কোলাবরেটরদের প্রতি
সাধারণ ক্ষমা প্রদর্শনের জন্যে বঙ্গবন্ধুকে আহবান
জানিয়ে আমি ঢাকার একটি দৈনিকে প্রবন্ধ
লিখেছিলাম ‘...জাতীয়্ ঐকের জন্যে এই মুহূর্তেই প্রয়োজন
সাধারণ ক্ষমা’। এই লেখাটি পাঠ করার পর আমার সঙ্গ
দেখা হতেই বঙ্গবন্ধু হেসে বলেছিলেন চৌধুরী তোমার
লেখা আমি পড়েছি। সাধারণ ক্ষমা আমি ঘোষণা করবো,
তবে এখন নয়।
সেই সময় তিনি যুদ্ধাপরীদের বিচারের আইনটি
বাতিলের জন্য লিখেছিলেন আর এখন তিনি টাকার জন্য
জার্মানির হলোকাস্টের আদলে আইন করতে বলছেন।
বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে
পাগল বলেছেন। দৈনিক জনকণ্ঠ যাকে অনেকে দৈনিক
চুলকানি বলে থাকেন এই পত্রিকাটি ছাড়া অন্য কোনো
রুচিশীল পত্রিকাও এখন তার লেখা চাপতে চায় না।
আগাচৌ'র দ্বি-চারিতার উপর দুর্দান্ত দুই কিস্তির একটা
লেখা লিখেছিলেন অধুনালুপ্ত আজকের কাগজের সম্পাদক
ও মালিক কাজী শাহেদ আহমেদ আবদুলের অবগতির জন্য
কিছু কথা “কাছে হোক আর দূরে হোক ধূর্ত শেয়াল ধূর্তই
থাকে’ শিরোনামে। পরবর্তিতে আগাচৌ কাজী শাহেদ
আহমেদের কাছে করজোড়ে ক্ষমা চেয়ে নিস্তার পান।
নীতিহীন এই লোকের কথায় বা পত্রিকার কলামে
নীতিকথা হাস্যকর। যার কাছে নীতির চেয়ে টাকার মূল্য
বেশি, তার এসব নীতিকথায় বিভ্রান্ত না হওয়া উচিত।
এরা ইতিহাসের খলনায়ক হিসাবে একদিন পরিচিত হবেই।
প্রখ্যাত কলামিস্ট মিনার রশীদ গত ১৮ অক্টোবর ২০১৫
তারিখে দৈনিক নয়া দিগন্তে প্রকাশিত একটি নিবন্ধে
উল্লেখ করেন যে জীবনের অর্ধেক সময়ে পশ্চিমা
আলোবাতাসে কাটালেও সেই ধরনের কোনো বাতাস
আগাচৌ'র মনে প্রাণে লেগেছে বলে মনে হয় না। তাকে
দেখে রবি ঠাকুরের সেই কবিতাটি সামান্য পরিবর্তন
করে বলতে হয়, ‘তব আলো বাতাসে আশ্রয় দিয়েছো ওহে
ব্রিটিশ-জননী/রেখেছো বাঙালি করে, মানুষ করোনি।’
ব্রিটিশ রাজ আলোবাতাস দিলেও এই ৪০ বছর তিনি কী
খেয়ে কাটিয়েছেন, তা-ও বড় একটা প্রশ্ন। কারণ ১৯৭৬
সালের পর তার কোনো চাকরি বা ব্যবসার খবর তার
বায়োডাটায় দেখা যায়নি। বরিশালের এক জমিদার
পরিবারের কাছ থেকে চৌধুরী উপাধিটি গ্রহণ করলেও
সেই জমিদার পরিবার থেকে কোনো সম্পদ নাকি তিনি
উত্তরাধিকারসূত্রে নিতে পারেননি । তার পরেও তিনি
লন্ডনে পরিবার পরিজন নিয়ে অনেকটা জমিদারের
মতোই (কোনো কামকাজ না করে) জীবন কাটিয়েছেন।
কাজেই যেখান থেকেই আসুক না কেন, এটা সত্য যে
তাকে একধরনের করুণার অর্থে তার জীবনটি অতিবাহিত
করতে হয়েছে। ফলে তার সামগ্রিক মনোজগৎটি
সেভাবেই গড়ে উঠেছে। তিনি আরো লিখেন আগাচৌ
বরিশাল থেকে ঢাকায় এসে জামায়াতে ইসলামের
একটি মেসে আশ্রয় নিয়েছিলেন। কাজেই অনুমিত হয় যে,
আশ্রয়দাতাকে খুশি করার জন্য বেশি বেশি জিহাদি (!) বই
নাড়াচাড়া করতেন। আর এখন তিনি কথায় কথায়
জামাতের বিরুদ্ধে কথা বলেন । কোনো মানুষের
মানসিক কাঠামো গঠনে তাদের আশপাশের পরিবেশটুকু
বিরাট প্রভাব ফেলে। দেখা যায় একসময়ে খুবই নিরীহ,
অন্যের অনুগ্রহপ্রাপ্ত মানুষই পরবর্তী সময়ে নিষ্ঠুর ও ভয়ঙ্কর
হয়ে ওঠে। আগাচৌ'র দিকে তাকালে বিষয়টির সত্যতা
স্পষ্ট হয়ে পড়ে । তাই আগাচৌকে যদি সমাজ ও
কমিউনিটির এক দুর্বৃত্ত হিসেবে আখ্যায়িত করে বলা হয়
যে, তার বক্তব্য ও লেখায় রাষ্ট্র ও সমাজে শুধু দুর্গন্ধ ছড়ায়
বৈ কিছু নয়, তাহলে কি বাড়িয়ে বলা হবে ?
লেখক: ড. এম মুজিবুর রহমান, লন্ডন।
সাবেক সহকারী অধ্যাপক, শাহজালাল বিজ্ঞান ও
প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট।
বিষয়: বিবিধ
১১৮৪ বার পঠিত, ৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
লেখাটি কপি করেছেন, ক্ষমাও করে দিলাম কিন্তু কপি করার পর একটু এডিট করতে হয়,এবং আপনি তা করেন নি, তার জন্য কিন্তু ক্ষমা চান নি!
মন্তব্য করতে লগইন করুন