গাজায় ইসরাইলী হায়েনাদের নিষ্ঠুরতা!!

লিখেছেন লিখেছেন চেতনাবিলাস ০২ আগস্ট, ২০১৪, ০৮:৩৩:১৩ সকাল

ইসরাইলি সেনারা ঠাণ্ডা মাথায়

হত্যা করেছে ১৩ বছর বয়সী একটি শিশুকে। একবার

দু’বার নয়, ১৭ বার গুলি করা হয়েছে তাকে। তার

মৃত্যু নিশ্চিত

করতে ইসরাইলি সেনারা নিজেদের

মধ্যে কথা বলেছে।

তাতে ফুটে উঠেছে কি নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে ওই

শিশুকে। কি অপরাধ ছিল তার? ইসরাইলের

নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে প্রবেশ করেছিল সে।

সেই অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এ

খবরটি পুরনো হলেও নতুন করে মিডিয়ায়

উঠে এসেছে। ২০০৪ সালের এ ঘটনা নতুন

করে আলোচনায় ফিরেছে। কারণ, গাজায়

যেভাবে শিশুদের হত্যা করছে ইসরাইল

তাতে পুরনো সে কথাই

মনে করিয়ে দিচ্ছে সবাইকে।

তাইতো পুরনো সেই রিপোর্ট আবার

মনে করিয়ে দিচ্ছে বৃটেনের

প্রভাবশালী পত্রিকা দ্য গার্ডিয়ান।

এতে বলা হয়, গাজার ১৩ বছর বয়সী ওই শিশুকে যখন

ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তা গুলি করে হত্যা করে তখন

আরেক সেনা তাকে সতর্ক করেছিল। বলেছিল,

সে কোন অপরাধী নয় বলে মনে হচ্ছে।

তাকে মারা ঠিক হবে না। জবাবে ঘাতক

ইসরাইলি সেনা বলে, যদি সে তিন বছর বয়সীও হয়

তাহলেও তাকে হত্যা করা হবে। ঘাতক ওই

ইসরাইলি সেনা কর্মকর্তাকে শুধু ইংরেজি অক্ষর

‘ক্যাপ্টেন আর’ দিয়ে প্রকাশ করা হয়েছে।

অস্ত্রের অপব্যবহারের অভিযোগে ওই

ক্যাপ্টেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।

তাতে বলা হয়, তিনি অফিসার হওয়ার মতো কোন

কাজ করেন নি। তিনি ওইটুকু শিশুর ওপর ১০টি বুলেট

ছুড়েছেন। শিশুটির নাম আমান আল-হামস।

শিশুটি যখন রাফা শরণার্থী শিবিরের

কাছে নিরাপত্তা এলাকা দিয়ে হাঁটাহাঁটি করছিল

তখনই এ ঘটনা ঘটে। শিশুটিকে হত্যার ঘটনায় জড়িত

সেনাদের মধ্যেকার কথোপকথনের রেডিও টেপ

প্রকাশ পেয়েছে ইসরাইলি একটি টেলিভিশনে।

তাতে প্রকাশ পেয়েছে যে,

কি নির্দয়ভাবে একটি নিরপরাধ

শিশুকে হত্যা করা হয়েছে ঠাণ্ডা মাথায়। এ

ঘটনায় জড়িত সেনা কর্মকর্তা বলেছে, ইমান

নামের ওই মেয়েটি একটি সেনা চৌকির

দিকে হেঁটে যাচ্ছিল। এ সময় তার কাছে ছিল

একটি স্কুলব্যাগ। ফলে সেনাদের মধ্যে সন্দেহ হয়

যে, সে ওই ব্যাগে করে বোমা বহন করছে। কিন্তু

তাদের মধ্যে কথোপকথন বলে দেয় যে, ওই

শিশুটিকে একটি শিশু হিসেবে চিহ্নিত

করা হয়েছিল। তার কাছে বোমা আছে এমন কোন

সংলাপ হয় নি তাদের মধ্যে। সে যে হুমকি ছিল এ

বিষয়েও তারা কোন আলোচনা করে নি।

সেনাদের থেকে কমপক্ষে ১০০ গজ

দূরে থাকা অবস্থায় তাকে গুলি করা হয়। এসব তথ্য

ফুটে উঠেছে ওই সেনাদের সংলাপ থেকে।

পক্ষান্তরে রেডিও সংলাপে দেখা যায়,

সেনারা দ্রুততার সঙ্গে শিশুটিকে মাত্র ১০ বছর

বয়সী হিসেবে চিহ্নিত করে। সে ছিল মৃত্যুভয়ে-

একথাও আলোচনা করে সেনারা। আরও

আলোচনা করে যে, ইমান হেঁটে যাচ্ছিল

পূর্বদিকে। এটা সেনা চৌকির বিপরীত দিকে।

সে শরণার্থী শিবিরে ফিরে যাচ্ছিল। ঠিক তখনই

তাকে গুলি করা হয়। এ সময় ক্যাপ্টেন

একটি অস্বাভাবিক সিদ্ধান্ত নেন।

তিনি সেনা চৌকি থেকে বেরিয়ে চলে যান

শিশুটির দিকে। সেখানে গিয়ে নিশ্চিত হন

শিশুটি মারা গেছে কিনা। যখন নিশ্চিত হন ১৩ বছর

বয়সী ওই শিশুটি মারা গেছে তখন তিনি তার

ম্যাগাজিনের সবগুলো গুলি প্রবেশ

করিয়ে দিয়েছেন তার শরীরে।

খালি ম্যাগাজিন নিয়ে ফিরে আসেন

চৌকিতে। তাদের কথাবার্তার যে টেপ প্রকাশ

পেয়েছে তাতে রয়েছে ত্রিমুখী কথোপকথন। এর

একজন হলো সেনা চৌকির পর্যবেক্ষণ টাওয়ারের

সেনা, সেনা বাহিনীর পর্যবেক্ষণ চৌকির

নিয়ন্ত্রণ কক্ষ ও ক্যাপ্টেন আর। এই ক্যাপ্টেন আর

ছিল এক কোম্পানির কমান্ডার। পর্যবেক্ষণ

টাওয়ারের সেনা কর্মকর্তা তার সহকর্মীদের

দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ইমানকে দেখার সঙ্গে সঙ্গে।

এরপর তাদের সংলাপ শুরু হয়ে যায়।

এখানে তা তুলে ধরা হলো:

পর্যবেক্ষণ টাওয়ার: এটা একটি ছোট্ট মেয়ে।

সে আত্মরক্ষার জন্য পূর্বদিকে দৌড়াচ্ছে।

অপারেশন রুম: আমরা কি একটি মেয়ের

কথা বলছি যার বয়স ১০ বছরের কম?

পর্যবেক্ষণ টাওয়ার: হ্যাঁ। মেয়েটি ১০ বছরের

হতে পারে। তার মধ্যে মৃত্যুভয় দেখা দিয়েছে।

এর কয়েক মিনিট পরেই ইমানকে গুলি করা হয়।

একটি সেনা চৌকি থেকে তার এক

পায়ে গুলি করা হয়। তারপরের সংলাপ-

পর্যবেক্ষণ টাওয়ার:

আমি মনে করি তাকে সরে যাওয়ার পথ

করে দেয়া উচিত।

এ সময় মাটিতে আহত অবস্থায় পড়ে আছে ইমান।

তার ক্ষত দিয়ে রক্ত ঝরছে। অসহায় একটি শিশু

আর্তনাদ করছে। তখন কোম্পানি কমান্ডার

এগিয়ে যায়। কথোপকথনে তিনি জড়িত হন।

ক্যাপ্টেন আর: আমি ও আরেকজন সেনা সদস্য ওই

শিশুটির কাছে যাচ্ছি। নিশ্চিত হতে চাই যে,

তাকে হত্যা করা হয়েছে।

পরিস্থিতি সম্পর্কে আমি রিপোর্ট পেতে চাই।

আমরা তাকে গুলি করে হত্যা করেছি। আমি তার

মৃত্যু নিশ্চিত করেছি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা বর্ণনা করেছেন কিভাবে ইমানের

মাথায় দু’বার গুলি করা হয়েছে। তারপর

সরে গেছে। আবার ফিরে গেছে। এরপর

একটানা বুলেটে ঝাঁঝরা করেছে তার দেহ।

রাফাহ হাসপাতালের চিকিৎসকরা বলেছেন,

ইমানের দেহে কমপক্ষে ১৭ বার গুলি করা হয়েছে।

এরপর কোম্পানি কমান্ডার বর্ণনা করেন কেন

হত্যা করা হয়েছে ইমানকে। তিনি বলেন, দিস ইজ

কমান্ডার। মেয়েটি হোক না তিন বছরের

তাকে হত্যা করে আমরা নিশ্চিত হয়েছি।প

ইসরাইলের হায়েনাদের এসব অপকর্মের পরেও

যারা আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সভ্যতার

সাফাই গায় তারা যে নরপশু তাতে কোন ই

সন্দেহ নেই।

বিষয়: বিবিধ

৯৬৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File