ও প্রগতিশীল ভাইজান , ১৩ দফায় কি কি আছে জানেনতো ? ?

লিখেছেন লিখেছেন একত্ববাদী ছেলে ১৫ এপ্রিল, ২০১৩, ১০:৩১:৪৬ রাত

আজকাল প্রগতিশীল ও নারীমুক্তির অগ্রদূতেরা হেফাজতে ইসলামের ১৩ দফা দাবী নিয়ে সমালোচনায় মুখোর । আমি বিষয়টা নিয়ে কেমন জানি আগ্রহ বোধ করলাম । দেখিতো আসলে ঘটনাটা কি ? ১৩ দফা জোগার করতে বেশী বেগ পেতে হলোনা । ভালো করে পড়ে দেখলাম দফাগুলো ।

পাঠকদের সুবিধার্থে দফাগুলো তুলে ধরা হলো:

১। সংবিধানে 'আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস’ পুনঃস্থাপন এবং কোরান- সুন্নাহ্ বিরোধী সকল আইন বাতিল করতে হবে।

২। আল্লাহ্, রাসুল (সা.) ও ইসলাম ধর্মের অবমাননা এবং মুসলমানদের বিরুদ্ধে কুৎসা রোধে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ডের বিধান রেখে জাতীয় সংসদে আইন পাস করতে হবে।

৩। কথিত শাহবাগী আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী স্বঘোষিত নাস্তিক- মুরতাদ এবং প্রিয় নবী (সা.)-র শানে জঘন্য কুৎসা রটনাকারী কুলাঙ্গার ব্লগার ও ইসলাম বিদ্বেষীদের সকল অপপ্রচার বন্ধসহ কঠোর শাস্তিদানের ব্যবস্থা করতে হবে।

৪। ব্যক্তি ও বাক- স্বাধীনতার নামে সকল বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী- পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলনসহ সকল বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে।

৫। ইসলামবিরোধী নারীনীতি, ধর্মহীন শিক্ষানীতি বাতিল করে শিক্ষার প্রাথমিক স্তর থেকে উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত ইসলাম ধর্মীয় শিক্ষাকে বাধ্যতামূলক করতে হবে।

৬। সরকারিভাবে কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা এবং তাদের প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক সকল অপ-তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

৭। মসজিদের নগরী ঢাকাকে মূর্তির নগরীতে রূপান্তর এবং দেশব্যাপী রাস্তার মোড়ে ও কলেজ-ভার্সিটিতে ভাস্কর্যের নামে মূর্তি স্থাপন বন্ধ করতে হবে।

৮। জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের সকল মসজিদে মুসল্লিদের নির্বিঘ্নে নামাজ আদায়ে বাধা- বিপত্তি ও প্রতিবন্ধকতা অপসারণ এবং ওয়াজ- নসিহত ও ধর্মীয় কার্যকলাপে বাধাদান বন্ধ করতে হবে।

৯। রেডিও, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন মিডিয়ায় দাড়ি-টুপি ও ইসলামী কৃষ্টি- কালচার নিয়ে হাসি- ঠাট্টা এবং নাটক- সিনেমায় খল ও নেতিবাচক চরিত্রে ধর্মীয় লেবাস-পোশাক পরিয়ে অভিনয়ের মাধ্যমে তরুণ প্রজন্মের মনে ইসলামের প্রতি বিদ্বেষমূলক মনোভাব সৃষ্টির অপপ্রয়াস বন্ধ করতে হবে।

১০। পার্বত্য চট্টগ্রামসহ দেশব্যাপী ইসলাম বিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত এনজিও এবং খ্রিস্টান মিশনারীদের ধর্মান্তকরণসহ সকল অপ-তৎপরতা বন্ধ করতে হবে।

১১। রাসুলপ্রেমিক প্রতিবাদী আলেম- ওলামা, মাদরাসা ছাত্র এবং তৌহিদী জনতার ওপর হামলা, দমন- পীড়ন, নির্বিচার গুলিবর্ষণ এবং গণহত্যা বন্ধ করতে হবে।

১২। সারা দেশের কওমী মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষক, ওলামা-মাশায়েখ এবং মসজিদের ইমাম- খতিবকে হুমকি- ধামকি ও ভয়ভীতি দানসহ তাদের বিরুদ্ধে সকল ষড়যন্ত্র বন্ধ করতে হবে।

১৩। অবিলম্বে গ্রেপ্তারকৃত সকল আলেম-ওলামা, মাদরাসা ছাত্র ও তৌহিদী জনতাকে মুক্তিদান, দায়েরকৃত সকল মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং আহত ও নিহতদের ক্ষতিপূরণসহ দুষ্কৃতকারীদেরকে বিচারের আওতায় এনে কঠোর শাস্তি দিতে হবে।

-¤-¤-¤-¤-¤-

তথাকথিত নারী নেত্রীরা বলে এই ১৩ দফায় নাকি নারী দের ঘরে আটকে রাখার কথা রয়েছে । পাঠকদের কষ্ট করে দাবীগুলো পড়ে দেখতে অনুরোধ করে বলবো , কোথায় নারীকে বন্দি করার কথা বলা হয়েছে ?

হয়তো চার নম্বর দাবীটার কথা তার বলছে , ভালো করে খেয়াল করুন । বলা আছে ,

" ব্যক্তি ও বাক- স্বাধীনতার নামে সকল বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী- পুরুষের অবাধ বিচরণ, মোমবাতি প্রজ্বলনসহ সকল বিজাতীয় সংস্কৃতির অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে হবে ।" এখানে বেহায়াপনা , ব্যাভিচার , নারী-পুরুষের বাধাহীন মেলামেশা ও অপসংষ্কৃতি বন্ধ করার কথা বলা হয়েছে । এখানে নারীকে ঘরে বেঁধে রাখার কথা কোথায় আছে । নাকি এসব নারী নেত্রীদের কাছে শালীনতা মানেই বন্দীত্ব আর বেহায়াপনা ও অবাধ ব্যাভিচার মানেই মুক্তি । এইসব কথিত নারী নেত্রীদের ভন্ডামী সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে ।

আমি ব্যাক্তিগত ভাবে মনে করি প্রিয়নবী (সঃ) সম্পর্কে মিথ্যা কুত্‍সা রটনাকারীদের গ্রেফতার , মসজিদে নির্বিঘ্নে নামায আদায়ের নিশ্চয়তা , অন্যায়ভাবে গ্রেফতারকৃত ইসলামপ্রেমী ভাইদের মুক্তি , অপসংষ্কৃতি ও বেহায়াপনা প্রতিরোধ , কাদিয়ানিদের অমুসলিম ঘোষণা ইত্যাদি সহ "হেফাজতে ইসলাম" এর ১৩ দফার প্রত্যেকটি দাবীই যৌক্তিক এবং কোন ঈমানদার মুসলিমের এই দাবীগুলোর বিরোধীতা করার সুযোগ নেই ।

বিষয়: বিবিধ

১৬৭৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File