আল কুরআনঃ অন্ধকার থেকে আলোর পথে
লিখেছেন লিখেছেন নাজমুস সাকিব ১ ১৯ মার্চ, ২০১৩, ০২:০৮:৩৩ দুপুর
অনেককেই বলতে শুনি, দোস্ত পর্ণ ছাড়তে পারিনা, সিগারেট ছাড়তে পারিনা, মিউসিক-মুভি ছাড়তে পারিনা, আর গার্লফ্রেন্ড তো ছাড়ার প্রশ্নই আসেনা। এগুলা লাইফের অংশ হয়ে গেছে। নামায পড়তে পারিনা, মন থেকে আসেনা।
এমন কিছু মানুষই আমার জীবনের একটা বিশাল অংশ জুড়ে আছে। তাদের প্রতিনিয়ত নিরীক্ষা করি, বুঝতে চেষ্টা করি। তাদের কারোরই চেষ্টার অভাব নেই। বদ অভ্যাস আর অশ্লীলতা ত্যাগের সদিচ্ছা সবারই আছে। তবুও কেন জানি তারা পেরে ওঠেনা। কিছু একটা তাদের বাধা দিচ্ছে। তাদের পেছন থেকে আগলে রাখছে।
ঠিক এর উল্টোটাও জীবনে দেখেছি। জীবনে এমন কিছু মানুষের সাথে মিশেছি, যাদের জীবনের একটা সময় কেটেছে অকল্পনীয় জাহিলিয়াতে। কাউকে দেখে মনে হয়েছিল এই অন্ধত্বের জীবন, এই অশ্লীলতার জীবন, এই বদ অভ্যাসের জীবন থেকে মনে হয় তারা কোনদিনই বের হয়ে আসতে পারবেনা। কিন্তু কোন এক অদ্ভুত কারণে আজ তারা তাদের অতীতের সম্পূর্ণ বিপরীত। সেটা ছিল ইসলাম। সত্যিকার ইসলাম। এই ইসলাম নবম-দশম শ্রেণীর ইসলাম শিক্ষা বই এর পাতায় আটকে পড়া ইসলাম নয়। এ ইসলাম মানুষকে সকল প্রকার প্রকাশ্য-অপ্রকাশ্য দাসত্ব থেকে মুক্তিদানকারী ইসলাম। এটা সেই ইসলাম, যার কারণে একসময়ের “MUSIC IS MY LIFE” টিশার্ট ধারী ছেলেটি এক নিশ্বাসে পিসির ৩০ জিবি মিউসিক ডিলিট করে দেয়। এটা সেই ইসলাম যার শিক্ষায় রাতদিন অশালীন ভিডিও দেখার নেশাগ্রস্থ ছেলেটি রাস্তায় মেয়ে দেখলে চোখ নামিয়ে ফেলে। এটা সেই ইসলাম, যার স্পর্শে মুভি-হোলিক ছেলেটির এক্সটারনাল হার্ডডিস্ক মুভির বদলে ইসলামিক লেকচারে ভরে যায়। এটা সেই ইসলাম, যা সিগারেটের নেশায় বুঁদ হওয়া ছেলেটিকে কিংবা মদের বোতলে ডুবে থাকা মানুষটিকে হঠাৎ তা ঘৃণা করতে শেখায়। একেবারে মন থেকে ঘৃণা।
মাঝে মাঝে প্রশ্ন জাগে, কেন প্রথম শ্রেণীর মানুষগুলো চাইলেও পারছেনা তাদের অন্ধকার বন্দী জীবন থেকে মুক্ত হতে? আর কেনই বা দ্বিতীয় শ্রেণীর মানুষগুলো চুম্বকের এক মেরু থেকে হঠাৎ-ই বিপরীত মেরুতে অবস্থান নিতে সক্ষম হচ্ছেন? কিভাবে? কারা তাদের ব্রেইন ওয়াশ করছে? কোন নেতা? কোন ভাই? কোন দল? কোন সন্ত্রাসী সংগঠন?
নাহ। কোনটাই নয়। এই ব্রেইন ওয়াশার হল আল-কুরআন। যার অপর নাম আল-ফুরকান। অর্থাৎ পার্থক্যকারী। সুবহান আল্লাহ্। সত্যিই এই দুটি শ্রেণীর জীবন দর্শনের পার্থক্য করে দিচ্ছে আল-ফুরকান। এই কুরআন এর মাধ্যমেই মানুষের সাথে আল্লাহ্র সম্পর্ক দৃঢ় হয়, শক্ত বন্ধন রচিত হয়। মানুষের অন্তরে এই সত্য পাকাপোক্তভাবে প্রতিষ্ঠা করে দেয়, যে দাসত্ব করতে হবে কেবল আল্লাহ্র। নিজের সমাজ, নিজের আশপাশ, নিজের নফস, নিজের ইচ্ছা, অমুক তারকা, তমুক ভাই এর নয়। কেবল মাত্র আল্লাহ্র। এইভাবেই মেলে মুক্তি। মানুষের জীবন পালটে দেবার সবচে কার্যকর উপায় হল আল ইসলাম। বাকিসব আইওয়াশ। তাতে একজনের দাসত্ব ছেড়ে অন্য আরেকজনের দাসত্বই করা হয়। আল্লাহ্র নয়।
আল কুরআন। পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ ব্রেইন ওয়াশিং টুল। এর দ্বারা ব্রেইন ওয়াশড হওয়াতে আমি সন্তুষ্ট।
বিষয়: বিবিধ
১৫৬৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন