স্নেহের ভাই

লিখেছেন লিখেছেন নাজমুস সাকিব ১ ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০৭:৫২:৫৭ সন্ধ্যা

স্নেহের ভাই। তুমি একজন বাংলাদেশি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রক্ত তোমার শরীরে বইছে। একজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাধারী যুবক কখনই কোন "নব্য রাজাকারের" সাথে উঠতে বসতে চাইবেনা। সে তাকে বর্জন করতে চাইবে। সে তাকে "ধইরা ধইরা জবাই" করতে চাইবে, কিংবা "সকাল বিকাল নাস্তা" করতে চাইবে, অথবা "এই মুহূর্তেই তার মাতৃভূমি" ছাড়তে বলবে। অর্থাৎ কোনভাবেই তার সাথে আপোষ হবেনা। কিছুতেই না। যতই সে তার সাথে গলা মিলিয়ে কথা বলুক। একজন "নব্য রাজাকার" সর্বাবস্থায় বর্জনীয়। তার সাথে যে আদর্শিক দ্বন্দ্ব! সে এই দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনা, সংবিধানে বিশ্বাস করেনা, বিশ্বাস করেনা জাতীয় নেতৃত্বে, সুশীল সমাজে। তার সাথে কিভাবে একজন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্ভাসিত যুবকের গলা মেলানো যায়? এ অসম্ভব!

ভাই আমার, তুমি তো মুসলিম। এ পৃথিবীতে কিন্তু এটাই তোমার প্রথম এবং শেষ পরিচয়। কবরে কিন্তু জিজ্ঞাসিত হবেনা তুমি কোন দেশ থেকে আগত। জিজ্ঞাসিত হবে মান দ্বীনুকা? তোমার দ্বীন কি? তোমার জবাব হতে হবে আল-ইসলাম। বাংলাদেশি কিংবা জিম্বাবুয়ান না। তাহলে বুঝতে মনে হয় কষ্ট হয়না এই মুসলিম পরিচয়, এই ইসলামি আদর্শই তোমার একমাত্র পরিচয়। একমাত্র ঠিকানা। একমাত্র সম্বল। এটাই তোমার সবকিছু। এটাই তোমার আবেগ, এটাই তোমার চেতনা।

আমার ভাই, যে মানুষটি আল্লাহকে গালি দেয়, অশ্লীল ভাষায় চটি লেখে, আমাদের শ্রেষ্ঠতম নেতা রাসূল [ﷺ] কে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ ভাষায় রসগল্প লেখে, তার স্ত্রী খাদিজা (রা), আইশা (রা) সহ আরো অনেক নারী সাহাবাদের নিয়ে অশালীন মন্তব্য করে রাত দিন ব্লগ ফেসবুক কাপিয়ে বেড়ায়, তার সাথে কি তোমার আদর্শ যায়? বল? যায়? সে তোমার ধর্মীয় স্বাধীনতায় বিশ্বাস করেনা। সে তোমার জীবনের একমাত্র সংবিধান কুরআনকে বিশ্বাস করেনা, তাকে চটি বই এর সাথে তুলনা করে, অশ্লীল ভাষায় বিশেদগার করে। যে রাসূলকে [ﷺ] সমগ্র মানব্জাতির জন্যে পাঠানো হয়েছে আল্লাহ্‌র তরফ থেকে সেই রাসুলের [ﷺ] নেতৃত্বে বিশ্বাস করেনা এই মানুষটা। বিশ্বাস করেনা ইসলামে।

তাহলে তার সাথে তুমি কি করে গলা মেলাও বল? তার সাথে কি তোমার আদর্শ মেলে? সামান্যতমও মেলে? তাহলে কি করে তুমি তার সাথে উঠা বসা কর? কি করে তাকে "আমাদের দাবি এক" দোহাই দিয়ে বুকে টেনে নাও? দুনিয়াবি একটি আদর্শের দোহাই দিয়ে যদি তুমি একজন “নব্য রাজাকারকে” জবাই করার হুঙ্কার তুলতে দ্বিধাবোধ করনা, সেখানে তোমার আল্লাহ্‌কে গালি দেয়া একজন মানুষ, যার সাথে তোমার ইহকাল-পরকাল উভয়কালের শ্রেষ্ঠতম আদর্শের কোন মিল নেই, তাকে কি করে আগলে রাখো? কেন ভাই? কেন? তুমি কি জানো, তোমার রাসূলকে [ﷺ] নিয়ে যেসব কাফির ব্যাঙ্গ করতো, সাহাবাদের রক্ত তখন টগবগ করে ফুটতো। তলোয়ারের হাতলে তাদের হাত নিশপিশ করতো সেই কাফিরকে খতম করে দেয়ার জন্যে। কিন্তু রাসূলের [ﷺ] সম্মতি ব্যাতীত তা সম্ভব হত না। একবার তোমার নিজেকে তাদের সাথে মিলিয়ে দেখো তো? কোথায় তোমার অবস্থান? এমন কিছু নরপশুর সাথে হাতে হাত মিলিয়ে কোন মুসলিম অন্য মুসলিমকে জবাই করতে হুমকি দিচ্ছে – এমন দৃশ্যকে জায়েজ করতে তো পৃথিবীর কোন অযুহাতই যথেষ্ট নয়!

দুনিয়াবি আদর্শে মিল না হলে তুমি তোমার মুসলিম ভাইকে সর্বাত্মক বর্জন করতে চাইছো, কিন্তু নিজের দুই জাহানের আদর্শে যার সাথে কোটি কোটি মাইল পর্যন্ত মিল নেই, তার সাথে এক হয়ে মিশে যাচ্ছো জনতার ঢলে?

এই “তুমি”কেই তারা দেখতে চেয়েছিল। দেখো তারা আজ কতটা সফল। কতটা জয়ী।

তুমি কি বুঝতে পারছো?

বিষয়: বিবিধ

২৪৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File