সৌদি আরবের কন্যা দানের ব্যপারে যা জানলাম ? আসলে কি তাই? কেউ বলবেন কি? Thinking Thinking Thinking

লিখেছেন লিখেছেন সোহাগ্ ২৪ জুন, ২০১৩, ১২:৫৯:০২ দুপুর



বেশিরভাগ সৌদি পুরুষ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে নারীদের নিজস্ব কোন আশা, আকাঙ্খা, উচ্চাভিলাষ থাকতে পারে না। তাই বিবাহের ব্যাপারে সৌদি মেয়েদের অভিমত সম্পূর্ণ অবান্তর। একটি সৌদি মেয়ে সম্পূর্ণভাবে তার মালিকের সম্পদ। মেয়েটির মালিক তার মেয়েটির ভাগ্য নির্ধারক। সৌদি পুরুষেরা মনে করে যে তাদের গোত্রের মেয়েদের অন্য অজানা গোত্রের ছেলের সাথে বিবাহ হওয়া খুবই লজ্জার ব্যাপার। একজন সৌদি কোন রকমেই এটা মানতে পারবেনা যে তাদের গোত্রের এক মেয়ের সম্মান অন্য গোত্রের ছেলে দিতে পারবে। এক সৌদি পিতা চিন্তাই করতে পারে না যে তার কন্যা অন্য গোত্রের অচেনা ছেলের সাথে যৌন সঙ্গমে লিপ্ত হবে, এমন কি বিবাহের পরেও। এমনকি জামাই মুসলিম হলেও। এইটাই হচ্ছে আমার পিতার রূপ।তিনি তাঁর মেয়েদের বিবাহে রাজী নন অন্য বাইরের ছেলের সাথে। যদি তিনি ঘুর্ণাক্ষরে চিন্তাও করেন যে কোন বাইরের লোক তাঁর মেয়ের সাথে যৌনসঙ্গম করে কিংবা তাঁর কন্যার যৌনাঙ্গ দেখে ফেলতে পারে, তার মনে হয় মাথাই খারাপ হয়ে যাবে।

উপরে উল্লেখিত কারণের জন্য প্রচুর সৌদি পিতা দ্বি-বিবাহের আয়োজন করেন। অর্থাৎ, আপনি আপনার ছেলেকে দিন আমার কন্যার কাছে, এবং আমি আমার কন্যাকে দিব আপনার ছেলের হাতে। এই নিয়মটা ভগিনী হলেও চলবে। এই ভাবে উভয়পক্ষ সান্ত্বনা পায় যে উভয়ের সম্মান রক্ষা হলো। আমাদের সমাজে যখন কারও অর্থের প্রয়োজন পড়ে কিংবা নতুন স্ত্রীর প্রয়োজন হয় তখন মেয়েদের এই ভাবে পণ হিসাবে ব্যবহার করে। কিছু সৌদি মহিলা অর্থোপার্জন করে। কিন্তু তারা যা ই আয় করে তার সবটাই চলে যায় তাদের পিতার অথবা স্বামীর পকেটে। অনেক মহিলার পিতা এতোই পাষাণ হৃদয়ের যে, তাঁদের কন্যার আয় স্বামীর কাছে চলে যাক তা তারা চান না তাই সেই সব পিতারা চান না যে তাঁদের কন্যারা কখনো বিয়ে করুক।

সুসঙ্গত কারনেই হয়ত অনেকে জানতে চাইবেন সৌদি নারীদের এই অবর্ণনীয় দুর্দশার হেতু কি; কিসের জন্যে এখানকার নারীরা অকথ্য নির্যাতন সহ্য করে যাচ্ছে? অতি সহজেই আমরা নির্বোধ, যুক্তিহীন, অশিক্ষিত ও সেকেলে সৌদি নিয়ম কানুন কে দোষী সাব্যাস্ত করতে পারি। কিন্তু একটু চিন্তা করলেই আমরা বুঝতে পারি যে এই সব কিছুরই উৎস হচ্ছে ইসলাম। পরিষ্কারভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি যে এসবের জন্য একমাত্র ইসলাম দায়ী। ইসলামী আইন কানুন আমাদের নারীদেরকে পরিণত করেছে পুরুষদের সম্পত্তিতে। তাদেরকে দাসত্বে ফেলে দিয়েছে এবং নারী হিসেবে তাদের যে মান, সম্ভ্রম, মর্যাদা ও শ্রদ্ধা আছে তাও হরন করে নিয়েছে। সত্যি কথা বলতে কি ইসলাম আমাদের নারীদের নারীত্বের ভিত্তিমূলে কুঠারাঘাত করে তা ধুলিসাৎ করে দিয়েছে।

ইসলাম একজন পিতাকে তার কন্যার উপর সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব দিয়েছে। পিতা কন্যাকে সর্বতোভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে। কন্যকে যেমনভাবে বিবাহ করানো, তাকে সামাজিক জীবন থেকে সরিয়ে রাখা, এমনকি তাকে মেরে ফেলারও সম্পূর্ণ আধিকার পিতার রয়েছে। আপানারা হয়তো এই জেনে আশ্চর্য হবেন যে এক সৌদি পিতা যখন খুশি তার কন্যাকে মেরে ফেলতে পারে আইনের তোয়াক্কা না করে। অনুগ্রহপূর্বক জেনে নিন যে এক সৌদি পিতা তার কন্যাকে মেরে ফেললেও সে পিতা কক্ষনই মৃত্যুদণ্ড পাবে না। এর কারণ হচ্ছে, কন্যা পিতার সম্পত্তি, সে ঐ সম্পত্তি যেভাবে খুশী নিষ্পত্তি করে দিতে পারে—এমন কি মেরে ফেলেও। সৌদি আরবে শরিয়া আইন অনুযায়ী কোন পিতা তার কোন সন্তানকে খুন করলে, সরকারের কোন ক্ষমতা নাই ওই পিতাকে মৃত্যুদণ্ডে দণ্ডিত করা।

ইসলামী আইন অনুযায়ী পিতার অনুমতি ছাড়া কন্যা বিবাহ করতে পারে না। করলে তা হবে হারাম। সংক্ষিপ্ত ভাবে বলা যায় যে ইসলামে পিতা হচ্ছেন একজন পবিত্র, সাধু পুরুষ--একজন সেনাপতি ও এক বদমেজাজী একনায়ক। এমনকি পিতা অশিক্ষিত, নিরক্ষর, মূঢ়, অনৈতিক, অন্যায়কারী ও সন্তানদের প্রতি অবহেলাপূর্ণ হলেও তার সন্তানদের, বিশেষতঃ কন্যাদের, সেই পিতার বিরুদ্ধে করার কিছুই নাই।

সৌদি আরবের কন্যা দানের ব্যপারে যা জানলাম ? আসলে কি তাই? কেউ বলবেন কি?

বিষয়: বিবিধ

৪৯৪৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File