কেউ বলছেন, সাপের বেশে এখানে জিনই অবস্থান করছিল। সেই জিনকে আঘাত করায় তারা এ বাড়িটি দখল করেছে।
লিখেছেন লিখেছেন সোহাগ্ ২৩ জুন, ২০১৩, ১১:২২:৪৭ রাত
একটি বিষধর সাপ ঘরে দেখামাত্রই তাকে পিটিয়ে মারা হলো। কয়েক দিন পর একই ধরনের আরও ৫টি সাপ বাড়ির আঙিনায় দেখা গেল। সেখান থেকেও একটিকে পিটিয়ে মারা হলো। মরা সাপটিকে ফেলে দেওয়া হলো পাশের খালে। এরপর একে একে নানা জাতের সাপ এসে ঘরে বাসা বাঁধল। এক পর্যায়ে সাপের ভয়ে ঘরবাড়ি ছেড়ে দিতে হলো আনিস ও তার পরিবারকে। তারা এখন থাকছেন অন্যের বাড়িতে। শুধু আনিসই নন, এমন পরিস্থিতির শিকার পার্শ্ববর্তী আকিজের পরিবারও। ওই ২টি পরিবারের ঘর এখন সাপের দখলে। সাপেরা সেখানে ইচ্ছামতো ঘুরছে। এ খবর ছড়িয়ে পড়ার পর প্রতিদিন
শত শত নারী-পুরুষ সেখানে ভিড় করছেন এবং সাপের রহস্যময় আচরণ প্রত্যক্ষ করছেন।
মংলা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার দূরে সুন্দরবনের কোলে অবস্থিত জয়মনি গ্রাম। ছোট একটি খাল এ গ্রামটিকে সুন্দরবন থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছে। ৩০-৩৫ বছর ধরে এখানে বসবাস করছে অসংখ্য পরিবার। তাদের মধ্যে আনিস এবং আকিজও আছেন। ৩ জুন হঠাৎ করেই আনিছের বসতঘরে একটি বিষধর সাপের দেখা মেলে। প্রতিবেশীদের সহায়তায় সাপটিকে পিটিয়ে মারা হয়। এ ঘটনার কয়েক দিন পরেই দিনের বেলাতে বাড়ির আঙিনায় একই ধরনের আরও ৫টি সাপ দেখা যায়। এ সময় সাপগুলোকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে আরও একটি সাপ মারা যায়। এরপর থেকেই শুরু হয় সাপের বিচিত্রময় আচরণ। সন্ধ্যা হতে না হতেই বসতঘরের বিভিন্ন স্থানে হরেকরকম বিষধর সাপ আশ্রয় নেয়। একে একে সাপেরা আনিসের ওই বসতঘরটি দখল করে নেয়। এ সময় সাপের দখলে চলে যায় পার্শ্ববর্তী আকিজের ঘরটিও। ছোটবড় হরেক রকম সাপের উপস্থিতিতে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন দুটি পরিবারের সদস্যরা। সাপ তাড়াতে নানা চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত ঘরবাড়ি ছেড়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন তারা।
এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পেতে দু'পরিবারের লোকজন ছুটছেন ওঝা-বৈদ্যসহ ধর্মীয় গুরুদের কাছে। দোয়া ও মিলাদের আয়োজন করা হচ্ছে। বিতরণ করা হচ্ছে শিরনি-পায়েস। চলছে ধর্মীয় নানা আনুষ্ঠানিকতা। তবুও কিছুতেই সাপের দখল থেকে ওই ঘর ২টি মুক্ত করা যাচ্ছে না।
সাপ নিয়ে নিত্যনতুন খবর চাউর হচ্ছে মানুষের মুখে মুখে। কেউ বলছেন, সাপের বেশে এখানে জিনই অবস্থান করছিল। সেই জিনকে আঘাত করায় তারা এ বাড়িটি দখল করেছে। আবার কেউ বলছেন, সাপ মারার কারণে সাপের রানী 'মনসা'দেবী ক্ষিপ্ত হয়ে এ বাড়িতে অবস্থান নিয়েছেন।
খবর পেয়ে শুক্রবার বিকেলে মংলার সংবাদকর্মীরা ছুটে যান ওই এলাকায়। তখন ছুটে আসেন গৃহকর্তা আনিস। তিনি জানান, সাপের কবল থেকে রক্ষা পেতে ওঝা-কবিরাজসহ ধর্মীয় নেতাদের কাছে গেছেন তিনি। ৩ দিন আগে তিনি নিরুপায় হয়ে পাশের উপজেলা মোরেলগঞ্জের এক পীরের শরণাপন্ন হন। ওই পীর পানি পড়াসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন তাকে। তিনি আনিসকে বলেছেন, সাপগুলোকে কোনো ক্রমেই বিরক্ত করা যাবে না। এমনকি সাপের ছবি তোলাও যাবে না। সাপের দলেরা ২১ দিনের মধ্যে নিজ থেকেই ঘর ছেড়ে দেবে বলে ওই পীর তাকে আশ্বস্ত করেছেন।Click this link
বিষয়: বিবিধ
২৪০৭ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন