তথ্য প্রযুক্তির যুগে এই বকবকানি বোকামি। তারপরও অন্তত ভাঙ্গা পেনসিলের শিশুদের অবক্ষয় থেকে রক্ষা করি---
লিখেছেন লিখেছেন সোহাগ্ ২১ জুন, ২০১৩, ০৬:০১:১২ সন্ধ্যা
প্রথমে একটা গল্প বলি। আমার এক পরিচিত একদিন সে খুব দুঃখ করে বললো, তার ছয় বছরের ছেলে আগেরদিন এফ ওয়ার্ড উচ্চারণ করেছে। বাবা না হলেও তার দুঃখটা বুঝতে পারলাম। আবার এটাও মনে হলো এখন চারপাশে যে হারে মানুষ শব্দটা রীতিমত ভার্ব, নাউন, এ্যাডজেক্টিভ, এ্যাডভার্ব হিসাবে ব্যবহার করে তাতে বরং এটাই জানতে চাওয়া যায়, এতদিন লাগলো কেনো শিখতে?
আরেকটা গল্প বলি, আমার এক ইন্ডিয়ান বন্ধু। সে একদিন গল্প করছিলো তার ইংল্যান্ডবাসী ননদ বলছে, আগের রাতে সে একটা কথা বলেছে আর তার ৩ বছরের কন্যা সেটাই বলে চলছে। কলিগের প্রশ্ন, "শব্দটা কি?" কলিগের ননদ, "এস-এইচ-আই-টি" এবার আমার কলিগও শুনতে পায় ফোনের ওপাশে রিনরিনে গলায় কেউ বলে চলেছে, এস-এইচ-আই-টি, এস-এইচ-আই-টি, এস-এইচ-আই-টি।
কথা হলো বাচ্চারা যা শুনবে যা পড়বে তাই বলবে, তাই শিখবে। বাচ্চা বলতে আমি শুধু অনুর্ধ ৬ শিশু বোঝাচ্ছি না। সাত আট দশ বারো বছরের ছেলেমেয়েদের কথাও বলছি, যারা হাতের কাছে যা পাবে তাই পড়বে। এ কালের বাচ্চা, সুতরাং কম্পিউটার ঘাটবেই। আমার ভাগনির বয়স ৬ বছর, তার সবচেয়ে প্রিয় খেলনা কম্পিউটার। আমার ক্লাস থ্রি পড়ুয়া ভাগনের কথা জানি সে তার হোমওয়ার্কের জন্যও কম্পিউটার খুলে বসে। এভাবে চিনতা করি, আজকে আপনি একটা ১৮ প্লাস কৌতুক লিখলেন, বা, গালিগালাজসমৃদ্ধ একটা পোস্ট লিখলেন। আপনার আমার সাত বছরের বংশধর বানান করে পড়া শুরু করলো, "চএ হ্রস্বউকার -------" আপনি কি নিশ্চিত একটি শিশুকে এজাতীয় শব্দগুচছর সাথে পরিচয় করানোটা খুব দরকারী? ব্লগ ইন্টারেনেটের একটা অংশ। এখানে আমরা আম্রাইতো বলার সুযোগ নাই। এখানে কি লিখছি সেটা অনেকে পড়ছে, পড়বে। কি ছবি দিচ্ছি সেটা আমরা ছাড়াও অনেকেই দেখছে, দেখবে। হয়ত তাদের বেশীর ভাগকেই আমরা চিনিনা।
ব্লগে কনো বিষয় নিয়ে লিখতে গিয়ে কেউ যখন নারীদের বিশেষ কনো ছবি যোগ করেন তখন দেখি সেইসব পোস্ট হিট হওয়া শুরু হয়। আমি হতাশ হই। সেদিন একটি ছবি দেখলাম ফেসবুকে এক ভদ্রলোক তার দাঁত তোলা বিষয়ক পোস্টে দাঁত দিয়ে কি করেন প্রসংগে বলছেন, "যত্ন সহকারে সুন্দরী বালিকাদের কামড়ানো হয়"। (খুবই উঁচু দরের রসিকতা মনে হয়।) তবে খোদার কাছে হাজার শোকর, উনি ওনার মুসলমানি বিষয়ক কোন ছবি দেননাই, তাহলে আরো উঁচু দরের রসিকতা পড়তে হত হয়ত।
কেউ কেউ বলেন যৌনতা তো জীবনেরই একটা অংশ, তাহলে সাহিত্য/শিল্পতে যৌনতা আসলে সমস্যা কি? এখন কেউ যদি সেই যুক্তিতে মলমূত্র ত্যাগ নিয়ে সচিত্র পোস্ট দেয়া শুরু করেন তাহলে তো সমস্যা। সেগুলা জীবন ঘনিষঠ হলেও বিবমিষাকর হবে।
মানি, তথ্য প্রযুক্তির যুগে এই বকবকানি বোকামি। তারপরও অন্তত ভাঙ্গা পেনসিলের শিশুদের অবক্ষয় থেকে রক্ষা করি---
বিষয়: বিবিধ
১৪৯৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন