এখন থেকে চেনা বামনদেরও পৈতা লাগবে...

লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ২২ মার্চ, ২০১৩, ০৮:৪২:৪৫ সকাল



নাস্তিকতার আজ বড় দুর্দিন। কম্যুনিজমের পতনের পরে বিশ্বজুড়ে বিশেষত আমাদের এই বাংলাদেশে এতোদিন নাস্তিকতার খানিকটা রেশ থাকলেও আজ তা অস্তিত্ব সংকটে ভুগছে। কম্যুনিজমের পতনের পর স্বল্পোন্নত দেশসমূহে বিশেষত আমাদের এই বাংলাদেশে রাশিয়ান এম্বেসী ও চীনপন্থী কম্যুনিষ্টদের জন্য তাদের লালন-পালনকারী অভিভাবকগণ অকাতরে আনুকুল্য প্রদান করতেন। পুরো দেশ ও পুরো জাতির মধ্যে নাস্তিকদের সংখ্যা ও সমর্থন শতকরা ৫%ও নেই। কিন্তু তাতে কি! বিদেশী শক্তির বিশেষ আনুকুল্য ও অনুদানের ফলেই ২% লোক আমাদের মিডিয়া অঙ্গন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারী-বেসরকারী শীর্ষ পদগুলোতে অধিষ্ঠিত হতে পেরেছে এবং সেখান থেকে পুরো জাতিকে হাশিশ খাওয়ানোর মতো ধর্মনিরপেক্ষতা ও গণতন্ত্র গেলানোর চেষ্টা করেছে, এখনও করে যাচ্ছে।

তবে এতোদিন ‘দুধ খাওয়া’ স্বার্থবাদী মজনুর মতো অনেক ভাবধরা নাস্তিকদের হাক-ডাক শোনা গেলেও বর্তমান এই দুর্দিনে প্রকৃত নাস্তিকদের প্রকৃত সংকট উপলব্ধি করা যাচ্ছে। আজ আর ‘রক্ত দেয়া মজনু’র মতো ত্যাগী কোনো নাস্তিকের সাক্ষাত পাচ্ছে না কেউ। ইন্টারনেটে ও ব্লগে এতোদিন ভাব নেয়া নব্য নাস্তিকদের প্রাদুর্ভাব ও উৎপাত খুব বেড়ে গেলেও বর্তমানে তা একেবারেই কমে গেছে। প্রায় নেই বললেই চলে।

পুঁচকে নব্য নাস্তিকদের কথা আর কি বলবো, তাদের গুরু, এদেশের নাস্তিকতার ডিলারশীপ ধারণকারী মুনতাসির মামুন, শাহরিয়ার কবিরদের মতো নাস্তিকতার একনিষ্ঠ সেবকরাই পরিবর্তিত পরিস্থিতি ও জাগ্রত জাতির সামনে আজ নিজেদেরকে নাস্তিক বলে পরিচয় দিতে পারছেন না। নিজেদের মনের বিরুদ্ধে যেয়ে প্রকাশ্যে নিজেদেরকে ‘নাস্তিক নয়’ বলে ঘোষণা দিচ্ছেন।

মুনতাসির মামুন, শাহরিয়ার কবিরদের মতো চেনা বামনদের এতোদিন পৈতা না লাগলেও এখন থেকে লাগবে। শুধু পৈতা থাকলেই হবে না, বরং সেটি হাইকোর্টে গিয়ে সার্টিফাইও করে আসতে হবে। না হলে তাদেরকে নাস্তিক বলা যাবে না। বললে তারা ভীষণ নাখোশ হবেন। কিছুদিন আগে এমনটিই জানিয়েছেন জনাব শাহরিয়ার কবির। মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী সেনাবাহিনীকে মুরগী সরবরাহ করার অভিযোগে অভিযুক্ত হলেও বর্তমানে নিজেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষ শক্তি বলে প্রচারকারী শাহরিয়ার সাহেব কিছুদিন আগে একটি অনুষ্ঠানে তার নাস্তিকতার প্রমাণ দেয়ার জন্য আদালতে যাওয়ার দাবী করেছেন। দেশের সর্বোচ্চ সম্মানীত, সর্বজন শ্রদ্ধেয়, আলেমকূল শিরোমণি আল্লামা শাহ আহমাদ শফী সাহেব (দা. বা.) এর উপর আক্রোশ ঝেড়েছেন। ঘোষণা দিয়েছেন হাইকোর্টে গিয়ে তার নাস্তিকতার দেয়ার জন্য। অপরদিকে মুনতাসির সাহেব কয়েকদিন আগে জনকন্ঠে প্রকাশিত ‘হেফাজতে জামায়াত ইসলাম ও টাকা খাওয়ার আন্দোলন’ নামক তার একটি লেখায়।

তার ব্যাপারে আরোপিত নাস্তিক হওয়ার অভিযোগের ব্যাপারে তিনি হা বা না কিছুই বলার মতো সৎসাহস দেখাতে পারেন নি। বরং তিনি বাইম মাছের মতো পিছলে যাওয়ার চেষ্টা করেছেন এই বলে যে, ... সারাদেশে এত রাজনৈতিক নেতা-নেত্রী থাকার পর তারা আমাদের কয়েকজনকে খুঁজে পেলেন শাহবাগের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে। আমরা এর সমর্থক, আর পৃষ্ঠপোষক হলে তো গৌরবের কথা। কিন্তু... দেখুন তিনি এখানে নিজেকে ‘শাহবাগের গৌরবান্বিত সমর্থক’ বলতেও লজ্জা পাচ্ছেন। কৌশলে এড়িয়ে যাচ্ছেন। ভয় পাচ্ছেন তিনিও যে নাস্তিক তা যদি শাহবাগের এই সূত্র ধরে প্রমাণিত হয়ে যায়...। একইভাবে তিনি

নাস্তিকদের লেখা গুলোকেও তাদের নয় বলে অস্বীকার করার হাস্যকর চেষ্টা করেছেন নিজ লেখায়। (সূত্র: http://www.dailyjanakantha.com/news_view.php?nc=16&dd=2013-03-21&ni=129461)

আসলে এখানেই তাদের সবচেয়ে বড় ব্যর্থতা। সভ্যতার লেবাসধারী এই মুনাফিকগুলো সারাজীবন মনোকষ্টে ভোগে। কারণ তারা আসলে যা চায় তা পরিস্কার করে বলতে পারে না। আর যা বলে তা তারা করে দেখাতে পারে না। প্রথম প্রথম একটু মাথাচাড়া দিয়ে উঠলেও মুমিনদের প্রতিরোধ শুরু হলে গর্তে গিয়ে পালাবারও পথ পায় না। বদরের ময়দানে শয়তান যেমন আবু জাহেলের বাহিনীকে পরিত্যাগ করে নিজেকে আল্লাহভীরু বলে ঘোষণা করেছিলো (বিস্তারিত সূরা আনফাল, আয়াত ৪৮), আজ তেমনি ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যুদ্ধ ঘোষণা করে শাহবাগে আসা শয়তানের অনুসারী নাস্তিকরাও এখন বিপদ দেখে ভোলপাল্টে নিজদেরকে ‘খোদাভীরু’ বলে শয়তানের সেই চির পরিচিত স্বভাবেরই পুনরাবৃত্তি করে দেখালো। মুক্তিকামী মুমিনদের গর্জে ওঠা এবং কিছু প্রাণের শাহাদাতের বিনিময়ে আজ তারা দুনিয়াতেও পরাজিত হচ্ছে, আখেরাতেও পরাজিত হবে।

এখানেই তাদের নৈতিক ও আদর্শিক পরাজয়। ব্লগার রাজিবের জানাযার দিন আমি ফেসবুকে একজনের লেখায় মন্তব্য করেছিলাম, ‘আজ শাহবাগে আসলে রাজিব বা থাবাবাবা’র জানাযা হয়নি, মূলত এখানে আজ বাংলাদেশে নাস্তিকতার জানাযা হলো।’ -এই সত্য আগামীতে ইনশাআল্লাহ মহাসত্য হয়ে উদ্ভাসিত হবে।

মুমিনরা যদি তাদের সামান্য সামর্থ্য নিয়েও বাতিলের বিরুদ্ধে মোকাবেলা করে তাহলেও বাতিল অবশ্যই পিঠ দেখাবে এবং পালাবে। আল্লাহ বলেন-

سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ وَيُوَلُّوْنَ الدُّبُرُ.

অর্থ: “অচিরেই কাফিররা পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে।” (সূরা কামার : আয়াত ৪৫)

মহান আল্লাহ আমাদের সময় থাকতে সঠিক বিষয়টি বোঝা ও উপলব্ধি করার তাওফীক দিন, আমীন।

বিষয়: বিবিধ

১৪৮৯ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File