মি’রাজের মাধ্যমে হিজরত ও জিহাদের স্পেশাল এসাইনমেন্ট পেয়েছিলেন প্রিয়নবী সা.
লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ০৪ মে, ২০১৬, ১০:২৬:১৭ রাত
লাইলাতুল মি’রাজ বা মি’রাজের রজনী এই উম্মাহর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ঘটনা। মুসলিমদের জন্য রমযানের পূর্বে রজব এবং শা’বানের মুবারক দিবস-রজনীগুলোর মাঝে এই রজনীটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
আমরা যেমন আমাদের বর্তমান বিশ্ব বাস্তবতায় দেখি যে, আমেরিকা, বৃটেন বা রাশিয়া মাঝে মধ্যেই তৃতীয় বিশ্বের অনুন্নত বা উন্নয়নশীল দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধান বা প্রধানমন্ত্রীদেরকে তাদের দেশে বিশেষ নিমন্ত্রণ করেন। এই সকল বিশেষ নিমন্ত্রণের প্রতিটির পেছনেই থাকে বিশেষ কোনো গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য, স্পেশাল কোনো এসাইনমেন্ট।
সাধারণ কোনো বিষয় হলো কেবলমাত্র একটি ফোন বা মেইল করাই যথেষ্ট হলেও অতিব গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে এমন নিমন্ত্রণ করে ডেকে নেয়াটাই একটি স্বাভাবিক রীতি।
মি’রাজের বিষয়টি ছিলো এই উম্মাহর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ টার্নিং পয়েন্ট। ইসলামের বিজয়ের জন্য ধারাবাহিকভাবে কোন কোন বিষয়কে পর্যায়ক্রমে কিভাবে সামনে আনতে হবে, বেশি গুরুত্ব দিতে হবে তার সবিস্তার বিবরণ ও ফিরিস্তি প্রিয়নবী সা. এর সামনে তুলে ধরা হয়েছিলো মি’রাজের এই রজনীতে।
মি’রাজের মাধ্যমে প্রিয়নবী সা.কে মহান আল্লাহ ইসলামের মহা গুরুত্বপূর্ণ ৮টি বিষয়ের উপর বিশেষ নির্দেশনা দিয়েছিলেন। কিন্তু দু:খজনক হলেও সত্য যে এর মধ্যে শুধুমাত্র সালাত বা নামাজ সম্পর্কেই আমাদের সমাজে কিছুটা আলোচনা করা হয়। বাকি ৭ টি বিষয় নিয়ে আলোচনা বলতে গেলে তেমন হয়ই না। এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে হিজরত এবং জিহাদ।
عن أبى سعيد الخدرى رضي الله عنه قال. قال رسول الله صلى الله عليه وسلم. ...وأعطيتك ثمانية أسهم: الإسلام والهجرة والجهاد والصلاة والصدقة وصوم رمضان والأمر بالمعروف والنهي عن المنكر،
হযরত আবূ সাঈদ খুদরী রা থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন রাসূল সা. বলেছেন, (মি’রাজের রজনীতে) আমাকে বিশেষ ৮টি বিষয় দেয়া হয়েছে। ইসলাম, হিজরত, জিহাদ, সালাত, সাদাকা, রমযানের সিয়াম, সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজের নিষেধ।” (বায়হাকী)
অপর এক হাদীসে ইরশাদ হয়েছে,
.عن حذيفة رضي الله عنه، عن النبي صلى الله عليه وسلم قال: " الإسلام ثمانية أسهم الإسلام سهم، والصلاة سهم، والزكاة سهم، وحج البيت سهم، والصيام سهم، والأمر بالمعروف سهم، والنهي عن المنكر سهم، والجهاد في سبيل الله سهم، وقد خاب من لا سهم له "
হযরত আবূ হুজায়ফা রাযি. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন প্রিয়নবী সা. বলেছেন, “ইসলামের অতি গুরুত্বপূর্ণ ৮টি অংশ রয়েছে। ইসলাম, সালাত, যাকাত, হজ্ব, রমযানের সিয়াম, সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজের নিষেধ, জিহাদ। আর যেই ব্যক্তি খুবই ক্ষতিগ্রস্থ আর চূড়ান্ত ব্যর্থ যার কাছে এই অংশ গুলো নেই।” (মুসনাদে বাযযার, হাদীস নং ২৯২৭)
প্রিয়নবী সা. এর সীরাতের দিকে আমরা তাকালে দেখি যে, মি’রাজের পরেই হিজরত সংগঠিত হয়েছিলো। তারপর এসেছিলো জিহাদ। সালাত কায়েম, যাকাত-সাদাকা আদায় করা সম্ভব হয়েছিলো মদীনার ইসলামিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে। আর সৎকাজের আদেশ এবং অসৎকাজের নিষেধও সমাজে বাস্তবায়িত হয়েছিলো এরপরেই। যার অন্যতম হাতিয়ার হচ্ছে জিহাদ ফি সাবীলিল্লাহ।
তাই আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে প্রিয়নবী সা. এর মি’রাজের ঘটনা থেকে আমাদের জীবনের জন্য পাথেয় সংগ্রহ করতে হবে। মি’রাজের মাধ্যমে মহান আল্লাহ তাঁর প্রিয় হাবীব সা. কে যেই বিষয় গুলোর দায়িত্ব দিয়ে প্রেরণ করেছিলেন সেগুলো আজ আমাদেরও বাস্তবায়ন করতে হবে। মহান আল্লাহ আমাদের সেই তাওফীক দিন। আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৮৭৩ বার পঠিত, ২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন