আমার দেখা মালয়েশিয়া
লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ২৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ০৮:০১:০৮ সকাল
পূর্ব কথা:
২৯ আগষ্ট, ২০১৫।
এই দিনটি ছিলো আমার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন। এই দিনটির জন্য আমি অপেক্ষা করছিলাম ২৬ শে জুলাই থেকেই। কেননা বাংলাদেশ থেকে দীর্ঘ সময় দূরে থাকার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম ২৬ তারিখেই। সেদিনই বিমানের চারটি কনফার্ম টিকিট কেটেছিলাম ২৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা টু কুয়ালালামপুর, ১০ সেপ্টেম্বর কুয়ালালামপুর টু জাকার্তা, ১৬ সেপ্টেম্বর জাকার্তা টু কুয়ালালামপুর... ।
তবে প্লেনের টিকিট কাটার সময় অপারেটর অনলাইনে আমার নাম লিখতে ছোট্ট একটু ভুল করলো। সাথে পাসপোর্টের নাম্বার লেখার ঘরটিও খালি রেখে দ্রুত নেক্সট পেজে চলে গেলো। পাসপোর্টের নাম্বারটি আমি দিতে বললাম। সে বললো, ওটা না দিলেও সমস্যা নাই।
একইদিন আমার ভিসা প্রসেসিংকারীকেও চারটি দেশের ভিসা নেয়ার জন্য টাকা দিয়েছিলাম। ধারণা ছিলো এক মাসের মধ্যেই তারা মালয়েশিয়ার মাল্টিপল ভিসা, ইন্দোনেশিয়ার সিংগেল এন্ট্রিসহ কাংখিত আরো দু'টি দেশের ভিসা নিয়ে দিতে পারবে।
কেননা এর আগে ১০ জুলাই থেকে ১৬ জুলাই পর্যন্ত এক সপ্তাহ আমি আমার জীবনের প্রথম বিদেশ ভ্রমণ হিসেবে মালয়েশিয়া ঘুরে এসেছি। এটি আমার দ্বিতীয় ভ্রমণ। তবে এজেন্ট আমাকে জানালো এখন মালয়েশিয়া মাল্টিপল ভিসা দিচ্ছে না। সবাইকে সিংগেল এন্ট্রি ভিসা দিচ্ছে। তবে মাল্টিপল নিতে চাইলে সময়, অর্থ এবং শ্রম বেশি দিতে হবে। কুয়ালালামপুর দুইবার প্রবেশ করার বিমান টিকিট, হোটেল বুকিং কনফার্ম করে তার মূল কপি ভিসা আবেদন পত্রের অন্যান্য ৭ টি কাগজের সাথে সাবমিট করতে হবে।
এরপরও সিংগেল ভিসা দিলে এম্বেসিতে সরাসরি যেয়ে আবেদন করতে হবে। তখন মাল্টিপল পেলেও পেতে পারেন।
সেজন্য আমি সেদিনই সবকিছু কনফার্ম করে দিলাম। এবং প্রথমে ইন্দোনেশিয়ার ভিসা নিয়ে তারপর মালয়েশিয়ার ভিসার জন্য এপ্লাই করতে বললাম।
২৭ আগষ্ট থেকে নিজেকে কেমন পর পর মনে হতে লাগলো। রাতে বাসায় গেলাম। এতো বছরের সংসার, স্ত্রী-সন্তান, আত্মীয়-স্বজন ছেড়ে ৪০০০ কিলোমিটার দূরে অজানা কোথাও চলে যেতে হবে অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য ভাবতেই মনটা কেমন যেনো মোচড় দিয়ে উঠলো।
পরদিন অফিসে গেলাম। সেখানেও সেম অবস্থা। গত ৩ বছরের অধিক সময় ধরে তিল তিল করে গড়ে তোলা প্রিয় প্রতিষ্ঠান লাইট হাউজ ও মারকাযুল কুরআন ওয়াল হিকমাহ'র দায়িত্বশীল, সকল আসবাব, সব কিছুই যেনো আমার কাছ থেকে কেমন দূরে সরে যাচ্ছে বলে মনে হলো। সব স্থান থেকেই অবচেতন মন শুনছিলো একটি শব্দ, আল বিদা।
এই অবস্থা চলতে থাকে ২৯ তারিখ পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে যখন যেখানেই যেতাম, সব কিছুকেই খুব বেশী আপন মনে হতো। এমনকি ঢাকার পাবলিক বাস, সড়ক পথের চিরচেনা মাটি-কাদা, ধূলো-বালি, গাড়ির হর্ণ এবং কালো ধোঁয়া সবকিছুই যেনো প্রতিদিন একটু একটু করে আমার থেকে দূরে সরে যাচ্ছিলো। ধীরে ধীরে অস্পষ্ট হতে হতে দৃষ্টিসীমার বহু দূরে হারিয়ে যাচ্ছিলো।
দেখতে দেখতে ১৫ দিন পার হয়ে গেলো। ৭ দিনের মধ্যে ইন্দোনেশিয়ার ভিসা পাবার আশা থাকলেও তা হাতে পেলাম প্রায় ১৬ দিন পর। এরপর জমা দেয়া হলো মালয়েশিয়ার ভিসার জন্য। সেখানে লাগলো আরো প্রায় ৮ দিন। ৮ দিন পর এজেন্টের কথায় হতাশ হলাম, টেনশনে পরলাম। এজেন্ট জানালো আপনাকে মালয়েশিয়ান এম্বেসী মাল্টিপল ভিসা দেয় নি।
চলবে...
বিষয়: বিবিধ
১৫৩৬ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন