অহেতুক বিতর্কে বেহুদা সময় নষ্টের চমৎকার স্থান যখন ব্লগ ও ফেসবুক!

লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ২৫ আগস্ট, ২০১৪, ১২:৫০:০৫ রাত



ফেসবুকে গত অনেক দিন যাবত মাযহাব, জাকির নায়েক ও আহলে হাদীস নিয়ে পক্ষে বিপক্ষে বিশাল গবেষণা, পর্যালোচনা চলছে। এক গ্রুপ পক্ষে তো অপর গ্রুপ বিপক্ষে। নিজেদের মূল্যবান সময় নষ্ট করে উম্মাহকে অহেতুক কিছু ফালতু বিতর্কে নিমজ্জিত রাখার জন্য শয়তানের 'নেক সূরতে ধোঁকার' এর চাইতে উৎকৃষ্ট উদাহরণ আর কিছু হতে পারে বলে আমার জানা নেই। এগুলো এমন বিতর্ক যে বিষয়ে দ্বিমত ও ভিন্নমত অতীতেও ছিলো ভবিষ্যতেও থাকবে। এগুলো নিয়ে এভাবে আরো শত বছর যাবত হাউ কাউ করলেও কোনো সমাধান হবে না নিজেদের মূল্যবান সময় নষ্ট করা ছাড়া।

নিজের মত প্রমাণের জন্য উভয় পক্ষই সুস্পষ্ট বিভিন্ন মিথ্যাচার, জোচ্চুরি ও প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে। নিজেদেরকেই একমাত্র হক সাবেত করার জন্য তারা যেন ফেসবুকে শহীদ হয়ে যাচ্ছে। অথচ তারা এমন সব বিষয় নিয়ে অহেতুক নিজেদের ও অন্যদের সময় নষ্ট করছে যে গুলোর সাথে ইসলামের মূলগত বিষয়ের এবং বিশেষত: বর্তমান বিশ্ব মুসলিমের দূরাবস্থার কোনো সম্পর্ক নেই। এই বিতর্ক করে কেউ কেউ সেলিব্রেটি হচ্ছেন। তাদের পেছনে বিশাল মুরীদানের সিরিয়াল পড়ছে আর তারা আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলছেন যে ইসলামের বিশাল খিদমত করে ফেলেছেন। মাঝে মাঝে এগুলো দেখে, এই সকল তার্কিক ও বিতার্কিকদের ভাষা ও শব্দপ্রয়োগ দেখে এতো দু:খ লাগে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। স্মরণ হয় অতীতের সেই ঘটনা। বাগদাদ যখন হালাকু খানের ধ্বংস হচ্ছিলো তখন শহরের অপর প্রান্তে এমন কিছু মুনাজির আর বিতার্কিকের তর্কও অব্যাহত ছিলো। এদের জন্যই সম্ভবত: কাজী নজরুল ইসলাম বলেছিলেন, 'পৃথিবী যখন এগিয়ে চলেছে আমরা রয়েছি...

যখন সারা বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের রক্তাক্ত লাশ ওঠানোর মতো কেউ নেই, কাফিরদের সর্বগ্রাসী আক্রমণে মাসুম বাচ্চাদের হাহাকারে আকাশ-বাতাস ভারী হয়ে যাচ্ছে, এমন সময় উম্মাহকে রক্ষায় জিহাদ ও শাহাদাতের ময়দানে যখন সবচাইতে বেশি মেহনত করা দরকার তখন সেই সকল বিষয় হতে শত মাইল দূরে সরে উম্মাহর দৃষ্টি কিছু ফালতু বিষয়ে আটকে দিতে আমাদের কিছু ভাইকে খুব ব্যতিব্যস্ত দেখা যায়।

যতদিন পর্যন্ত না মুসলিমদের খিলাফাহ সুসংহত হচ্ছে, মুসলিমরা একজন খলীফার অধীনে আবারও মাথা তুলে দাঁড়াতে পারছে এবং নিজেদের আহতদের রক্তাক্ত ক্ষতের প্রশমন হচ্ছে ততদিন পর্যন্ত এসকল অহেতুক, অপ্রয়োজনীয়, ক্ষুদ্রতম বিষয় নিয়ে অহেতুক বিবাদ ও বিতর্ক এড়িয়ে যাওয়ার জন্য আমার সকল ফ্রেন্ড ও দীনী ভাই-বোনদের প্রতি বিনীত অনুরোধ জানাচ্ছি। এরপরও কেউ এগুলো অব্যাহত রাখলে সবাই তাদের বয়কট করুন। যারা বর্তমান বিশ্ব মুসিলমদের ঐক্যহীনতা আর দূরাবস্থার এই সময়ে মুসলিমদেরকে আরো বিভক্ত ও বিচ্ছিন্ন করার এমন ফালতু বিতর্কের চেষ্টা করবে সবাই তাদের আনফ্রেন্ড ও ব্লক করে দিন। এমন সকল পেজ থেকে লাইক উড্ড করে নিন।

আল্লাহ তাদের ও আমাদের সকলকে হিদায়াত দিন। যেনো আমরা সবাই উম্মাহর অনৈক্য আর না বাড়িয়ে সামান্য ক্ষুদ্রতম বিষয় গুলো পরিহার করে উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ করতে ভূমিকা রাখতে পারি সেই তাওফীকি দিন, আমীন।

বিষয়: বিবিধ

১৪৪৮ বার পঠিত, ২০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

257963
২৫ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৩:৪৫
বাজলবী লিখেছেন : অাল্লাহ তাঅালা অামাদেরকে ঐক্যে থাকার তাওফিক দান করুক।অাপনার ঐক্যের অাহবানমূলক পোষ্ট পড়ে ভালো লাগল।জাযাকাল্লাহ খাইর।
২৫ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:৩৪
201722
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : আমীন। আমীন।
257964
২৫ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৪:০৭
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : আপনি সত্য কথা বললেও অনেকের সহ্য হবে না।
মহা নবীর সময়েও এই সব মুনাফেক ছিল। আজও
আছে। দারুন পোষ্ট। চালিয়ে যান।
২৫ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ১২:৪৯
201729
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : আল্লাহ মুসলিমদেরকে আরো উদারতা দান করুন। আমীন।
257969
২৫ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৪:২৮
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ভালো লাগলো
২৫ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৫৮
201741
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : ধন্যবাদ।
257982
২৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৬:৪২
কাহাফ লিখেছেন : বিতর্ক ছেড়ে সবাইকে এক হয়ে কাজ করতে হবে। ধন্যবাদ আপনাকে.......
২৫ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:২০
201845
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : মহান আল্লাহ আমাদের তাওফীকি দীন। আমীন।
258009
২৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:০৫
হতভাগা লিখেছেন : ক্যাচাল ছাড়া কোন আড্ডা বা ব্লগ বা ফেসবুক জমে না - কথাটা শুনতে যদিও খারাপ লাগে কিন্তু এটাই সত্য।
২৫ আগস্ট ২০১৪ রাত ০৮:৪৯
201857
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : হালকা-পাতলা ক্যাচাল ভালু হইলেও বর্তমান অতিরিক্ত প্যাচাল আর ক্যাচালে হালুয়া টাইট অবস্থা! :Thinking :Thinking :Thinking
258020
২৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:৪১
আজিম বিন মামুন লিখেছেন : সত্যের মুখোমুখি দাড় করিয়ে দেবার উপযুক্ত জাযা আল্লাহ আপনাকে দান করুন।আর হেদায়েত দান করুন আমাদের,যারা গোমরাহীতে লিপ্ত আছি।
258022
২৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ০৯:৫৯
রিদওয়ান কবির সবুজ লিখেছেন : যুক্তিপুর্ন পোষ্টটির জন্য অনেক ধন্যবাদ। আবুল মনসুর আহমদ এর "আয়না" গল্প গ্রন্থের মুজাহিদিন গল্পের মত সামান্য বিষয় নিয়ে তর্ক বা বাহাস করে এই ভাবেই মুসলিমরা নিজেদের মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করে রেখেছে। মজার ব্যাপর সেই সময় এই ধরনের বাহাস এর পিছনে উৎসাহ দিত জমিদার রা যাদের বেশিরভাগই হিন্দু। মাঝখানে মুনসি মেহেরুল্লাহ,মাওলানা আকরাম খান,মাওলানা মনিরুজ্জামান ইসলামাবাদি দের উদ্যোগে এই বাহাস বন্ধ হলেও এখন আবার পত্র-পত্রিকা ও ইন্টারনেট এর মাধ্যমে আবার ফিরে এসেছে! এতে লাভ টা হচ্ছে কার????
258029
২৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:০৭
সন্ধাতারা লিখেছেন : Jajakallah for your valuable post.
258043
২৫ আগস্ট ২০১৪ সকাল ১১:৫৪
বাকপ্রবাস লিখেছেন : সহমত Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck Good Luck
১০
258059
২৫ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৩৩
সূর্যের পাশে হারিকেন লিখেছেন : মাঝে মাঝে এগুলো দেখে, এই সকল তার্কিক ও বিতার্কিকদের ভাষা ও শব্দপ্রয়োগ দেখে এতো দু:খ লাগে যা বলার অপেক্ষা রাখে না। Sad Loser
১১
258068
২৫ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০১:৪৮
সুশীল লিখেছেন : ভালো লাগলো ধন্যবাদ ধন্যবাদ
১২
258084
২৫ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:১৬
আবু জান্নাত লিখেছেন : সুন্দর পরামর্শ, আমার মনে হয় কি! ফেসবুকেও কেমানিক বা গ্রামের পথে পথে এর মত কিছু লোক আছে যারা বিতর্কিত একটি ষ্টেটাস দিয়ে চুপসে থাকে, এদিকে মুসলিমদের দুটি পক্ষ তাদের চতক্রান্তের ফাঁদের পা দিয়ে সারাক্ষণ যুক্তি প্রযুক্তি ও সাওয়াল জাওয়াবে ব্যস্ত থাকে। তাতে করে কানা মানিকরাই সুযোগ নেয়।
১৩
258094
২৫ আগস্ট ২০১৪ দুপুর ০৩:৪১
পবিত্র লিখেছেন : খুবি জরুরী বিষয়ে পোস্টের জন্য জাযাকাল্লাহু খাইর!
১৪
258146
২৫ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:১৫
১৫
258169
২৫ আগস্ট ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:৪৪
আহমদ মুসা লিখেছেন : মুহতারাম খান ভাই খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে কলম ধরেছেন। আমিও মাঝে মধ্যে খুবই পেরেশানীতে থাকি এসব বিতার্কিকদের অন্তসারশূন্য পারস্পরিক যুক্তি ও কাউন্টার যুক্তি দিয়ে নিজেদের মধ্যেই খাটি মুসলিম প্রমাণের প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি করতে দেখে। কেউ কেউ সহীহ হাদিসের দোহাই দিয়েই বিতর্কের সূচনা করে থাকে। অথচ আহাদীসে সহীহা ছাড়াও হাদিস শাস্ত্র অধ্যায়নের যে নিয়ম নীতি আছে তার ব্যাপারে এসব বিতার্কিকদের পড়া শুনার গরজ নেই। জয়ীফ বা দূর্বল হাদিসের রেফারেন্স দিলেই জাল হাদিসের তকমা লাগিয়ে নতুন বিতর্কের সৃষ্টি করতে বদ্ধপরিকর।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File