সামান্য ফ্রি মদ, নারী আর ফ্ল্যাটের লোভে স্ত্রীর অধিকার ও সম্মান বিষয়ে নাস্তিক আসিফের অপ-প্রচার ও মিথ্যাচার
লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ১০ মে, ২০১৪, ০৩:৫২:২১ দুপুর
ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিক নামক কতিপয় ছুপা হিন্দু ইউরোপ-আমেরিকা ও মুশরিক এবং ইহুদীদের থেকে সামান্য কয়েক পেগ মদ, নারী আর ফ্ল্যাটের লোভে বর্তমানে প্রতিনিয়ত ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষ ছড়াচ্ছে।
বাংলাদেশের এক ছিককে নাস্তিক নামক হিন্দুপ্রেমীক, বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী আসিফ মহিউদ্দীন এখন তার ইহুদী প্রভূদের দান-দক্ষিণায় জার্মানীতে মদ, নারী আর একটি ফ্ল্যাট পেয়েছে। তাই সে তার নেমক হালাল করার জন্য এখন প্রতিনিয়ত ইসলামের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করে যাচ্ছে।
এই শয়তানটির সাথে কয়েক বছর আগে তাদেরই নাস্তিক ব্লগ সামুতে 'ইসলামে নারীর অধিকার ও স্বাধীনতা' নিয়ে আলোচনা হয়েছিলো। কিন্তু তখন এই আসিফ, পারভেজ, দু'পেয়ে গাধাপ্রমুখ প্রায় সব নাস্তিক মিলেও শয়তান গুলো তিন দিন পর্যন্ত লাগাতার আমার বিরুদ্ধে সবাই মিলে চেষ্টা করেও সফল হতে না পারেনি। উত্তর দিতে ব্যর্থ হয়ে পরিশেষে 'ইসলামে নারীর অধিকার সিরিীজের গুরুত্বপূর্ণ একটি পর্ব মুছে দেয় এবং আমাকে ব্যন করে।
ইসলামের বিরুদ্ধে বলার মতো হাতে গনা কয়েকটি বিষয়ই নাস্তিক নামক ছুপা এই হিন্দুগুলোর শেষ সম্বল। এর অন্যতম হলো ইসলামে নারীর অধিকার। এ বিষয়টি অনেক দীর্ঘ আলোচনা সাপেক্ষ। কিন্তু নাস্তিকদের স্বভাব হলো তারা কখনোই একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে স্থির থাকতে পারে না বা থাকে না। এক সাথে একগাদা বিষয় এনে জটলা পাকাবে তারপর যখন কোনো খানেই পারবে না তখন কুকুরের মতো গালি-গালাজ করতে করতে পালাবে।
যারা জেনে বুঝে ইসলামের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক প্রশ্ন করে তাদের ব্যাপারে আমার কোনো মাথা ব্যথা নেই। ওরা সামান্য মদের লোভে সত্যকে গ্রহণ করার সুযোগ বঞ্চিত হয়েছে। এই পোড়া কপালীদের দুদিনের মদ-নারীর মোহ শেষ হলেই তারা তাদের থাবাবাবার মতো শেষ পরিণাম দেখতে পাবে। দুনিয়াতেও লাঞ্চনাকর জীন আর আখেরাতের ভয়াবহ আজাব।
তবে যারা ওদের বিভ্রান্তি থেকে বাঁচতে চান এবং আসলেই জানতে চান যে 'ইসলাম কেনো ও কোনো পরিস্থিতিতে স্ত্রীকে মৃদু শাসনের অনুমতি দিয়েছে তাদের জন্য নিম্বের লেখা গুলো আশা করি উপকারে আসবে।
নারীর ব্যাপারে পুরুষের দৃষ্টিভঙ্গী উদার করেছে ইসলাম:
জাহেলিয়াতের যুগে এবং এখনও ইসলাম ছাড়া অন্য সকল ধর্মে যেখানে নারীকে সীমাহীন কদর্যভাবে উপস্থাপন করা হয়, তাদেরকে সম্মান থেকে বঞ্চিত করা ও তাদের উপর যে জুলুমের অবাধ সুযোগ নাস্তিকরা চায় ইসলাম তার মূল উৎসই বন্ধ করে দিয়েছে কুরআনের নিম্নোক্ত আয়াত গুলোর মাধ্যকে। ইরশাদ হয়েছে-
يَا أَيُّهَا النَّاسُ اتَّقُوا رَبَّكُمُ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَخَلَقَ مِنْهَا زَوْجَهَا وَبَثَّ مِنْهُمَا رِجَالًا كَثِيرًا وَنِسَاءً وَاتَّقُوا اللَّهَ الَّذِي تَسَاءَلُونَ بِهِ وَالْأَرْحَامَ إِنَّ اللَّهَ كَانَ عَلَيْكُمْ رَقِيبًا
অর্থ: “হে মানুষ, তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক উৎস থেকে। আর তা থেকে তোমাদের স্ত্রীদেরকেও সৃষ্টি করেছেন। এরপর তা থেকে ছড়িয়ে দিয়েছেন বহু পুরুষ ও নারী। আর তোমরা আল্লাহ ভয় কর, যার মাধ্যমে তোমরা একে অপরের কাছে চাও। আর ভয় কর রক্ত-সম্পর্কিত আত্মীয়ের ব্যাপারে। নিশ্চয়ই আল্লাহ তোমাদের উপর পর্যবেক্ষক।” (সূরা নিসা, আয়াত ০১)
অন্যত্র ইরশাদ হয়েছে,
يَا أَيُّهَا النَّاسُ إِنَّا خَلَقْنَاكُمْ مِنْ ذَكَرٍ وَأُنْثَى وَجَعَلْنَاكُمْ شُعُوبًا وَقَبَائِلَ لِتَعَارَفُوا إِنَّ أَكْرَمَكُمْ عِنْدَ اللَّهِ أَتْقَاكُمْ.
অর্থ:- হে মানুষ, আমি তোমাদেরকে এক নারী ও এক পুরুষ থেকে সৃষ্টি করেছি আর তোমাদেরকে বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করেছি। যাতে তোমরা পরস্পর পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কাছে সেই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে তোমাদের মধ্যে অধিক তাকওয়া সম্পন্ন। (সুরা আল-হুজরাত: ১৩)
আরো ইরশাদ হয়েছে-
هُوَ الَّذِي خَلَقَكُمْ مِنْ نَفْسٍ وَاحِدَةٍ وَجَعَلَ مِنْهَا زَوْجَهَا لِيَسْكُنَ إِلَيْهَا
অর্থ: “তিনিই সে সত্তা যিনি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছেন এক ব্যক্তি থেকে এবং তার থেকে বানিয়েছেন তার সঙ্গিনীকে, যাতে সে তার নিকট প্রশান্তি লাভ করে।” (সূরা আরাফ, আয়াত ১৮৯)
নাস্তিকরা চায় উন্মত্ত যৌনতা। নারীদেরকে অবাধে ব্যবহারে সুযোগ। কিন্তু ইসলাম তাদের এই ইচ্ছা পূরণের পথে একমাত্র প্রতিবন্ধক। কেননা ইসলাম বিবাহ ব্যতীত নারীর সাথে যৌন সম্পর্ক স্থাপনের কোনো সুযোগ পুরুষকে দেয় নি। বিবাহের মাধ্যমে মানুষ তাদের প্রাকৃতিক চাহিদা বৈধ পন্থায় পূর্ণ করে। পারিবারিক জীবন প্রশান্তি লাভ করে। ইরশাদ হয়েছে:
وَمِنْ آيَاتِهِ أَنْ خَلَقَ لَكُمْ مِنْ أَنْفُسِكُمْ أَزْوَاجًا لِتَسْكُنُوا إِلَيْهَا وَجَعَلَ بَيْنَكُمْ مَوَدَّةً وَرَحْمَةً إِنَّ فِي ذَلِكَ لَآيَاتٍ لِقَوْمٍ يَتَفَكَّرُونَ.
অর্থ:- আর তাঁর নিদর্শনাবলীর মধ্যে রয়েছে যে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের থেকেই স্ত্রীদের সৃষ্টি করেছেন, যাতে তোমরা তাদের কাছে প্রশান্তি পাও। আর তিনি তোমাদের মধ্যে ভালবাসা ও দয়া সৃষ্টি করেছেন। নিশ্চয় এর মধ্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে সে কওমের জন্য, যারা চিন্তা করে। (সুরা রূম: আয়াত ২১)
আরো ইরশাদ হয়েছে,
وَلَقَدْ أَرْسَلْنَا رُسُلًا مِنْ قَبْلِكَ وَجَعَلْنَا لَهُمْ أَزْوَاجًا وَذُرِّيَّةً
অর্থ: “আর অবশ্যই তোমার পূর্বে আমি রাসূলদের প্রেরণ করেছি এবং তাদেরকে দিয়েছি স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি। (সুরা রা’দ: আয়াত ৩৮)
অন্যত্র আরো ইরশাদ হয়েছে:
هُنَّ لِبَاسٌ لَّكُمْ وَأَنتُمْ لِبَاسٌ لَّهُنَّ.
অর্থ: “তোমাদের স্ত্রীরা তোমাদের জন্যে পরিধেয় আর তোমরা তাদের জন্যে পরিধেয়।” (সূরা বাকারা : আয়াত ১৮৭)
স্ত্রীদের সাথে উত্তম আচরণের নির্দেশ:
وَعَاشِرُوهُنَّ بِالْمَعْرُوفِ
অর্থ: “আর তোমরা তাদের সাথে সদাচারণ করো।” (সূরা নিসা: আয়াত ১৯)
নিজে ভালো খাবে, উত্তম পোষাক পড়বে আর স্ত্রীদেরকে নিম্ন মানের জীবন ধারণে বাধ্য করার জাহেলি মানসিকতাকে সমূলে বিনাশ করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
أَسْكِنُوهُنَّ مِنْ حَيْثُ سَكَنْتُمْ مِنْ وُجْدِكُمْ.
অর্থ: “তোমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী যেখানে তোমরা বসবাস কর সেখানে তাদেরকেও বাস করতে দাও।” (সূরা তালাক, আয়াত ৬)
নারীর নিজের ভরণ-পোষণের পাশাপাশি সন্তানের দায়িত্বও স্বামীর কাঁধে তুলে দেয়া হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
لِيُنْفِقْ ذُو سَعَةٍ مِنْ سَعَتِهِ وَمَنْ قُدِرَ عَلَيْهِ رِزْقُهُ فَلْيُنْفِقْ مِمَّا آتَاهُ اللَّهُ
অর্থ: “বিত্তশালীরা যেনো সামর্থানুযায়ী স্ত্রী-সন্তানের উপর ব্যয় করে। সীমিত উপার্জনকারীরা আল্লাহর দেয়া অর্থানুপাতে ব্যয় করবে।” (সূরা তালাক, আয়াত ৭)
পুরুষদের উপর নারীদের অধিকারের স্বীকৃতি দিয়ে ঘোষণা করেছে,
وَلَهُنَّ مِثْلُ الَّذِى عَلَيْهِنَّ بِالْمَعْرُوفِ وَلِلرِّجَالِ عَلَيْهِنَّ دَرَجَةٌ وَاللَّهُ عَزِيزٌ حَكُيمٌ.
অর্থ: “নারীদের উপর যেমন তোমাদের কিছু অধিকার রয়েছে ঠিক তেমনি তোমাদের উপরও তাদের কিছু অধিকার রয়েছে। স্ত্রীর উপর পুরুষের মর্যাদা। আর নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশালী প্রজ্ঞাময়।” (সূরা বাকারা : আয়াত ২২৮)
নারীদেরকে শাসনের ক্ষেত্রে ইসলামের কঠোর নীতিমালা:
নারীদেরকে দূর্বল ও অসহায় পেয়ে যাতে করে কেউ তাঁদের উপর জুলুম ও অত্যাচার না করে সেজন্যে ইসলাম ঘোষণা করেছে,
وَلاَ تُمْسِكُوهُنَّ ضِرَارًا لِّتَعْتَدُواْ وَمَن يَفْعَلْ ذَٰلِكَ فَقَدْ ظَلَمَ نَفْسَهُ.
অর্থ: “আর তোমরা স্ত্রীদেরকে কষ্ট দেয়ার জন্যে আটকে রেখো না। আর যারা এ ধরণের জঘন্যতম অন্যায় করবে তারা নিজেদের উপরই জুলুম করবে।” (সূরা বাকারা : আয়াত ২৩১)
সমাজে কেউ যেনো নারী জাতির অবমাননা করতে না পারে সেটিও ইসলাম নিশ্চিত করেছে। অন্যায়ভাবে কেউ কোনো নারীকে অপবাদ দিলে তার জন্য শাস্তির বিধান দিয়েছে। ইরশাদ হয়েছে,
وَالَّذِينَ يَرْمُونَ الْمُحْصَنَاتِ ثُمَّ لَمْ يَأْتُوا بِأَرْبَعَةِ شُهَدَاءَ فَاجْلِدُوهُمْ ثَمَانِينَ جَلْدَةً وَلَا تَقْبَلُوا لَهُمْ شَهَادَةً أَبَدًا وَأُولَئِكَ هُمُ الْفَاسِقُونَ.
অর্থ: “আর যারা সচ্চরিত্র নারীর প্রতি অপবাদ আরোপ করে, তারপর তারা চারজন সাক্ষী নিয়ে আসে না, তবে তাদেরকে আশিটি বেত্রাঘাত কর এবং তোমরা কখনই তাদের সাক্ষ্য গ্রহণ করো না। আর এরাই হলো ফাসিক।” (সুরা আন-নূর: আয়াত ৪)
উপরোল্লেখিত বিস্তারিত আলোচনার মাধ্যমে আমরা জানতে পারলাম যে একমাত্র ইসলমাই মানব সমাজে একজন নারীর নিশ্চিত, নিরাপদ জীবনের শতভাগ দায়িত্ব যথাযথভাবে বাস্তবায়ন করেছে। নারীদেরকে অহেতুক কষ্ট দেয়া, দূর্বল ভেবে তাদেরকে শারীরিক, মানসকিভাবে আঘাত করাকে সম্পূর্ণরূপে হারাম ও গর্হিত বলে ঘোষণা দিয়েছে।
তবে একমাত্র অপারগ ক্ষেত্রে, ইসলাম স্বামীদেরদেকে বিশেষ শর্ত সাপেক্ষে সীমিত ও মৃদু প্রহারের একটি শর্তযুক্ত অনুমতি দিয়েছে। এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা পরের পর্বে দেয়া হবে ইনশাআল্লাহ।
চলবে...
পরের পর্ব: স্ত্রী'কে মৃদু শাসনের অধিকার
(এ বিষয়ে আরো বিস্তারিত জানতে চাইলে পড়তে পারেন:
http://lighthouse24.org/blog/post/viewPost/?postid=13
http://lighthouse24.org/blog/post/viewPost/?postid=19
বিষয়: বিবিধ
১৪০৫ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
যে রকম চোখে জল নাকের জল এক করে তারা বিভিন্ন নাচ,গান,অভিনয় এবং সুন্দরী প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় , পারলারে সেজে পর পুরুষকে আকর্ষন করতে চায় ; ধর্মের নিয়ম কানুন এবং বিধি নিষেধ পালন করতে তারা ততটা এগ্রেসিভ নয় ।
ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন