একমাত্র নাস্তিক ছাড়া আওয়ামীলীগ-বিএনপি কেউ আমাদের শত্রু নয়'' -আল্লামা আহমাদ শফী দা. বা.
লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ১৪ এপ্রিল, ২০১৪, ০১:৩৩:৩৬ দুপুর
একমাত্র নাস্তিক ছাড়া আওয়ামীলীগ-বিএনপি কেউ আমাদের শত্রু নয়'' -আল্লামা আহমাদ শফী দা. বা.
-যারা খোদা বিরোধী যারা ইসলাম বিরোধি যারা কোরআন বিরোধি তাদের সাথে আমাদের চির জীবন লডাই চলবে। যারা নাস্তিক ও তাদের দোসর তাদের সাথে আমাদের কোন বন্ধুত্ত্ব নাই। কোন দিন হবে ও না । এদেশে হিন্দুরা ও থাকবে বোদ্ধরাও থাকবে কিন্তু নাস্তিকরা এদেশে থাকতে পারবে না ।পাশা পাশি কাদিয়ানিদের ও অমুসলিম ঘোষনা করার আহবান জানান। -আল্লামা জুনায়েদ বাবুনগরী দা. বা.।
এক দীর্ঘ বিরতির পর ১১-১২ তারিখ চট্টগ্রামের লালদীঘী ময়দানে অনুষ্ঠিত হলো হেফাজতে ইসলামের শানে রেসালাত সম্মেলন। এই সম্মেলনে প্রদত্ত বক্তৃতার চুল-চেড়া বিশ্লেষণ হচ্ছে এখন অনলাইনে-অফলাইনে। সম্মেলনের প্রথম দিন হেফাজতে ইসলাম কি, কেনো এবং দেশ-জাতীর সামগ্রিক বিষয় নিয়ে এক স্বল্পদৈর্ঘ গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করেন আল্লামা আহমাদ শফী দা. বা.। তার বিশাল আলোচনার মূল বিষয় ছিলো হেফাজত আসলে কি, ইসলামের মৌলিক স্তম্ভ, নামায, রোজা, হজ্জ, যাকাত, ইবাদত মুয়ামালাত ইত্যাদি সমাজে ব্যাপকভাবে প্রচার, প্রসার ও প্রতিষ্ঠা করণের প্রতি জনগণকে তীব্রভাবে আকর্ষণ করা।
ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলোর সংরক্ষণ, সম্প্রসারণ ও জনগণের কাছে সহজভাবে পৌঁছে দেয়া ও আমলের মাধ্যমে ইসলামকে বাস্তবায়নের প্রতি তিনি অত্যন্ত জোড়ালো বক্তব্য রাখেন।
এরপর অন্যান্য বিষয়ের পাশাপাশি হেফাজতের শত্রু-মিত্র সম্পর্কে আলোচনা আসে। এক্ষেত্রে তিনি সুস্পষ্টভাবে বলেন-
তিনি বলেছেনঃ "হাসিনা সরকারকেও ধন্যবাদ দিতেছি, আমাদের কে ২/৩ বার ঘুরাইয়া পিরাইয়া হলেও অনুমতি দিছে, কি দিছে ? অনুমতি দিছে; তাই উনার জন্য ও দোয়া করছি আল্লাহ ওনাকে হেদায়েত করুক ৷ (এখানে) হাসিনার ভক্তরা আছেন ? হাসিনার ভক্তরা অদে- অদে (যেভাবে বলছি সেই ভাবে) পৌছায়া দিবেন, এখানে কোনো রদবদল করবেন না ৷ আমি কি দোয়া করতেছি, আমাদের অনুমতি দিছে ওয়াজ নসিহত করার জন্য, ওনাকেও আল্লাহ তা'আলা হেদায়েত করুক ৷ এই কথাটা পৌছায়া দিবেন নি ? না বলবেন সরকার বিরোধী বয়ান করেছে !! এই কথা বলবেন নি কোনো ? এই সরকারী ভাইয়েরা আপনারাও এই কথাটা পৌছায়া দিবেন । আওয়ামীলীগ আমাদের দুশমন না, ছাত্রলীগ দুশমন না, হাসিনা দুশমন না, (তাদের) কোনদিন গালাগালি করছি ? হে ছাত্রলীগের ভাইয়েরা, নাতি পতির সমান হবেন আপনারা ৷ আপনাদের জন্য দোয়া করতেছি, আলেম ওলামাদের দিকে বড় বড় চোখ করে দেখে বদদোয়া নেবেন না, বদদোয়া নেবেন না, আমরা তোমাদের গালাগালি করিনা, আমাদেরকে গালাগালি করতেছ ৷ আমার কথা বুজা যাইতেছে ? আল্লাহ তাদেরকেও হেদায়েত করো আমাদেরকেও হেদায়েত করো ৷ আল্লাহ বাংলাদেশকেও তুমি হেফাজত করো, দুশমন থেকে হেফাজত করো, বাংলাদেশকে হেফাজত করো, যারা বেবসায়ী ভাই তারা শান্তিতে নাই, তাদের ইনপোর্ট- এক্সপোর্ট ভালো ভাবে চলতেছে না আল্লাহ সব দিক দিয়ে বাংলাদেশকে শান্তি করে দাও, বাংলাদেশকে হেফাজত করো ৷"
কিন্তু হলুদ সাংবাদিক গুলো নিউজ করছে, 'আওয়ামীল আমাদের বন্ধু।''
এবার বুঝুন অবস্থা। হলুদ সাংবাদিকতার এক কুখ্যাত নাম সময় টিভির চট্টগ্রামের রিপোটার কমল দে ৷৷ এই জানোয়ারটা সব সময় হেফাজতের বিরদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে এসেছে ৷৷ এইবার হেফাজতের শানে রেসালাত সম্মেলনে আল্লমা শাহ আহমদ শফি সাহেবের দোয়ার একটা খন্ডিত অংশকে অপপ্রচার করে সাধারন মানুষদের বিভ্রান্ত করছে ৷৷
হুজুর মুনাজাতের মধ্যে আওয়ামীদের হেদায়েতের জন্য দোয়া করেছে, হুজুর বলেছে আওয়ামীলীগ আমাদের দুশমন নয়, আমরা তাদের গালি দেইনা, তারা আমাদের গালি দেয়, আল্লাহ তুমি তাদেরকে হেদায়েত দাও আমাদেরকেও হেদায়েত দাও ৷৷
হুজুরের এমন কথা নতুন নয়; হুজুর সবসময় এমন মোনাজাত করেন, আর মুনাজাতের নিয়মই হলো এমন সকলের জন্য দোয়া করা ৷৷
আর আল্লামা বাবুনগরী পরিস্কারভাবে বলেছেন, ''কোনো নাস্তিকের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব হতে পারেনা, কোনো ইসলাম বিদ্ধেষীদের সাথে আমাদের বন্ধুত্ব হতে পারেনা ৷৷ যারা ইসলামের পক্ষে তাদের সাথেই আমাদের বন্ধুত্ব হতে পারে ৷৷ -মহাসচিব আল্লামা জুনাইদ বাবুনগরী ৷৷
অর্থাৎ এই সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকৃত অর্থে আওয়ামীলীগকে নাস্তিকদের সংস্পর্শ ছেড়ে প্রকৃত মুসলিম হওয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে। আর কিছু নাস্তিক মিডিয়া ছড়াচ্ছে বিভ্রান্তি এবং তাতে কান দিচ্ছে সহজ-সরল দীনী ভাই। বর্তমান মিডিয়া ইসলামিক অঙ্গনের লোকদের মধ্যে খুব ভালো ভাবেই বিভেদের ধূম্রজাল ছড়াচ্ছে। ১৫-২০ মিনিট বা তারও দীর্ঘ আলোনার মাঝ খান থেকে 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে' পূর্বাপর সংযোগ ছাড়া বিচ্ছিন্নভাবে বিভিন্ন কথা তুলে ধরা হচ্ছে। এর সাথে এখন আবার যুক্ত হয়েছে আল্লামা বাবুনগরীর বক্তব্য।
এটা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে, বর্তমানে আমাদের সমাজে সালাফী ও আহলে হাদীস নামক ভাইদের একটি অংশ অনলাইনে ও অফলাইনে ইখতেলাফী বিষয়গুলোকে সামনে এনে কাঁদাছোড়া-ছুড়িতে লিপ্ত। তাদের মধ্যে কেউ কেউ তো নাউযুবিল্লাহ ইমাম আবূ হানিফা রহ. কে গালি দিতেও বাদ রাখেন না। কেউ কেউ আবার মাযহাব তথা ইমাম আবূ হানিফা রহ. এর কুরআন-সুন্নাহ থেকে ইজতিহাদকৃত মাসআলার উপর আমল করাকে 'আলাদা ধর্ম', মুশরিক ইত্যাদি বলে অপপ্রচার করতে থাকেন। সালাফীদের একাংশের শায়খ মতিউর রহমান মাদানী ও তার উগ্র ভক্তদের থেকে বিষয়গুলো ছড়াচ্ছে। এ বিষয়গুলোর প্রসঙ্গ আসায় দ্বিতীয় দিন সম্মেলনে বাবুনগরী দা. বা. বলেন -স্পষ্টভাবে বলেছেন, "আহলে হাদীসদের মধ্যেও উদার ব্যক্তিত্ব আছেন। তবে কিছু আছে যারা ফিতনা ছড়ায়। যারা ইমাম আবূ হানিফা রহ. কে গালি দিবে তাদের সাথে আমাদের কোনো খাতির নেই।"
এ বিষয়ে উভয় পক্ষেরই আরো সহনশীল ও দায়িত্বপূর্ণ আচরণ আবশ্যক।
কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে অনলাইনে যারা একের পর এক পোষ্ট, ষ্ট্যাটাস দিয়ে ভরে ফেলছেন, তাদের অনেকের কাছেই চিহ্নিত ও পরীক্ষিত হলুদ মিডিয়াগুলো আজ একেবারে ওহীর মতো গ্রহণযোগ্য হয়ে গেছে। তারা একের পর এক বীষ উদ্গীরণ করছেন সর্বজন শ্রদ্ধেয় ও পরীক্ষিত দীনের দায়ীদের ব্যাপারে। তাও আবার একেবারেই বিভ্রান্তি সৃষ্টিকারী উড়ো কথায়।
সব চাইতে বড় কথা হলো, নিজেরা উপস্থিত না থেকে বাইরের হলুদ মিডিয়ার কোনো সংবাদের কান কথায় আল্লামা আহমাদ শফী, বাবুনগরী দা. বা. এর মতো পরীক্ষিত, বিশ্বস্ত ও মুখলিস দীনের অক্লান্ত দায়ীদের ব্যাপারে জবান খোলার আগে আমাদের আরো চিন্তা করা দরকার। আমরা কার কথায়, কার ব্যাপারে অশোভনীয় মন্তব্য করছি?
আল্লাহ আমাদের আরো তাহকীক করে চলার তাওফীক দিন, আমীন।
বিষয়: বিবিধ
১৪৮৬ বার পঠিত, ৩২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তখন অনেক আলেমেরা সাইদী সাহেবের পাণ্ডিত্যকে কটাক্ষ করত। তামাসা করে বলত তিনি আর বিষয় পাননি।
দুঃখের কথ হল আজকে এই মুহুর্তে যেটা করনীয় ৩০ বছর পরে সেটা অনুধাবন করবেন শফি সাহেবের অনুসারীরা।
তাই আজ সকলেরই উচিত আন্তরিক উদারতা নিয়ে দীনের জন্য এগিয়ে আসা।
মহান আল্লাহ সকলকে বৃহত্তর ঐক্যের কথা চিন্তা করে কাজ করার তাওফীক দিন, আমীন।
এ বিষয়ে উভয় পক্ষেরই আরো সহনশীল ও দায়িত্বপূর্ণ আচরণ আবশ্যক। -এ বক্তব্যের সাথে শতভাগ সহমত।
এ বিষয়ে উভয় পক্ষেরই আরো সহনশীল ও দায়িত্বপূর্ণ আচরণ আবশ্যক। -এ বক্তব্যের সাথে শতভাগ সহমত।
নাকি ভাসুরের নাম নিতে লজ্জা লাগে??
এই তো হলো আপনাদের চরিত্র।
তবে আমার বুঝে আসে না, অতি আবেগের বশবর্তী হয়ে অনেকে হলুদ মিডিয়ার এক লাইন লেখা দেখেই কিভাবে ঐ সকল মহান ব্যক্তিদের ব্যাপারে মুখের তুবড়ি ছোটাতে শুরু করেন, যারা তাদের প্রায় পুরোটা জীবনই এদেশে ইসলামের জন্য ব্যয় করে যাচ্ছেন। যারা বাতিলের সিমাহীন নির্যাতনের স্বীকার কয়েছেন তবু আপোষ করেন নি -তাদের ব্যাপারে এতো অল্পতেই আমাদের ধারণা কিভাবে বদলে গেলো?
তাই, ইসলামপন্থী সব পক্ষেরই আরো সহনশীল ও দায়িত্বপূর্ণ আচরণ অত্যন্ত জরুরী। আল্লাহ আমাদের সহায় হোক।
সকল ইসলামি দলেরই উচিত অন্য ইসলামিদলের বিরুদ্ধে কটুক্তি ও সমালোচনা পরিহার করা। কারন বর্তমান অবস্থায় ইসলামের প্রশ্ন আগে। মাসায়লা মাসায়েল পরে।
হেফাজত সম্পর্কে সেদিন এক ভাই সতর্ক করেছিলেন, যেদিন হেফাজতের ঢাকার আমীর কাসেমী সাহেব এইচ টি ইমামের কাছ থেকে প্রাডো গাড়ী উপহার হিসাবে পেয়েছিলেন।তার পর থেকে হেফাজত আমাদের কে ঘুম পাড়ানোর ওয়াজ শোনাচ্ছিলেন।
আজ নতুন আরেকটি ওয়াজ শোনা গেল - হেফাজত আওয়ামীলীগ ভাই ভাই - ইসলামী আন্দোলনের রক্ষা নাই।
মাইন্ড করবেন মাওলানা -
প্রাডো গাড়ির গল্পের ব্যাপারে আপনি কতোটা নিশ্চিত?
এই দাবী করেতো তারা যে বন্ধু, তাইতো প্রমান করলেন। অথবা সমস্ত বিষয়কে গোলমেলে করে দিলেন?
টুপি উল্টালে হয় নৌকা আর নৌকা উল্টালে হয় টুপি।
এই অপশক্তি নিষিদ্ধের দাবীতে যদি হাম্বা লীগের বন্ধু হয়,তাহলে কথিত এই আহলে হদস গোস্ঠি তাদের প্রতি প্রোগামে আ,লীগের নেতাদেরকে অতিথি হিসাবে দাওয়াত দেয় কোন বন্ধুত্বের খাতিরে??
অথচ আজ পযর্ন্ত হেফাজাত তাদের কোন প্রোগামে আ,লীগের নেতাদেরকে অতিথি হিসাবে দাওয়াত করছে এর কোন প্রমান আছে আপনাদের কাছে??? মিয়া ভন্ডামী ছাড়ুন।
আমি আসলে যা বলতে চেয়েছি, তা সুন্দর করে বলেছেন উপরে ২নং কমেন্টে, @মোঃ ওহিদুল ইসলাম ভাই। আর আমার কমেন্টে একটা প্রশ্ন ছিল। এ প্রশ্ন আসবেই? এই দাবী দ্বারা আওয়ামীলীগকে বেনিফিসিয়ারী করা হয়েছে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন