যুগে যুগে 'বাগী'দের পরাজয়
লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ০৮ এপ্রিল, ২০১৪, ১০:১৩:৪৭ সকাল
‘বাগী’ সে যেই হোক না কেন সে ‘বাগী’ই। যতক্ষণ পর্যন্ত না সে এই ‘বাগাওয়াত’ (দাঙ্গাবাজী) থেকে বের হতে পারবে ততক্ষণ পর্যন্ত তার মধ্যকার প্রকৃত মনুষ্যত্ব আপন আলোয় উজ্জ্বীবিত হতে পারবে না। কোনো মানুষ একই সাথে পূর্ণাঙ্গ মুসলিম হবে আবার ইসলামের ব্যাপারে ‘বাগী’ও হবে এটি অসম্ভব। হয়তো আপনি মুসলিম হবেন অথবা বাগী হবেন। কোনটি হবেন এটি আপনার সিদ্ধান্ত। তবে দুনিয়া ও আখেরাতের প্রকৃত সফলতা ও বিজয় অর্জন করতে হলে আপনাকে অবশ্যই একনিষ্ঠ মুসলিম হতে হবে। বাগী হলে আপনি কখনই প্রকৃত সফল ও বিজয়ী হতে পারবেন না।
তবে হ্যাঁ, বাগী’রা সাময়িকভাবে কিছু পার্থিব উন্নতি সাধন করতে পারে। সাময়িক সময়ের জন্য বিশাল বিশাল শো-ডাউনও করে দেখাতে পারে। অনেক মানুষ জেনে বা না জেনে বাগী'দেরকে সমর্থনও করতে পারে। কিন্তু তার অর্থ এই নয় যে, প্রকৃতভাবে বাগীরাই বিজয়ী হবে। বরং দিবালোকের সূর্য মিথ্যা হতে পারে কিন্তু বাগী’রা যে পরাজিত হবে এতে কোনো সন্দেহ নেই। দেদ্বীপ্যমান সত্যের সাথে, ইসলামের পবিত্র আলোর সাথে বিদ্বেষপোষণকারী বাগাওয়াত’কারীরা যে কখনো সফলতার দেখা পাবে না তা তো বলাই বাহুল্য। কারণ বাগীরা যদি তাদের ভ্রান্ত বিশ্বাস আর মন্দ আক্রোশ বাস্তবায়নও করে নিতে সম হয় তাহলে তারা, খুনী, ডাকাত, লুটেরা আর অপরাধী হিসেবে চিরদিন নিন্দিত ও ধিকৃত হতে থাকবে। আর যদি দুনিয়াতেও ব্যর্থ ও পরাজিত হয় তবে তো আম ছালা উভয়টিই হারালো। একে আরবীতে বলে ‘খাসিরাদ দুনইয়া ওয়াল আখিরাহ।’
এটি একটি ঐতিহাসিক সত্য যে, অতীতে কোনো ‘বাগী’ই প্রকৃত সাফল্য ও বিজয় অর্জন করতে পারে নি। ইনশাআল্লাহ ভবিষ্যতেও পারবে না।
প্রিয়নবী সা. এর সময়ে এবং তারপর থেকে নিয়ে আজ পর্যন্ত ইসলামী ইতিহাসে অনেকগুলো বাগাওয়াত বা ইসলামের সাথে বিদ্বেষপূর্ণ বিদ্রোহের ঘটনা ঘটেছিলো। প্রথম দিকে বাগীদের প্রাবল্য এবং আধিক্য বেশি হলেও শেষ পর্যন্ত প্রায় সব ক্ষেত্রেই তারা পরাজিত হয়েছিলো।
স্বয়ং প্রিয়নবী সা. এর সাথে এমন গাদ্দারী করেছিলো একদল বাগী। ইতিহাস যাদেরকে আজো ‘উকল’ বা ‘উরাইনা’ নামক গোত্রের ‘বাগী’ বা ফিৎনা সৃষ্টিকারী, দাঙ্গাবাজ, খুনী হিসেবে ধিক্কার দিয়ে থাকে।
এই দাঙ্গাবাজ গোত্রের কিছু লোক মদীনাতে এসে রাসূলের কাছে কালিমা পড়ে মুসলিম হবার ভাব ধরেছিলো। এরপর তারা প্রিয়নবী সা. কে বললো, আমরা কৃষক নই, আমরা দুগ্ধপান করে বেঁচে থাকি। তারা মদীনার আবহওয়া নিজেদের অনুকূল মনে করলো না। তাই রাসূলুল্লাহ সা. একজন রাখালসহ বাইতুল মালের কতগুলো উট নিয়ে মদীনার বাইরে যেতে এবং সেগুলোর দুধ ও মুত্র পান নির্দেশ দিলেন। তারা যাত্রা করে হাররা নামক স্থানে গিয়ে ইসলাম ত্যাগ করার ঘোষণা দিলো এবং মুরতাদ হয়ে গেলো। এরপর তারা রাসূলুল্লাহ সা. এর দেয়া রাখালকে হত্যা করে উটগুলো ছিনতাই করে নিয়ে পলায়ন করলো।
মহানবী সা. এর কাছে এই খবর পৌঁছলে তিনি সাথে সাথে তাদের পিছু ধাওয়া করার জন্য সাহাবীদেরকে নির্দেশ দিলেন। তাদেরকে ধরে আনা হলে কঠিনতমভাবে তাদেরকে মৃত্যুদন্ড দেয়া হয়েছিলো। (বিস্তারিত সহীহ বুখারী, যুদ্ধ-বিগ্রহ অধ্যায়, হাদীস নং ৪১৯২)
রাসূলের ইন্তেকালের পর সাহাবায়ে কিরামের সময়ে ইসলামী ইতিহাসে মুসায়লামাতুল কাযযাব, আসওয়াদ আনাসী, ফিৎনায়ে ইরতিদাদসহ অসংখ্য বাগাওয়াত, দাঙ্গাবাজির ঘটনা ঘটেছিলো। কিন্তু রাষ্ট্রব্যবস্থায় ইসলামিক খিলাফত চালু থাকায় তখন আর ‘বাগী’রা তেমন সুবিধা করতে পারেনি। শিক্ষিত ও সম্ভ্রান্ত ব্যক্তিরা অন্যান্য জাগতিক বিষয়ের পাশাপাশি কুরআন এবং হাদীসের ব্যাপারেও সম্যক অবগত থাকার কারণে সহজেই তাদেরকে চিহ্ণিত করতে পেরেছিলেন। উদ্ভবের সাথে সাথেই তাদেরকে শনাক্ত করতে পেরেছিলেন। ফলে বিচণ জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন প্রথমেই। ফলে অল্পতেই তারা বিপর্যস্ত হয়েছিলো, মর্মান্তিকভাবে পরাজিত হয়েছিলো। ফিৎনা-ফাসাদ ও অন্যায়ের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, সমাজের গণ্য-মান্য ব্যক্তিবর্গ এবং রাষ্ট্রের প থেকে সহযোগিতা না পাওয়ার কারণে খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যেই তারা ধিকৃত ও লাঞ্ছিতভাবে ইতিহাসের আস্তাকূড়ে নিপ্তি হয়েছিলো।
পূর্বের লেখা:
‘বাগী’রা কখনো বিজয়ী হয় না -1
http://lighthouse24.org/blog/post/viewPost/?postid=711
চলবে...
বিষয়: বিবিধ
১২৪৭ বার পঠিত, ২২ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আর নাস্তিকদের জন্য শুধুই লাঞ্চনা আর অবমাননা।
আর এটা তো মাত্র দুনিয়ার। আর আখেরাতের আগুন ও আজাব আরো ভয়াবহ। যা তাদের জন্য অপেক্ষা করছে। সেগুলো স্পর্শ করবে ওদের একেবারে কলিজা পর্যন্ত...
আপনি এই মাত্র খবর পাইছেন?
এতোদিনে ইমরানরা তো সব চেটে-পুটে খেয়ে সাবার করে ফেলেছে!
তা ভাগ কি কিছু পেয়েছিলেন, না এমনিই ছাগলের তিন নং বাচ্চার মতো নাস্তিক শাহবাগীদের পক্ষে লাফাচ্ছেন?
মন্তব্য করতে লগইন করুন