চার-ছক্কা হই হই, লজ্জা-শরম গেলো কই? (পর্ব -১)
লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ২৪ মার্চ, ২০১৪, ০৯:২০:০৮ সকাল
বিশ্বকাপ টি-টুয়েন্টি ক্রিকেট খেলা উপলক্ষ্যে খুব জোরে শোরে বেশ কিছু প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। ক্রিকেট ম্যানিয়া আর ক্রিকেট ক্রেজ এই জাতির যুব-তরুণদের মাঝে ধীরে ধীরে খুব মজবুতভাবে ঢুকিয়ে দেয়া হচ্ছে। ক্রিকেট, ফুটবল ক্রেজ ও এ সম্পর্কীয় বেশ কিছু কথা আমার আগের ''বিজয়ের স্বপ্নে পরাজিত তারুণ্য'' শীর্ষক লেখায় উল্লেখ করেছিলাম অনেক আগেই। তাই আজ আর এ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনায় যেতে চাচ্ছি না। শুধুমাত্র এতোটুকু বলতে চাই, যারা ক্রিকেট আর ফুটবল নিয়ে মহাব্যস্ত তাদের বিবেকের কাছে কেবলমাত্র একটি জিজ্ঞাসা রাখতে চাই যে আপনারা ভেবে বলুন তো-
আমেরিকা, ইসরাইল, চীন, রাশিয়া এবং এমন প্রভাবশালী শীর্ষ আরো অনেক দেশ ক্রিকেট ও ফুটবলে এ পর্যন্ত কতবার বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হয়েছে?
আজকে আমরা যে সকল বাতুলতা সদৃশ্য খেলায় জেতাকে বিশ্বজয় বলে যুব-তরুণদেরকে বিভ্রান্ত করি, তাদের সামনে মিথ্যা বিজয়ের কল্পিত ফানুস ওড়াই এবং তাদেরকে মিথ্যা বিজয়ের স্বপ্ন দেখিয়ে পরাজিত ও অধ:পতিত তারুণ্যের দিকে ঠেলে দেই তাদের আজ উপলব্ধি করা দরকার উপরোল্লেখিত দেশ গুলো ক্রিকেট-ফুটবলে এগিয়ে না এসে তথ্য-প্রযুক্তি, বিজ্ঞান গবেষণা, ব্যবসা-বাণিজ্য ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্র গুলোতে নিজেদের মেধা, শ্রম, অর্থ ব্যয় করে তারা কি আসলে বোকামী করেছে?
মূল আলোচনায় আসা যাক।
ফুটবল-ক্রিকেট খেলা নিয়ে এতোদিনকার পাগলামী বা উন্মত্ততার তাও একটা লিমিট ছিলো। এবার কিন্তু সেই লিমিটের পর্যায়টিও 'প্রতিবেশী' হায়েনাবন্ধুদের সর্বাত্মক আইডিয়া, কৌশল ও চাতুরীপূর্ণ 'পুশ' কালচারের আড়ালে অতিক্রম করে গেছে বহুদূর। এবার তারা আক্রমণ করেছে উম্মাহর খুবই স্পর্শকাতর একটি স্থানে। খুবই সুক্ষ্ম কৌশলে। আবেগী শহুরে যুব-তরুণদের সস্তা আবেগকে পুজি করে।
হ্যাঁ। আমি ইদানিং শুরু হওয়া ফ্ল্যাশ মব নামক ফ্রি মাইন্ড নাচ-গানের কথাই বলতে চাচ্ছি। এর মাধ্যমে আমাদের বিশ্বকাপের এবারের আয়োজক ও ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে থাকা ভারতীয় দাদাবাবুদের পরিকল্পনা চোখ-কান বুজে আমাদের দেশে আজ যারা বাস্তবায়ন করছেন তারা কি একবারও ভেবে দেখেন নিজেদের সন্তানদের আগামী ভবিষ্যতের কথা?
একবারও কি চিন্তা করেছেন অপসংস্কৃতির আড়ালে তারা কি ভয়ংকর বিপদ টেনে আনছেন এ জাতীর ভাগ্যাকাশে?
একটি জাতির মাঝে অশ্লীলতা, বেহায়াপনার বিস্তার ততক্ষণ পর্যন্ত মহাসমারোহে করা যায় না যতক্ষণ না সেই জাতির সম্মানিত মা-বোনদেরকে তাদের সর্বোচ্চ নিরাপদ অবস্থান স্থল তথা ঘর-সংসার কিংবা ইসলাম অনুমোদিত পরিশীলিত কর্মক্ষেত্রের বাইরে টেনে আনা যায়।
একজন সম্মানিত মহিলাকে প্রথমেই তার পরিধেয় পোষাক খুলতে বলা যায় না। প্রথমেই তাদেরকে চূড়ান্ত অশ্লীলতায় ঠেলে দেয়া যায় না।
তাই এজন্য শয়তানের প্রয়োজন বিভিন্ন হিলা-বাহানা আর ঠুনকো অজুহাত ও উপলক্ষ্য।
এতো রেখে-ঢেকে কি আর চলা যায়?
একটু উদার ও ফ্রি মাইন্ড হলে সমস্যা কি?
মনের মধ্যে যেহেতু দোষ নেই তাই কিছু হবে না!
কাঠমোল্লাদের কথা মতো কি আর বিশ্ব চলে?
উন্নতি ও প্রগতির যুগে আরো উদার হতে হবে।
নিজের যোগ্যতা ও প্রতিভা সবার সামনে তুলে ধরতে হবে।
এজন্য প্রয়োজনে হিজাব, পর্দাকে পেছনে ফেলে স্বল্পবসনা হয়ে, পর-পুরুষের সাথে সামান্য ঢলাঢলী তেমন দোষের কিছু নয়।
বরং যেভাবেই হোক নিজেকে মেলে ধরতে হবে... (ইসলাম কি বললো তা পরে দেখা যাবে)
এভাবেই শুরু হয় একজন সম্মানিত নারীর পাপের পথে চলার সূচনা। এরপর এই সূত্র ধরে শয়তান তাকে ধীরে ধীরে টেনে নিয়ে যায় অশ্লীলতা, বেহায়াপনা আর পাপের স্বর্গরাজ্যে। এক সময় সে হয় প্রতারিত, প্রবঞ্চিত।
বাহ্যিক যেই জৌলুষ আর চাকচিক্যের মরিচিকার পেছনে পরে এক সময় নারী বেড়িয়ে এসেছিলো তার নিরাপদ আবাস ও অবস্থানের বাইরে, সামান্য সময় অতিবাহিত হওয়ার সাথে সাথেই সেই মরিচিকার সত্যিকার ভয়াবহ কুৎসিত রূপ তার সামনে উদ্ভাসিত হয়ে উঠে।
(...আগামী পর্বে সমাপ্ত)
বিষয়: বিবিধ
১৩০৪ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কাকে কি বলবো??
আগে আমি নিজে থেকে ঠিক হই।
আগে ভারত করতো ক্রিকেট নিয়ে এরকম । বাংলাদেশ তো এখন সেটাকে ছাড়িয়ে যাচ্ছে । ভাল কিছুতে তো পারে না , আকাজে সবাই একাট্টা ।
ভারত করছে ঠিক আছে , কারণ তারা সেসব করে চ্যাম্পিয়নও হয়েছে ।
বাংলাদেশের তো এরকম ছাগলের ৩নং বাচ্চার মত লাফানো সাজে না । যে দেশ বাছাই পর্বের সবচেয়ে দূর্বল দলের কাছেও হারে , গ্রুপে কোন নন-টেস্টপ্লেয়িং দেশ থাকলে যেখানে বাংলাদেশ দলের পেট লুজ হয়ে যায় - তাদের এরকম ''চার -ছক্কা হই হই'' করে নাচা মানায় না ।
শুধু ক্রিকেট কেন , বিশ্বকাপ ফুটবলে তো বাংলাদেশীদের এরকম ছাগলের ৩ নং বাচ্চার মত লাফালাফি রীতিমত বিরক্তিকর ।
ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবলে জীবনেও খেলতে পারবে কি না সন্দেহ যে দেশের , সেই দেশের মানুষরা ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবলের সময় কি পাগলামীই না করে ! বাড়িতে বাড়িতে ছাদের উপর প্রিয় দলের পতাকায় যেন আকাশ রঙ্গীন হয়ে ওঠে । একেকটা জায়গার চেয়ে একেকটা কম যায় না ।
সাভারের আমিন বাজার তো এর জন্য বিখ্যাত । সাভারে যাদের নিয়মিত যাতায়াত আছে তারা দেখতে পায় বিশ্বকাপের সময় সে এলাকার মানুষগুলোর এই সব বিশৃঙ্খলমূলক কাজ ।
এই পাগলামীর মাত্রা আরও বেড়ে যায় যখন ব্রাজিল/আর্জেন্টিনার কেউ ফাইনালের আগেই আউট হয়ে যায় । আত্মহত্যা করে বসে কেউ কেউ এর জন্য । এসবের কোন মানে আছে কি ?
বিশ্বকাপ ফুটবলের সময় বুয়েট বন্ধ ঘোষনা করা হয় । ক্লাশ ও পরীক্ষা কিছুই হয় না । অথচ খোদ ব্রাজিল , আর্জেন্টিনাতেও এরকম হয় না । এরকম আত্মবিধ্বংসী মূলক খেলা পাগল তো ব্রাজিল , আর্জেন্টিনাতেও খুঁজে পাওয়া যাবে না ।
যার খেলা তার খবর নাই , বাংলাদেশীদের ঘুম নাই ।
১৯৯৪ সালের ওয়ার্ল্ড কাপে ম্যারাডোনাকে বহিঃষ্কার করা হয়েছিল মাদক গ্রহনের দায়ে । এ নিয়ে বাংলাদেশে কি হুলস্থুল কান্ড !
সে সময়ে বিএনপির মেজর হাফিজ কোন এক সভায় ফিফাতে গিয়েছিলেন । সেখানে অন্যান্যরা ম্যারাডোনার এই ব্যাপারে বাংলাদেশীদের রিয়েকশনে বিস্ময় প্রকাশ করেছিল । যেখানে আর্জেন্টাইনরাই লজ্জিত হয়েছিল ম্যারাডোনার এই কাজে , সেখানে বাংলাদেশীদের এই কাজ সবাইকে বিরক্ত করেছিল ।
এরও আগে ১৯৯০ এর বিশ্বকাপের ফাইনালে যখন বিতর্কিত পেনাল্টি দিলেন রেফারী এডগার্ডো কোডেসাল জার্মানীর পক্ষে আর্জেন্টিনার বিপক্ষে , সে সময়ে এরশাদের কোন এক সাংসদ সংসদে কোডেসালের উপর নিন্দা প্রস্তাব এলেছিলেন ।
খেলাধুলার জন্য বাংলাদেশীদের এই অতিমাত্রায় পাগলামী আত্মবিধ্বংসীমূলক ।
আসলে পরাজিত মানসিকতার কিছু প্রতিক্রিয়া আমরা আমাদের সমাজে দেখি। অন্যকে অনুকরণ প্রবণতা তখনই তৈরী হয় নিজের স্বাতন্ত্র ও স্বকীয় উচ্চতা না থাকে।
ধন্যবাদ সুন্দর একটা লিখার জন্য।
মন্তব্য করতে লগইন করুন