আপন গুরুরাও এবার বাগীদের উপর ক্ষুব্ধ (খানিকটা রম্য হইলেও হইতে পারে)

লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ১২:০৯:২৬ দুপুর



গত দুই সপ্তাহ যাবত খুবই আলোচিত একটি স্থানে অনুষ্ঠিত কিছু অতি উৎসাহী ব্লগারদের স্থুল সিদ্ধান্তের কারণে এবার খোদ শয়তান নিজেই তার অনুচরদের উপর সীমাহীন ক্রুদ্ধ, ক্ষিপ্ত ও বীতশ্রদ্ধ হয়ে অবশেষে তাদের উপর থেকে নিজের সমর্থন ও সহযোগীতা প্রত্যাহার করে নিয়েছে। বাগী’দের ত্যাজ্যপুত্র করে চম্পট দিয়েছে। ফলে 'বাগী’ শিবিরে বিরাজ করছে সীমাহীন হতাশা।

এতোদিনের এতো এতো পরিশ্রম আর এতো এতো নগদ নারায়ণ বিতরণের পর, এতো এতো বিরিয়ানীর প্যাকেট, পুরিয়া আর বোতল সরবরাহ করার পর, আয়েশ বিনোদনের জন্য এতো এতো নায়িকা-নর্তকী আর পুরো মিডিয়াকে এফডিসি থেকে বাগী'দের কাছে নিয়ে আসা এবং শয়তান গুরুর পরামর্শে লাজ-লজ্জার মাথা খেয়ে এক নাগাড়ে টানা প্রায় দুই সপ্তাহ পর্যন্ত তাদেরকে অব্যাহতভাবে মিডিয়া কাভারেজ দেয়ার পরও যখন তারা কেবলমাত্র সামান্য কিছু অশ্লীল ও হিংসাত্মক শ্লোগান উদ্গীরণ করা ছাড়া আর কিছুই করে দেখাতে পারলো না, উপরন্তু প্রথম দিকে ইসলাম ও মহান আল্লাহ সম্পর্কে কিছু হুমকি-ধমকি দিলেও শেষ পর্যন্ত চাপে পরে নিজস্ব নাস্তিকতা থেকে পিছু হটতে লাগলো তখন শয়তানও এদের পেছনে আর সময় নষ্ট করার মতো বোকামী করতে রাজি হলো না।

একারণেই আজ নব্য 'বাগী’রাও প্রমাদ গুনছেন। ধীরে ধীরে মনোবল হারিয়ে ফেলছেন। এক সময় যারা হাক-ডাক দিতেন এখন তারাও আর সামনে এসে নেতৃত্ব দিতে সাহস করছেন না। ফলে অন্যান্যদের অবস্থা হয়েছে ‘ছাগলের তিন নং বাচ্চা’র মতো। হতাশা ও ধারাবাহিক ব্যর্থতার তীব্র যাতনায় অতিষ্ঠ হয়ে তারা আশ পাশের কচুগাছ কিংবা কলাগাছ খুঁজছেন তাতে ফাঁস নেবার আশায়। কিন্তু হায়! বিপত্তি এখানেও তাদের পিছু ছাড়ছে না! বেরসিক মানুষ অনেক আগেই তাদের ‘বাগী চত্তর’ থেকে সকল গাছ কেটে নেয়ায় আজ তারা বঞ্চিত হলেন সামান্য কলাগাছ থেকেও। এমনই বিপর্যয়কর অবস্থায় শয়তানের সেকেন্ড কমান্ডাররাও তাদেরকে আর আশ্বস্ত করতে পারছেন না। এর ফলে গত পরশু অনেকেরই হার্টে প্রবলেম হওয়া শুরু হয়েছে। একজন নাকি হার্ট এ্যাটাক করে ইন্তেকালও ফরমায়েছেন।

ঘটনার বিস্তারিত বিবরণে প্রকাশ, ‘থাবাবাবা’ নামক এক বিকৃত মানসিকতার নাস্তিক সাহেব কিছুদিন আগে নিজ বান্ধবী ও তার বন্ধুদের হাতে নিহত হওয়ার পর একদিকে এঘটনার জন্য ডানপন্থীদেরকে দোষারোপের রাজনীতি শুরু হয়। দীপ্ত প্রতিশোধ নেয়ার ঐতিহাসিক শপথও নেন অনেকে। অপরদিকে তার লাশের জানাযা দেয়া হবে না তার বিশ্বাসের মর্যাদা দিয়ে তাকে জানাযাহীনভাবেই কোথাও প্রথিত করা হবে তা নিয়ে শুরু হয় বাম শিবিরে এক তীব্র মতবিরোধ। এক্ষেত্রে মাননীয় ইবলিস (লা’নাতুল্লাহি আলাইহিহ) ও তার একনিষ্ঠ নেতৃবৃন্দের ইচ্ছা ছিলো এদেশে তাদের প্রথম গুরু ‘আহমদ শরীফে’র পর তাকে থাবাবাবা খ্যাত রাজিবকে দিয়ে নাস্তিক্যবাদের দ্বিতীয় উপমা সৃষ্টি করা। অন্যান্য বিষয়ের মতো লাশের জানাযা, দাফন, কাফন ইত্যাদিকেও জনসমক্ষে কটাক্ষ করে একে হাস্যকর ও অযৌক্তিক প্রমাণের উদ্যোগ নেয়া।

কিন্তু বিধি বাম! বাম এবং রাম বাবুদের এবার ঘোল খেতে হলো নিজ জুনিয়রদের হাতেই। নাস্তিক্যবাদে নতুন রিক্রুট হওয়া নবী ব্লগারগণ নাস্তিক্যবাদের এতো উচ্চমার্গের থিউরী ও চূড়ান্ত লক্ষ্যের ব্যাপারে এখনও ভালোভাবে দিক্ষিত না হওয়ায় তারা এক্ষেত্রে ঘোর আপত্তি জানালো। যেভাবেই হোক তারা রাজিবের জানাযা ও দাফনের ক্ষেত্রে ধর্মীয় রীতি পালনে বদ্ধপরিকর হলো। মাননীয় শয়তান ও তার বাম-রাম বাবুরা অনেক বোঝালেও, প্রতিবেশীদের থেকে হাওলাত করা গান আর কর্জ করে আনা বিশেষ প্রতিনিধিগণ উপস্থিত থেকে অনেক চেষ্টা করলেও নবীনদের অপরিপক্ক (!) বিবেক এতো কিছু বোঝার মতো অবস্থায় ছিলো না। তারা নাছোরবান্দার মতো জানাযা দিয়েই ছাড়লেন। প্রয়োজনে অজু না করে, সূর্য ডোবার মতো নিষিদ্ধ সময়ে, চার তাকবীরের স্থলে এক তাকবীর দিয়ে, নারী-পুরুষ একসাথে দাঁড়িয়ে, ইমামের সামনে-পেছনে এবং পশ্চিম দিকের পাশাপাশি উত্তর-দক্ষিণ দিকে ফিরে হলেও তারা জানাযা পড়ে তারপরই রাজিবের লাশ গ্রামে পাঠালেন।

ফলে ভীষণ ক্ষুব্ধ হলেন রাম ও বামের শীর্ষ বাবুরা। রুষ্ঠ হলেন শয়তান এবং তার একনিষ্ঠ সেবকেরা। নবীনদেরকে সরাসরি বিষয়টি বলতে গিয়ে গণধোলাই খাওয়ার কথা বিবেচনা করে এই অপমান তারা মুখ বুজেই সহ্য করে নিলেন এবং নিকট ভবিষ্যতে ভয়াবহ আযাবের অবশ্যম্ভাব্য নিদর্শন দেখে সদলবলে পলায়ন করলেন।

অবশ্য শয়তানের পৃষ্ঠ প্রদর্শনের ইতিহাস এই প্রথম নয়। অতীতেও সে বহুবার তার অনুসারী ও অনুচরদেরকে সামনে এগিয়ে দিয়ে অবস্থা বেগতিক দেখলে শেষ পর্যন্ত চম্পট দিয়েছে। শয়তানের এই স্বভাব সম্পর্কে পবিত্র কুরআন বলছে,

وَإِذْ زَيَّنَ لَهُمُ الشَّيْطَـٰنُ أَعْمَـٰلَهُمْ وَقَالَ لاَ غَالِبَ لَكُمُ الْيَوْمَ مِنَ النَّاسِ وَإِنِّي جَارٌ لَّكُمْ فَلَمَّا تَرَآءَتِ الْفِئَتَانِ نَكَصَ عَلَىٰ عَقِبَيْهِ وَقَالَ إِنِّي بَرِىۤءٌ مِّنْكُمْ إِنِّيۤ أَرَىٰ مَا لاَ تَرَوْنَ إِنِّيۤ أَخَافُ اللَّهَ وَاللَّهُ شَدِيدُ الْعِقَابِ.

অর্থ : “আর স্মরণ কর ঐ সময়ের কথা, যখন শয়তান কাফিরদের কার্যক্রমকে তাদের সামনে ভাল ও কল্যাণকর বলে উল্লেখ করেছিল আর বলছিল, আজ মানুষের মধ্যে কেউই তোমাদের উপর বিজয়ী হতে পারবে না। আর আমিও তোমাদের সাথে রয়েছি। অতঃপর যখন মুসলমান এবং কাফির উভয়ে পরস্পরের সম্মুখীন হলো তখন সে পিছনে সরে পড়ল এবং বলতে লাগল যে, তোমাদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নেই। আমি যা দেখতে পাই, তোমরা তা দেখতে পাও না। নিশ্চয়ই আমি আল্লাহকে ভয় করি। আর আল্লাহ শাস্তিদানে বড়ই কঠোর।” (সূরা আনফাল : ৪৮)

এজন্যই শয়তানের অনুসারী সকল বাগী’রাই ইনশাআল্লাহ শীঘ্রই পরাজিত হবে এবং পলায়ন করবে। আল্লাহ বলেন,

سَيُهْزَمُ الْجَمْعُ وَيُوَلُّوْنَ الدُّبُرُ.

অর্থ: “অচিরেই কাফিররা পরাজিত হবে এবং পৃষ্ঠপ্রদর্শন করবে।” (সূরা কামার : আয়াত ৪৫)

বিষয়: বিবিধ

১৭৬০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File