পজেটিভ ইসলামী দাওয়া কি ও কেন? ২য় পর্ব

লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ২০ জানুয়ারি, ২০১৪, ০২:৫১:১০ দুপুর



পূর্বের লেখা: পজেটিভ ইসলামী দাওয়া কি ও কেন? ১ম পর্ব

পূর্ব প্রকাশের পর:

২০১১ সালের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে কওমী অঙ্গনের অত্যন্ত শ্রদ্ধেয় আলিম মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী দা. বা. এবং আমাদের দেশের ইসলামী পত্রিকার অঙ্গনে খুবই পরিচিত ও অনেক আলোচিত ম্যাগাজিন 'মাসিক আদর্শ নারী' পত্রিকার মাধ্যমে ডা. জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে একটি তীব্র প্রতিবাদ ও সমালোচনা শুরু হয়। এই সমালোচনার মূল কারণ ছিলো ডা. জাকির নায়েক এবং তার পিস টিভিতে (যার অধিকাংশ আলোচনাকারীই সালাফী ও আহলে হাদীস আলিম) মুসলিম স্কলারদের বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে প্রচারিত মাসআলা-মাসায়েল সমূহে হানাফী মাযহাব ও মাসআলাসমূহের বিপক্ষে যে কোনোভাবে নিজেদের সালামফী মাসআলাসমূহকে তারজীহ তথা অগ্রাধিকার প্রদান এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে হানাফী মাসআলার দলীলসমূহকে গোপন করে বা এড়িয়ে গিয়ে দর্শক ও শ্রোতাদেরকে একতরফাভাবে আহলে হাদীসের মাসআলা ও আমল গুলোকেই একমাত্র সঠিক ও বাকি গুলোকে বেঠিক এবং আমল নষ্টকারী হিসেবে প্রচারণা।

এই প্রচারণা গুলো যখন পিস টিভির মাধ্যমে আমাদের দেশে সম্প্রচারিত হতে লাগলো এবং অনেকে হানাফী শ্রদ্ধাভাজন আলিম যখন মুসল্লিদের কাছে জিজ্ঞাসিত হতে লাগলেন তখন এটি তাদের জন্য একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি হিসেবে দেখা দিলো।

কিন্তু জাকির নায়েক বা সালাফীদের মতো হানাফী উলামায়ে কিরামের অনেকের মাঝেই মাসআলার দলীল তথা কুরআনের আয়াত ও হাদীস মুখস্তকরণের বিষয়টি কম থাকায় এবং যারা এ বিষয়ে দক্ষ ও অভিজ্ঞ তারাও বিষয় গুলোকে জনগনের কাছে সালাফী ভাইদের মতো দ্রুত ও কার্যকরভাবে প্রচার করতে না পারার -যেহেতু তাদের কারোই নিজস্ব মিডিয়া নেই এবং অন্য মিডিয়াতে যেখানে ইসলামই সংকুচিত সেখানে মাসআলার জন্য আলিমদের অংশগ্রহণও স্বপ্নের ব্যাপার) ফলে আমাদের দেশের ইসলামিক অঙ্গনে খুবই সুক্ষ্ম ও শক্তভাবে দু'টি বিভাজন রেখার সৃষ্টি হলো। একটি হচ্ছে জাকির নায়েক ও তার ভক্তবৃ্ন্দ। আহলে হাদীসের ভাইয়েরা তো আগে থেকেই ছিলো। কিন্তু মিডিয়ার অভাবে এবং কওমী আলিমদেরকে ওয়াজ, মাদ্রাসা ইত্যাদির জোড়ালো ভূমিকার কারণে তেমন অগ্রসর হতে পারছিলেন না। এবার জাকির নায়েকের পিস টিভির মাধ্যমে তারা জনগণের অনেক কাছে এগিয়ে গেলেন। বিভিন্ন মাসআলার সরাসরি কুরআন ও হাদীস থেকে দলীল উপস্থাপনে পারঙ্গমতা প্রদর্শনের মাধ্যমে জেনারেল তথা আধুনিক শিক্ষিত জনগোষ্টির এক বিশাল অংশও তাদেরকেই অধিক সঠিক বলে গ্রহণ করে নিতে লাগলেন।

এমতাবস্থায় মাওলানা নূরুল ইসলাম ওলীপুরী সাহেব দা. বা. এর তত্ত্বাবধানে লিখিত হলো একটি বই যার নাম 'ডা. জাকির নায়েকের আসল চেহারা'।

মুফীত আবূল হাসান শামসাবাদী সাহেব দা. বা. সম্পাদিত আদর্শনারী পত্রিকায় প্রতিমাসে ডা. জাকির নায়েক ও তার আলোচনাসমূহের উপর 'এক্সরে রিপোর্ট' বিভাগে প্রকাশিত হতে লাগলো বিশাল বিশাল আর্টিক্যাল ও গবেষণাপত্র।

এবার এই সকল প্রিন্টিং উপকরণের মাধ্যমে সারাদেশের প্রায় সকল কওমী উলামায়ে কিরাম অবস্থান নিলেন ডা. জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে। মুরুব্বীদের পক্ষ থেকে ডা. জাকির নায়েক সম্পর্কে যতোটুকু বলা হতে থাকলো, নিচের দিকের অনুসারী তথা ভক্তবৃন্দের জবান ও কলাম হতে বের হতে লাগলো তার চেয়েও শতগুণ।

একইভাবে ডা. জাকির নায়েক যেখানে সকল মাযহাবের ইমামের নামকে যথাযথ সম্মানের সাথে উচ্চারণ করে তাদের কিছু মাসআলায় আদবের সাথে নিজের দ্বিমত পোষণ করছেন সেখানে তারই কিছু অতি আগ্রহী ভক্ত-অনুসারীগণ মাযহাব তথা নির্দিষ্ট ইমামের গবেষণালব্দ মাসআলার উপর আমলকারীদেরকে আলাদা ধর্মগ্রহণকারী, ইসলাম থেকে খারিজ এমনকি নাউযুবিল্লাহ ইমাম আবূ হানিফা রহ.সহ অন্যান্য অনেক ইমামদেরকেও তাদের কেউ কেউ গালি দিতে লাগলো প্রকাশ্যে। ব্লগে এবং ফেসবুকেই মূলত: এর প্রচারণাটি সবচাইতে আক্রমণাত্মক রূপ লাভ করলো।

চলবে...

বিষয়: বিবিধ

২৬৩১ বার পঠিত, ১০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

164875
২০ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:০৪
গেরিলা লিখেছেন : এসলামি দাওয়াত ভালো বাট মউদুদি দাওয়াত ভালো না
২০ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৪:৩৯
119066
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : আপনাদের জন্য দীনী দাওয়াত থেকে ভালো মিলাদের দাওয়াত Winking Winking

সেখানে সাথে সাথে কিছু জিলাপি তো পাওয়া যায়!Tongue Tongue
২১ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:১৮
119313
মনসুর আহামেদ লিখেছেন : @গেরিল'আকবার ,স্বাধীনতা,জুলিয়া,
মারিয়া
পরীবানু 
মরুর মুসাফির 
পরীবানু ,সততার আলো
অশ্বথমা 
অপ্রতিরোধ্য স্বাধীন সমালোচক 
পরমা ,নীলমণীলতা
বিলকিস লায়লা
দস্তার
রুপবান
মুক্তিযুদ্ধ ৭১
দ্রাবীড় বাঙাল
লেয়লা ইসলাম
বিলকিস
বাংলা ৭১
ভিক্টোরিয়া
হেলেনা
পল্লব প্রভাতে
খালেদ
রুশো তামজিদ
বারাংগনা
মধুবালা
সখি
ফয়সাল১
মাঝি-মাল্লা, ,
লায়লার
লায়লা০০৭
রাতুল দাস
চকো চকো
সায়েদ-রিয়াদ
বিভ্রান্ত নাবিক
ফাজিল
অপ্রতিরোধ্য স্বাধীন সমালোচক 
মুক্তিযুদ্ধ ৭২
দ্রাবীড় বাঙাল
পিচ্চি পোলা
কাওসাইন হক
চাষা
jahed_ullah
নীরু
সাদা মন
সাদা মন
চোথাবাজ
আমি বিপ্লবী 
সততার আলো সকাল সন্ধ্যা 
এই নেরিকুত্তার এত নিক
164896
২০ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:০৪
ইমরান ভাই লিখেছেন : আপনার বক্তব্যর মাঝে যা সত্য আল্লাহ যেনো তা সবার সামনে সদা সর্বদাই নিয়ে আসেন। আর যা মিথ্যা তা জেন চিরদিন সবার সামনে মাথা নত করান। আমিন।

আপনি নিরপেক্ষ (পজেটিভ) দৃস্টিভঙ্গির নামে পক্ষপাত (নেগেটিভ) শুরু করে দিয়েছেন।
তাই আপনার লেখাকে পজেটিভ নামকরন করা ঠিক হয়নি।
২০ জানুয়ারি ২০১৪ বিকাল ০৫:০৯
119074
ইমরান ভাই লিখেছেন : ডা: জাকির নায়েক যখন বিধর্মীদের মাঠে শুয়ায় দেন তখন আপনারা হততালি দেন আর বাহবা জানান। বলেন "মাশাআল্লাহ কি জ্ঞান আল্লাহ দিয়েছেন"।

আর যখন বলেন, জোরে আমিন বলতে হবে, বুকের উপর হাত বাধতে হবে, রফউল ইয়াদাইন করা যায়, তখন জাকির নায়েক মুর্খ হয়ে যায়

কেন এই দুমুখো নিতি আপনাদের তা বড়ই ভাবার বিষয়।
২০ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৩
119090
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : আপনাদের মতো অতি আবেগী কিছু ভাইদের জন্যই অনেক ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা যায়।

বই – ডাঃ জাকির নায়েকের বিরুদ্ধে আরোপিত অভিযোগ ও অপপ্রচারের জবাব

আমার গত পোষ্টে আপনি একটি বইয়ের যে লিঙ্কটি দিয়েছিলেন সেটি কিন্তু আমারই লেখা বই। বইটি আপনি পুরো পড়েছেন কি না আমার জানা নেই।

না পড়ে থাকলে আবারও পড়েন। তারপর কথা বলবো। ধন্যবাদ।
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৮:১৮
119329
ইমরান ভাই লিখেছেন : ভাই, আমিও অতি আবেগী নই। তার ভুল হলে সেটা মানতে রাজি কেননা রসুল (সা) ছারা যেকারো ভুল হতেই পারে।

এর মানে এই নয় যে, জোরে আমিন বলতে হবে, বুকের উপর হাত বাধতে হবে, রফউল ইয়াদাইন করা যায় এই কথা বলার জন্য ডা জাকির নায়েকের বিরধিতা করতে হবে, কেননা তা আমার মাযহাবে নাই।

আপনার বই ও এই পোস্টের মাঝে দ্বন্দ আছে। বিদগ্ধ পাঠকরা নিশ্চই তা বুঝতে পারবেন।
২১ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৮:৫৮
119367
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : বইটি আপনি পুরো পড়েছেন কি না আমার জানা নেই।

না পড়ে থাকলে আবারও পড়েন। তারপর কথা বলবো। ধন্যবাদ।
164974
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৪৭
শেখের পোলা লিখেছেন : দুঃস্থ অনেক মহীলাদের কর্মঠ করার জন্য একটা এন জি ও তে বেশ কিছুদিন কাজ করেছি৷ ওখানে মহীলারা বলত; (আগেই মাফ চাই) "বিটিরাই বিটিগে হোগা মারে"৷ এখানে কি আলেমদের মাঝে তেমন কিছু হচ্ছে? সরি৷
২০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:০৪
119178
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : মতভিন্নতা ও মতবিরোধ সব শ্রেণী, পেশা, অঙ্গনেই সব সময় ছিলো আছে এবং থাকবে। হয়তো কম বা বেশি।

তবে ইসলামিক অঙ্গনের বিষয় গুলো একটু স্পর্শকাতর। তাই এ ব্যাপারে আমাদের একটু ভেবে মন্তব্য করা উচিত। যে কারো ব্যাপারে আমাদের অভিযোগ ও সমালোচনাও শালীনতা ও চূড়ান্ত ভদ্রতার মধ্যে থেকে হওয়া উচিত।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File