ইসলামিক মিডিয়া : সমস্যা ও সম্ভাবনা
লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ১৭ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৩:২৯:৫৫ দুপুর
চারিদিকে কেবল হলুদ মিডিয়ার ছড়াছড়ি। এটাও একটা পর্যায় ছিলো। এখন কোথাও হলুদ মিডিয়াও খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। সব হলুদ এখন লালে লাল। এখন সব লাল মিডিয়া। একদিকে তারা জালিমদের তোষামোদ করে নগদ নারায়নে লালে লাল হচ্ছে, অপরদিকে অসহায় মজলুম মানবতার রক্ত চুষে চুষে লালে লাল হচ্ছে। একদিকে মিথ্যার বেসাতি গড়ছে মাকড়সার সর্বগ্রাসী জ্বালের মতো। সহায়-সম্বলহীন রুগ্ন-মুমুর্ষ মানবতাকে লোভনীয় শিকারে পরিণত করে তার হাড্ডি-মাংস খুবলে খুবলে খেয়ে লালে লাল হচ্ছে, অপরদিকে কোথাও কোথাও আবার তারা মজলুম মানবতার শেষ অস্ত্র জুতার বারি খেয়েও লালে লাল হচ্ছে।
যাই হোক এই লাল আর হলুদ মিডিয়ার তীব্র দালালী আর অমানবিক কর্মকান্ডে পুরো বিশ্ববাসী বিশেষত: আমাদের এই বঙ্গবাসী আজ সীমাহীন অসহায়। ইসলামপন্থী মিডিয়ার কথা তো অনেক পরে, সেখান থেকে আরো সরে ডানপন্থী কিংবা নূন্যতম মানবতাবাদী কোনো মিডিয়ার পদচারণাও আজ নেই বললেই চলে।
আর এই অবস্থার কারণেই ডানপন্থী তথা ইসলামপন্থীদের আজ এতো দূরাবস্থা। অনেক আগে এক ভাই মন্তব্য করেছিলেন, 'হেফাজতের সমাবেশে শহীদ হওয়া শত-সহস্র মুসলিমদের তাজাপ্রাণ জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লিমনের এক পায়ের সমান গুরুত্ব ও দাবীও তুলতে পারে নি।
এক বিশ্বজিৎ শুধু ভিন্ন ধর্মের হওয়ার কারণে মিডিয়া অঙ্গন জুড়ে যেই সহানুভূতি আর সমর্থন পেয়েছে শত-সহস্র আব্দুল্লাহ আর আনোয়াররা সম্মিলিতভাবে তার সিকিভাগও পায় নি।
কিন্তু কেন?
কেনো এই শূন্যতা?
কেনো আজ লাখো-কোটি ইসলামপ্রিয় জনতার এই বিষন্নতা!
কেনো এতোদিনেও আমাদের এই প্রিয় মাতৃভূমিতে ইসলামপন্থী, ডানপন্থী কিংবা নূন্যতম পরিবেশবাদী মানবিক কোনো মিডিয়ার অভ্যূদয় ঘটলো না?
শতকরা হারে ৯০% মুসলিম অধ্যূষিত, পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ বলে গর্বের ঢেকুর তুলতে ব্যস্ত আমরা কেনো এতোদিনেও এদেশের আপামর জনতার কাছে ইসলামের কথা, ঈমান ও বিশ্বাসের কথা, ন্যায় ও কল্যাণের কথা এমনকি নূন্যতম মানবিক আহ্বান ও আবেদন পৌছাবার জন্য সামান্য কিছু মিডিয়াও গড়ে তুলতে পারিনি?
কোথায় আমাদের ভুল ছিলো? কোন চিন্তায় পশ্চাৎপদতা ছিলো? কোন ভাবনায় আমরা দ্বিধান্বিত ছিলাম? =সময়ের অববাহিকায় আজ আমাদের অতীত-বর্তমান প্রত্যাশা-প্রাপ্তি এবং নিজদেরে ব্যর্থতা গুলো খুঁজে বের করা প্রয়োজন বলে মনে করি।
চলবে...
বিষয়: বিবিধ
১৬৯৮ বার পঠিত, ৩০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মুসলমানদের মিডিয়াবিমূখীতার বিভিন্ন কারণ রয়েছে। ভারতীয় উপমহাদেশে আমাদের জাতির আলোর মশালধারী তথা আলেম সমাজের একটি বড় অংশই সেই বিংশ শতাব্দির শুরু থেকেই মিডিয়ার প্রতি নেতিবাচক চিন্তা চেতনার প্রভাব পড়েছে আজকের জাতির এই করুণ ধন্যতার উপর। অবশ্য আলেম সমাজের এই পশ্চাৎমূখীতার বেশ কিছু যৌক্তিক ও বাস্তবধর্মী কারণও ছিল। আলেম ওলামারা গল্প, নাটক, উপন্যাস ইত্যাদি সাহিত্যের এই শাখাগুলোতে সংগত কারণেই তেমন বিচরণ করেননি। তা তাদের পক্ষে শোভনীয়ও ছিল না। এর ফলে এসব সাহিত্যের যখন স্থির চিত্রায়ণের বৈপ্লবিক সূচনা হলো তখন খালি পোস্টে গোলা দেয়ার জন্য এগিয়ে আসলো তথাকথিত প্রগতিশীল নামের দুর্গিতিশীলরা। এই দুর্গিশীলদের খপ্পরে পড়ে যাত্রাতেই হুচোট খেয়ে পদশ্চুৎ হয়ে শয়তানের কর্মসূচী বাস্তবায়নের হাতিয়ারে পরিনত হলো এই শিল্পটি। এর পতিক্রিয়া স্বরূপ আলেম ওলামাদের তরফ থেকে ফতোয়া আসতে লাগলো সিনেমা দেখা হারাম, নাটক দেখা হারাম, টেলিভিশন দেখা হারাম, ভিসিয়ার দেখা হারাম। এর একটি বাস্তব কারণও ছিল। ওখানে যা প্রচার করা হচ্ছে তা দিতে জাতির প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তর পর্যন্ত সুষ্ঠ দিক নির্দেশনামূলক কিছুই দিতে পারছে না। পারবেই বা কি করে? ওখানে আগে থেকেই ঢুকে পড়েছে তথাকথিত প্রগতিশীলরা। যার ফলে আলেম সমাজের পক্ষ থেকে এসবের বিরুদ্ধে ফতোয়া আসাটা ছিল একটি অত্যন্ত সাভাবিক পতিক্রিয়া। একারণে এই জগতটাতে ঈমানদার মেধাবী লোকদের পদচারণা তেমন নিজের পরিবেশবান্ধব ছিল না। .........
আসলে এই বিষয়টাতে লিখতে গেলে অনেক লম্বা মন্তব্যে হয়ে যাবে। তাই বাকী অংশগুলো সম্মানিত ব্লগারের উপর ছেড়ে দিলাম।
আপনার লেখা গুলোও পোষ্ট আকারে দিন। ফেসবুকে আপনার আইডি কি যেনো ভাই?
শাব্দিক ভূল ছিল প্রথমে তাই আবার পোস্ট করলাম। আগের প্রতি মন্তব্যেটা মুছে দিতে পারেন।
কেমন যেনো নদীতে নেমে গোসল করবেন ঠিক আছে কিন্তু শরীরে যেনো পানি না লাগে!
আল্লাহ এই অভাব পূরণে সকলকে সম্মিলিতভাবে কাজ করার তাওফীক দিন, আমীন।
পুরোপুরি একমত হতে পারলাম না
আমরা অন্যের সমালোচনা করতে অনেক সময়ই সিদ্ধহস্ত।
কিন্তু নিজেরা কতটুকু কি করতে পেরেছি তা কি কখনো ভেবে দেখেছি!
ইসলামের দাওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের অবদানই বা কতটুকু যে আমরা অন্য যে কারো ব্যাপারে এতো বড় বড় প্রশ্ন তুলি? (যদিও সমস্যা সবার মধ্যেই কম-বেশি আছে)
যে সব প্রিন্ট ও ইলেক মিডিয়া ঘোলের স্বাদ দিচ্ছিল সেগুলিকেই যদি রাষ্ট্র কর্তৃক বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে দুধের স্বাদ নিয়ে যদি কেউ আসার চেষ্টা করে তাহলে তো মহা বিপদ হওয়ার কথা।
ধরে নিলাম, পরিপূর্ণ কোন মুসলিম মিডিয়া নিয়ে এলেন, কিন্তু তা টিকিয়ে রাখবেন কিভাবে? এই আলোচনাও কিছু জরুরী হয়ে পড়েছে।
একটি বিষয়ে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। ইসলামী আর ডানপন্থী দুটো কাছাকাছি বা একে অন্যের সহায়ক বা ডানপন্থী বলতে ইসলামপন্থীদের কাছাকাছি কিছু বলে অনেকেই মনে করেন। আপনার লেখাতেও তা ফোটে উঠেছে। আসলে ডানপন্থী তা নয় যা আপনি এবং আমরা অনেকেই বুঝে থাকি। ডানপন্থী শব্দটা বাম্পন্থীর বিপরীত। আসলে ডানপন্থী বলতে আমেরিকাপন্থী আর বামপন্থী বলতে রাশিয়াপন্থী বোঝানো হয় রাজনীতিতে। তাই ডানপন্থী মানে ইসলাম সমর্থক ধরণের কিছু বুঝার কোনো মানে হয় না। বিষয়টি আশা করি আপনি আরো একটু যাচায় করবেন আর আমাকেও জানাবেন। ধন্যবাদ আপনাকে।
তবে আমাদের দেশে অনেকে ইসলামপন্থীদের সস্থা সমর্থন ও ভোট পাওয়ার জন্য নিজেদেরকে ইসলামী মূল্যবোধের ডানপন্থী বলে প্রচার করে কি না!
ভাই, আপনারা এগিয়ে আসুন, আমরা পাশে আছি ইনশাআল্লাহ।
তয় আমার যেই ছবিটি দেখছো সেটি প্রায় এক যুগ আগের এতোটুকু বলতে পারি!
মন্তব্য করতে লগইন করুন