পজেটিভ ইসলামী দাওয়া কি ও কেন?

লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ০৮ জানুয়ারি, ২০১৪, ০৬:০৯:৩০ সন্ধ্যা



আলহামদুলিল্লাহ দিন দিন ইসলাম নিয়ে চিন্তা করেন বা করতে চান এমন লোকের সংখ্যা বাড়ছে। বর্তমানে মাদ্রাসা-মসজিদের গন্ডির বাইরে আধূনিক শিক্ষায় শিক্ষিত এমন এক বিশাল জনসংখ্যা ও জনগোষ্টি ইসলামের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে দীনের জন্য এগিয়ে আসছে, যা সত্যিই অকল্পনীয়।

আধূনিক তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে দীনী দাওয়াতের ক্ষেত্র ও সম্ভাবনা বর্তমানে বেড়েছে আগের চাইতে বহু গুণ। অফলাইনের পাশপাশি অনলাইনেও এখন প্রচুর মানুষের সন্ধান আমরা পাচ্ছি যারা একান্ত আন্তরিকতার সাথে ইসলাম সম্পর্কে জানতে চাচ্ছে, পড়তে চাচ্ছে। গবেষণা করতে চাচ্ছে এবং নিজেদের গবেষণালব্ধ ইলম অপরের সাথে শেয়ার করতে চাচ্ছে।

এটি একটি ভালো দিক। খুবই আনন্দের বিষয়। কিন্তু ইদানিং অফলাইনের পাশাপাশি অনলাইনেও যে বিষয়টি খুব জোড়ালোভাবে দৃষ্টি আকর্ষণ করছে তা হলো মুসলিম ব্লগার, অনলাইন এক্টিভিষ্টদের আভ্যন্তরীণ সামান্য কিছু মতপার্থক্যের কারণে একে অপরের বিরুদ্ধাচারণ, তাদের সাথে কেবল দ্বিমতপোষণকারী বিষয় গুলো নিয়েই পরে থাকা এবং নিজেদের মতের বাইরের লোক ও ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে নিজেদের মূল্যবান সময় ও গবেষণাকে ব্যয় করে আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণে সময় নষ্ট করা।

অনলাইনে রাজনৈতিক বিষয়ের পাশপাশি সবচাইতে যেই বিরোধটি আমরা বেশি প্রত্যক্ষ করছি তা হচ্ছে তাকলীদ ও গায়রে তাকলীদ তথা নির্দিষ্ট মাযহাব অনুসারী ব্যক্তিবৃন্দ ও নির্দিষ্ট মাযহাব অনুসরণ করতে ইচ্ছুক নন এমন ব্যক্তিদের আভ্যন্তরীণ বিরোধ ও বিবাদ। আরো পরিস্কার করে বললে বিষয়টি হচ্ছে আহলে হাদীস বা সালাফী মতবাদ আর মতাদর্শের অনুসারীদের সাথে হানাফী বা দেওবন্দী-কওমী ধারার উলামা, ত্বালাবা এবং মাযহাবকে আবশ্যক হিসেবে মনে প্রাণে বিশ্বাসকারী ও আমলকারী ব্যক্তিবর্গ।

ইন্টারনেট ও তথ্যপ্রযুক্তির বিশাল সুযোগের কারণে ডা. জাকির নায়েক এবং তার পিস টিভির মাধ্যমে সারা বিশ্বে বিশেষত আমাদের এই বাংলাদেশেও আহলে হাদীস তথা সালাফী মতবাদের ভাইয়েরা যেই বিশাল একচেটিয়া সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন, তার বিপরীতে আমরা হানাফী মাযহাব ফলোকারীগণ সামান্যও পাচ্ছি না। যার ফলে দেখা যাচ্ছে একটি মাসজিদের ইমাম সাহেব হানাফী মাযহাব অনুসারে নামায পড়ছেন, অন্যদেরকে পড়তে বলছেন কিন্তু তার মুক্তাদীদের মধ্যে অনেকেই ডা. জাকির নায়েক ও তার পিসি টিভিতে প্রচারিত বিভিন্ন অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আহলে হাদীস তথা সালাফী ভাইদের আমলের বিষয়গুলো সম্পর্কে খানিকটা জেনে তার ব্যাপারেই আগ্রহী হয়ে উঠছেন এবং মসজিদে ইমাম সাহেবদেরকে (যারা নিজেদের মাসআলার দলীলগুলো সালাফীদের মতো মুখস্ত বলে দিতে পারেন না) কখনো আদবের সাথে কখনো বা আদবের মাত্রা অতিক্রম করে ভদ্রতা বিবর্জিতভাবেই প্রশ্নের সম্মুখীন করছেন বা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে বসছেন। ইমাম সাহেব কিংবা আমাদের হানাফী ভাইদের প্রায় অধিকাংশও এই সকল অপ্রত্যাশিত আচরণ ও প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে অনেক সময় হিকমার বিষয়টি বিস্মৃত হয়ে উল্টো প্রশ্নকারীকেই পাল্টা আক্রমণ বা কটাক্ষ করে তাকেও চ্যালেঞ্জ করে বসছেন। ফলে দেখা যাচ্ছে অনেক এলাকা এবং অনেক মসজিদেই বিষয়টি নিয়ে শেষ পর্যন্ত একটি গ্রুপিং এর অবস্থা সৃষ্টি হচ্ছে। পক্ষ বিপক্ষ উভয়ই যেহেতু মনে করছেন যে তারাই হকের উপর আছেন তাই তাদের লড়াইও চলছে মরণপণ। শেষ পর্যন্ত যেই বিজয়ী হোক না কেন, সামান্য কৌশলের অভাবে আসলে আমাদের সবারই একটি ক্ষেত্রে পরাজয় হচ্ছে আর তা হলো আমরা আমাদের মূল লক্ষ্য ও গন্তব্য হতে দূরে সরে গিয়ে অপ্রয়োজনীয় ও কম গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নিজেদের মূল্যবান সময়কে খরচ করছি।

চলবে...

বিষয়: বিবিধ

২৪৩৪ বার পঠিত, ১৪ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

160472
০৮ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৫৪
বুড়া মিয়া লিখেছেন : ভালো লাগলো
০৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৩১
114906
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : আন্তরিক ধন্যবাদ।
160476
০৮ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:০০
এক্টিভিষ্ট লিখেছেন : ভাইরে দেশের ইসলাম, মুসলমান থাকবে কি না দুইদিন পর। আর অনেকে আছেন হানাফি, সালাফি নিয়ে। তবে সালাফিরা ইদানিং সৌদা রাজতন্ত্রের দালালী করছে যা নিন্দ্যনিয়
০৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৩১
114909
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : শতভাগ সহমত।
160486
০৮ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৭:১২
০৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৮:৩৫
114918
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : ভালো বই।
160552
০৮ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৯:০৩
শেখের পোলা লিখেছেন : গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোচনা চলতে থাকুক৷ এটাপ্রয়োজনও আছে৷ আমি আগেই বলে রাখি সেই আয়াতটি;' তায়ালাও ইলা কলেমাতিন, সাওয়াউম বাইনানা ও বাইনা কুম৷' যে বিষয়ে আমাদের মিল আছে আসুন তাই আগে ধরি পরে আলোচনা করে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে৷
২০ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৬
119092
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : সুন্দর মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ।

পরের পর্ব দেয়া হলো। আশা করি পড়ে দেখবেন।
160666
০৯ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ১১:১৩
ইমরান ভাই লিখেছেন :

وَقُلْ جَاء الْحَقُّ وَزَهَقَ الْبَاطِلُ إِنَّ الْبَاطِلَ كَانَ زَهُوقًا

বলুনঃ সত্য এসেছে এবং মিথ্যা বিলুপ্ত হয়েছে। নিশ্চয় মিথ্যা বিলুপ্ত হওয়ারই ছিল।


ধন্যবাদ, তবে আপনি নিরপেক্ষ থাকতে পারেন নাই (আমার মতে) কেননা আপানি বলেছেন "তার বিপরীতে আমরা হানাফী মাযহাব ফলোকারীগণ" এখানে আপনার এক পক্ষ অবলম্বনের চিন্হ পাওয়া যায়। যা আপনার লেখার শিরোনামের বিপরীত বলে আমি মনে করি।
২০ জানুয়ারি ২০১৪ সন্ধ্যা ০৬:৩৭
119093
মাই নেম ইজ খান লিখেছেন : পৃথিবীর কেউ নিরপেক্ষ নয়।

আমি আমার পক্ষের কথা স্পষ্টভাবে বলতে চেষ্টা করি। তবে ভিন্ন পক্ষের উপর অহেতুক আক্রমণকেও সমর্থন করি না।

আলোচনা-পর্যালোচনা হতে পারে। তবে তা যেনো হয় শালীন ও যোক্তিক।

আপনি আহলে হাদীস বা সালাফী যাই হন না কেন? সে বিষয়ে আমার অতি ভক্তি বা অতি বিরক্তি কিছুই নেই।

ধন্যবাদ।
160908
১০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ১২:১৮
সত্য নির্বাক কেন লিখেছেন : ভাইরে পতন যখন ঘনিয়ে আসে তখন পরস্পর কাদা ছুড়াছুঁড়ি করে।
160977
১০ জানুয়ারি ২০১৪ রাত ০৩:৫৯
ভিশু লিখেছেন : খুব সুন্দর আহবান... Happy Rose
160991
১০ জানুয়ারি ২০১৪ সকাল ০৭:১৭
সাইদ লিখেছেন : সবচাইতে বেশি প্রবলেমে আছি ভাই আমরা।যার একটু ভালো ভাবে ইসলাম বুঝে শুনে পালন করতে যাচ্ছি।সবার লক্ষই তো আল্লাহর সন্তষ্টি অর্জন।তাহলে এতো টানাটানি কেন বুঝলাম না.ভাই দুই দলের মধ্যে মূল পার্থক্য কোথায়?মাঝে মাঝে বিরক্ত হয়ে এইসব পড়ালেখা বাদ দিয়ে দিয়েছি।

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File