'আমি আল্লাহকে সব বলে দিবো!' -হে মুসলিম! কি জবাব দিবে শিশুটিকে কিয়ামতের দিন?
লিখেছেন লিখেছেন মাই নেম ইজ খান ০৬ জানুয়ারি, ২০১৪, ১০:৪৭:৪১ রাত
গত কয়েকদিন যাবত আমি বিভিন্ন কারণে ঠিক মতো ঘুমাতে পারছিনা। এই কারণগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে ড. আফিয়া সিদ্দিকার আমেরিকারন সোলজারদের হাতে গ্রেফতারের পূর্ব পরবর্তী ছবি, ইরাক-ফিলিস্তিনের কিছু শিশু-কিশোরদের রক্তাক্ত কচি মায়াবী চেহারা আর সর্বশেষ সিরিয়ার সেই শিশুটির অভিমানী মুখাবয়ব যে কিছুদিন পূর্বে বাশার আল হাসাদ নামক হিংস্র ফেরাউনের হামলায় মারাত্মক আহত অবস্থায় হাসপাতালের বেডে থাকা অবস্থায় বলেছিলো- 'আমি আল্লাহকে সব বলে দিবো!'
শিশুটির রক্তমাখা ছবিটির দিকে তাকালেই বোঝা যায় সে আল্লাহর কাছে কী বলবে।
একজন ব্লগার লিখেছেন, ‘আল্লাহর কাছে সে নালিশ করবে! যারা তাকে মেরেছে, যারা তাকে রক্তাক্ত করেছে, যারা তাকে বুলেট ছুড়ে মেরেছে, তাদের বিরুদ্ধে সে আল্লাহর কাছে নালিশ করবে। এছাড়া আর কীইবা করার আছে ছোট্ট এই শিশুটির!’
এর সাথে সাথে এই শিশুটি কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহর কাছে আমাদের মতো লাখো-কোটি অলস, উদাস আর অকর্মন্য মুসলিমদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ দায়ের করবে। শুধু এই একটি শিশু নয়, বরং বিগত বছর গুলোতে মুসলিমদের জিহাদ বিমুখতা এবং ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপহীনতার কারণে কাফির মুশরিকদের হাতে যতো হাজার, লাখো অবুঝ শিশু-কিশোর শাহাদাত বরণ করেছে, যারা হয়তো দুনিয়া থেকে যাবার সময় তাদের এই অভিমান আর যাতনার বিষয়টি বলে যেতে পারে নি তারাও কিন্তু কিয়ামতের দিন আমাদের বিরুদ্ধে মহান আল্লাহর কাছে একই সুরে, একই শব্দ ও বাক্যে অভিযোগ দায়ের করবে যে-
হে আমাদের প্রতিপালক!
কাফিররা যখন আমাদেরকে প্রহার করছিলো, অস্ত্র দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে রক্তাক্ত করছিলো, বুলেটের আঘাতে আমাদের দূর্বল দেহগুলোকে ক্ষত-বিক্ষত করছিলো, বোমা আর মিসাইল মেরে আমাদেরকে টুকরো টুকরো করছিলো, আমাদের ঘর-বাড়ি সব মাটির সাথে মিশিয়ে দিচ্ছিলো, আমাদের মা-বোনদেরকে আমাদেরই সামনে হত্যা-ধর্ষণ করছিলো, আমরা যখন সবাই আর্ত চিৎকার করছিলাম, কাঁদছিলাম তখন কেউ আমাদের কান্না শোনে নি। আমাদের আর্তনাদে কেউ এগিয়ে আসেনি। আমাদের চোখের পানি মুছে দিতে, প্রবাহিত রক্ত মুছে দিতে কিংবা আমাদের ক্ষত গুলোকে উপশম করার জন্যও কেউ কোনো ভূমিকা রাখে নি।
সারা পৃথিবীর মুসলিমরা আমাদের খবর গুলো প্রতিদিন বিভিন্ন পেপার-পত্রিকায় দেখতো, রেডিও-টিভিতে শুনতো ও প্রত্যক্ষ করতো, ইন্টারনেটের মাধ্যমে প্রতিনিয়ত আমাদের সম্পর্কে আপডেট সব নিউজও তারা পেতো, কিন্তু তারপরও তাদের কাছে আমাদের মতো অসহায় হাজার-লাখো শিশু-কিশোরের রক্তাক্ত দেহের চাইতেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিলো জাষ্টিন বিবার কিংবা হলিউডের ভারগুলো।
আমাদের টুকরো টুকরো ছিন্ন বিচ্ছিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ তাদের প্রাত্যহিক জীবনে কোনো ছন্দ-পতন না ঘটালেও মেসি-রোনাল্ডোদের খেল-তামাশা, আর যিনা-ব্যভিচার ও তাদের বান্ধবীদের সাথে সময়কাটানোর প্রতিটি খুঁটি-নাটি অপকর্মগুলো নিয়ে তারা প্রতিদিন খোশ-গল্পে মেতে ছিলো।
হে মুসলিম!
কি জবাব দিবে সেদিন রব্বে কায়েনাতের কাছে?
যখন ইরাকের আবূ গারিব কারাগারে মার্কিন হায়েনাদের হাতে ধারাবাহিকভাবে নির্যাতিত, ধর্ষিত তোমারই মুসলিম বোন ফাতেমা কিংবা নিউরো সায়েন্টিষ্ট মুসলিম বিজ্ঞানী ড. আফিয়া সিদ্দিকা মহান প্রভূর আদালতে তোমার বিরুদ্ধ অভিযোগ দিবে। যখন তারা বলবে-
হে আমার প্রতিপালক! যখন মার্কিন হায়েনারা আমাদের দেহগুলোকে হিংস্র হায়েনার মতো ছিড়ে-ফেড়ে নষ্ট করছিলো, আমাদের গর্ভ তাদের জারজদের দ্বারা পূর্ণ করছিলো তখন আমাদের কোনো মুসলিম ভাইই আমাদের জন্য এগিয়ে আসেনি। একদিকে আমরা প্রতিদিন একাধিক বার কারাগারের অন্ধ প্রকোষ্ঠে ধর্ষিত হচ্ছিলাম, অপরদিকে আমার মুসলিম ভাইয়েরা টিভি-সিনেমা, ইন্টারনেটের রঙ্গিন ভুবনে সানি লিওনদের দেহাবয়ব আর ক্যটরিনা-অ্যাঞ্জেলিনাদের দেহব্যবসা দেখে মাস্তি করছিলো!
হে মুসলিম!
কিয়ামতের সেই দিন, সেই কঠিন দিনে কি জবাব দিবে তুমি এই মুসলিম শিশুটির কাছে? কি জবাব দিবে এমন হাজারো, লাখো মাসুম বাচ্চাদের কাছে?
বিষয়: বিবিধ
২৭৪৭ বার পঠিত, ৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
জানি না কি বলবো.........
শুধু জানি "আল্লাহর সাহায্য অতি নিকটে"
আমাদের সবাইকে সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়ার তাওফীক দাও।
কোন জবাব জানিনা ভাই!
কিন্তু যখন কোনো মাসুম মুসলিম শিশুর রক্ত ঝরতে দেখি তখন কেবল যেনো আর সব ভুলে গিয়ে একটি কথাই মনে হয়, যদি ঐ সকল হায়েনাদের বুক থেকেও এমন রক্ত ঝরানো যেতো, তবে হয়তো কিছুটা হলেও মাসুম বাচ্চাদের রক্তপ্রবাহ কমতো!
কিছুদিন আগে ওবামা হোয়াইট হাউজে একটি টার্কিকে যবাই না করে 'থ্যাঙ্কস গিভিং ডে' পালন করেছিলো। পশ্চিমা মিডিয়াগুলো এই নিয়ে ওবামা বন্দনায় আহা-উহু করেছিলো অনেক দিন।
অথচ এমন অজুত মুসলিমদের রক্ত প্রবাহ বন্ধের জন্য কোনো ভূমিকা নেই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন