আমরা শিখবো কার কাছ থেকে ?
লিখেছেন লিখেছেন বিবেকের কান্না ০৬ মার্চ, ২০১৩, ১০:২২:৫৯ সকাল
জাতি হিসাবে আমাদের অবস্থান বর্তমান যুগে কোন পর্যায়ে এবং সে পর্যায় থেকে আমাদের প্রচেষ্টা কি উন্নতির দিকে নাকি অবনতির দিকে।
মানুষের দায়িত্ববোধ আর রুচিবোধ ক্রমান্বয়ে উন্নত হবারই কথা এবং স্বাভাবিকভাবে সেটাই আমাদের কাম্য।
কিন্তু স্তম্ভিত হতে হয় অনলাইনে লেখার অবাধ স্বাধনীতায় মিথ্যা আর কুৎসিত বাক্যের ছড়া ছড়ি দেখে।
এ বিষয়টি বেশী পরিলক্ষিত হয় ব্লগ, পত্রিকা বা ফেসবুক পাঠকদের মন্তব্যের মধ্যে।
যদিও ব্লগের সঞ্চালকগন বা অনলাইনে পত্রিকার সম্পাদকগন চেষ্টা করেন এগুলো নিয়ন্ত্রন করতে।
এসব মন্তব্যে দেখা যায় কিছু কিছু পাঠক এমন কিছু কুৎসিত, অশ্লীল শব্দ ব্যবহার করেন যা আমার পড়তেই রুচিতে বাধে এবং আমি ভাবি কিভাবে একজন মানুষের মাথায় এত জঘন্য ধরনের চিন্তা আসে ! সত্যিকার অর্থে সুস্থচিন্তার একজন মানুষ কখনো অশ্লীল শব্দ লেখা তো দুরে থাক চিন্তাও করতে পারে না।
আদর্শগত দিক থেকে বা রাজনৈতিক ভাবে বা ব্যক্তিগত ভাবেই যদি প্রতিপক্ষের কোন বিষয় ভালো না লাগে তাহলে কি প্রতিবাদের ভাষাটা শালীন বা মার্জিত হতে হতে পারে না ? আমাদের অশালীন আচরনের কারনে কি অশালীন সংস্কৃতিরই লালন করা হচ্ছে না ? তাহলে আমরা জাতি হিসাবে সভ্য সংস্কৃতির চর্চা শুরু করবো কবে ? আর আমাদের রুচি বোধের বা উন্নয়নই হবে কবে ?
আমরা যারা আজ সমাজ পরিচালনা করছি তাদের পরিবর্তনটা দরকার সবার আগে। কেননা রাষ্ট্রের বা সমাজের অধিপতিদের কার্যকলাপ সাধারন জনগনের মধ্যে খুব দ্রুত সংক্রমিত হয় এবং মানুষ তা অনুসরন করতে শুরু করে। এমন কি তাদের বিষয় গুলো উদাহরন হিসাবেও সমাজে প্রতিষ্ঠা পাই। আমরা একটু গভীরে চিন্তা করলে দেখতে পাবো দেশের শীর্ষ স্থানীয় নেতৃবৃন্দের আচরন বা ভাষাও সংযত নয়। তাদের প্রতিবাদের ভাষা ভদ্রতা বা সভ্যতার গন্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় এবং তাঁরা প্রতিনিয়ত সেটাই চর্চা করে যাচ্ছেন । তাদেরকে থামানোর কেউ নেই। তাদেরকে শিখানোরও কেউ নেই। স্বাভাবিক ভাবে বড়দের পথ অনুসরন করে ছোটরাও একই আচরন করতে উদ্যেগী হয় এবং তারই প্রতিফলন ঘটে থাকে। তাহলে আমরা শিখবো কার কাছ থেকে ?
আসল ব্যাপার হচ্ছে আমাদের সমাজে বা রাষ্ট্রের মধ্যে অশালীন কথা বলা, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া, ক্ষমতার দাপটে প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করা, জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে নিজ স্বার্থ হাসিল করা ইত্যাদি খুব হরহামেশাই চর্চা হচ্ছে। যারা সমাজের দায়িত্বশীল পর্যায়ে রয়েছেন তারাও এসব থেকে মুক্ত নন। বরং কোন কোন ক্ষেত্রে তারা আরো বেশী তৎপর। সমাজের রন্ধে রন্ধে এগুলো এখন ছড়িয়ে পড়ছে। রাষ্ট্রের অধিপতিরা যখন এগুলো লালন করেন তখন সাধারন মানুষের সুবিচার পাবার আর কোন পথ খোলা থাকে না, যা আমরা ইতিমধ্যে প্রত্যক্ষ করতে শুরু করেছি। এটা আমাদের জাতির জন্য খুবই দুর্ভাগ্যের বিষয়। আমরা যত তাড়াতাড়ি বিষয়গুলো উপলব্ধি করতে শিখব ঠিক তত তাড়াতাড়ি আমাদের মুক্তির সুপথ প্রশস্ত হবে আশা করি।
বিষয়: বিবিধ
১০৯১ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন