কেবল ভাবি...

লিখেছেন লিখেছেন বার্ড মুসলিমাহ ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০১:২৬:৩৭ দুপুর

মাঝে মাঝে খুব অবাক লাগে, প্রোটন ইলেকট্রনের মত কত ক্ষুদ্র জিনিস পৃথিবীতে আছে। আবার ইউনিভার্সটাই না কত বড়। অবাক বিস্ময়ে অনুভব করি হিউম্যান ব্রেইন। সবচেয়ে আজব লাগে এই জিনিসটা। মানুষের জীবনের গতি প্রকৃতি এবং ফিলসফি সবই এই জিনিসটা নিয়ন্ত্রণ করে, এজন্যই আল্লাহ আমাদের সৃষ্টির সেরা জীব বলেছেন। অবশ্য শয়তান সাইন্স বুঝেনা, বুঝলে সে ঠিকই মানুষকে সিজদা করতো। সে আগুনের তৈরি, যার পেটের ভিতরে হিলিয়াম আর হাইড্রোজেন, যা কিনা খুবই হালকা আর আমরা মাটির। কত ভারি ভারি ইলেমেন্ট আছে- অক্সিজেন, আয়রন এবং আরও অনেক।

এই যে বিশাল পৃথিবীতে আছি, প্রতিদিন কত মানুষের সাথে ভাব হয়, আবার বিধেয় নেই একসময় অবধারিত ভাবেই। ছোটবেলায় খেলাধুলা ছাড়া কিছুই বুঝতাম না। ক্লাস ফাইভ সিক্স পর্যন্ত পুরোই বাচ্চাদের খেলা খেলেছি। গ্রামে যাদের সাথে খেলতাম ধীরে ধীরে সবার সাথে বিচ্ছিন্ন হতে থাকলাম। নাহ, তারা দূরে সরে যায়নি, বরং অন্য কারো ঘরণী হয়ে বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে। একজন ছিল গ্রামের প্রতিবেশী, তার সাথে অনেক খেলতাম। হঠাৎ বছর-খানেক আগে শুনলাম তার এস এস সি পরীক্ষার প্রথম দিনেই সে গ্যাং রেইপড হয়। আমি স্তব্ধ।

মেয়েটি এখন দিশেহারা এক পাগল। হয়ত গ্রামের পথে পথে ঘুরে বেড়াবে কদিন পরেই। অন্যান্য সব পাগলের মতই তার ইতিহাস নিয়ে মুখরোচক গল্প ছড়াবে। খুব রসিয়ে রসিয়ে মধ্যবয়স্ক বিবাহিত লোকগুলো সেই গল্প একান ওকান করবে।

চোখের তারায় কেবল ওর চেহারাটাই ভাসে। মানুষ বোধহয় নিজেকে নিয়ে অনেক বেশী সময় ব্যস্ত থাকলেও নিজের চাওয়া পাওয়াগুলোর দিকেই থাকে নজর, যার ফলে নিজেকে চেনাটা আর হয়ে ওঠেনা। অনেক সময়ই নিজের ভেতরের মানুষটাকে নিয়ে হালকা রিসার্চে নামি। খুঁজে দেখার চেষ্টা করি অন্যদের সাথে আমি কি আচরণ করেছি এবং তাদের আচরণে আমার কি ধরণের রিয়েকশন ছিল... নিজের দৃষ্টিভঙ্গী এবং সেই অনুপাতে অন্যদেরটা। সবকিছুই লিখে রেখেছিলাম ৪ মাসের জন্য। এভাবেই কেটে গিয়েছে কতগুলো দিন।

আজ আমি কত বড়। এক পা দু পা করে স্মৃতিগুলোকে সঙ্গী করে এগিয়ে চলছি। আমাকে যারা শক্তি যোগাত তাদের মধ্যে অনেকেই জীবন থেকে হারিয়ে গেছে। তবুও এখনো কেউ কেউ ছায়ার মত সঙ্গী হয়ে থাকে। ভুল ধরিয়ে দেয় প্রতিক্ষণে, আমাকে ফিরিয়ে আনে আলোর দিকে। যখন আমি খুব আবেগী হয়ে যাই- বাস্তবতা শেখায়। এরকম মানুষগুলোর কাছে আমি সীমাহীন কৃতজ্ঞ।

আমি কেবল ভাবি... মানুষ মানুষকে কি করে কষ্ট দেয়? আমিও বুঝি নিজের অজান্তে এভাবেই অনেক কেই কষ্ট দেই??

ভাইয়ে ভাইয়ে দ্বন্দ্ব, কেবল মাত্র সম্পদের জন্য।

পথে যে গাছগুলোর ছায়ায় প্রতিদিন হেঁটে যাই, সেগুলোর মমতার কথা ভেবেই আমার অশ্রু নামে, তাদের মায়াতেই জরিয়ে যাই। আর গ্রামের পুকুরের যে পুঁটিমাছগুলোকে ভেংচি কাটতাম নিয়মিত ওদের জন্যও এই এতদূর বসে মায়া হয়। হয়ত কারো পেটে চলে গেছে এত দিনে সেখানে জন্মেছে তাদের বংশধরেরা...

শতাব্দীর কাঁধে ভর করে এভাবেই আমাদের এগিয়ে চলা।

বিষয়: সাহিত্য

১০৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File