সাথীর জীবন
লিখেছেন লিখেছেন আইনজিবি ০৮ অক্টোবর, ২০১৩, ০৯:৩০:২৮ সকাল
এ বি সিদ্দীক
মা, আমার এই জীবন টা মনে হয় আর বেশি দিন থাকবে না। কি হবে বেচে থেকে? আমি তো কোন দিন তোমাদের মনে দিতে পারলাম না একটু সুখ ও শান্তি।সেই জন্মের পর থেকে কখোন দিতে পারনি মায়ের ভালবাসা যা দিয়েছো তা শুধু লোক দেখানোর মতো। আর বাবা সে তো তার কাজ নিয়ে এতো বেশি ব্যাস্ত যে, আমি আজ এতো বড়ো হয়েছি নিজেই হয়তো যানে না।তোমরা তোমাদের নিয়ে এতো ব্যাস্ত,আমার মতো একজন মেয়েকে নিয়ে তোমাদের ভাবার সময় কোথাই, তোমরা আমাকে কি দিতে পেরেছো মা বাবার আদর না ভালোবাসা।দিতে পেরেছো কিছু দুঃখ আর কষ্ট,শেষ করে দিয়েছো আমার সাজানো বাগান টাকে। জীবন টাকে জীবন সাথী করে পাবার স্বপ্ন, আমার কোন ভুল ছিল না? যদি ভুল হয়েই থাকত তবে কেন তোমারা আমাকে আগে থেকেই ভালোবাসা দিয়ে ওই পথ থেকে সরিয়ে আনতে পারনি এটার জন্য কি আমি দায়ি? আমি জানি তোমরা এর জবাব টা দিতে পারবেনা কারণ এটার জন্য তোমরা দায়ি, দায়ি এই ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থা।মা আজ আমার জীবনে জীবন নেই ,আর এটার জন্য দায়ি তোমরা। কথা গুলো মনে মনে যখোন বলছিল চোখের নোনা জ্বলে নিজের বালিস টা ভিঁজে একাকার । প্রতি দিন রাতে যখন ঘুমের ঘরে যাই তখন থেকে শুরু। কান্না তার এখন জীবন সঙ্গী, কান্না না হলে যে এখন তার ঘুম হয় না। চাকরি জীবি বাবা মার এক মাত্র সাথী, ছোট বেলা থেকেই সে পাই নি বাবা মার আদর আর ভাল বাসা। নিজের এমন সময়ে সব থেকে বেশি যে জড়িয়ে রয়েছে তার চাচাত ভাই জীবন ,সেই ছোট থেকেই এক সাথে খেলা ধুলা হাসি কান্নার মাঝে বেড়ে উঠেছে , ছোট বেলাতে এই বাড়ি সেই বাড়ি।বর বধু সহ কতোনা খেলা খেলতো তারা। হারিয়ে যেত খেলার রাজ্যে।একবার নিজেরা বর বধু সেজে যখন খেলছিল,মা তো দেখে কি হাসি,এতটুকু ছোট্ট মুখটা লজ্জায় লাল হয়ে উঠল। জীবনতো প্রায়
বলত সাথী আস আমরা বৌ বৌ খেলি। তখন ও জানতে পারি নি যে একদিন এই সর্বনাশা থেলাই কাল হয়ে দাড়াবে
দুটি কোমল হ্দয়। হ্যাঁ তাই হলো সাথী যখন ষষ্ঠ শ্রেনীতে পড়ে তখন তার চাচাত ভাই জীবন তাকে শোনাই ভালবাসার কথা প্রস্তাব দেই ভাল বাসার, ভয়ে কেপে উঠে সাথীর কচি হ্দয়। সে কোন ভাবে রাজি হয় না জীবনের কথাই, দিন যাই রাত আসে আর ভাবতে থাকে সাথী, কি হবে যদি বাবা মা জেনে যাই । পারবো কি আমরা এই সংগ্রামে জয়ী হতে, এক সময় নিজের অজান্তে জীবনের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যাই সাথী। জীবন সাথীকে ভালোবাসে অনেক আগে থেকে, যখোন তারা ছোট্ট বেলাতে নিজেরা বউ বউ খেলত তখন থেকে,নিজেকে এক দিন সাথীর জীবন সঙ্গী করে ঘরে তোলার ইচছা তো সেই ছোট্ট বেলা থেকেই। এমন করে চলতে থাকে অনেক দিন, নানা জন নানান কথা বলে তাতে কান না দিয়ে নিজেদের মতো করে এগিয়ে চলে দূজন। অনেকেই তাদের বলতো তোমাদের বেশ মানাবে,মনে মনে বেশ খুশি হতো তারা নিজেদের কে আর কাছে পেতে চায় তারা। না তাদের সেই স্বপ্ন বেশি দিন থাকেনি, এক দিন এই কান সেই কান করে জেনে যাই দুটি পরিবার। কালো অন্ধকার নেমে আসে তাদের জীবনে।
হঠাৎ জীবনের বাবা মারা যায়, পরিবারে অর্থনৈতিক সমস্যাতো লেগেই থাকে এর মাঝে ও তারা এগিয়ে চলে আপন
পথে, হঠাৎ সব কেন যেন এলো মেলো হয়ে গেল যখন দশম শ্রেনীতে পড়ে সাথী,কোন ভাবে এই বিয়েতে রাজি না ।অতি কঠোর ভাষায় জানাতে ভূল করেনি।সেই থেকে চোখের পানি জীবনের একটি নিত্য দিনের উপহার হিসেবে চলে আসছে।প্রথমে কোন ভাবে মানতে পারিনি সাথী।জীবন এস এস সি পাশ কর কলেজে ভর্তি হয়
পাশা পাশি একটা চাকুরী করে পরিবার চালানোর গুরুভার কাঁেধ নিয়ে। সাথী কলেজে পড়ে এখনো সকাল বেলা পথ চেয়ে থাকে কখন জীবন তার বাড়ির পাশে এসে বলবে সাথী চল আমরা আবার খেলতে যাই । না তা আর হয়না রাত যায় দিন আসে শুনা যায়না জীবনের সেই মধুর ডাক, সাথী যাবে আমার সাথে খেলতে এই তো সে দিন একটা বিয়ে ভেঙ্গে গেলো সব ঠিকই ছিল । ছিলনা শুধু সাথী তাই পরিবারের লাঞ্চনা নিয়ে এখন রাতের চোখের পানি কে জীবনের সঙ্গী করে সামনে এগিয়ে চলার পথদেখে ।
বিষয়: বিবিধ
১৫১৫ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন