তথাকথিত জঙ্গীবাদ রুখতে সারাদেশে ইয়াবা-ফেনসিডিল-মদের দোকান (বার) খোলার পরামর্শ নঈম নিজামের...!
লিখেছেন লিখেছেন পুস্পিতা ১৩ জুলাই, ২০১৬, ০৭:৫৫:৫৩ সন্ধ্যা
আওয়ামী নেতার ছেলে ও তার দল কর্তৃক দেশের সবচেয়ে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টিত গুলশানে ভয়াবহ হামলার পর আওয়ামী বান্ধব মিডিয়াগুলো ভালভাবে দেখার চেষ্ঠা করছিলাম তাদের মানসিকতা বুঝার জন্য। দীর্ঘদিন ধরে তারা জঙ্গী জঙ্গী নাটক খেলেছিল এদেশের মাদ্রাসা ও ইসলামী দলগুলোকে কেন্দ্র করে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যাচ্ছে আসল জঙ্গীর জন্ম হয়েছে তাদেরই ঘরে যারা এতদিন নিজেদের তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী, অসাম্প্রদায়িক. সুশীল, আধুনিক, মুক্তমণা ইত্যাদি নামে নিজেরাই নিজেদের অভিহিত করতো। নিজেদের ঘরের ভিতর এত বড় বড় জঙ্গী দেখে তারা চরম হতভম্ব। কারো মুখে যেন কথা নেই! এতদিন তারা জঙ্গী দমনের নামে জামায়াত-শিবিরের নিরপরাধ, নিরস্ত্র নেতা-কর্মীদের পুলিশ-র্যাবের হাতে নিহত হতে দেখে খুশিতে হাততালি দিয়েছিল। উৎসাহ দিয়েছিল আরো বেশি করে ক্রসফায়ার বা গুলি করে হত্যা করার জন্য। তার প্রেক্ষিতে পুলিশ একদিনেই শতাধিক সাধারণ মানুষকে গুলি করে হত্যা করার আস্কারা পায়। ওসব মিডিয়া নিরস্ত্র জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের হত্যা করার নাম দিয়েছিল জঙ্গী দমন। বিনা কারণে রাজনৈতিক বিরোধীদের পুলিশ-র্যাব-বিজিবি কর্তৃক হত্যাকে তারা অভিহিত করেছিল আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সফলতা হিসেবে। এসব চরম অন্যায় যখন সাপোর্ট করা হবে তখন প্রকৃতিরও একটি শাস্তি আছে। সে শাস্তি হলো এখন তাদের নিজেদের সন্তানরাই দেশের সবচেয়ে বড় জঙ্গী। হায় হায় কি হলো, কি হলো?! এখন তারা না পারছে গিলতে না পারছে ফেলতে। এ অবস্থায় আওয়ামী সুশীল নঈম নিজামরা নতুন এক তত্ব নিয়ে হাজির! তথাকথিত জঙ্গীবাদের কবল থেকে মুক্ত হতে নাকি এই মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ট দেশের সব জায়গায় মদের দোকান (বার) খুলে দিতে হবে! অভিনব এক পরামর্শ!
নঈম নিজামের ভাষায়, "সেদিন একটি সামাজিক ক্লাবে বসে একজন বললেন, ঢাকা, কক্সবাজার, সিলেট, শ্রীমঙ্গল ও হবিগঞ্জের পাঁচতারকা হোটেলগুলো বার লাইসেন্সের আবেদন করে বসে আছে। তারা লাইসেন্স পাচ্ছে না। এমনকি অনেকগুলো সামাজিক ক্লাবও আবেদন-নিবেদন করে ক্লান্ত। সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো নীরব।... জঙ্গিবাদের কবল থেকে মুক্ত হতে এই মুসলিম দেশগুলোর কিছু কৌশল নিয়ে আমাদের ভাবতে হবে। খুলে দিতে হবে উদারতার অনেক দরজা।"
অর্থাৎ অবারিত ভাবে ইয়াবা-ফেনসিডিল-মদ খাওয়ার সুযোগ দিতে হবে নতুন প্রজন্মকে। সাথে বারে যা যা হয় যেমন ফ্রি মিক্সিং-নাচানাচি-গলাগলি-মাতলামি-অবাধ যৌনাচার, লিভটুগেদার, নষ্টামি ইত্যাদি ছড়িয়ে দিতে হবে দেশের সর্বত্র! এরপর নতুন প্রজন্মের আরেক নাম হয়ে উঠবে মাতাল প্রজন্ম। মাতালরা থাকবে মদ আর যৌনতার খোঁজে সাথে জঙ্গীবাদ হবে দূরীভূত! জঙ্গীবাদের কি সুন্দর সমাধান!
এই হলো আমাদের দেশের আওয়ামী সুশীলদের মানসিকতা! কিন্তু নঈম নিজামরা কেন জানি না ভুলে যাচ্ছেন যে, আওয়ামী পরিবারের যে সন্তানরা এত বিশাল জঙ্গী হয়েছে তারা নঈম নিজামদের পছন্দের সেসব বারে জীবনের অনেক সময় ব্যয় করেছে। যে সব খবর বের হয়েছে তাতে দেখা যাচ্ছে খোদ গুলশানের সেই হোলি আর্টিজান সহ বিভিন্ন বারে ওসব জঙ্গীদের যাতায়াত ছিল, ভারতীয় নগ্ন নায়িকা শ্রদ্ধাকাপুরদের সাথে নাচানাচি করতো। এরপর আর কোন ধরনের বারে যাওয়ার পর ওরা জঙ্গীত্ব ছেড়ে দিতো?! বার খুলে দিয়ে জঙ্গীত্ব দূর করার এ পরামর্শ আসলে নঈম নিজামরা কাদেরকে উদ্দেশ্য করে দিচ্ছে? এদেশের সাধারণ মানুষ, মধ্যবিত্ত, গরীব মানুষের সন্তানদের তো বারে যাওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না বা সামর্থও নেই। বারে যাওয়ার পরও জঙ্গী হয়েছে আওয়ামী পরিবার সহ তথাকথিত উচ্চবিত্তদের সন্তানরা।
বাস্তবে নঈম নিজামরা কি জঙ্গীবাদ দমন করার জন্য সারাদেশে মদের ওপেন লাইসেন্স দেয়ার পরামর্শ দিয়েছে নাকি নতুন প্রজন্মের যে অংশটি এখনও নষ্ট হয়ে যায়নি তাদেরও ধ্বংস করার উদ্দেশ্য নিয়ে এই পরামর্শ? কারণ নঈম নিজামদের মতে বাংলাদেশ হবে ভারতের ট্রানজিট-কোরিডোর বা সিকিমের মতো। ট্রানজিট-কোরিডোরময় বাংলাদেশ চালানোর জন্য সচেতন জাতির কোন প্রয়োজন নেই। ট্রানজিট-কোরিডোর ঠিক মতো চালানোর জন্য আছে ভারতীয়রা। বরং সচেতন প্রজন্ম নঈম নিজামদের স্বপ্নের ট্রানজিট-কোরিডোরময় বাংলাদেশ তৈরির ক্ষেত্রে বাঁধা। তাই একদিকে আওয়ামীদের ঘরে জন্ম নেয়া জঙ্গীবাদ দমনের নামে আসবে ভারতীয় বাহিনী (গুলশানের ঘটনার দিন পাঠানো হয়েছিল বলে প্রচার করছিল ভারতীয় মিডিয়া) অন্যদিকে নতুন প্রজন্ম পরে থাকবে মদ-জুয়া-বার-সানি লিওনদের কোমড় দোলানো নেশায় মাতাল হয়ে। এরপর আর ঠেকায় কে নঈম নিজামদের কোরিডোরময় বাংলাদেশের স্বপ্ন?!
বিষয়: বিবিধ
২৫৮৮৫ বার পঠিত, ২৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
এরা দেশের জন্য কোনকালেই উপকারী ছিল না । বোমা মারা বা আত্মঘাতী হামলা করে নিরীহ মানুষদের মারার চেয়ে বরং নিজে এবং সমমনাদেরকে নিয়েই থাকুক ।
বাংলাদেশে তো ভারতীয় নায়ক নায়িকারা আসা যাওয়ার মধ্যেই আছে । নায়িকারাও স্পেশাল টাইম দিচ্ছে এবং সেটা লুফে নিচ্ছে নিব্রাসদের লেভেলের পোলাপানেরাই । এরা আমাদের সমাজের খুব ক্ষুদ্র একটা অংশ । এদের এসব অনাচারকে একটা নির্দিষ্ট গন্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে হত ।
আর সামাজিক ক্লাব কোন গুলো - ঢাকা ক্লাব , উত্তরা ক্লাব , চট্টগ্রাম ক্লাব ------- এসব ক্লাবে কারা যায় ?
এসব এমফেটামিনখোরদের জন্য বার না রাখলে এরা তো অন্য কিছু করবেই ।
বার , ক্লাব করে এদের আইসোলেটেড করে রাখা উচিত । এটার খাটতি হলে এরা বের হয়ে তছনছ করবে আশে পাশের সবাইকে ।
১৯৯৬-২০০১ এ শামীম ভায়া নারায়ঙন্জের টানবাজারের অবস্থিত পতিতালয় উচ্ছেদ করে খুব বাহাদুরীত্ব দেখিয়েছিলেন । আমরাও বাহবা দিয়েছিলাম যে উনি একটা কাজের কাজই করলেন । আসলেই কি সেটা কাজের কাজ হয়েছিল ?
শরীরের কোন ফোঁড়া আন্ধাগোন্ধা কেটে ফেললে সেটা হতে সেপসিস ছড়িয়ে যেতে পারে । হচ্ছেও তাই।
যারা জঙ্গি তৈরির মদদদাতা, তাদের কাছে এর থেকে ভালো পরামর্শ আর কী-বা থাকতে পারে।
নিয়মিত হবার অনুরোধ থাকলো।
তবে ওরা নিলজ্জ!
তাসলিমা নাসরিন লিখেছেন, 'বর্তমান সময়ে এখন লিখতেও ঘৃণা লাগে, যখন দেখি নইম নিজামের মত ছোকরাও লিখতে শিখেছে, টেলিভিষণ টক শো'তে পরামর্শ ও দেয়'।
তাহলে বুঝুন দেশের হালচাল কেমন আর তাদের হাড়িতে কি জিনিয় রান্না হয়।
তাসলিমা নাসরিন লিখেছেন, 'বর্তমান সময়ে এখন লিখতেও ঘৃণা লাগে, যখন দেখি নইম নিজামের ছোকরাও লিখতে শিখেছে, টেলিভিষণ টক শো'তে পরামর্শ ও দেয়'।
তাহলে বুঝুন দেশের হালচাল কেমন আর তাদের হাড়িতে কি জিনিয় রান্না হয়।
তাসলিমা নাসরিন লিখেছেন, 'বর্তমান সময়ে এখন লিখতেও ঘৃণা লাগে, যখন দেখি নইম নিজামের মত ছোকরাও লিখতে শিখেছে, টেলিভিষণ টক শো'তে পরামর্শ ও দেয়'।
তাহলে বুঝুন দেশের হালচাল কেমন আর তাদের হাড়িতে কি জিনিয় রান্না হয়।
মন্তব্য করতে লগইন করুন