সবাই রাজাকার, একা শেখ মুজিব মুক্তিযোদ্ধা হয় কি করে?!
লিখেছেন লিখেছেন পুস্পিতা ১৮ ডিসেম্বর, ২০১৪, ০৩:৩৭:৪০ দুপুর
কাঁচের ঘরে বসে ঢিল ছোড়া সবসময় বিপদজনক। বুলেটপ্রুফ কাঁচ হলে না হয় সাহস করা যায়। কিন্তু সাধারণ পাতলা কাঁচের ঘরে বসে চতুর্দিকে সকলের উপর ঢিল ছোড়া?! এতো সাধারণ পাগলও করার কথা না। কিন্তু শেখ হাসিনা ঠিক তা করে চলছিলেন। ও রাজাকার, সে রাজাকার, তুই রাজাকার আরো কতো কিছু! কিন্তু ১৯৭১ সালে তিনি ও তার পরিবার যে কাঁচের ঘরে বসেছিলেন তা মনে হয় ভুলে গিয়েছিলেন। নিজে, পরিবার-পরিজন নিয়ে কোথায় ছিলেন, নিজের সন্তান জয়-এর জন্ম কোথায় দিয়েছিলেন, জীবন-যাপনের জন্য পাকিস্তান হানাদার বাহিনী থেকে কত টাকা মাসে মাসে ভাতা নিতেন ইত্যাদি তিনি ভুলে গিয়ে চতুর্দিকে রাজাকারের ঢিল ছুড়তে শুরু করেন।
জিয়াউর রহমান রাজাকার, মেজর জলিল রাজাকার, কাদের সিদ্দীকি রাজাকার, এ.কে. খন্দকারও রাজাকার। বলতে গেলে মুক্তিযুদ্ধের সরাসরি সেনাপতিরা সবাই রাজাকার। কিন্তু একা শেখ মুজিব মুক্তিযোদ্ধা হয় কি করে?! বুঝতে পারি না!
সবাই যখন রাজাকার তখন অন্যদেরও কিছু দায়িত্ব তৈরি হয় শেখ মুজিবকে নিয়ে কথা বলার। সে হিসেবে শেখ মুজিবকে নিয়ে তারেক রহমানের একেকটি মন্তব্য আসছে আর আওয়ামী লীগের টপ-টু-বটম পর্যন্ত যেন সুনামি বয়ে যাচ্ছে। তার সর্বশেষ উদাহরণ শেখ হাসিনা স্বয়ং। তারেকের ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে যেন তিনি হিতাহিত জ্ঞান হারিয়ে ফেলেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীত্বের অবস্থান ভুলে গিয়ে যেন সাধারণ বস্তিতে নেমে এসেছেন! তারেক কথা বলছে, একে খন্দকার বলছে, তাজউদ্দিনের মেয়ে বলছে, পাল্টা ঢিল পড়তে শুরু করেছে শেখ হাসিনার কাঁচের ঘরের উপর। এরপর আর যায় কোথায়, তেলে-বেগুনে যেন জ্বলে উঠছে হাসিনা সহ আওয়ামীরা। আহারে এত সাধের কাঁচের ঘর ভেঙ্গে পড়তে শুরু করেছে!
এক সময় আওয়ামী লীগ মুড়ি-মুরকির মতো বিতরণ করেছিল মুক্তিযোদ্ধা সার্টিফিকেট। এখনও করছে। আরেকটি অদৃশ্য সার্টিফিকেটও আওয়ামী লীগ বিতরণ করছে। রাজাকার! আওয়ামী লীগ ও ভারতের সাথে জি হুজুর, জি হুজুর না করলেই রাজাকার। এসব অবশ্য অনেক পুরোনো টেকনিক। এই টেকনিকের যে আরেকটি দিক আছে তা আওয়ামী লীগ মনে হয় ভেবে দেখেনি। আওয়ামীরা যে আসলে মুক্তিযুদ্ধ করেনি বা করতে চায়নি তা এখন অনেকে সাহস করে বলতে শুরু করেছে। এমনকি শেখ মুজিবও মুক্তিযুদ্ধ চাননি। যদি শেখ মুজিব মুক্তিযোদ্ধা হয়েও থাকে তবে তার মেয়ে হাসিনা নিজের মেয়েকে রাজাকার পরিবারে বিয়ে যে মুক্তিকার (মুক্তিযোদ্ধা+রাজাকার=মুক্তিকার) বৃদ্ধি করে চলেছেন তাও জনগণ বলতে শুরু করেছেন। রাজাকারের সাথে মেয়ের বিয়ে দেয়া, আত্মীয়তা করা, মন্ত্রীসভায় স্থান দেয়া, এমপি বানানো আরো কতকিছু! এত সব কাঁচের ঘরে অবস্থান করে হাসিনা ঢিল মারে অন্যদের!
এবার ঢিল পড়তে শুরু করেছে হাসিনার কাঁচের ঘরে। ঢিলের সাইজও বেশ বড়। এই ঢিলের আঘাত সহ্য করা সাধারণ কাঁচের পক্ষে যে খুব কঠিন তা ভালই বুঝা যাচ্ছে। ভবিষ্যতে মুক্তিকারের নানীর ঘরে যে আরো ঢিল পড়বে তা এখনই বলে দেয়া যায়। সবে তো শুরু...
বিষয়: বিবিধ
৩০২৪ বার পঠিত, ৩৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হায়রে বাঙালী যারা যুদ্ধ করেছে তারা রাজাকার আর যারা যুদ্ধের আসেপাশেও ছিলনা তারা সার্টিফিকেটধারী মুক্তিযুদ্ধা!!
আর নাক কি আগে থেকেই ... '?' ...
ক্রিকেট খেলা কম বুঝি বলে দেখিও কম। তবে এটুকু জানি যে, বিশ্বের প্রায় প্রত্যেক দলের উইকেট কিপাররাই গালাগালিতে ওস্তাদ। উইকেটে দাঁড়িয়ে তাঁরা সারাক্ষণ খিস্তিখেউর নাকি করতে থাকেন। বলাবাহুল্য, তাঁরা নানা রকম কথাও বলতে পারেন। প্রথম প্রথম বুঝতাম না। এটা অষ্ট্রেলিয়ানরা বেশি করে। পরে জানলাম যে আসলে এটা গেমেরই একটা অংশ। কেননা উইকেট কিপার এভাবে বিরক্ত করতে থাকলে ব্যাটসম্যান এক সময় মনোযোগ হারিয়ে ফেলবে। আর মনোযোগ হারানো মানেই নিশ্চিত আউট।
সাধারণত কোনো বিতর্কের ক্ষেত্রেও এ কৌশল অবলম্বন করা হয়। খুব সুচতুরভাবে প্রতিপক্ষকে চটিয়ে দিতে পারলেই হলো। এখন অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে, তারেক জিয়া এ ব্যাপারে শতভাগ সফল। আওয়ামীলীগের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের পর্যন্ত ধৈর্যচ্যুতি ঘটেছে বলে ইদানিং মনে হচ্ছে।
তাছাড়া তিনি যেগুলো বলেছেন, সেটা তো তাঁর নিজস্ব কথা বললে এক রকম ভুলই হবে। তিনি শুধু গবেষণা করে ইতিহাস ঘেঁটে সত্যগুলো বের করে উপস্থাপন করেছেন সকলের সামনে এই তো। আর ইতিহাস কার লেখা? তারেক জিয়ার দলের কারো? এখন যদি তিনি কিছু ভুলই বলে থাকেন তাহলে সেটার জবাব তো শক্তভাবেই প্রমান দিয়েই দেয়া যেত। কিন্তু রাজনীতির নামে কেনো এসব নোংরা কথা চালু করা হচ্ছে? দেশের সাধারণ মানুষ যারা তাঁদের সমর্থন করেন, অনেক ক্ষেত্রে অনুকরণও করেন তারা এখন কী করবে? এসবের ভবিষ্যতের দায় কে নেবে?
মন্তব্য করতে লগইন করুন