অধ্যাপক গোলাম আযমঃ সত্য পথের যাত্রীরা আপনাকে মনে রাখবে…
লিখেছেন লিখেছেন পুস্পিতা ২৩ অক্টোবর, ২০১৪, ১০:৪৯:৩৯ রাত
তিনি চাইলে দুনিয়ার জীবন খুব আয়েশী ও সুখেই কাটাতে পারতেন। দুনিয়াতে যা কিছুকে আমরা সুখ-সাচ্ছন্দ্য মনে করি তার সবকিছুই অর্জনের সামর্থ্য-সুযোগ মহান আল্লাহ তাকে দিয়েছিলেন। প্রাচ্য-পাশ্চাত্য যে কোন দেশে যে কোন সময় আলিশান জীবন-যাপনের সুযোগ সব মানুষ পায় না, তিনি পেয়েছিলেন। রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় যাওয়ার সুযোগও ছিল। তারপরও সবকিছুকে পিছনে ফেলে বাংলাদেশে ফিরে এসেছিলেন সত্যের আলো জ্বালানোর এক দুঃসাহসিক সিদ্ধান্ত নিয়ে। সে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের পথেই তিনি অতিবাহিত করেছেন পুরো জীবন। তিনি স্বপ্ন দেখতেন সাধারণ মানুষ, শিক্ষিত মানুষ, আধুনিক মানুষ সবাই ইসলামের আলোতে আলোকিত হবেন। তিনি যে স্বপ্ন দেখতেন সে স্বপ্নের পথে এখন পথ চলছে এদেশের লক্ষ-কোটি জনতা। কোটি-কোটি মানুষের ভিতর ইসলামের মৌলিক আলো তিনি ও তার সাথীরা জ্বালিয়েছেন। তাদের ত্যাগ-কর্মনিষ্টা-চিন্তার কারণে আজ বাংলাদেশের ইসলামী রাজনীতি এক দূর্দমনীয় শক্তিতে পরিণত হয়েছে।
সত্যের বাস্তব স্বাক্ষ্য দেয়ার সাহস তাঁর ছিল এবং দিয়েছেন। তিনি জানতেন যে পথে তিনি চলতে চাচ্ছেন সে পথ কোন সহজ পথ নয়। এদেশের লক্ষ-কোটি তরুণ-তরুণীর হৃদয়ে যে আলোর প্রদীপ জ্বালিয়ে দিচ্ছেন তার জন্য তাকে কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে। সে পথ খুবই কঠিন এবং বাস্তবে তিনি তা আবারও প্রমান করে দিয়েছেন ৯২ বছর বয়সে জালিমের কারাগারে থাকা অবস্থায় মহান রবের কাছে চলে গিয়ে। তিনি বাস্তবে দেখিয়েছেন আল্লাহর পথে চলা সাধারণ কোন মানুষের কাজ নয়। এ পথে তারাই চলতে পারে যারা দুনিয়ার সবকিছুকে উপেক্ষা করে সত্যের পথে চলার দুঃসাহস রাখে। সেই দুঃসাহসিক পথের সিপাহসালার ছিলেন গোলাম আযম।
প্রায় ৯০% মুসলমানের এদেশ থেকে ইসলামকে নিভিয়ে দেয়ার যে ষড়যন্ত্র তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা শুরু করেছিল তা পূরণ হয়ে যেতো যদি না গোলাম আযমরা এগিয়ে আসতেন। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা ইসলামকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে না পারলেও অন্ততঃ এমন অবস্থায় নিয়ে যেতে চেয়েছিল যেন ইসলাম থাকবে শুধু কিছু আনুষ্ঠানিকতার ভিতর, শুধু মসজিদের ভিতর। তাদের সেই ষড়যন্ত্র বাস্তবায়িত সম্ভব হয়নি গোলাম আযম ও তার সাথীদের কারণে। তারা ইসলামকে নিছক আনুষ্ঠানিকতা, মসজিদ, মাদ্রাসা থেকে বের করে নিয়ে সমাজ, রাষ্ট্র, অর্থনীতি, রাজনীতি, সমাজনীতি, সংস্কৃতি, বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল সহ সবকিছুতেই নিয়ে এসে ইসলামকে মহান ও পূর্ণাঙ্গ জীবন ব্যবস্থা হিসেবে উপস্থাপন করেছেন। হাজার-হাজার আধুনিক শিক্ষিত তরুণ-তরুণী তৈরি করেছেন যারা ইসলামের আলোকে পুরো রাষ্ট্রব্যবস্থায় ছড়িয়ে দেয়ার হিম্মত রাখেন। গোলাম আযমদের এ সিদ্ধান্ত ও কৌশলের কারণে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের পক্ষে সম্ভব হয়ে উঠেনি এদেশ থেকে ইসলামকে নির্বাসিত করা।
যাদের কারণে ধর্মনিপেক্ষতাবাদ এদেশে বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি তারা সবসময় ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের ক্রোধের মুখে থাকবে, তা তো স্বাভাবিক। সে কারণে ৯২ বছর বয়সেও তারা গোলাম আযমের মতো এক বয়োবৃদ্ধ নেতাকে গ্রেফতার করে কারাগারে নিক্ষিপ্ত করেছিল। কিন্তু ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা ভুলে গিয়েছে কারাগার, ফাঁসি, শাহাদাত ইত্যাদি আসবে জেনেই তারা ইসলামের পথে এসেছিল। ইসলামের যে আলো তারা জ্বালাতে চেয়েছিল সে আলোর দিকে ছুটে চলেছে এদেশের লক্ষ-কোটি জনতা। যে স্বপ্ন তারা দেখেছিল সে স্বপ্নের বাস্তবায়নও তারা দেখেছে। এটিই জীবনের সফলতা। ঠিক এ কারণেই অধ্যাপক গোলাম আযম আপনাকে সত্য পথের যাত্রীরা আপনাকে মনে রাখবে, ইসলামে আলো ছড়িয়ে পড়বে সবখানে...
বিষয়: বিবিধ
২২০১ বার পঠিত, ২৩ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আল্লাহপাকই সত্য জানেন। তিনি ওনাকে তিনি আজীবন যে পথে চলেছেন, তার ভালো-মন্দ সূচারু হিসাবের দ্বারা পুরষ্কার নিশ্চয়ই দিবেন।
লেখাটি খুব ভালো লেগেছে। অনেক ধন্যবাদ। শুভেচ্ছা রইলো।
জাজাকাল্লাহু খাইর।
এই কিংবদন্তির আজ জীবনাবসান হল ।
। জাতি আজ এক ইসলামি আন্দোলনের মহানায়ককে চির বিদায় জানাচ্ছে,যার বদৌলতে আজ বাংলাদেশে ইসলামী আন্দোলনের এত অগ্রগতি।হে আল্লহ আমরা আজ তোমার হাতে, আমাদের এক মহান অভিভাবককে তুলে দিচ্ছি তুমি তাঁর যথাযথ মূল্যায়ন কর ( তুমি তাঁকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব কর ) আমিন! আমিন! আমিন।
জাযাকাল্লাহ খায়ের
তিনি কী ছিলেন সেটার জন্য কারো কাছে সার্টিফিকেট নেবার প্রয়োজন নেই তাঁর- কখনো ছিলনা
আল্লাহতায়ালাই তাঁর বান্দার জন্য যথেষ্ট
আল্লাহতায়লা তাকে জান্নাতুল ফিরদাউস নসিব করুন।
তাকে বাতিল শক্তিবেশি ভয় পেত এই জন্যই যে তিনি আধুনিকতার নামে যে মিথ্যাকে তারা তরুনদের সামনে উপস্থাপন করত তার সমুচিত জবাব দিতে পারতেন।
মহান আল্লাহ যেন উনাকে জান্নাতুল ফেরদাউস নসিব করেন। আমিন
আল্লাহ সবাইকে সবরে জামিল নসীব করুন আর তার উদ্দেশ্যে যাত্রা করা প্রিয় বান্দাটিকে সন্মান ও মর্যাদার উচ্চ আসনে আসীন রাখুন।
আল্লাহ্ পাকের নিকট তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি এবং তার শোক সন্তপ্ত পরিবার সহ দেশে বিদেশে ইসলামী আন্দোলনের নিবেদিতপ্রাণ কর্মীদের ধৈর্য্য ও সাহসের সাথে সর্বাবস্থার সঠিক মোকাবিলা করার প্রত্যয় ও বুদ্ধির জন্য প্রার্থনা জানাই। আল্লাহ তুমি আমাদের মরহুম নেতাকে জান্নাতুল ফিরদাউসের সর্বোচ্চ আসনে আসীন করে নিও, আমীন, ইয়া রাব্বাল আ'লামীন।
মন্তব্য করতে লগইন করুন