নারী তুমি কেন হিজাব পরো, হিজাব পরলে আওয়ামী মন্ত্রীদের লাম্পট্যপনাতে অসুবিধা হয়- এটা বুঝনা?!
লিখেছেন লিখেছেন পুস্পিতা ১৫ জুলাই, ২০১৪, ১০:০৫:১৩ রাত
হাসিনার মতোই বিচিত্র তার মন্ত্রীদের একেকজন! তার সমাজকল্যাণ মন্ত্রী, নাম মহসিন আলী! প্রথম দিন অফিসে এসে হুংকার ছেড়েছিল হু ইজ বিএনপি! এরপর স্কুল শিক্ষার্থীদের প্রোগ্রামে মঞ্চে বসে সবার সামনে করে ধুমপান করে আলোচনায়! এটা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনার পর ফেইসবুকে মন্ত্রী ক্ষমা চেয়ে তিন লাইনের যে স্ট্যাটাস দিয়েছিল তাতে অন্ততঃ ৯টি বানান ভুল! এই গন্ডার মার্কারাই হাসিনার মন্ত্রী!
সেই গুনধর মন্ত্রী এবার নজর দিয়েছেন নারীর হিজাবের উপর! ধর্মনিরপেক্ষ হাসিনার মন্ত্রী তিনি। তাই তার হিজাব পছন্দ নয়। তিনি সরাসরি বলেছেন, "হিজাব পরা চলবে না! মুখ খোলা রাখতে হবে! সাহসী হতে হবে। হিজাব পড়ে জামায়াতে ইসলামীর মতো কাজ করলে চলবে না। মুখ দেখাতে হবে তবেই সমাজ শ্রদ্ধা করবে। বোরকা পড়ে আকাম কু-কাম করার শেষ নেই।" কথাগুলো তিনি বলেছেন মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকির সামনে এবং সেই মন্ত্রী এসব কথার কোন প্রতিবাদ করেননি! ৯০% মুসলমানের দেশের একজন মন্ত্রীর মন্তব্য এসব! তিনটি বক্তব্য এখানে খুবই উল্লেখযোগ্য!
১। সাহসী হওয়ার জন্য নারীর হিজাব ছুঁড়ে ফেলে দিতে হবে!
২। চেহারা না দেখালে নারীকে কেউ শ্রদ্ধা করবে না!
৩। বোরকা যারা পরে তারাই বাংলাদেশ সব আকাম কু-কাম করে!
ক) আচ্ছা ওই মন্ত্রীর দৃষ্টিতে সাহসী হওয়া মানে কি নারায়নগঞ্জের সেই নীলার মতো হওয়া?! নারী হিজাব ছুঁড়ে ফেলে দিবে, সাহসী হবে, নীলা হবে, নূর হোসেন-শামীম ওসমানদের রক্ষিতা হবে, আওয়ামী নেতা-মন্ত্রীদের লালসা মিটাবে, মন্ত্রীর সাথে হোটেল সোনারগাঁওতে রাত কাটাবে! এর মানেই কি সাহসী হওয়া?! হ্যাঁ, আওয়ামী নেত্রী নীলার মতো রক্ষিতা হওয়ার জন্য অবশ্যই নারীকে হিজাব ছেড়ে দিতে হবে!
খ) এরপর শরীর না দেখালে নারী শ্রদ্ধা পায় না! কি আজব কথা! আমাদের সমাজ যতই কলুষিত হোক এখনও পর্যন্ত যে কোন হিজাব পরিহিতা নারীকে সবাই সম্মানের চোখে দেখে। এসব আমাদের বাস্তব অভিজ্ঞতা। যে কোন স্থানে, গাড়ি, রাস্তা, মার্কেট, অফিসে এখনও অধিকাংশ মানুষ হিজাব পরিহিতা নারীকে সম্মান ও শ্রদ্ধার সাথে দেখে, প্রয়োজনীয় সহযোগীতার জন্য এগিয়ে আসে। আর আওয়ামী মন্ত্রী বলে কিনা শ্রদ্ধা পাওয়ার জন্য নারীকে হিজাব ফেলে দিতে হবে, পুরুষকে চেহারা দেখাতে হবে! আর কিছুদিন পর তো মন্ত্রী বলবে শুধু চেহারা না, বেশি শ্রদ্ধা পাওয়ার জন্য নারীকে আরো অনেক কিছু দেখাতে হবে, সানি লিওন হলেই নারী চরম শ্রদ্ধা পাবে! আওয়ামী মন্ত্রীদের কাছে নারীর শ্রদ্ধা পাওয়ার উপায় তাহলে সকল নারীর সানি লিওন হওয়া?! হাসিনা তাহলে এটায় চায়?!
গ) সর্বশেষ মন্ত্রীর ভাষ্য, বোরকা পরিহিতারাই নাকি বাংলাদেশের সকল আকাম-কুকাম করে! আচ্ছা শেখ হাসিনা কি বোরকা পরে? হাসিনার চেয়ে আকাম বেশি করেছে এমন মহিলা কি বাংলাদেশে আর আছে? এদেশকে মৃত্যুপুরী বানিয়েছে কে? এদেশের সকল সন্ত্রাসী, ধর্ষক, লুটেরা, চোর, ছিনতাইকারী, খুনীদের লালন করে কে? শামীম ওসমান, ধর্ষনের সেঞ্ছুরীকারী মানিক, ছাত্রলীগ নামের ধর্ষকলীগের মূল নেত্রী এই হাসিনা কি বোরকা পরে?! শেয়ার মার্কেট ও ব্যাংক থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা যারা চুরি করেছে তাদের নেত্রী এই হাসিনা বোরকা পরে? সাজেদা চৌধুরী, মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন সহ আওয়ামী এমপি, নেত্রীরা কি বোরকা পরে? বাংলাদেশে এখন সবচেয়ে বেশি আকাম-কুকাম কি এই তথাকথিত নেত্রীরাই করে না? হাসিনারা কি সকল আকাম-কুকামের উৎস নয়? ইডেন কলেজ, ঢাবি, জাবি সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে দেহ ব্যবসার সাথে জড়িত এবং জোর করে ছাত্রীদের ওসব কাজে লিপ্ত যারা করাচ্ছে সেই ছাত্রলীগ নেত্রীরা হিজাব করে? হাসিনার বোন রেহানা হিজাব করে? হাসিনার মেয়ে, হাসিনার ছেলের স্ত্রী, হাসিনার বিভিন্ন ইহুদী, খ্রিস্টান আত্মীয় সহ যারা বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা চুরি করে সুইস ব্যাংকে জমা করেছে ওরা বোরকা পরে? তাহলে কোন বোরকা পরিহিতা আকাম-কুকাম করেছে বা করে?
সবসময় বলছি আওয়ামী ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ মানে ইসলাম বিরোধীতা। আর মুসলিম দেশে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের প্রথম প্রকাশ শুরু হয় নারীর হিজাবের উপর আঘাত হানার মাধ্যমে। আওয়ামী লীগ গত ৫বছরে বিভিন্ন স্টাইলে হিজাবের উপর আঘাত করেছে। এবার মন্ত্রীরা সরাসরি হিজাব না পরার হুকুম দিচ্ছে। এই হুকুমের পর ছাত্রলীগের লম্পটরা, আওয়ামী পুলিশ, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের আওয়ামী অসভ্যরা যারা এতদিন বিভিন্ন হিজাব পরিহিতাদের হয়রানী করে আসছিল তারা এবার সরাসরি নারীর হিজাব ধরে টান দিবে, নারীর বোরকা খুলে ফেলে দিতে চাইবে, হিজাব পরিহিতাদের লাঞ্ছিত করবে। এমন পরিবেশ তৈরি করা হবে যাতে কামাল আতার্তুকদের মতো আইন করেই হিজাব নিষিদ্ধ করবে। আওয়ামী ধর্মনিরপেক্ষতাবাদ আস্তে আস্তে কি সেদিকেই যাচ্ছে?!
বিষয়: বিবিধ
৩৪৬৫ বার পঠিত, ৬৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
থেকে সরাতে পারেনি।
দুঃখিত আমার এই মন্তব্যের জন্য।
অনেক ধন্যবাদ।
পাশ্চাত্যের দেশগুলোর ইসলাম বিদ্বেষী মানুষও সহসা এসব কথা বলেনা। কারন তারা বিরোধীতার অর্থ জানে। কিছু মুখঢাকা নারীর উপর প্রতিশোধ পরায়ন হলে যে মুসলিম জাহানের বিরোধীতায় বিশ্বব্যপী লাভের বদলে লস হয়,তা তারা জানে। মুসলিমকে ধ্বংস করতে কোথায় ক্লিক,আঘাত করতে হয় তা তারা বুঝে। এসব দেশে অনেক মুসলিম নারী মুখ ঢেকে চলে। এটা তার ধর্মীয় বিষয়,এটা মনে করে মানুষ তার দিকে তেমন তাকায়ও না। এটার সমালোচনাও সাধারণত হয়না।
অথচ একজন মুসলিমের সন্তান,মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশে মুখ দিয়ে সাইলেন্সার পাইপের মত ধোয়া ছাড়তে ছাড়তে যা বলছে বা বলে,তাতে তার ব্যক্তিত্ব,বিদ্যা,হাটুর মস্তিষ্ক সম্পর্কে বিরূপ ধারনা হওয়াই স্বাভাবিক। এটা একারনে হচ্ছে যে,অদিকাংশ মুসলিমই নিশ্চুপ। তারা তসবিহ তাহলীল করে নেকী হাসিল করছে। সৎ কাজে আদেশ এবং অসৎ কাজে নিষেধ সমাজ থেকে উঠে গেছে।
এটা আমাদের পাপের ফল। শাসক যেমন পচা কাঠাল, জনতাও ওই রকম মুচী কাস্টমার.....
স্বভাবতঃই এ জাতীয় চরিত্রহীন, অজাত-কুজাত, গন্ড মূর্খ, শেখ হাসিনার চাকর বাকর ও গালাগালির মেশিন টাইপ মন্ত্রীদের উক্তিতে, কাজে কারবারে - গণমানুষের যা হবার, তা হয়না, যা হতে পারতো - তা হবে না।
আমি মনে করি সচেতন মানুষের উচিত আওয়ামীলীগ এর ভন্ডামী, ধূর্ততামী, কাজ কর্মকে এভাবে উন্মোচনের মাধ্যমে আওয়ামীলীগ ও তার নেতাদের বিশেষ করে শেখ হাসিনার ইসলাম বিদ্বেষী চরিত্রটিকে স্টাবলিশ করা, ব্রান্ডিং করা।
ধর্মনিরপেক্ষতার আবরনটা সরিয়ে সরাসরি ইসলাম বিদ্বেষী বা আওয়ামীমুসলমান টাইপ কিছু একটায় চিহ্নিত করা।
২> সানি লিওনেরে দেইখা তো ষড়ধায় গান গাইব "ও আমার দেশের (মাটি) তোমার পরে ঠেকাই মাথা।" তে আবার ষাঁড় গলায় গান ও গায়।
৩> তার তো ভালাই অভিজ্ঞতা দেখা জায়।
টাকা যাদের ধ্যান জ্ঞান তাদের পাগল চাগল হওয়া শুরু।
কিন্তু তখন আর তাদেরকে কোনো সুযোগ দেয়া হবে না বরং কৃতকর্মের জন্য পুরস্কৃত (?) করা হবে।
আর মহসিনরা হিজাব নিয়ে কটুক্তি করলে তাদের মুখ থেকে কোন কথাই বের হয় না , সমাবেশ তো দূরের কথা ।
এ থেকেই অনুমান করা যায় যে নারীরা আসলেই কোনটা পছন্দ করে ।
তাত্ত্বিক কথা না বলে আমাদের প্র্যাকটিক্যালি দেখতে হবে কে কি বলে আর আসলেই সে কি করে ।
এটা সার্বজনীন ।
আপনি সত্য কথাই বোলেছেন।
ভালো লাগলো
মন্তব্য করতে লগইন করুন