বিডিআর থেকে বিজিবিঃ নৈতিক শক্তি হারিয়ে দারোয়ানে পরিণত হওয়া আমাদের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনী!
লিখেছেন লিখেছেন পুস্পিতা ০১ জুন, ২০১৪, ০৩:৪৯:২৮ দুপুর
জামায়াত-শিবিরকে হত্যা করতে তারা খুবই চৌকষ, স্বৈরাচার বিরোধী জনগণের আন্দোলনে করা গুলি তাদের মিস হয় না, লীগের সন্ত্রাসী, ধর্ষকদের পাহারা দেয়ার সময়ও তাদের কোন ভুল হয় না, অর্থাৎ দেশের ভিতরে অবৈধ সরকারের অবৈধ আদেশ পালনে তারা এক পায়ে খাড়া কিন্তু তাদের যে মৌলিক কাজ দেশের সীমান্ত পাহারা দেয়া, সে কাজের কথা যেন তাদের মনেই নেই। বলছি ভারত ও আওয়ামী লীগের ষড়যন্ত্রে পড়ে সীমান্তরক্ষী বাহিনী থেকে দারোয়ানে পরিণত হওয়া বিজিবি'র কথা। সীমান্তে ওরা আজ মিনি বিড়াল কিন্তু দেশের ভিতরে এদেশেরই জনগণকে হত্যায় তারা মানুষ খেকো বাঘ। তারা গুলি করে হত্যা করেছে, করছে জামায়াত-শিবির কর্মীদের, তারা ব্যবহৃত হচ্ছে হেফাজতের সমাবেশে হামলা করে শত শত নীরিহ আলেম হত্যাকান্ডে, তারা তৈরি বিরোধী দলের হরতাল দমনে। দেশের মানুষকে হত্যায় তাদের বিবেক কথা বলে না, হাত কাঁপে না।
এবার দেখুন, তাদের যে মৌলিক কাজ সীমান্ত রক্ষা করা, সেখানে তাদের ভূমিকা। ভারতের সাথে দীর্ঘ সীমান্তে বিজিবি নামের কোন বস্তু আছে তা বুঝা যায় না। প্রায় প্রতিদিনই ভারতীয় বাহিনী বাংলাদেশিদের হত্যা করছে, কিন্তু তাদের রক্ষায় বিজিবি'র কোন ভূমিকায় নেই। ভারতীয় বাহিনী নিয়মিত গুলি করছে, কিন্তু পাল্টা বিজিবি'র অস্ত্রের কোন আওয়াজ জাতি কখনো শুনেনি। এমনকি বিএসএফকে একটা ধমক দিয়েছে এমনও জানা যায়নি। বরং ভারতের সাথে আমাদের সীমান্তে বিজিবি পরিণত হয়েছে দারোয়ানে আর মালিক হলো বিএসএফ! বিজিবি এমন দারোয়ানে পরিণত হয়েছে যার কাজ শুধু ভারতীয় তল্পিবাহক সরকারের ফুটফরমায়েশ খাটা, দেশ পাহারা দেয়া নয়। অবস্থা এতই ভয়াবহ হয়েছে যে, বিজিবি এখন নিজেদেরও রক্ষা করতে পারে না। মায়ানমার বাহিনী বিজিবি সদস্যেদের এদেশের ভিতরে হত্যা করে মায়ানমারে নিয়ে গিয়ে খাদে তিন/চারদিন ফেলে রাখে, বিজিবি'র কোন খবর নেই। নিজের একজন সদস্য গুলিতে মারা গিয়েছে এ বিষয়টি পর্যন্ত বিজিবি কনফার্ম ছিল না, যতক্ষণ না মায়ানমার জানিয়েছে। বিজিবি সদস্য তো গুলিবিদ্ধ হয়েছিল বাংলাদেশের ভিতরে, সেই লাশ মায়ানমারের এত ভিতরে গেল কিভাবে? মায়ানমার বাহিনী কিভাবে এদেশের ভিতরে ঢুকে বিজিবি'র একজন জওয়ানের লাশ নিয়ে যেতে পারল? বাকী সদস্যেরা তখন কোথায় ছিল? অনেক ধরনের প্রশ্নের জন্ম হয়। বিজিবি কি আসলে সীমান্তে ফাংশন করছে? করবে কিভাবে তারা তো আছে অবৈধ সরকারের নিরাপত্তায় ও বিরোধী দল দমনে!
তার বিপরীতে মায়ানমারের সীমান্তরক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকা দেখুন। তারা তাদের সীমান্ত রক্ষায় সিরিয়াস। বিজিবি'র সাথে গোলাগুলি হওয়ার পরপরই তারা সীমান্তে সেনা মোতায়েন করে জানিয়ে দিয়েছে আমরা দূর্বল নই। সীমান্তে অন্যদেশের যে কোন বাড়াবাড়ি মোকাবেলায় তারা কঠোর (যদিও আমাদের বিজিবি কোন বাড়াবাড়ি করেনি, আবার তারা বাড়াবাড়ির জবাব দিতেও পারেনি)। আমাদের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য খুন হয়েছে বলে আমরা ক্ষুদ্ধ। কিন্তু মায়ানমার বাহিনীর বিপরীতে বিজিবি ও সেনাবাহিনীর কর্মকান্ড তুলনা করে দেখুন। দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মায়ানমার বাহিনী কঠোর। শুধু তারা নয় তাদের সেনাবাহিনীও সাথে সাথে রেসপন্স করেছে। চলে এসেছে সীমান্তে। কিন্তু আমাদের বিজিবি? আমাদের সেনাবাহিনী? তাদের ভূমিকা কি যথেষ্ট ছিল? মায়ানমারের সেনা মোতায়েনের বিপরীতে আমাদের সেনাবাহিনী কেউ দেখেছে? তাদের কোন তৎপরতা ছিল?
আসলে একটি বাহিনীর নৈতিক শক্তি হলো জনগণের সাপোর্ট। কিন্তু আমাদের দেশের পুলিশ, র্যাব, বিজিবি এমনকি সেনাবাহিনীর কিছু অংশের উপর জনগণের আস্থা উঠে গিয়েছে। ওদের কর্মকান্ডে মনে হয় না ওরা জনগণের জন্য কাজ করছে। বরং তাদের সব কর্মকান্ডের যেন একটিই উদ্দেশ্য ভারতীয় সরকারের ইচ্ছায় এদেশের অবৈধ সরকারকে পাহারা দেয়া। এসব করতে গিয়ে ওই সব বাহিনীর নৈতিকশক্তি বলতে গেলে আর অবশিষ্ট নেই। সে কারণে বিএসএফ বিজিবি'কে হিসাবেই আনে না, মায়ানমার বাহিনীও আনছে না। কারণ সবাই জানে বিড়ালের চেহারায় যতই বাঘের ছোঁয়া থাকুক, বিড়াল বিড়ালই বাঘ নয়।
বিষয়: বিবিধ
২১৫৭ বার পঠিত, ৪৮ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
কিছুক্ষণ আগে এক ভায়ের স্ট্যাটাসে দেখালাম বিজিবি বলে চারজন মারছে ।
কিন্তু না শুধু মায়ানমারের গুলা মারলে হবে না ।
রেন্ডিয়ার গুলাও মারতে হবে ।
মায়ানমারের গুলা মেরে বিজিবিকে পরিশুদ্ধ করতে চাচ্ছে চরকার ।
ধন্যবাদ ।ভাল লাগল ।
সর্যি আমি ভুল ইনফরমেশান দিলাম ।
আজকের বিজিবির কমান্ডার রা মননে ও অন্তরে যতটা না বাংলাদেশের, যতটা না বাংলাদেশীদের - তার চেয়ে অনেক বেশী ভারতের, ভারতীয় দের।
এরা যতটা না আল্লাহকে ভয় করে তার চেয়ে অনেক বেশী ভয় করে র এর এজেন্টকে, শেখ হাসিনা, সেলিম নানককে, দিল্লীকে।
আমাদের দূর্ভাগ্য যে আমরা তাদের লালন পালন করতে বাধ্য হচ্ছি।
এ কুলাঙ্গার গোষ্টীটিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় বসানোর ৪০ দিনের মাথায় প্রথম এজেন্ো হিসেবে তারা বাংলাদেশের শসস্ত্রবাহিনীর মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয় পিলখানা ম্যাসাকারের মাধ্যমে। বিডআরের নাম পরিবর্তন করে বিজিবি রাখা হয় ইদুর-পিপড়াদের ঐশ্চিষ্ট্য এবং বিষ্টা খাওনের উপযুক্ততা গড়ে তোলা হয়। ফলশ্রুতিতে তারা দেশের ভিতরে সাধারাণ নিরাপরাধ প্রতিবাদী মানুষের রক্ত ঝড়াতে হয়ে উঠে ভয়াবক এক হিংস্র দানব। অন্যদিকে ভিনদেশী সীমান্ত রক্ষীদের কাছে হয়ে যায় খেলার পুতুল। যে কোন উসিলায়, যে কোন অজুহাতে তারা ভিনদেশী সীমান্ত রক্ষীদের সামরিক মহড়ার কাঁচামাল আর মসলায় পরিনত হয়।
আজ তাদের ভাবা উচিত অতীতের গৌবজ্জল ইতিহাসের এভাবে অপমানজক অধ্যায়ের অপসূচনা কাদের কারণে হয়েছে বা হচ্ছে? যাদের কারণে বা মোনাফিকিতে আজ আমাদের এ দশা তাদের নির্মূলের সময় কি এখনো হয়নি?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক, বিশেষ সূত্রের বরাত এসব রেফারেন্স দিয়ে যখন বলা হয় তখন বুঝতে হবে- ডাল মে কুছ কালা হ্যায়।
জনৈক মন্ত্রী আবার মিউমিউ করছে - মায়ানমারের সাথে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে।
আমার কথা নয়। তবে যিনি বলছেন তাকে ধন্যবাদ দিতেই হয়। পাবলিক ও এবার বুক ফুলিয়ে বলতে পারবে-
“বিচারপতি তোমার বিচার করবে যারা, আজ জেগেছে সেই জনতা।”
বিডিআর নামটির মাঝেই একটি তেজ আছে চেতনা আছে। ভারত ও বার্মার সীমান্ত বাহিনী বিডিআরকে প্রচণ্ড সমীহ করতে বাধ্য ছিল। অবস্থাদৃষ্টে মনে হয়, বর্তমান সরকার বিডিআর কে পরিকল্পিত ভাবেই নিঃশেষ করে দিয়েছে। এদের দেশপ্রেমের চেয়ে পকেট প্রেম অনেক মজবুত।
যে দেশের প্রধানের সকল আত্মীয়রা যখন বিদেশী নাগরিক হয়, তখন তার দেশপ্রেম বোধ অবশ্যই প্রশ্নসাপেক্ষ তা বলা বাহুল্যই। পাশ্ববর্তী দেশ ভারতে একজন সাধারণ মন্ত্রীর আত্মীয়ও যদি বিদেশী হয়, তাহলে তার মন্ত্রিত্বে প্রশ্ন তুলবেই, অথচ আমারা তাদেরকেই দেশ চালাতে দেই।
শুধু মানুষ খুন-গুম-লোপাট-দুর্নীতি করে সুশাসন(!) চালিয়ে যাওয়া! আমি ক্ষমতায় তো আর কেউ কোনো কথা বলতে পারবেনা! এটাই গণতন্ত্র! অরক্ষিত স্বাধীনতাই যে পরাধীনতা => তা এ জাতিকে এখন আর বুঝতেই দেয়া হচ্ছে না! একাংশ পড়ে আছেন সিরিয়াল-কন্সার্ট-ইয়াবা-ফেন্সিডিল, ইন্টারনেট-মোবাইলের বিকৃত ব্যবহারে আসক্ত/ব্যস্ত, আরেকাংশ > এসব নিয়ে কিছু বললেই স্বাধীনতা-বিরোধী/জঙ্গি/ছাগু/জামায়াত-শিবির/সন্ত্রাসী ইত্যাদি! সো, এই স্বৈরাচারী-স্বঘোষিত আওয়ামী সরকার বাংলাদেশের জন্য একটি সাক্ষাত এবং জ্বলন্ত অভিশাপ ছাড়া আর কিছু না! ধন্যবাদ আপনাকে - সময়োপযোগী ইস্যুটিকে সুন্দর করে উপস্থাপনের জন্য!
তার জন্য শেখ হাসিনাই দায়ী।
হাসিনার দায়ীত্বহীনতার সাথে হাতমেলানো সশস্ত্রবাহিনীর এ লোকগুলোর জন্য মায়া হয়।
কিনতু আমার আমার প্রশন হলো: এই জাতির কি হয়েছে? তারা কেকো এমন মরার মতো পড়ে পড়ে মার খাচ্ছে?
কিন্তু পরাধীনতার শিকলে বন্দী বৃত্তে আমরা সবাই স্বাধীন।
'' সকলের সাথে বন্ধুত্ব , কারও সাথে বৈরিতা নয় ''
পররাষ্ট্রনীতিতে এক দেশ তার প্রতিবেশী দেশকে শত্রু জ্ঞান করে তাদের পররাষ্ট্রনীতি তৈরি করে । কারণ তারা আক্রান্ত হলে সেটা প্রতিবেশীর কাছ থেকেই হবার সম্ভাবনা বেশী থাকে ।
মায়ানমার ও ভারত কিন্তু বাংলাদেশের ব্যাপারে জিনিসটা খুব ফলো করে ।
একটা দেশ যতই তার প্রতিবেশীর সাথে খাতির থাকুক না কেন এসব ব্যাপারে মোটেই ছাড় দেওয়া উচিত নয় , কারণ এটা তার স্বার্বভৌমত্বের প্রতি প্রতিবেশীর চ্যালেন্জ স্বরুপ ।
রিয়েকশন যেমন হবে প্রতিবেশী তাকে সেইভাবে ট্রিট করবে ।
চারপাশে অবস্থা দেখে যা মনে হচ্ছে বাংলাদেশ এখন দুই পাশ দিয়ে চাপের মধ্যে থাকবে ।
মায়ানমারের সাথে যদি চাকমারা হাত বাড়ায় তাহলে যুদ্ধ বাঁধার ২-৩ দিনের মধ্যেই বাংলাদেশ বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম , চট্টগ্রাম , কুমিল্লা , ফেনী স হ দক্ষিন পূর্বান্চলের একটা বড় অংশ হারাবে । আর ভারত যদি ফাঁপড় দেওয়া চালিয়ে রাখে তাহলে যশোহর , খুলনা খুব রিস্কি পজিশনে চলে যাবে ।
নিজেদের অস্তিত্ব ধরে রাখতে বাংলাদেশকে নতজানু মানসিকতা পরিহার করতে হবে ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন