বুকে মোর আছে হিম্মত...
লিখেছেন লিখেছেন পুস্পিতা ২৪ এপ্রিল, ২০১৪, ০৯:১৫:৪৮ রাত
একটি প্রশ্ন এখন প্রায় সবাই করছে, মাওলানা সাঈদীর কি হবে? সত্যিই কি সাঈদীকে ফাঁসি দেয়া হবে? আজ দুপুরে এক আন্টির সাথে দীর্ঘক্ষণ ফোনে কথা হলো। তিনি ফোন করেছেন তাঁর কিছু অসুস্থতার বিষয়ে জানার জন্য। কিন্তু তা নিয়ে কথা হলো কম। তিনি খুবই উদ্বিগ্ন। বিশ্বাসই করতে চাইছেন না সাঈদী সাহেবের মতো এত জনপ্রিয় একজন মানুষকে বিনা অপরাধে ফাঁসি দেয়া হবে।
সান্তনাসূচক কয়েকটি কথা বলার পর বললাম, আমি মোটামুটি নিশ্চিত মাওলানা সাঈদীকে আওয়ামী লীগ (আসলে ভারত) ছেড়ে দেয়ার চিন্তা করছে না। অলৌকিক কোন কিছু না ঘটলেে তাকে হত্যা করবে, নিদেনপক্ষে কারাগারে আটকে রাখবেই। কারণ বর্তমান বাংলাদেশে মুক্ত সাঈদীকে ফেইস করার মতো দুঃসাহস আওয়ামী লীগ তো বটেই ভারতেরও নেই। আমার মতে ভারতীয় ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের আগ্রাসন রুখে দেয়ার মতো সাহস এদেশের মানুষের ভিতর তৈরি করে দেয়ার সামর্থ যে কিছু মানুষের আছে তার ভিতর সর্বশ্রেষ্ঠ মাওলানা সাঈদী। তাই তাকে ছেড়ে দিয়ে কি সাক্ষাত যমকে ডেকে আনবে আওয়ামী লীগ? কথাগুলো বলার সময় আন্টির কান্না স্পষ্ট বুঝতে পারছিলাম।
এরপর তিনি বললেন, আহারে মাওলানা সাঈদী সহ জামায়াত নেতারা যদি দেশের বাইরে চলে যেতেন তাহলে এই জুলুমের স্বীকার হতেন না!
হ্যাঁ, হয়তো হতেন না। কিন্তু জেনে-শুনে-বুঝে এই ধরনের জুলুমের মুখোমুখি হওয়ার দুঃসাহস রাখেন বলেই তো তাদের মর্যাদা অনেক উঁচুতে। তারা নিজের বিবেকের কাছে পরিস্কার বলেই তো ভয়ংকর জুলুম আসবে জেনেও পালিয়ে যাননি।
কেন লুকিয়ে থাকা, সরে যাওয়া, পালিয়ে যাওয়াও কি কৌশল নয়? আন্টির প্রশ্ন।
হ্যাঁ, এসবও কৌশল হতে পারে, কিন্তু সবার জন্য নয়। পরিণত বয়সেও যদি এই ধরনের নেতারাই জুলুমের ভয়ে দেশ ছেড়ে চলে যান তাহলে নূতন প্রজন্ম কাদের দেখে এই কঠিন পথের দিকে ছুটে আসবে? নবী, রাসুল, সাহাবীদের জীবনি শুনিয়ে-পড়িয়ে লক্ষ-কোটি মানুষকে যারা সত্যের পথে আসার জন্য উজ্জ্বীবিত করেছেন তারাই যদি জুলুমের ভয়ে দেশ ছেড়ে দেন তাহলে কার এমন দুঃসাহস জন্মাবে যে ভবিষ্যতে সত্যের ঝান্ডাকে উপড়ে তুলে ধরবে?
আজ শুধু মাওলানা সাঈদী কেন, শহীদ কাদের মোল্লা, গোলাম আযম, নিজামী, মুজাহিদ সহ জামায়াত নেতারা চাইলে বিদেশে এমনকি সমযোতা করে দেশেও খুব আলিশান জীবন যাপন করতে পারতেন। দুনিয়ার সুখ সাচ্ছন্দ উপভোগ করার মতো শিক্ষা-দীক্ষা, জ্ঞান, যোগ্যতা তাদের কারোই কম ছিল না বরং অন্য অনেকের চেয়ে বেশিই আছে। বিদেশে থাকতে চাইলে অনেক দেশের সরকার পর্যন্ত রাজী তাদেরকে খুব উচ্চস্থানে রাখার জন্য। তারপরও তারা সবকিছু ছেড়ে দিয়ে সকল বিপদের মুখোমুখি হতে তৈরি কারণ তারা এদেশের ইসলামের কান্ডারী। ওদের দেখেই লক্ষ সাঈদী, নিজামী, কাদের মোল্লার জন্ম হবে। কোটি মানুষের অনুপ্রেরণার উৎস হবে। ওদের ত্যাগ, সাহস এদেশের কোটি কোটি মানুষের বুকে আগ্রাসনবাদী ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের মোকাবিলার সাহস যোগাবে।
এই ধরনের কঠিন সিদ্ধান্ত যারা নিতে পারে তারাই ইতিহাসের অংশ হয়। রাসুল (সাঃ) এই ধরনের দুঃসাহসী কিছু সঙ্গী পেয়েছিলেন বলেই সত্যের আলো ছড়িয়ে দেয়ার ক্ষেত্র পেয়েছেন।
তারপরও মা, আমি চিন্তাই করতে পারছিনা সাঈদি সাহেবের ফাঁসি হবে। আল্লাহর কাছে সবসময় কামনা করি, "মাওলানা সাঈদী সহ সবাইকে তুমি মুক্ত করে দাও।"
হ্যাঁ আন্টি, এটাও ঠিক আল্লাহ না চাইলে যত বড় শক্তিই হোক কাউকেই মারতে পারবে না। তাই আমরা সবাই আল্লাহর আছে এই কামনাই করি, যারা তোমার উপর ইমান এনে, জেনে-শুনে-বুঝে এই কঠিন পথ অবলম্বন করেছে তাদের ব্যাপারে তুমিই যথেষ্ট। সবকিছু তুমি জান, তুমিই ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের ষড়যন্ত্র নস্যাৎ করে দাও। ওরা চাইলে খুব সহজেই ভিন্ন পথ ও কৌশল অবলম্বন করতে পারতেন। কিন্তু শুধুমাত্র তোমার দ্বীনের জন্য তারা কেউই পালিয়ে যাননি। এই সাহস একমাত্র তারাই দেখাতে পারে যারা সবসময় সৎ, চরম বিশ্বাসী, আদর্শের প্রতি একনিষ্ট। আমরা ওদেরকে আমাদের মাঝে ফিরে পেতে চাই। তুমিই সর্বশ্রেষ্ঠ কৌশলী।
কথাগুলো বলছি আর একটি গানের কথা বারবার মনে পড়ছিল,
আমাকে যখন কেউ প্রশ্ন করে,
কেন বেছে নিলে এই পথ?
কেন ডেকে নিলে বিপদ?
জবাবে তখন বলি,
মৃদু হেসে যায় চলি,
বুকে মোর আছে হিম্মত।
সেই হিম্মতধারীদের জন্যেই ইসলাম, ওদের জন্যেই জান্নাত।
বিষয়: বিবিধ
১৯০৩ বার পঠিত, ৪১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
“এবং [অবিশ্বাসীরা] ষড়যন্ত্র ও চক্রান্ত করেছিলো,আল্লাহ্ও কৌশল অবলম্বন করেছিলেন। আল্লাহ্ কৌশলীদের মধ্যে শ্রেষ্ঠ”।( আল-ইমরান-৫৪)
এই আয়াতের তাফসীরে পড়েছিলাম-“ আল্লাহ্র শত্রুরা সব সময়েই গোপনে বা প্রকাশ্যে চক্রান্ত করে,কিন্তু আল্লাহ্ সব জানেন,সব শোনেন। তাই বিদ্রোহীদের চক্রান্তকে ধুলিস্মাৎ করার জন্য সর্বমঙ্গলময় আল্লাহ্রও নিজস্ব পরিকল্পনা আছে যা দ্বারা চক্রান্তকারীর চক্রান্ত ধুলিস্মাৎ হয়ে যায়।”
আমরা তো শাহাদাতের জন্যই মায়ের উদর থেকে পৃথিবীতে পা রেখেছি।
কেউ পাথরে, কেউ তাঁবুর ছায়ায়, কেই মরুভূমির উষ্মবালু কিংবা সবুজ কোন ঘাসের দেশে।
আমরা আজন্ম মিছিলেই আছি,
এর আদি বা অন্ত নেই।
পনের শত বছর ধরে সভ্যতার উথ্থান-পতনে আমাদের পদশব্দ একটুও থামেনি।
আমাদের কত সাথীকে আমরা এই ভূ-পৃষ্ঠের কন্দরে কন্দরে রেখে এসেছি-
তাদের কবরে ভবিষ্যতের গুন্জন একদিন মধুমক্ষিকার মত গুন্জন তুলবে।
আমরা জানি,
আমাদের ভয় দেখিয়ে শয়তান নিজেই অন্ধকারে পালিয়ে যায়।
আমাদের মুখয়বয়ে আগামী ঊষার উদয়কালের নরম আলোর ঝলকানি।
আমাদের মিছিল ভয় ও ধ্বংসের মধ্যে বিশ্রাম নেয়নি, নেবে না।
আমাদের পতাকায় কালেমা তাইয়্যেবা,
আমাদের এই বাণী কাউকে কোনদিন থামতে দেয়নি
আমরাও থামবো না।
মূল, আমাদের মিছিলঃ আল মাহমুদ
অনেক অনেক ধন্যবাদ
জাযাকাল্লাহ খায়ের
A PHP Error was encountered
Severity: Notice
Message: Undefined offset: 7238
Filename: views/blogdetailpage.php
Line Number: 917
"> রায়হান রহমান লিখেছেন : তারপর ওর জাহান্নাম পাকাপোক্ত হবে, এই।এই মুজাহিদ,থমকে দাঁড়াও
নিতে দাও পদদুলি,
তোমার আশায় জেগে আছি আজও
ডরিনা মিথ্যে বুলি।
তোমার কন্ঠের কোরানের বাণী
আজো বাজে মোর কানে,
হিন্দু বৌদ্ধ মুসলিম সবাই
ছুটিত 'প্যারেডের' পানে।
মাহফিল নয়, মহা সমুদ্র
বর্ষায় ভরা নদী,
বজ্র কন্ঠে বাতিল কাঁপিত
হারানোর ভয়ে গদী।
নাগিনী-যুগিনী মেতেছে আজি
মাতমে ফাটায় বুক,
কলিজা কাঁপানো জানাযার মিছিলে
না জানি হারায় সুখ।
হতাশা নয়, রুখে দাঁড়াও
নেই পথ পালাবার,
শহীদ কাফেলার কাফনের মিছিল
শবযাত্রা কারবালার।
অভিমানীরাও আজি ছূটেছে জিহাদে
মুখে কোরানের বানী,
রক্তাক্ত জনপদের আর্তনাদ শূনো
ঘুচাতে হবে সব গ্লানি।
তোমার শব্দে পতঙ্গের মত
ছূটে এসেছে লাখো ভাই,
হারানোর কিছু নেই জগতে
নীড় ছেড়েছে তাই।
অশ্রু নয়নে যাবেনা তুমি
চেয়ে দেখো পেছন ফিরে,
কসম(সত্বার), তোমার মুক্তি নাহলে
ফিরবোনা আর নীড়ে।
********
মানিনা জাতীর গাড়ে চেপে বসা লোভী সন্ত্রাসী হাসিনার কোন রায়।
বিচার বিচার নাটকের মাধ্যমে হত্যার পায়তারা করা হচ্ছে। মহান আল্লাহ যা ভালো মনে করেন তা হবে। তবে একজন আলেম কে হত্যার পায়তারা দেহ্সের জন্য মঙ্গলজনক হবে না।
রাজাকার নাম শুনলে যে মানুষগুলোর চেহারা চোখের সামনে ভেসে ওঠে সাঈদীর নাম তার ১ম ৩ জনের মধ্যে আসবেন ।
আল্লাহ যদি ইসলামী আন্দোলনের বয়বৃদ্ধ নেতাদের শহীদী মর্যাদা দিয়ে জান্নাতের মেহমান বানাতে চানা তাহলে আমরা অযুত ভক্তরা তা ঠেকিয়ে রাখতে পারবনা।
আন্টির মত আমাদের সকলের অনুভুতিই এক ও অভিন্ন। আল্লাহ আমাদের সকলের মঙ্গল করুন। আমিন।
ধন্যবাদ।
ওরা এক সাঈদীর ভয়ে দেশে হাজারো সাঈদীর জম্ম দেবে, এটাই মনে হয় মহান আল্লাহর ইচ্ছা।
আসলে আজকে এ মন্তব্যটা লিখতে বসে মাথায় কিছুই আসছে না। কম্পিউটারের কি বোর্ড দিয়ে যেন কোন কিছুই টাইপ করতে পারছি না। চোখের পানিতে সব কিছু ঝাপসা দেখছি। আমি জানি না আমার মত আর কত মানুষ এভাবে চোখের পানি ঢেলে মজলুমের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছে। তাদের সংখ্যা কত হবে? শত! হাজার? লক্ষ! নাকি কোটি কোটি?
শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী আত্মঘাতি রাজনৈতিকদের উদ্দেশ্য শুধু এতটুকু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই-
বনু ওমাইয়ার নিষ্ঠুর ঘাতক শাসক হাজ্জাজ বিন ইউসুফ অনেক নিরাপরাধ মানুষের খুনে নিজের হাত রঞ্জিত করেছিলেন। প্রতিদিন নিরাপরাধ মানুষের তরুতাজা খুনের পিপাসা না মিটালে তার ঘুম আসতো না। কিন্তু হযরত সাইয়েদ বিন জোবেয়ের (রা) মত যুগশ্রেষ্ঠ অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেমে দ্বিন বুজুর্গর যেদিন রক্ত ঝরিয়েছিলেন তখন আল্লাহ তার এ অত্যাচার আর সহ্য করেন নি মহান আল্লাহ তায়ালা । হযরত সাইয়্যেদ বিন জোবায়েরকে (রা) শহীদ করার পরেই অত্যন্ত করুণভাবে এবং নিকৃষ্ঠতর কায়দার হাজ্জাজ বিন ইউসূপের মৃত্যু হয়েছিল।
আসলে আজকে এ মন্তব্যটা লিখতে বসে মাথায় কিছুই আসছে না। কম্পিউটারের কি বোর্ড দিয়ে যেন কোন কিছুই টাইপ করতে পারছি না। চোখের পানিতে সব কিছু ঝাপসা দেখছি। আমি জানি না আমার মত আর কত মানুষ এভাবে চোখের পানি ঢেলে মজলুমের প্রতি সমর্থন জানিয়ে আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ করছে। তাদের সংখ্যা কত হবে? শত! হাজার? লক্ষ! নাকি কোটি কোটি?
শেখ হাসিনা এবং আওয়ামী আত্মঘাতি রাজনৈতিকদের উদ্দেশ্য শুধু এতটুকু স্মরণ করিয়ে দিতে চাই-
বনু ওমাইয়ার নিষ্ঠুর ঘাতক শাসক হাজ্জাজ বিন ইউসুফ অনেক নিরাপরাধ মানুষের খুনে নিজের হাত রঞ্জিত করেছিলেন। প্রতিদিন নিরাপরাধ মানুষের তরুতাজা খুনের পিপাসা না মিটালে তার ঘুম আসতো না। কিন্তু হযরত সাইয়েদ বিন জোবেয়ের (রা) মত যুগশ্রেষ্ঠ অন্যতম শ্রেষ্ঠ আলেমে দ্বিন বুজুর্গর যেদিন রক্ত ঝরিয়েছিলেন তখন আল্লাহ তার এ অত্যাচার আর সহ্য করেন নি মহান আল্লাহ তায়ালা । হযরত সাইয়্যেদ বিন জোবায়েরকে (রা) শহীদ করার পরেই অত্যন্ত করুণভাবে এবং নিকৃষ্ঠতর কায়দার হাজ্জাজ বিন ইউসূপের মৃত্যু হয়েছিল।
http://www.onbangladesh.org/newsdetail/detail/200/74857
মন্তব্য করতে লগইন করুন