রাজাকারের নাতির জামায়াত ও ইসলামী ব্যাংক বিষয়ক আরেকটি আষাঢ়ে গল্প!
লিখেছেন লিখেছেন পুস্পিতা ২৮ মার্চ, ২০১৪, ০৯:১৬:১৩ রাত
পত্রিকায় লিখলেই তার জামায়াতের বিপক্ষে লিখতে হবে। কোন সঠিক তথ্য নিয়ে লিখে তাও নয়। সায়েন্স ফিকশন লিখার মতো আজগুবি কতগুলো তথ্য জামায়াতের বিরুদ্ধে লিখে যায় আর তা প্রচার করার দায়িত্ব নিয়ে নেয় তথাকথিত সুশীল মিডিয়াগুলো। আষাঢ়ে গল্পে ভরপুর জাফর ইকবালের আরেকটি লিখা আজ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে স্বাধীনতার চুয়াল্লিশ বছর শিরোনামে। শিরোনাম দেখে মনে হবে তিনি স্বাধীনতার ৪৪বছরের অর্জন-বিসর্জন ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিন্তু না তিনি কুমিরের রচনা লিখার মতো এ লিখাতেও নিয়ে এসেছেন সেই জামায়াত-শিবির! সেখানে তিনি যেসব আষাঢ়ে গল্প তার নিম্নরূপঃ-
১। ইসলামী ব্যাংক বিষয়ক আষাঢ়ে গল্প-
সর্বজান্তা কপিপেস্ট বিশেষজ্ঞ জাফর ইকবাল বলেছেন, "...এ মুহূর্তে যে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ চলছে, সেই বিচার কাজকে থামানোর জন্য দেশে-বিদেশে যে লবিস্ট লাগানো হয়েছে, তাদেরও টাকা-পয়সা দিয়ে সাহায্য করছে এ ব্যাংক- আমাদের কাছে সেরকম গুরুতর অভিযোগ আছে।"
ইসলামী ব্যাংকের বিষয়ে নাকি অভিযোগ দেয়া আছে জাফর ইকবালের কাছে! তাও গুরুতর অভিযোগ! কি আজব ব্যাপার! জাফর ইকবাল কি বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর?! কোন ব্যাংক যদি নিয়ম বহির্ভূত কাজ করে তা জানবে সরকার বা বাংলাদেশ ব্যাংক, অভিযোগ থাকলে সেটা যাবে সেখানে! কিন্তু জাফর ইকবালের কাছে কোন বেকুব অভিযোগ দেয়?! এতো নাসিরুদ্দীন হোজ্জার সেই গল্পের মতো! চাবি হারিয়েছে ঘরের ভিতর আর তিনি খোঁজ করছেন উঠানের গাছের তলায়! অভিযোগ একটি সুনির্দিষ্ট ব্যাংকের ব্যাপারে আর অভিযোগ আসে নাকি একজন আষাঢ়ে গল্প লেখকের কাছে! অভিযোগ যারা করে, যে গ্রহণ করে সবাই যে চরম বেকুব তা যেন আরেকবার প্রমাণিত হলো।
এরপর ইসলামী ব্যাংকের টাকা কোথায় খরচ হয় তা জাফর ইকবালের জানার বিষয়?! বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু বলেনি, দেশের অর্থমন্ত্রণালয় কিছু বলেনি আর জাফর ইকবালের কাছে নাকি খবর আছে ইসলামী ব্যাংক কথিত যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে লবিস্টদের টাকা দিয়ে সাহায্য করেছে! মি. জাফর আপনি নামের আগে অধ্যাপক লাগান, তো কোন অধ্যাপক কি এধরনের বায়বীয় কথা বলতে পারে?! আপনার কাছে যদি খবর থাকে তাহলে সুনির্দিষ্ট ভাবে সেই তথ্য সরকারকে জানাচ্ছেন না কেন?! কেন জানাচ্ছেন না তা অবশ্য আমরা জানি। তথাকথিত যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে আপনাকে ডাকা হয়েছিল অনেক কিছু জানেন বলে। কিন্তু আপনি যান নি কারণ আসলে আপনি কিছুই জানেন না। জানেন শুধু কপিপেস্ট করে আষাঢ়ে গল্প বলতে ও লিখতে।
২। মুক্তিযুদ্ধ কি ইসলামের বিরুদ্ধে ছিল?!
জাফর ইকবাল লিখেছেন, "ধর্মকে ব্যবহার করে রাজনীতি করা গণতান্ত্রিক অধিকার বলে দাবি করা হলেও সেটা কিন্তু আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্নের সঙ্গে খাপ খায় না।" আচ্ছা জাফর ইকবাল কি মুক্তিযুদ্ধ করেছিল?! ১৯৭১ সালে যুবক জাফর ইকবালের নানা ছিল শান্তিকমিঠির চেয়ারম্যান। পিতা ঘটনাক্রমে নিহত। নানার কাছে পিতাকে রক্ষার অনুরোধ করেছিল। কিন্তু কোন এক অজানা কারণে আপন নানা তার মেয়ের স্বামীকে রক্ষার চেষ্ঠা করেনি। কিন্তু তাই বলে জাফর ইকবাল কখনো তার নানাকে খারাপ বলেছেন, অপরাধী বলেছেন এমনও শোনা যায় না। বরং তার বড় ভাই হুমায়ুন আহমদের লিখা পড়লে মনে হবে তার নানা ছিল খুবই ভাল মানুষ। এ এক আশ্চর্য বিষয়! এরপর সুযোগ থাকা অবস্থায়ও মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ না করা জাফর ইকবাল ৪৪বছর পর এসে আমাদের শিক্ষা দেয়ার চেষ্ঠা করছে মুক্তিযুদ্ধ নাকি হয়েছিল ইসলামের বিরুদ্ধে! এসব নিয়ে আষাঢ়ে গল্প না বলে মুক্তিযুদ্ধকালীন কোথায়, কখন, কিভাবে ধর্ম মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ছিল তার প্রমাণ দিন। কোন জায়গাতেই ছিল না।
৩। জামায়াতের লোকজনের আওয়ামী লীগের যোগদানের গল্প-
একজন জিজ্ঞেস করেছিল কয়েক জায়গায় জামায়াতের লোকজন নাকি আওয়ামী লীগে যোগ দিচ্ছে। এটা কি ঠিক? বলেছি, অসুবিধা কি?! জামায়াতকে বাদ দিয়ে এখন আর বাংলাদেশে রাজনীতি হবে না, যে কারো গতি নেই, সেটা বুঝানোর জন্য জামায়াতের উচিত অন্ততঃ প্রতিটি জেলায় অনুষ্ঠান করে তাদের কিছু লোককে আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার ব্যবস্থা করা। জাফর ইকবালের কথায় একটি ভোটও কোন দলের বাড়বে না। জামায়াতের ক্ষমতা আছে বিভিন্ন দলে লোক সাপ্লাই দেয়ার। জাফর ইকবাল পারলে দেখাক, তার কথায় কত জন কোন দলে যোগ দেয়! যদিও যে ঘটনার প্রেক্ষিতে জাফর ইকবাল জামায়াতের লোক আওয়ামী লীগে যোগ দেয়ার কথা বলছে তা জামায়াত অস্বীকার করেছে এবং বলেছে সেই ধরনের কোন ঘটনা ঘটেনি।
৪। আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক আদর্শ কি?!
জাফর ইকবাল বলতে চেয়েছেন আওয়ামী লীগের আদর্শই শ্রেষ্ঠ আদর্শ। হুমম হতে পারে, জাফর ইকবালদের মতো নষ্ট চরিত্রের লোকদের জন্য আসলে আওয়ামী লীগই ভাল। আর আওয়ামী লীগের চরিত্র বলতে এদেশের মানুষ জানে, সবচেয়ে বেশি ধর্ষক, ইভটিজার, লম্পট, ছিনতাইকারী, খুনি, টেন্ডারবাজ, পকেটমার, হিন্দুদের সম্পদ লুন্ঠনকারী আছে আওয়ামী লীগের ভিতর। সবচেয়ে বেশি দূর্নীতিবাজ, বোমাবাজ, অস্ত্রবাজ লালন করে আওয়ামী লীগ। একটি চ্যালেঞ্ছ, শুধুমাত্র পুলিশের খাতায় অপরাধী হিসেবে যাদের নাম আছে তাদের তালিকা পর্যালোচনা করা হোক, জাফর ইকবাল নিজেই তা করুক এবং এরপর রিপোর্ট আকারে প্রকাশ করে দেখাক কোন দলে অপরাধীর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। নিশ্চিত, ১০০% নিশ্চিত দলটির নাম আওয়ামী লীগ এবং সেই দলের চরম সমর্থক হলো আষাঢ়ে গল্পের লেখক জাফর ইকবাল। চোর যেন ডাকাতের সমর্থক!
৫। জাফর ইকবালরা কি হতাশ হতে শুরু করেছে?!
জাফর ইকবালের পুরো লিখাটিতে প্রকারান্তরে তার হতাশাই ফুটে উঠেছে। কপি-পেস্ট লেখক জাফর ইকবালরা রাষ্ট্রীয় ও ভারতের সরাসরি সহযোগীতা নিয়ে গত ৪০/৪৫ বছর বিশেষ করে গত ৫বছর ধরে চরম প্রচেষ্ঠা চালালো, গণহত্যা চালালো, মিথ্যা প্রচারণার ঘূর্ণিঝড় তুললো, কিন্তু এদেশের জনগণের মন থেকে ইসলামকে দূর করতে পারেনি, জামায়াতের জনপ্রিয়তা তো কমেই নি বরং অতীতের যে কোন সময়ের চেয়ে বেশি বলে উপজেলা নির্বাচনে প্রমাণিত হয়েছে। মিথ্যার আস্ফালন সাময়িক, সত্যের জয় হবেই তা জাফর ইকবালদের যতই অপছন্দ হোক না কেন। জাফর ইকবাল আপনাদের হতাশা প্রকাশ পেতে শুরু করেছে।
বিষয়: বিবিধ
৩৪৪৪ বার পঠিত, ৫১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
উনি ১০০% ইসলাম বিরোধী একজন মানুষ। আমি একসময়কার উনার জুনিয়র কলিগ হিসাবেই বলছি। Just একটা ঘটনা বলি:
শাহজালাল ক্যাম্পাসে মসজিদ নির্মান করা নিয়ে ভিসি মুহিবুদ্দীন চৌধুরীর বিরুদ্ধে এই জাফর ইকবাল আন্দোলন করেছিলেন, ৯৬ এ আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসার সাথে সাথেই। অথচ এই মুহিবুদ্দীন চৌধুরী-ই উনাকে নিয়োগ দিয়েছিলেন ভিসির স্পেসাল ক্ষমতা প্রয়োগ করে, কারন উনার full professor হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার যোগ্যতা তখন ছিল না।
এ্যালার্জি - জাফর ইকবালকে কোয়ারিন্টিন এর আওতায় আনা উচিত।
আসলে কথাডা কি হাচাঁ মেডাম?
আরেকটি কথা, জামাই এর এই ছবিটা পেলেন কই?
জাতি এ ধরণের কপটের হাত থেকে মুক্তি চায়।
চমৎকার প্রতিবাদী লেখা উপহার দেয়ার জন্য সম্মানীয়াকে ধন্যবাদ জানাই। সম্মানীয়া আর আমার ব্লগ বাড়িতে বেড়াতে যান না, তাই আমিও আর ব্লগ লিখি না।
যদি থাকতো অনলাইনে তার লেখার উত্তরে কমেন্টগুলো পড়ে একটু হলৌ হিসাব করে লিখতো!
অনেকদিন কোনো লেখা নেই যে?!
আংগরে। হিছা দি হিত...হেতেরে।
মন্তব্য করতে লগইন করুন