প্রতাপ যখন চেঁচিয়ে করে দুঃখ দেবার বড়াই, জেনো মনে তখন তাহার বিধির সঙ্গে লড়াই...
লিখেছেন লিখেছেন পুস্পিতা ০২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৪, ০৪:২৪:৩২ বিকাল
"সূর্যের ধরনীতলে পতনের মতো এক অবিশ্বাস্য সংবাদ। এও কি সম্ভব? এও কি হয়? কার এমন সাহস, কার এমন বুকের পাটা যার আবির্ভাব না হলে এ দেশ স্বাধীন হতো না, সমগ্র জাতি যাকে মাথার মুকুট করে রেখেছে, হিমালয় সমান সেই মহীরুহকে কারা হত্যা করলো?"
বাকশালের দূর্ভাগ্যজনক পরিণতির খবর শুনে প্রয়াত আওয়ামী লীগ নেতা একসময়ের প্রধানমন্ত্রী মিজানুর রহমান চৌধুরীর তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া।
সবকিছুরই শেষ আছে। যারা এটি বুঝে তাদের কর্মতৎপরতা হয় একরকম, না বুঝলে পরিণতি হয় অন্যরকম।
ক্ষমতার দম্ভে বিচারের নামে শীর্ষ রাজনৈতিক নেতাদের খুন করে অট্টহাসি দেয়া খুবই সহজ, কিন্তু আদর্শ ধ্বংস করা সহজ নয়। গোপালগঞ্জীদের হাতে পোষাক ও অস্ত্র তুলে দিয়ে রাজনৈতিক বিরোধীদের পাখির মতো গুলি করে হত্যা করা যায়, কিন্তু পরিণতি ঠেকানো যায় না, কখনো যায়নি।
প্রতিবেশী দেশের উপর ভর করে গণভবন দখল করে রেখে নির্যাতন, নিস্পেষণ চালিয়ে কি মনে করেছেন ১৬কোটি মানুষকে আজীবন দমিয়ে রাখবেন? না, প্রকৃতি তা বলে না, বাংলাদেশের ইতিহাসও তা বলে না। দেশ, সমাজের সকল পর্যায়ের সম্মানি মানুষকে অসম্মানিত করে মুচকি হাসছেন, কান্না আসতে খুব বেশি দেরী নেই।
বারবার জানার চেষ্ঠা করছি ৭২-৭৫ এর সেই দুঃসহ ইতিহাস গুলো। ঠিক যেন ডিজিটাল রূপ নিয়ে ফিরে এসেছে আবার। একদিকে সাধারণ মানুষের ঘরে ঘরে গুমোট কান্না অন্যদিকে অবৈধ ক্ষমতাশীনদের অট্টহাসি ও দাম্ভিকতা। বিচারের নামে খুন, আইনশৃংখলা বাহিনীকে দিয়ে খুন, সন্ত্রাসীদের দিয়ে খুন, পুরোদেশে যেন চলছে জল্লাদের উম্মত্তনৃত্য আর সেই নৃত্য দেখে অট্টহাসি দিয়ে চলছে আওয়ামী নামের হায়েনা!
এত লাশ, হত্যা ও অন্ধকার দেখে কেমন যেন হতাশ হয়ে পড়ছিলাম। তাই উত্তর খোঁজার চেষ্ঠা করেছি কুরআন ও বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে। না, আসলে হতাশ হবার কিছুই নেই। সবকিছুর যে শেষ আছে। আলো আসবেই। আসতে হবে। শেখ মুজিবের মতো স্বৈরাচারের যে পতন এদেশে হবে তা মানুষ চিন্তাও করতে পারেনি তাই তো মিজানুর রহমান চৌধুরী আশ্চর্য হয়ে বলে উঠলেন, "সূর্যের ধরনীতলে পতনের মতো এক অবিশ্বাস্য সংবাদ।"
আসলেই কি অবিশ্বাস্য ছিল?! না পৃথিবীর কোন ফ্যাসিবাদী ও স্বৈরাচারীর চরম পতন কোন অবিশ্বাস্য সংবাদ নয় বরং সময়ের অপেক্ষা। সময় যখন আসবে তখন সচেতন হওয়ার সুযোগও থাকবে না। চরম পতনই তাদের ললাটের লিখন, শুধু শেখ হাসিনারা তা পড়তে পারে না। প্রকৃতির নিয়ম বলা হোক, বিধাতার নিয়ম বলা হোক, নীপিড়িত মানুষের মুক্তি আসবে, হায়েনাদের পতন হবেই।
পোষাকধারী সন্ত্রাসী দিয়ে নিরপরাধ জনগণকে হত্যা করে যারা সবাইকে স্তব্ধ করে দেয়া সম্ভব হয়েছে বলে বড়াই করে চলেছে তাদের জন্য রবীন্দ্রনাথ বলেছেন, "প্রতাপ যখন চেঁচিয়ে করে দুঃখ দেবার বড়াই, জেনো মনে তখন তাহার বিধির সঙ্গে লড়াই।" বিধির সঙ্গে লড়াইয়ে কি আর জিতা যায়?!
বিষয়: বিবিধ
৩৮৯৪ বার পঠিত, ৬০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
হতাশা থেকে দূরে থাকা অনেক যাতনার, সেটাই কষ্ট ....
আসতেই হবে। একথা বিশ্বাস করতে খুব জ্ঞানীও হতে হয় না, মৌলবাদীও হতে হয় না! ইতিহাস সাক্ষী! তবে নিউটনের ৩য় সূত্রের কথা ভাবলে গা শিউড়ে ওঠে! অনেক ধন্যবাদ আপনার চমৎকার লেখার জন্য! ভালো লাগলো খুব! লিখে যাবেন আশাকরি...এগিয়ে চলুন...
বর্তমান আমাদের দেশের রাজনৈতিক সংকটের মূল সমস্যার পেছনে যে কয়েকটি পক্ষ জড়িত তাদের মধ্য আপাতত আওয়ামী লীগকে প্রধানতম একটি পক্ষ হিসেবে প্রকাশ্যে স্বীকার করা হচ্ছে। আমার মনে হয় এখানেই বাংলাদেশপন্থীদের চিন্তাভাবনার যথেষ্ট ঘাটতি রয়েছে। আওয়ামী লীগ নামের রাজনৈতিক শক্তিটির অপমৃত্য হয়ে গেছে অত্যন্ত করুণভাবে। শেখ হাসিনা বা তার দল আওয়ামী লীগের কার্যত কোন অস্থিত্বই নেই। আওয়ামী লীগ এখন ইন্ডিয়ান গোলাম দাসীর চেয়েও নিকৃষ্টতর কিছু জীবের মর্যাদাও পাচ্ছে না দেশের মানুষের কাছে। লাইসেন্সধারী পোষাকী সন্ত্রাসীদের তিন চার স্থরের নিরাপত্তা নিয়েও আওয়ামী ইউনিফর্ম ব্যবহার করে আজ ইয়ারকন্তিশন রঙ্গিণ গাড়ীর গ্লাসটা পর্যন্ত খুলতে সাহস পাচ্ছে না পাতি নেতা থেকে শুরু করে হাতি নেতারা পর্যন্ত। জুতা বৃষ্টির বণ্যায় ভেসে যাওয়া থেকে শুরু করে কত ধরনের ঝড় তুফান অপেক্ষা করছে ক্ষমতার দম্ভে অন্ধ হয়ে যাওয়া পথহারাদের। মন্ত্রীসভার সদস্য হয়ে জাতে উঠার জন্য হামাগুড়ি দিয়ে লাইনে দাড়িয়ে পঙ্খজ শরমহীনদের কদমবুচি দেয়ার কি বেহায়াপনাই না শুরু হয়েছে! অথচ কয়েকদিন আগেও আমরা দেখেছি এসব মন্ত্রী সান্ত্রীদের পরিষদ থেকে বিদায় বেলায় শেখ হাসিনার কদমবুচি নেয়ার প্রতিযোগিতা! এই সরল সমীরণটাও যদি বাংলাদেশপন্থীদের বুঝে উঠতে আরো সময় ব্যয় করে তবে জাতিকে উদ্ধারের প্রস্তুতি নিতে আরো কি পরিমাণ সময় অপেক্ষা করতে হবে আল্লাহই মালুম? ল্যাংটো সভ্যতার মশালধারী জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে চিহ্নিত আমাদের প্রতিবেশী ইন্ডিয়ার (অনেকেই রসিকতা বলে থাকেন ল্যন্ডিয়ান) টালমাটাল বিস্ফোরন্মুখ স্বাধীনতাকামী জনতার দাবীকে মুছে দেয়ার জন্য বাংলাদেশকে গ্রাস করা অথবা বাংলাদেশে একটি অনুগত গোলামীর মানসিকায় পাশ করা একটি তথাকথিত এলেট গোষ্টী দরকার ল্যান্ডিয়ানদের কাছে। ল্যান্ডিয়ানদের এই প্রয়োজনীয়তা মিটাতে গিয়েই আজ আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক অপমৃত্যু হয়েছে।
এখন বাংলাদেশপন্থীদের দর কষাকষি বা নেগোশিয়েশন করতে হলে ল্যান্ডিয়ানদের সাথেই করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে আওয়ামী লীগকে বর্তমান বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের কোন পক্ষ হিসেবে স্বীকার করার অর্থই হচ্ছে বালকে জাতে তুরে নতুনভাবে প্রাণ সঞ্চার করার নামান্তর। বর্তমান সংকটে বাল কোন পক্ষই না। সুতরাং মৃত অজাবিন গাছের গোড়ায় পানি ঢালার প্রয়োজন নেই।
ভয়ানক কথা। আপনি কি হুমকি দিতিছেন নাকি?
যে অবস্তা শুরু করছে। সামনে জিহাদ অবসম্ভাবী।
আপনার সুন্দর লিখার জন্য অনেক ধন্যবাদ।
অনেক ধন্যবাদ।
যে মায়ের নাড়ী ছেড়া ধন যাকে দুধ নামক বুকের রক্ত দিয়ে তিল তিলে বড় করেছে । বাবার দেহের ঘাম নামক দেহের রক্ত বিকিয়ে যাকে শিক্ষিত করেছে তার এই ভাবে বিদায় নেওয়ার পর তাদের বুক ফাটা কান্নায় জালিমরা অট্টহাসি দিলেও আল্লাহ গজব একটুও টলবে না ।
ভয় হয় সেই গজবের আমরাও না ভাগীদার হয়ে যাই ।
হে মহামহীম আল্লাহ আমাদের ক্ষমা কর । ক্ষমা কর আমাদের অযোগ্যতাকে। ক্ষমা কর আমাদের ঈমানের দুর্বলতাকে ।
এই হিন্দা, ঘসেটি বেগম থেকে আল্লাহ আমাদের প্রিয় দেশকে রক্ষা করুন এই দোয়া করি ।
যাজ্জাকাল্লাহ খায়ের
এসময়ে আপনার ক্ষুরধার লিখার অতি প্রয়োজন সমাজ, দেশ এবং ব্লগরে পাঠক পাঠিকার জন্য......
কষ্ট-দুঃখ, যন্ত্রণা আর বিপদ আসুক যত।
জীবনকে যে দান করেছে স্রষ্টা প্রেমের রাহে,
মৃত্যুমুখে দাঁড়িয়েও সে সত্যেরই গান গাহে,
প্রভূ যখন যেমন রাখে, তাতেই খুশী শত।।
ভোগ-বিলাসের পাশব জীবন নয়তো কামনা,
কুরআন দিয়ে সমাজ গড়া যাদের সাধনা,
আসবে আঘাত যত, মুমিন হৃদয় শানিত হয় ততো।
খুব ভালো পোস্ট। ধন্যবাদ
জ্বী, হতাশ হবার যথেষ্ট কারণ থাকলেও মুমিনরা তো হতাশ হতে পারেনা। লা তাক্কনাতুম মির রাহমাতিল্লাহ। 'আল্লাহকে যারা ভেসেছে ভাল, দুঃখ কি আর তাদের থাকতে পারে, হতাশা কি আর তাদের থাকতে পারে।' মল্লিক ভাইএর এই গানটা আজও শুনলাম। সত্যি মুমিনদের হতাশ হতে নাই।
মুমিনদের হতাশ হতে নাই।
মন্তব্য করতে লগইন করুন