হেফাজতে ইসলামের আহবান, একজন জিয়া খান ও নষ্ট সমাজের রূঢ় রূপ...

লিখেছেন লিখেছেন পুস্পিতা ১২ জুন, ২০১৩, ০৫:০৮:০৪ বিকাল



গাইনী ওয়ার্ডে মাঝে মাঝে কিছু ঘটনার স্বাক্ষী হতে হয়। মেয়েগুলো লুকাতে চায়। কিন্তু বেশির ভাগ সময়েই পারে না। তবে ওসব ঘটনার ভিকটিমরা সরকারী মেডিকেলে প্রথমে কম আসে। বিভিন্ন ক্লিনিকে নষ্ট জীবনের চিহ্ন লুকাতে গিয়ে নিজের জীবনই যখন নীভু নীভু তখনই বাধ্য হয়ে আসে বা ক্লিনিকগুলো পাঠিয়ে দেয়।

ওই ক্রিটিক্যাল সময়ে রোগীর সেই সঙ্গীর কোন খোঁজ থাকে না। থাকার কথাও না। বাংলাদেশ ও উপমহাদেশের সমাজব্যবস্থা এখনও বিয়ের আগে সন্তান বা পিতৃপরিচয় হীন সন্তানকে মেনে নেয়ার অবস্থায় আসেনি। যদিও সেই নষ্টামির দিকে আহবান করে যাচ্ছে তথাকথিত প্রগতিশীলতার নামে। ধর্মীয় অনুভূতি এক্ষেত্রে বাঁধা। তাই ধর্মনিরপেক্ষতার নামে ধর্মহীনতার প্রচারণা চালানো হচ্ছে বিভিন্ন আঙ্গিকে।

জিয়া খান, বলিউড অভিনেত্রী! বলিউড অভিনেতা-অভিনেত্রী মানেই তথাকথিত আধুনিকদের স্বপ্নের রাজা-রাণী! সাজ-গোজ, পোষাক-আসাকের সাথে সাথে তাদের মতো হাটা-চলা-বলার চেষ্ঠাও অনেকে করে থাকেন। তারাই তাদের জীবনের আদর্শ!

সেই ধরনের কথিত সুন্দরী, আকর্ষনীয় জিয়া খানকে করতে হলো আত্মহত্যা! খবরটি নিয়ে উৎসাহী ছিলাম না। কিন্তু তার আত্মহত্যার কারণ ও নোটের কথা গুলো যখন প্রকাশ হলো তখন আগ্রহ বেড়ে গেলো। মনে হলো তার কথাগুলোতে শিক্ষনীয় আছে কোটি তরুণীর।

কি সেই শিক্ষাটি? একজন মেয়ে যখন তার জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সম্পদ নিজের আব্রু কোন প্রকার বৈধ সামাজিক বন্ধন ছাড়া পুরুষের কাছে হারিয়ে ফেলে তখন সেই পুরুষের কাছে ওই তরুণী ব্যবহৃত টিস্যু পেপার যে হয়ে যায়, তা জিয়া খান এই সময়ের অন্যতম শ্রেষ্ঠ উদাহরণ। নষ্ট সংস্কৃতির খপ্পড়ে পড়ে জিয়া খান সবকিছুই বিয়ে ছাড়াই দিয়ে বসেছে কথিত বন্ধু বা প্রেমিকের কাছে। খুবই নাকি বিশ্বাস করেছিল! সে জন্যেই সবকিছুই দিয়ে দিয়েছিল। সবকিছু, সবকিছুই!

বিনিময়ে কি পাওয়া গেলো? কেন, টিস্যু পেপারের মতো ছুড়ে ফেলে দেয়া। বুঝিনা একটি মেয়ে কি করে এভাবে একটি পুরুষকে বিশ্বাস করে! কথিত ভালবাসার নামে যখন পুরুষ, মেয়েটিকে স্ত্রীর মতো ব্যবহার করতে চায় তখনই তো মেয়েটির সতর্ক হয়ে যাওয়ার কথা। তখনই তো মেয়েটির বুঝা উচিত ভালবাসা নয়, এখানে ভিন্ন কিছু ওই নষ্ট পুরুষের চাওয়া। আধুনিক মেয়েগুলো নিজেদের এত জ্ঞানী মনে করে, এই সামান্য বিষয়টিও বুঝতে পারে না?! আশ্চর্য!

জিয়া খানের মতো সুন্দরী, আধুনিকাও সেই পুরুষের কাছে তুচ্ছ হয়ে যায় যখন বিয়ে বহির্ভূত ভাবে সবকিছু দিয়ে দেয় ওই পুরুষকে। সবকিছু হারানোর পর জিয়া খান বুঝতে পারে সে এখন তুচ্ছ! তুচ্ছ না হয়েও বা কি হবে?! কারণ জিয়া খানদের মতোই অপসংস্কৃতির ছোঁয়ায় বিবেক শুণ্য হাজারও তরুণী বর্তমান যাদের ওইসব নষ্টপুরুষরা যখন তখন খুঁজে পায় ও ব্যবহার করতে পারে। যেখানে জিয়া খানের মতো বা তার চেয়ে আরও উন্নত কাউকে খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে তখন কেন ওই নষ্ট পুরুষরা ব্যবহৃত টিস্যু পেপার জিয়া খানের জন্য বসে থাকবে?

কিন্তু জিয়া খান কি তুচ্ছ হয়ে যাওয়ার মতো ছিল? কি ছিল না তার? রূপ? সৌন্দর্য? মাধুর্য? কমনীয়তা? স্বাভাবিক ভাবে একজন পুরুষ যা চায় তার কোনটি তার কমতি ছিল? তারপরও কিভাবে সে ফেলনা হয়ে গেলো? বিশাল প্রশ্ন। আত্মহত্যার নোট পড়ে এটি বুঝা যায় আসলে সবকিছু থাকার পরও সে হারিয়ে ফেলেছিল তার জীবনের শ্রেষ্ঠ সম্পদটি। যা কথিত আধুনিক মেয়েরা জিয়া খানের মতোই ফাঁদে পড়ে হারাচ্ছে অহরহ। কেন জানি না, ওই সব আধুনিক ও কথিত শিক্ষিতরা কেন সবকিছু হারানোর আগে বিষয়টি বুঝতে পারে না!

জিয়া খানের আত্মহত্যার নোট পড়ে আবারও হেফাজতে ইসলামের সেই দাবীর কথা মনে ভেসে উঠে। তারা দাবী করেছিল, "ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ বন্ধ করা উচিত।" জিয়া খানদের পরিণতি দেখে কি এই দাবীর যৌক্তিকতা ফুটে উঠে না? হেফাজতের এই দাবী আসলে শুধু তাদের বা ইসলামের নয়, বরং প্রতিটি বিবেকবান মানুষের। যাদের বিবেক নষ্ট হয়ে গিয়েছে, যারা চায় নারীদের পরিণতি জিয়া খানের মতো হোক, তারা ছাড়া আর কেউ কি এই দাবীর বিরোধীতা করতে পারে?

যারা ওই দাবীর বিরোধীতা করে তারা নারীদের কোথায় নিয়ে যেতে চায় তা জিয়া খানের পরিণতি দেখেও যেন বুঝার চেষ্ঠা সবাই করে।

বিষয়: বিবিধ

৫৪২০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File