হেফাজতে ইসলাম বললে ব্যাকডেটেড, অন্যেরা বললে আপডেটেড?!
লিখেছেন লিখেছেন পুস্পিতা ০৬ জুন, ২০১৩, ০২:১১:০৪ দুপুর
১। রাস্তাঘাট বা যানবাহনে চলাফেরার সময় যৌন হয়রানি থেকে বাঁচতে নারীদের স্বল্প বসন বিশেষ করে মিনি স্কার্ট ও উত্তেজক প্যান্ট পরা উচিত নয়।
২। মুঠোফোনে কেউ ছবি তুলে নেওয়ার মতো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে বাসের উঁচু আসনে না বসে নারীদের নিচের ধাপের আসনে বসা উচিত।
৩। বাসের ভেতর নারীদের ব্যাগ, ম্যাগাজিন বা সংবাদপত্র দিয়ে শরীর অন্যদের থেকে আড়াল করে রাখা উচিত।
৪। ব্যক্তি ও বাকস্বাধীনতার নামে সব বেহায়াপনা, অনাচার, ব্যভিচার, প্রকাশ্যে নারী-পুরুষের অবাধ বিচরণ বন্ধ করা উচিত।
পর্দা কখনোই শুধুমাত্র পোষাক ও নারীর ভিতর সীমাবদ্ধ নয়। এটি ব্যাপক বিষয়। পোষাক, চোখ, মন সবকিছুকে কন্ট্রোল করা এর অংশ এবং তা নারী-পুরুষ উভয়ের জন্য প্রযোজ্য।
তাই আমার মতে পুরুষকে নীতি-নৈতিকতার ট্রেনিং না দিয়ে শুধু নারীকে বোরকা পরিয়ে অনাচার বন্ধ হবে না। আবার পুরুষের চোখ নিচে রেখে নারীকে অর্ধউলঙ্গ করে দেয়া হলেও বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না।
উপরের ১,২,৩ নম্বর নির্দেশ ১০০% সেকুলার দেশ চীনের। ৪ নম্বর কথাটি ১০০% মৌলবাদী হেফাজত ইসলামের। আচ্ছা উভয়ের ভিতর মৌলিক পার্থক্য কি? চীন মনে করছে মিনিস্কার্ট একপ্রকার বেহায়াপনা। পাবলিক বাসের ভিতর নারী-পুরুষ একে অপরের শরীরের সাথে লেগে বসা অবাধ বিচরণের একটি ধরণ। প্রকারান্তরে তাই নয় কি? চীন তাদের দেশের প্রেক্ষিতে নিজেদের মতো করে বলেছে।
যদি বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এ কথাগুলো কেউ বলত তবে তা কি রকম হতো?
১। রাস্তাঘাট বা যানবাহনে চলাফেরার সময় যৌন হয়রানি থেকে বাঁচতে নারীদের অশালীন বসন বিশেষ করে টাইট টি শার্ট-জিন্স প্যান্ট ও উত্তেজক পোষাক পরা উচিত নয়, স্কার্ফ ব্যবহার করা উচিত।
২। অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে বাসে নারীদের জন্য আলাদা প্রয়োজনীয় বসার স্থান ঠিক করা বা আলাদা বাস থাকা উচিত।
৩। যদি একই বাসে উঠতেও হয় নারী-পুরুষ পাশাপাশি বসা উচিত নয়।
চীন যা বলেছে আমাদের দেশের প্রেক্ষিতে হেফাজতে ইসলাম তো বলতে গেলে প্রায় একই কথা বলেছে। অথচ হেফাজতে ইসলামের কথাকে কেন্দ্র করে সুশীলদের কি কান্না! নারীদের শেষ করে ফেলল হেফাজতে ইসলাম! হেফাজতে ইসলাম কি নারীরা কাজ করতে পারবে না, গার্মেন্টসে চাকুরি করতে পারবে না এমন কিছু কি বলেছে? নারীর কাজ বা চাকুরী করা ও সৌহরাওয়ার্দী উদ্দ্যান ও শাহবাগে অসভ্যতায় লিপ্ত হওয়া কি এক?
চীনের এসব নির্দেশনা প্রকারান্তরে ইসলামের পর্দা প্রথাকে স্বীকার করে নেয়ার মতো নয় কি? যা ইসলাম ১৫০০বছর আগে বলেছে তা বর্তমান বিশ্ব ঠেকে স্বীকার করে নিচ্ছে। ইউকে সহ বিশ্বের আরো অনেক দেশ অশালীন পোষাক নিয়ে বিভিন্ন নির্দেশনা ও সচেতনতা তৈরির কাজ করছে। অর্থাৎ সামাজিক বিপর্যয় থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য নারী-পুরুষকে নৈতিক শিক্ষা দেয়া সাথে সাথে নারীকে পোষাক নিয়ে সচেতন হতে হবে এবং অবাধ মেলামেশা বন্ধ করতে হবে। কাজ বন্ধ করা নয়।
কথাগুলো হেফাজত ইসলাম বললে ব্যাকডেটেড আর চীন বলে আপডেটেড!
বিষয়: বিবিধ
৬৭৭৩ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন