সমকামিতার পক্ষে সরাসরি ও প্রকাশ্য প্রচারণা শুরু হয়েছে?!

লিখেছেন লিখেছেন পুস্পিতা ০৪ জুন, ২০১৩, ১২:১৭:৪৮ দুপুর



একটি সরকারী কলেজের অর্থনীতির শিক্ষক আমাদের এক সিনিয়র আপু bdnews24.com এ প্রকাশিত সমকামিতা : ধারণা বনাম বাস্তবতা শিরোনামে একটি মন্তব্য প্রতিবেদনের লিংক পাঠিয়ে মতামত দেয়ার কথা জানিয়েছিল। প্রবন্ধটি পড়ে তাকে ফোন করলাম। তিনি ভয়ানক রেগে আছেন এই ধরনের লিখা দেশের প্রথম সাড়ির একটি অনলাইন পত্রিকায় প্রকাশিত হতে দেখে। তারা দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে চায়?!

আমিও হতভম্ব হয়েছি। এই ধরনের একটি লিখা বাংলাদেশে প্রকাশিত হয়েছে তা বিশ্বাসই হচ্ছিল না। দীর্ঘদিন ধরে কিছু কিছু মিডিয়া আন্তঃধর্মীয় বিয়ে, লিভটুগেদার ইত্যাদি বিষয়ে কৌশলে প্রচারণা চালাচ্ছিল। কিন্তু সরাসরি সাপোর্ট দিয়ে কোন আর্টিকেল প্রকাশ বা আহবান জানানোর দুঃসাহস দেখায় নি। অন্যদিকে আন্তঃধর্মীয় বিয়ে, লিভটুগেদারের চেয়েও ভয়াবহ বিষয় হচ্ছে সমকামিতা। যা কোন সুস্থ মানুষের কাজ নয়। প্রকৃতিও যা সাপোর্ট করে না। সেই ধরনের একটি বিষয়ের দিকে সরাসরি আহবান জানিয়ে শাহবাগীদের কক্টর সমর্থক bdnews24.com এক দুঃসাহস দেখিয়েছে এবং প্রমাণ করেছে তারা সমকামিতার পক্ষে। তাদের এই কাজ অবশ্যই পরিকল্পিত।

সমকামিতার পক্ষে নিবন্ধটিতে যা বলা হয়েছে তা সম্পূর্ণই হাস্যকর ও নষ্টের প্রলাপ, পড়লেই বুঝা যায়। লিখাটিতে যা বলা হয়েছে তার পক্ষে কোন যুক্তি, প্রমাণ দেয়া হয়নি। শুধু বলে যাওয়া হয়েছে। যেমন সেই নিবন্ধের লেখক বলেছেন-

১। সমকামী বা উভকামী হওয়াটা সম্পূর্ণরূপে স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর।

২। সমকামিতা প্রত্যেকটি সমাজ ও সংস্কৃতির অবিচ্ছেদ্য অংশ। এমনকি অন্যান্য প্রাণিদের মধ্যেও এর উপস্থিতি দেখা যায়।


এ মন্তব্য গুলো কি সঠিক? সমকামী হওয়া স্বাভাবিক? প্রতিটি সমাজ ও সংস্কৃতির তা অবিচ্ছেদ্য অংশ? অন্যান্য প্রাণিদের ভিতরও তা আছে?

বর্তমান সরকার ও মানবাধিকার কমিশন নাকি সমকামিতার স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে?

বিষয়টি খুবই ভয়াবহ। কারণ ওই নিবন্ধের লেখক নিজেই দাবী করেছেন এভাবে-

১। "কয়েক সপ্তাহ আগে, ২৯ এপ্রিল জেনেভায় অনুষ্ঠিত ইউনিভার্সাল পিরিয়ডিক রিভিউতে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপুমণি বলেছেন লেসবিয়ান, গে, বাইসেক্সুয়াল ও ট্রান্সজেন্ডার মানুষদের (সংক্ষেপে এলজিবিটি) অধিকার সংরক্ষণের স্বীকৃতিদানের কথা; সাংবিধানিকভাবে তাদের সমঅধিকার ও স্বাধীনতা থাকার কথাও বলেন তিনি"

২। "কয়েক মাস আগে, জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান বন্ধু ওয়েলফেয়ার সোসাইটির একটি অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেন যে, জাতীয় আইন কমিশনের সহায়তায় তার কমিশন একটি আইনের খসড়া তৈরির কাজ করছে যেটি ব্যক্তির যৌনজীবনের কারণে তার প্রতি বৈষম্য নিষিদ্ধ করবে।"

এটি কি আসলেই সরকারের সিদ্ধান্ত? ধর্মনিরপেক্ষতার নামে তাহলে এ সবই সরকার আমাদের সমাজে ছড়িয়ে দিতে চাচ্ছে? নিবন্ধটি প্রকাশিত হয়েছে ৩০মে ২০১৩ তারিখে। আজ পর্যন্ত এই বিষয়ে সরকারের কোন প্রতিবাদ দেখা যায়নি। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ সরকার সমকামিতাকে বৈধতা ও স্বীকৃতি দিতে যাচ্ছে? ভয়াবহ বিষয়!

প্রগতিশীল মুসলমানরাও নাকি সমকামিতাকে সাপোর্ট দিয়েছে!

লেখক বলেছেন এভাবে, "প্রগতিশীল মুসলমান বিদ্বজনদের মধ্যে কেউ কেউ সমকামিতাকে নিন্দা না করে এর প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করেছেন।"

আচ্ছা "প্রগতিশীল মুসলমান" এটা আবার কোন প্রাণী? ইমরান এইচ সরকার? শাহরিয়ার কবির? মুনতাসির মামুন? নাকি বর্তমান সরকারের মন্ত্রীরা? নাকি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বর্তমান ডিজি? লেখকের উচিত হবে সেই সব প্রগতিশীল মুসলমান বিদ্বজনদের নাম প্রকাশ করা। তাহলেই আমরা বুঝতে পারব কোন কোন প্রগতিশীলরা সমকামী! সম্পূর্ণ ইসলাম বিরোধী একটি কাজকে ইসলামের নামে বৈধ বলার দুঃসাহস! সাহসেরও তো একটা মাত্রা থাকা উচিত!

ওরা এই দাবী করার দুঃসাহস কোথায় পায়?

এটা কি সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতা ঢোকানোর পরিণতি? তা না হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিভাবে সমকামিতাকে বৈধতা দেয়ার ঘোষণা দিলো? তথাকথিত প্রগতিশীলরাও কিভাবে সরাসরি সমকামিতার বৈধতা দাবী করার দুঃসাহস দেখায়? মুসলিম দেশে তথাকথিত প্রগতিশীল মুসলমানের নামে সমকামিতাকে বৈধ করার দাবী জানানো আল্লাহ-রাসুল (সাঃ) কে গালাগালি করার চেয়ে কি কম অপরাধ?!

এরপর কিসের বৈধতার দাবি করা হবে?

প্রবন্ধটিতে একজন পাঠক মন্তব্য করেছেন এভাবে, "এরপর আর কীসের বৈধতার দাবী করা হবে? বাকি থাকল incest sex বা পারিবারিক যৌনতা যা এক কথায় পরিবাবের সকল সদস্যদের মধ্যে অবাধ যৌন সম্পর্ককে বুঝায়। দ্বিতীয়ত, পশুদের সঙ্গে যৌন সম্পর্ক। পৃথিবীর অনেক স্থানে এরূপ যৌনতা দেখা যায়। বারবার দাবি করে অযথা সময় নষ্ট না করে একেবারে সব দাবি পেশ করুন। আপনাদের দাবির সপক্ষে অনেক নামিদামি গবেষকের সার্টিফিকেট পাবেন, কোনো অসুবিধা হবে না।"

আসলেই এসবই তাদের মূল উদ্দেশ্য। ধর্মীয় মূল্যবোধ ধ্বংস করে দিয়ে মানবজাতিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করার ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এসব করা হচ্ছে। কি আশ্চর্য! আমাদের পররাষ্ট্রমন্ত্রীও নাকি সমকামিতার পক্ষে! মানবাধিকার কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যানও নাকি পক্ষে! সরকারের উচ্চ পর্যায়ের গ্রীণ সিগন্যাল পেয়েই কি ওই লেখক সমকামিতার পক্ষে সরাসরি প্রচারণা শুরু করলো এবং bdnews24.com ও তাদের সহযোগী হয়েছে? এই কৌশলের সাথে শাহবাগীদের কৌশলের মিল দেখা যাচ্ছে। তারা যেমন সরকারী পৃষ্টপোষকতায়, কথিত প্রগতিশীল মিডিয়ার সহযোগীতায় নাস্তিকতার পক্ষে কৌশলে কাজ শুরু করেছিল তেমনি সমকামিরাও সেই কৌশলে সারাদেশে তাদের নষ্টামি ছড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করেছে?

বিষয়: বিবিধ

১৩২৯৬ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File