মানুষকে ঠিকমতো বিচার করি তো?
লিখেছেন লিখেছেন ডাঃ নোমান ১৯ মে, ২০১৪, ০৯:৩১:০৩ রাত
রংপুর মেডিকেল এ ভর্তি হওয়ার পর তখন অপেক্ষার প্রহর গুনছি ক্লাশ শুরুর। দেখতে দেখতে একদিন চলে এল সেই শুভদিন। জিয়া হোষ্টেল এ উঠলাম। র্্যাগিং সিস্টেম সম্পর্কে একদম অজানা সাদামাটা এক গ্রাম্য ছেলে। প্রচন্ড শীত তখন এত্ত বেশী হাঁড়কাপানো যে এই গরমের দিনে কোন ক্রমেই আপনাদের বোঝানো সম্ভব না। প্রথম রাতেই আমাদের এক রুমে ডেকে সেই ঠান্ডায় মেঝেতে পাক্বা ৫ ঘন্টা দাঁড় করিয়ে রাখা হলো। এখনকার হালকা প্রতিবাদি সত্ত্বাটা ও তখন ঘুমিয়ে। নীরবে সয়ে গেলাম। তারপরের দিন ঠান্ডায় জ্বর এল এমনিতে জ্বর তার উপর নতুন রাতের বিভিষিকা। রাত এগার টা বাজে এবার আমার একা ডাক পড়ল। র্্যাগিং এর সিস্টেম এখন বোধ হয় সবাই জানে। ইমিডিয়েট সিনিয়র কর্তৃক ইমিডিয়েট জুনিয়র দের দেওয়া হয়। আমার ডাক পড়ল তিন ব্যাচ সিনিয়র এক ভাইয়ের কাছে। নাম কুন্ডু।
তুই শিবির করিস?
না ভাই।
শিবির সভাপতি তোদের ব্যাচের শিবিরের নাম আমাদের দিয়েছে তাতে তোর নাম আছে কেন?
আমি জানি না ভাই। আমি সত্যি জানতাম না এমনকি শিবিরের সভাপতি কে তাও জানতাম না।
তারপর ইচ্ছামত ঝাড়ি। জ্বরে না ঝাড়িতে কান মাথা ঝি ঝি করছিল কিছু বুঝছিলাম না। সেই থেকে সিনিয়র দের দলমত নির্বিশেষে সবাইকে সম্মান করেছি শুধু তাকে ছাড়া।
আজ অর্থোপেডিক্স দিয়ে ইন্টার্নী শুরু করলাম প্রথম দিনই ওটি। একজন ডাক্তার অপারেশন করছে আমি এসিস্ট করছি। আমার ভুলগুলো অনেক মমতা দিয়ে ধরিয়ে দিচ্ছেন। অসাধারণ ব্যবহার। দুর্ভাগ্যক্রমে ডাক্তার টির নাম কুন্ডু। সেই সিনিয়র ভাই।
আমরা বোধ হয় কাউকে বিচার করার জন্য খুব কম সময় নেই। মাফ করবেন ভাই। ডাঃ কুন্ডু।
বিষয়: বিবিধ
১৫৫০ বার পঠিত, ৪ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন