এই দিনে প্রথম উড়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা
লিখেছেন লিখেছেন সোনামণি ০২ মার্চ, ২০১৩, ০৮:০৮:৩৩ সকাল
একাত্তরের আজকের দিনে (২ মার্চ) বিক্ষোভে উত্তাল ছিল ঢাকা। শাসকগোষ্ঠীর কারফিউ ভঙ্গ করে দিনরাত চলেছে আন্দোলন-বিক্ষোভ। বিক্ষোভে নির্বিচার গুলিতে নিহত হয়েছিল ২৩ দেশপ্রেমিক মানুষ। ওড়ানো হয়েছিল স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা। ১৯৭১ সালের ২ মার্চ ছিল এমন একটি দিন। পরাধীনতা ছিন্ন করে মুক্তির নিশানা এই দিনে আত্মপ্রকাশ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে।
২ মার্চ সকাল থেকেই দলমত নির্বিশেষে সর্বস্তরের মানুষ ঢাকার রাজপথে অবস্থান নেয়। জনসমুদ্র হয়ে ওঠে রাজপথগুলো। আর সব মিছিলের একটিই লক্ষ্য—ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়।
এখানেই বেলা ১১টায় প্রথম উত্তোলিত হয় গাঢ় সবুজ জমিনের মাঝখানে লাল বৃত্তে অঙ্কিত মানচিত্র ‘স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা’। ডাকসুর তত্কালীন সহ-সভাপতি আ স ম আবদুর রব সংগ্রামী ছাত্রসমাজের পক্ষে প্রথম বাংলাদেশের মানচিত্রসহ স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলায় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের ডাকে এক বিশাল ছাত্রসমাবেশ ছিল সব আয়োজনের কেন্দ্র। সকাল ১০টার মধ্যে এ সমাবেশে উপস্থিত হয় হাজার হাজার মানুষ। নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অনুষ্ঠানটি শুরু হয়। আর এরই মাঝে রক্তাক্ত অবস্থায় ছুটে আসে একজন—জানায় ফার্মগেট এলাকায় গোলাগুলির কথা। বিক্ষোভ মিছিল বের হয় ক্যাম্পাস থেকে। বিকালে জনসভা অনুষ্ঠিত হয় বায়তুল মোকাররম ও পল্টন ময়দানে।
সন্ধ্যার পর হঠাত্ করেই পুরো শহরে কারফিউ জারির ঘোষণা দেয়া হয়। রাত ৯টা থেকে পরদিন ৩ মার্চ সকাল ৭টা পর্যন্ত কারফিউ জারি করে সামরিক কর্তৃপক্ষ এবং অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টা থেকে সকাল ৭টা পর্যন্ত কারফিউ জারি থাকবে বলে জানানো হয়।
বেতারে কারফিউ জারির ঘোষণা হওয়ার পর বিভিন্ন এলাকায় স্বতঃস্ফূর্তভাবে লোকজন রাস্তায় নেমে ব্যারিকেড তৈরি করে কারফিউ ভেঙে গভীর রাত পর্যন্ত মিছিল বের করে। হাজার মানুষের স্লোগান চূর্ণ করে দেয় রাতের নিস্তব্ধতাকে। বিক্ষোভকারীদের ওপর নির্বিচারে গুলি চালায় পাক সেনারা এবং সে রাতেই হত্যা করা হয় ২৩ জনকে। আওয়ামী লীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান পাক সেনাদের এমন বর্বর আচরণকে গণহত্যার সঙ্গে তুলনা করেন এবং ৩ মার্চ ‘জাতীয় শোক দিবস’ পালনের আহ্বান জানান।
বিষয়: বিবিধ
১৩৪০ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন