সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব মানুষের মেনে নিলে আল্লাহ্কে ‘রব্ব’ মানার পরিবর্তে মানুষকে ‘রব্ব’ মানা হয়। যা “আল্লাহর রুবুবিয়্যাতে র্শিক”। ফলে আল্লাহ্র প্রতি ঈমানের ঘোষণা “রাব্বুনাল্লাহ্” শূণ্য হয়ে যায়। “ইসলামী সমাজ "
লিখেছেন লিখেছেন মনসুর আহামেদ ০৯ জানুয়ারি, ২০১৭, ০১:১৮:৫০ রাত
“ইসলামী সমাজ বিতাড়িত অভিশপ্ত শয়তানের প্ররোচনা থেকে মহান রব্বের নিকট আশ্রয় প্রার্থণা করে
দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
ইসলাম :
ইসলাম হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত কল্যাণকর ও পরিপূর্ণ একমাত্র জীবন ব্যবস্থা। ইসলামের বিধি-বিধান মেনে চলার মধ্যেই দুনিয়ার কল্যাণ, শান্তি এবং আখিরাতে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে লাভ হবে জান্নাত।
‘ইসলাম’এর মৌলিক বিষয় তিনটি :
‘ইসলাম’এর প্রথম মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
আল্লাহর রুবুবিয়্যাতে তাওহীদ অর্থাৎ সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর, মানুষের নয়। এটাই আল্লাহর প্রতি ঈমান। আল্লাহর প্রতি ঈমানের ঘোষণা হচ্ছে- “রাব্বুনাল্লাহ্” অর্থাৎ আল্লাহ্ই আমাদের একমাত্র রব্ব-সার্বভৌম ক্ষমতার একমাত্র মালিক, সার্বভৌম আইনদাতা, বিধানদাতা ও নিরংকুশ কর্তা, অন্য কেউ নয়।
সার্বভৌমত্ব হচ্ছে- মানুষের জীবনের সকল দিক ও বিভাগসহ সমগ্র সৃষ্টিজগতের চূড়ান্ত মালিকানা এবং হুকুম, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করার সর্বোচ্চ ক্ষমতা। সার্বভৌমত্ব যার, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বও তাঁরই।
‘ইসলাম’এর দ্বিতীয় মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
আল্লাহর উলুহিয়্যাতে তাওহীদ অর্থাৎ দাসত্ব, আইনের আনুগত্য ও উপাসনা একমাত্র আল্লাহর, অন্য কারও নয়। উলুহিয়্যাতে তাওহীদের অঙ্গীকার হচ্ছে- ‘‘আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নেই কোন ইলাহ্ (মা’বুদ)- দাসত্ব, আইনের আনুগত্য ও উপাসনা পাওয়ার অধিকারী সত্ত্বা একমাত্র আল্লাহ্ ব্যতীত। এটা মূলতঃ ইসলামের অঙ্গীকার।
‘ইসলাম’এর তৃতীয় মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
শর্তহীন আনুগত্য-অনুসরণ ও অনুকরণ একমাত্র আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর, অন্য কারো নয়। এর অঙ্গীকার হচ্ছে- “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ” অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল-শর্তহীন আনুগত্য-অনুসরণ ও অনুকরণ পাওয়ার অধিকারী একমাত্র নেতা; অন্য কেউ নয়”। এটা মূলতঃ ইসলাম বাস্তবায়নের অঙ্গীকার।
‘ইসলাম’এর এই মৌলিক তিনটি বিষয় মেনে নিলেই একজন ব্যক্তির অবস্থান ইসলামে স্বীকৃত হবে। অর্থাৎ জ্ঞানের ভিত্তিতে অন্তরের দৃঢ় বিশ্বাসসহ “রাব্বুনাল্লাহ” বলে ঈমানের ঘোষণা এবং “আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” বলে ‘ইসলাম’এর অঙ্গীকার ও “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ” বলে ইসলাম বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করলেই একজন ব্যক্তির অবস্থান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রদত্ত্ব জীবন ব্যবস্থা ‘ইসলাম’এ স্বীকৃত হবে।
‘ইসলাম’এর মৌলিক বিষয়গুলির ভিত্তিতে গঠিত ও পরিচালিত সমাজ’ই “ইসলামী সমাজ”।
জাহিলিয়্যাত :
মানব রচিত সকল প্রকার ব্যবস্থাই মূলতঃ জাহিলিয়্যাত। ইসলাম ও জাহিলিয়্যাত পরস্পর বিপরীত ও বিরোধী। এ দু’টির সহ-অবস্থান আদৌ সম্ভব নয় এবং শূণ্যতাও সম্ভব নয়।
‘জাহিলিয়্যাত’এর মৌলিক বিষয় তিনটি :
জাহিলিয়্যাতের প্রথম মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব মানুষের। সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সার্বভৌমত্ব হচ্ছে- সমাজ ও রাষ্ট্রের চূড়ান্ত মালিকানা এবং সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের সর্বোচ্চ ও চূড়ান্ত ক্ষমতা। সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব মানুষের মেনে নিলে আল্লাহ্কে ‘রব্ব’ মানার পরিবর্তে মানুষকে ‘রব্ব’ মানা হয়। যা “আল্লাহর রুবুবিয়্যাতে র্শিক”। ফলে আল্লাহ্র প্রতি ঈমানের ঘোষণা “রাব্বুনাল্লাহ্” শূণ্য হয়ে যায়।
জাহিলিয়্যাতের দ্বিতীয় মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
দাসত্ব মানুষের, আনুগত্য মানব রচিত ব্যবস্থার ও উপাসনা গাইরুল্লাহর। মানব রচিত ব্যবস্থার আনুগত্য স্বীকার করলে মানুষকে ‘ইলাহ্’ স্বীকার করা হয়। যা “আল্লাহর উলুহিয়্যাতে র্শিক”। ফলে ইসলামের অঙ্গীকার ‘‘আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ্” শুণ্য হয়ে যায়।
জাহিলিয়্যাতের তৃতীয় মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
“আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নেতৃত্বের আনুগত্যে র্শিক” অর্থাৎ মানব রচিত ব্যবস্থার ধারক-বাহক নেতা বা সরকারের আনুগত্য। মানব রচিত ব্যবস্থার ধারক-বাহক নেতা বা সরকারের আনুগত্য স্বীকার করে নিলে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর শর্তহীন আনুগত্যের অঙ্গীকার বাদ হয়ে যায়। অর্থাৎ ইসলাম বাস্তবায়নের অঙ্গীকার “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্” শূণ্য হয়ে যায়।
জাহিলিয়্যাতের এই মৌলিক তিনটি বিষয় মেনে নিলে ব্যক্তির অবস্থান জাহিলিয়্যাতে স্বীকৃত হবে।
জাহিলিয়্যাতের মৌলিক বিষয়গুলির ভিত্তিতে গঠিত ও পরিচালিত সমাজ’ই “জাহিলি সমাজ”।
সুতরাং মানব রচিত ব্যবস্থা তথা জাহিলিয়্যাতের মৌলিক বিষয় গুলো পরিত্যাগ করে ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো গ্রহণ করলেই ব্যক্তির অবস্থান ইসলামে স্বীকৃত হবে। যে ব্যক্তি জাহিলিয়্যাতের মৌলিক বিষয়গুলো মেনে নেয় তার অবস্থান আল্লাহ্ প্রদত্ত কল্যাণকর পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা “ইসলাম’’ এর বাহিরে হয়। এমতাবস্থায় তার পরিণতি- দুনিয়ায় অকল্যাণ ও অশান্তি এবং আখিরাতে নিশ্চিত জাহান্নাম। আর এটাই মহাক্ষতি। এই মহাক্ষতি থেকে বাঁচার লক্ষ্যে দল-মত ও ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে বিশ্বের সকল মানুষকে ‘জাহিলিয়্যাত’ তথা মানব রচিত ব্যবস্থা ত্যাগ করে, ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো কবুল করে, সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে “ইসলামী সমাজ” গঠনের আন্দোলনে শামিল হওয়ার আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি। সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার নামে মানব রচিত সংবিধান মেনে নিয়ে ‘গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র-ধর্মনিরপেক্ষতা-জাতীয়তাবাদ’-এর অধীনে নির্বাচন কিংবা ‘ঈমানদারগণের রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতা না থাকা অবস্থায়’ সশস্ত্র সংগ্রাম, সশস্ত্র বিপ্লব, বোমাবাজি এ দু’টির কোনটিই সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি নয়। বরং আল্লাহ্ প্রদত্ত জীবন ব্যবস্থা ‘ইসলাম’এর আইন-বিধানের সুস্পষ্ট লংঘণ এবং র্শিক ও কুফর।
সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠিত না থাকাকালীন অর্থ-সম্পদ ও সময় ব্যয় করে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত চেষ্টা করাই আল্লাহর ক্ষমা ও জান্নাত লাভের উপায়। সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠিত করার ও রাখার লক্ষ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- “আমি তোমাদেরকে ৫টি কাজের আদেশ দিচ্ছি, আল্লাহ্ পাক আমাকে ঐগুলোর নির্দেশ দিয়েছেন। (১) দলবদ্ধভাবে থাকবে। (২) আমীরের আদেশ মেনে চলবে। (৩) আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ বর্জন করবে। (৪) আল্লাহর আদেশ মেনে চলবে (৫) আল্লাহর পথে জিহাদ (জান ও মাল দ্বারা সর্বোচ্চ চেষ্টা) করবে। যে ব্যক্তি দল (ইসলাম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে গঠিত) ত্যাগ করে এক বিঘৎ পরিমানও দূরে সরে গেল, সে নিজের গর্দান থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেললো, তবে সে যদি দলে প্রত্যাবর্তন করে তবে ভিন্ন কথা। আর যে ব্যক্তি জাহিলিয়্যাতের রীতি-নীতির দিকে (মানুষকে) ডাকে সে জাহান্নামী, যদিও সে রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং নিজেকে মুসলিম বলে দাবী করে।” (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী)
আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বিশ্বের সকল মানুষকে জাহিলিয়্যাত ত্যাগ করে “ইসলামী সমাজ গঠন আন্দোলন”-এ শামিল হয়ে মহাক্ষতি থেকে বাঁচার তৌফিক দিন। আমীন! ইয়া রাব্বুল আ’লামীন।“ইসলামী সমাজ বিতাড়িত অভিশপ্ত শয়তানের প্ররোচনা থেকে মহান রব্বের নিকট আশ্রয় প্রার্থণা করে
দয়াময় পরম দয়ালু আল্লাহর নামে শুরু করছি।
ইসলাম :
ইসলাম হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত কল্যাণকর ও পরিপূর্ণ একমাত্র জীবন ব্যবস্থা। ইসলামের বিধি-বিধান মেনে চলার মধ্যেই দুনিয়ার কল্যাণ, শান্তি এবং আখিরাতে জাহান্নামের কঠিন শাস্তি থেকে মুক্তি পেয়ে লাভ হবে জান্নাত।
‘ইসলাম’এর মৌলিক বিষয় তিনটি :
‘ইসলাম’এর প্রথম মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
আল্লাহর রুবুবিয়্যাতে তাওহীদ অর্থাৎ সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও নিরংকুশ কর্তৃত্ব একমাত্র আল্লাহর, মানুষের নয়। এটাই আল্লাহর প্রতি ঈমান। আল্লাহর প্রতি ঈমানের ঘোষণা হচ্ছে- “রাব্বুনাল্লাহ্” অর্থাৎ আল্লাহ্ই আমাদের একমাত্র রব্ব-সার্বভৌম ক্ষমতার একমাত্র মালিক, সার্বভৌম আইনদাতা, বিধানদাতা ও নিরংকুশ কর্তা, অন্য কেউ নয়।
সার্বভৌমত্ব হচ্ছে- মানুষের জীবনের সকল দিক ও বিভাগসহ সমগ্র সৃষ্টিজগতের চূড়ান্ত মালিকানা এবং হুকুম, নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করার সর্বোচ্চ ক্ষমতা। সার্বভৌমত্ব যার, আইন-বিধান ও কর্তৃত্বও তাঁরই।
‘ইসলাম’এর দ্বিতীয় মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
আল্লাহর উলুহিয়্যাতে তাওহীদ অর্থাৎ দাসত্ব, আইনের আনুগত্য ও উপাসনা একমাত্র আল্লাহর, অন্য কারও নয়। উলুহিয়্যাতে তাওহীদের অঙ্গীকার হচ্ছে- ‘‘আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ” অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, নেই কোন ইলাহ্ (মা’বুদ)- দাসত্ব, আইনের আনুগত্য ও উপাসনা পাওয়ার অধিকারী সত্ত্বা একমাত্র আল্লাহ্ ব্যতীত। এটা মূলতঃ ইসলামের অঙ্গীকার।
‘ইসলাম’এর তৃতীয় মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
শর্তহীন আনুগত্য-অনুসরণ ও অনুকরণ একমাত্র আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)এর, অন্য কারো নয়। এর অঙ্গীকার হচ্ছে- “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ” অর্থাৎ আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহর রাসূল-শর্তহীন আনুগত্য-অনুসরণ ও অনুকরণ পাওয়ার অধিকারী একমাত্র নেতা; অন্য কেউ নয়”। এটা মূলতঃ ইসলাম বাস্তবায়নের অঙ্গীকার।
‘ইসলাম’এর এই মৌলিক তিনটি বিষয় মেনে নিলেই একজন ব্যক্তির অবস্থান ইসলামে স্বীকৃত হবে। অর্থাৎ জ্ঞানের ভিত্তিতে অন্তরের দৃঢ় বিশ্বাসসহ “রাব্বুনাল্লাহ” বলে ঈমানের ঘোষণা এবং “আশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু” বলে ‘ইসলাম’এর অঙ্গীকার ও “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ” বলে ইসলাম বাস্তবায়নের অঙ্গীকার করলেই একজন ব্যক্তির অবস্থান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন প্রদত্ত্ব জীবন ব্যবস্থা ‘ইসলাম’এ স্বীকৃত হবে।
‘ইসলাম’এর মৌলিক বিষয়গুলির ভিত্তিতে গঠিত ও পরিচালিত সমাজ’ই “ইসলামী সমাজ”।
জাহিলিয়্যাত :
মানব রচিত সকল প্রকার ব্যবস্থাই মূলতঃ জাহিলিয়্যাত। ইসলাম ও জাহিলিয়্যাত পরস্পর বিপরীত ও বিরোধী। এ দু’টির সহ-অবস্থান আদৌ সম্ভব নয় এবং শূণ্যতাও সম্ভব নয়।
‘জাহিলিয়্যাত’এর মৌলিক বিষয় তিনটি :
জাহিলিয়্যাতের প্রথম মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব মানুষের। সমাজ ও রাষ্ট্রের ক্ষেত্রে সার্বভৌমত্ব হচ্ছে- সমাজ ও রাষ্ট্রের চূড়ান্ত মালিকানা এবং সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগের সর্বোচ্চ ও চূড়ান্ত ক্ষমতা। সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় সার্বভৌমত্ব, আইন-বিধান ও কর্তৃত্ব মানুষের মেনে নিলে আল্লাহ্কে ‘রব্ব’ মানার পরিবর্তে মানুষকে ‘রব্ব’ মানা হয়। যা “আল্লাহর রুবুবিয়্যাতে র্শিক”। ফলে আল্লাহ্র প্রতি ঈমানের ঘোষণা “রাব্বুনাল্লাহ্” শূণ্য হয়ে যায়।
জাহিলিয়্যাতের দ্বিতীয় মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
দাসত্ব মানুষের, আনুগত্য মানব রচিত ব্যবস্থার ও উপাসনা গাইরুল্লাহর। মানব রচিত ব্যবস্থার আনুগত্য স্বীকার করলে মানুষকে ‘ইলাহ্’ স্বীকার করা হয়। যা “আল্লাহর উলুহিয়্যাতে র্শিক”। ফলে ইসলামের অঙ্গীকার ‘‘আশহাদু আল্লা ইলা-হা ইল্লাল্লাহ্” শুণ্য হয়ে যায়।
জাহিলিয়্যাতের তৃতীয় মৌলিক বিষয় হচ্ছে-
“আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর নেতৃত্বের আনুগত্যে র্শিক” অর্থাৎ মানব রচিত ব্যবস্থার ধারক-বাহক নেতা বা সরকারের আনুগত্য। মানব রচিত ব্যবস্থার ধারক-বাহক নেতা বা সরকারের আনুগত্য স্বীকার করে নিলে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) এর শর্তহীন আনুগত্যের অঙ্গীকার বাদ হয়ে যায়। অর্থাৎ ইসলাম বাস্তবায়নের অঙ্গীকার “আশহাদু আন্না মুহাম্মাদার রাসূলুল্লাহ্” শূণ্য হয়ে যায়।
জাহিলিয়্যাতের এই মৌলিক তিনটি বিষয় মেনে নিলে ব্যক্তির অবস্থান জাহিলিয়্যাতে স্বীকৃত হবে।
জাহিলিয়্যাতের মৌলিক বিষয়গুলির ভিত্তিতে গঠিত ও পরিচালিত সমাজ’ই “জাহিলি সমাজ”।
সুতরাং মানব রচিত ব্যবস্থা তথা জাহিলিয়্যাতের মৌলিক বিষয় গুলো পরিত্যাগ করে ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো গ্রহণ করলেই ব্যক্তির অবস্থান ইসলামে স্বীকৃত হবে। যে ব্যক্তি জাহিলিয়্যাতের মৌলিক বিষয়গুলো মেনে নেয় তার অবস্থান আল্লাহ্ প্রদত্ত কল্যাণকর পরিপূর্ণ জীবন ব্যবস্থা “ইসলাম’’ এর বাহিরে হয়। এমতাবস্থায় তার পরিণতি- দুনিয়ায় অকল্যাণ ও অশান্তি এবং আখিরাতে নিশ্চিত জাহান্নাম। আর এটাই মহাক্ষতি। এই মহাক্ষতি থেকে বাঁচার লক্ষ্যে দল-মত ও ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে বিশ্বের সকল মানুষকে ‘জাহিলিয়্যাত’ তথা মানব রচিত ব্যবস্থা ত্যাগ করে, ইসলামের মৌলিক বিষয়গুলো কবুল করে, সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আল্লাহর রাসূল মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) প্রদর্শিত শান্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে “ইসলামী সমাজ” গঠনের আন্দোলনে শামিল হওয়ার আন্তরিক আহ্বান জানাচ্ছি। সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার নামে মানব রচিত সংবিধান মেনে নিয়ে ‘গণতন্ত্র-সমাজতন্ত্র-ধর্মনিরপেক্ষতা-জাতীয়তাবাদ’-এর অধীনে নির্বাচন কিংবা ‘ঈমানদারগণের রাষ্ট্রীয় শাসন ক্ষমতা না থাকা অবস্থায়’ সশস্ত্র সংগ্রাম, সশস্ত্র বিপ্লব, বোমাবাজি এ দু’টির কোনটিই সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার পদ্ধতি নয়। বরং আল্লাহ্ প্রদত্ত জীবন ব্যবস্থা ‘ইসলাম’এর আইন-বিধানের সুস্পষ্ট লংঘণ এবং র্শিক ও কুফর।
সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনায় ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠিত না থাকাকালীন অর্থ-সম্পদ ও সময় ব্যয় করে আল্লাহর রাসূল হযরত মুহাম্মাদ (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর প্রদর্শিত পদ্ধতিতে সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠার চূড়ান্ত চেষ্টা করাই আল্লাহর ক্ষমা ও জান্নাত লাভের উপায়। সমাজ ও রাষ্ট্রে ‘ইসলাম’ প্রতিষ্ঠিত করার ও রাখার লক্ষ্যে রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন- “আমি তোমাদেরকে ৫টি কাজের আদেশ দিচ্ছি, আল্লাহ্ পাক আমাকে ঐগুলোর নির্দেশ দিয়েছেন। (১) দলবদ্ধভাবে থাকবে। (২) আমীরের আদেশ মেনে চলবে। (৩) আল্লাহর অপছন্দনীয় কাজ বর্জন করবে। (৪) আল্লাহর আদেশ মেনে চলবে (৫) আল্লাহর পথে জিহাদ (জান ও মাল দ্বারা সর্বোচ্চ চেষ্টা) করবে। যে ব্যক্তি দল (ইসলাম প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে গঠিত) ত্যাগ করে এক বিঘৎ পরিমানও দূরে সরে গেল, সে নিজের গর্দান থেকে ইসলামের রশি খুলে ফেললো, তবে সে যদি দলে প্রত্যাবর্তন করে তবে ভিন্ন কথা। আর যে ব্যক্তি জাহিলিয়্যাতের রীতি-নীতির দিকে (মানুষকে) ডাকে সে জাহান্নামী, যদিও সে রোযা রাখে, নামায পড়ে এবং নিজেকে মুসলিম বলে দাবী করে।” (মুসনাদে আহমাদ, তিরমিযী)
আল্লাহ্ রাব্বুল আলামীন বিশ্বের সকল মানুষকে জাহিলিয়্যাত ত্যাগ করে “ইসলামী সমাজ গঠন আন্দোলন”-এ শামিল হয়ে মহাক্ষতি থেকে বাঁচার তৌফিক দিন। আমীন! ইয়া রাব্বুল আ’লামীন।
বিষয়: বিবিধ
১১৮২ বার পঠিত, ১ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
بِسْمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحْمَـٰنِ ٱلرَّحِيمِ
পূণ্যময় তিনি, যাঁর হাতে রাজত্ব। তিনি সবকিছুর উপর সর্বশক্তিমান। (1) যিনি সৃষ্টি করেছেন মরণ ও জীবন, যাতে তোমাদেরকে পরীক্ষা করেন-কে তোমাদের মধ্যে কর্মে শ্রেষ্ঠ? তিনি পরাক্রমশালী, ক্ষমাময়। (2) তিনি সপ্ত আকাশ স্তরে স্তরে সৃষ্টি করেছেন। তুমি করুণাময় আল্লাহ তা’আলার সৃষ্টিতে কোন তফাত দেখতে পাবে না। আবার দৃষ্টিফেরাও; কোন ফাটল দেখতে পাও কি? (3)
((সুরা মুলক ))
মন্তব্য করতে লগইন করুন