লড়াই লড়াই লড়াই চাই ২ WRITTEN BY ফরীদ আহমদ রেজা
লিখেছেন লিখেছেন মনসুর আহামেদ ২১ ডিসেম্বর, ২০১৫, ০১:১৫:৩৩ রাত
চার.
আমি চট্টগ্রাম আসার আগেই ছাত্রলীগ নেতা তবারক নিহত হন। এর পরিপ্রেক্ষিতেশহর শাখার ১১ জন শিবির-কর্মীকে অভিযুক্ত করে তবারক হত্যামামলা দায়ের করা হয়। এ মামলাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সারা দেশে শিবির-বিরোধী প্রচারণার খবর আমার আগেই জানা ছিল। চট্টগ্রামে আসার পর মামলা সংক্রান্ত বিস্তারিত জানার সুযোগ হয়।
ঘটনাটি সংক্ষেপে এ রকম। চট্টগ্রাম কলেজে শিবিরের সাথে ছাত্র লীগের মারামারি হয়। সংঘর্ষের সময় উভয় পক্ষের কেউ কেউ আহত হলেও কেউ নিহত হয়নি। শিবিরের সাথে টিকতে না পেরে ছাত্রলীগের কর্মীরা পালিয়ে যায়। কেচ্ছা এখানে শেষ হলেও শেষ হয়নি। পরে খবর পাওয়া যায়, শহর ছাত্রলীগের নেতা তবারক নিহত হয়েছেন। তখন ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে শিবিরকে দায়ী করে থানায় মামলা হয়। মামলায় আসামী হিসেবে তাদের নাম দেয়া হয় যারা চট্টগ্রাম কলেজে শিবিরের সাথে সক্রিয়ভাবে জড়িত। সে সময় হত্যা মামলার আসামী হিসেবে তারা পলাতক ছিলেন। কলেজে ক্লাস করতে উপস্থিত হতে পারছিলেন না, এ কারণে তাদের লেখাপড়ায় মারত্মক রকম বিঘ্ন ঘটছিলো। তারা যে ছাত্র হিসেবে মেধাবী ছিলেন, পরবর্তী সময়ে এর প্রমাণ তারা দিয়েছেন। তাদের ভবিষ্যত চিন্তা করে অভিভাবকরাও উদ্বিগ্ন ছিলেন।
মামলা নিয়ে আমার খুব দুশ্চিন্তা ছিল। মামলা-মোকদ্দমার ব্যাপারে আমার কোন অভিজ্ঞতা ছিল না।আনন্দের বিষয়, এ মামলা পরিচালনার ব্যাপারে আমাকে কোন ঝামেলার সম্মূখীন হতে হয়নি। সকল ব্যথামাথায় পেতে নিয়েছিলেন এএইচএম নুমান। মামলা পরিচালনা করেছেন চট্টগ্রামের নামজাদা আইনজীবী বদিউল আলম। সাবেক সভাপতি অধ্যাপক মফিজুর রহমানও এ ব্যাপারে সর্বাত্মক সহায়তা প্রদান করেন। সকলের সহযোগিতায় সকল অভিযুক্ত এক সময় জামিনে বেরিয়ে আসেন। শেষ পর্যন্ত মামলার রায় কী হয়েছে তা আমার জানা নেই। মামলার শুনানী শুরু হবার আগেই আমি চট্টগ্রাম থেকে চলে এসেছি।
এ মামলার নৈতিক দিক নিয়েও আমি চিন্তিত ছিলাম। নীতিগতভাবে আমি শান্তপ্রিয় মানুষ। মারামারি করা দূরে থাক, জীবনে কাউকে একটা চড়ও মারিনি। বিভিন্ন স্থানে ছাত্র শিবিরের দায়িত্ব পালনের সময় অনেক কঠিন সময় পার করেছি। অনেক স্থানে সংঘর্ষ হবার উপক্রম হয়েছে। কিন্তু আল্লাহর রহমতে আমার উপস্থিতিতে কোথাও খুনোখুনি বা সংঘর্ষ হয়নি। কোন কারণে কাউকে হত্যা করা বা হত্যার চেষ্টা করা অথবা হত্যার মতো পরিস্থিতি তৈরি করা বৈধ হতে পারে না। নিরপেক্ষ আদালত কাউকে ফাঁসি দিলে সেটা স্বতন্ত্র বিষয়। অপরাধ যত বড় হোক না কেন, কোন অপরাধীকে হত্যা করার অধিকার আমার নেই। আমি কুরআনের সে আয়াতে বিশ্বাসী যেখানে বলা হয়েছে, যে একজন মানুষকে হত্যা করবে সে যেন সমগ্র মানবজাতিকে হত্যা করলো। এখানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সকল মানুষের জন্যে সমান বিধান। কেউ অমুসলিম হলেও তাকে হত্যা করা বৈধ নয়। যদি হত্যাকারী আমার ছেলে হয় তা হলেও তাকে রক্ষার জন্যে আমি চেষ্টা করতে পারি না। এটা ন্যায় বিচারের পরিপন্থী। কুরআনের নির্দেশ, ‘কারো প্রতি শত্রুতার কারণে তোমরা ন্যায়বিচার থেকে বিচ্যুত হবে না।’ একই নিয়মে ছাত্র শিবিরের কেউ হত্যাকারী হলে তাকে বাঁচানোর জন্যে আমি কাজ করতে পারি না।
নিহত তবারক ছাত্রলীগের নেতা ছিলেন। কিন্তু ধর্মের দিক দিয়ে মুসলমান ছিলেন। তিনি অমুসলমান ছিলেন, এর কোন প্রমাণ নেই। এক মুসলমান অপর মুসলমানকে হত্যা করতে পারে না। কুরআনের ঘোষণা, যে ইচ্ছে করে কোন মুসলমানকে হত্যা করবে তার আবাস হবে চিরস্থায়ী জাহান্নাম। প্রশ্ন হতে পারে, যারা সেকুলার রাজনীতি করে তারা কী মুসলমান? হাঁ, তারা অবশ্যই মুসলমান যদি তারা কালেমায় বিশ্বাসী হয়। সেকুলাররা মুসলমান নয়, এটা একটা রাজনৈতিক ফতোয়া। শরিয়াতে এর ভিত্তি নেই। ছাত্র শিবির অথবা অন্য কোন ইসলামী সংগঠনের বিরোধিতা করা মানেও ইসলাম বিরোধিতা নয়। আর কেউ ইসলাম বিরোধী হলেই তাকে হত্যা করা বৈধ হয়ে যায় না। তা ছাড়া শরিয়াতের কোন বিধান প্রয়োগ করতে হলে তা হতে হবে সরকারের পক্ষ থেকে, কোন ব্যক্তি বা দলের সেটা দায়িত্ব নয়। কোন ব্যক্তি যত বড় আল্লামা হোন বা কোন দল যত বড় আল্লাহওয়ালা হোক, তাঁর বা তাদের শরিয়াতের হুদুদ প্রয়োগ করার অধিকার নেই।
আরেকটা বিষয় পরিস্কার করা দরকার। সত্যিকার কোন ইসলামী রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে যদি আপনি কোথাও জেহাদ বা লড়াই করতে যান তা হলে আপনাকে কিছু মূলনীতি মেনে চলতে হবে। এর একটা হলো, শত্রুদের মধ্যে যারা পালিয়ে যাবে অথবা আত্মসমর্পন করবে তাদের আপনি হত্যা করতে পারেন না। সম্ভব হলে আটক করে নিয়ে আসতে পারেন। তর্কের খাতিরে যদি ধরে নেই, তবারকের সাথে লড়াই ছিল ইসলাম ও কুফরের মধ্যে। লড়াইয়ের এক পর্যায়ে তিনি পালিয়ে যান। এ অবস্থায় কেউ তাকে ধরে এনে হত্যা করলে তা বৈধ হতে পারে না। তবে হাঁ, কেউ যদি ব্যক্তিগত, ধর্মীয়, সামাজিক বা রাজনৈতিক কোন কারণে আপনাকে মারতে আসে তা হলে তা ভিন্ন। আপনি নিজেকে রক্ষা করতে গিয়ে তাকে আঘাত করেছেন এবং সে মরে গেছে। আপনাকে তখন হত্যাকারী বলা যাবে না। বলতে হবে, আত্মরক্ষা করতে গিয়ে ভুলক্রমে হত্যা করে ফেলেছেন, ইচ্ছে করে হত্যা করেননি। এমতাবস্থায় আপনাকে তওবা করে রক্তপণ আদায় করতে হবে।
এ সব চিন্তা মাথায় নিয়ে আমি সে সময় তবারক হত্যার পূর্বাপর ঘটনাবলীর খোঁজ নেয়া শুরু করি। আমার প্রধান লক্ষ্য ছিল, যাদের অভিযুক্ত করা হয়েছে তারা হত্যার সাথে জড়িত ছিলেন কি না তা বের করা। সে সময় উপস্থিত ছিলেন এমন কয়েকজনের সাথে আমি একা একা বৈঠক করেছি। তাদের নিকট থেকে জানতে পেরেছি, তবারক চট্টগ্রাম কলেজে সংঘর্ষ চলাকালে নিহত হননি। কলেজ থেকে দূরে এক ছোট গলিতে নিহত হয়েছেন। যাদের আসামী দেয়া হয়েছে তারা সংঘর্ষের পর কলেজেই অবস্থান করছিলেন। সুতরাং তাদের কারো পক্ষে তবারককে হত্যা করার সুযোগ ছিল না। এ তথ্য পেয়ে আমি নিশ্চিত হয়েছি, তবারক নিহত হবার পর এ ঘটনাকে ব্যবহার করে চট্টগ্রাম কলেজে শিবিরকে দুর্বল করার হীন উদ্দেশ্যে সেখানকার নেতৃস্থানীয় শিবির-কর্মীদের খুনের আসামী করে মামলা দায়ের হয়েছে। সুতরাং মিথ্যা মামলার অভিযোগ থেকে তাদের মুক্ত করা আমার দায়িত্ব।
তবে তবারক নিহত হয়েছেন, এতে কোন ভুল নেই। কে তা হলে তার হত্যাকারী? হতে পারে পূর্ব-শত্রুতার জের ধরে কেউ তাকে হত্যা করেছে। তিনি নিজেদের দলীয় কোন্দলে নিহত হবার সম্ভাবনাও উড়িয়ে দেয়া যায় না। কোন ব্যক্তি নিহত হলে তার হত্যাকারী অন্বেষণ করা আমাদের দায়িত্ব নয়। এ দায়িত্ব পুলিশের।আইন-শৃঙ্খলার দায়িত্ব হচ্ছে অপরাধীকে খুঁজে বের করে আইনের হাতে তাকে সপোর্দ করা।
সমস্যা হলো, তবারক যে দিন নিহত হন সে দিন শিবিরের সাথে ছাত্রলীগের সংঘর্ষহয়েছে। এ কারণে সন্দেহের তীর শিবিরের উপর এসে পড়েছে। এমনি অবস্থায় শিবিরনিজেদের স্বার্থেই সম্পূর্ণ দায়িত্ব-মুক্ত হতে পারে না। এটা তাক্বওয়ার দাবি। যদি প্রমাণ পাওয়া যায় শিবিরের কেউ এ কাজ করেছে তা হলে তওবা এবং রক্তপণ আদায় করে তাকে দায় থেকে মুক্ত করা দরকার। তা হলে আশা করা যায়, রোজ কেয়ামতে আল্লাহ তাকে এ কারণে পাকড়াও করবেন না। চট্টগ্রামে অবস্থানকালে আমি এ কাজ সম্পন্ন করতে পারিনি।তবে চট্টগ্রাম ছেড়ে আসার সময় আমার এ অভিমত স্থানীয় এবং কেন্দ্রিয় দায়িত্বশীলদের অবহিত করে এসেছি।
হত্যার ব্যাপারে কুরআনের নির্দেশে কোন ধরণের অস্পষ্টতা নেই। কুরআনে বলা হয়েছে, ‘কোন মুমিনের কাজ নয় অন্য মুমিনকে হত্যা করা, তবে ভুলবশত হতে পারে।আর যে ব্যক্তি ভুলবশত কোন মুমিনকে হত্যা করে তার কাফ্ফারা হিসেবে একজন মুমিনকে গোলামী থেকে মুক্ত করে দিতে হবে এবং নিহত ব্যক্তির ওয়ারিসদেরকে রক্ত মূল্য দিতে হবে, তবে যদি তারা রক্ত মূল্য মাফ করে দেয় তাহলে স্বতন্ত্র কথা। কিন্তু যদি ঐ নিহত মুসলিম ব্যক্তি এমন কোন দেশের লোক হয়ে থাকে যাদের সাথে তোমাদের শত্রুতা রয়েছে, তাহলে একজন মুমিন গোলামকে মুক্ত করে দেয়াই হবে তার কাফ্ফারা। আর যদি সে এমন কোন অমুসলিম দেশের অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকে যাদের সাথে তোমাদের চুক্তি রয়েছে, তাহলে তার ওয়ারিসদেরকে রক্ত মূল্য দিতে হবে এবং একজন মুমিন গোলামকে মুক্ত করে দিতে হবে।আর যে ব্যক্তি কোন গোলাম পাবে না তাকে পরপর দু’মাস রোযা রাখতে হবে।এটিই হচ্ছে এই গোনাহের ব্যাপারে আল্লাহর কাছে তাওবা করার পদ্ধতি। আর আল্লাহ সর্বজ্ঞ ও জ্ঞানবান।
আর যে ব্যক্তি জেনেবুঝে মুমিনকে হত্যা করে, তার শাস্তি হচ্ছে জাহান্নাম। সেখানে চিরকাল থাকবে। তার ওপর আল্লাহর গযব ও তাঁর লানত এবং আল্লাহ তার জন্য কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা করে রেখেছেন।’ (কুরআনঃ ৪ নিসা: ৯২ – ৯৩)
পাঁচ.
চট্টগ্রাম শহরে দায়িত্ব পালনের সময় সবচেয়ে আলোচিত প্রসঙ্গ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ নির্বাচনে ছাত্র শিবিরের বিজয় অর্জন। এ বিজয় পক্ষের লোকদের জন্যে ছিল অফুরন্ত প্রেরণার উৎস, আর বিরোধী পক্ষের জন্যে ছিল উৎকন্ঠা ও আতঙ্কের ব্যাপার। দেশ-বিদেশের অনেকে নানা ভাবে শিবিরের বিজয়ের কারণ বিশ্লেষণ করেছেন। আমার মতে চট্টগ্রামে শিবিরের সাংগঠনিক মজবুতি, ভিপি-প্রার্থী জসিম উদ্দীন সরকারের ব্যক্তিগত জনপ্রিয়তা, চাকসু এবং বিভিন্ন হলে যোগ্য ও জনপ্রিয় প্রার্থীর সংখ্যাধিক্য এবং ছাত্রলীগের আভ্যন্তরীন কোন্দল শিবিরের বিজয়কে নিশ্চিত করেছে।
নির্বাচন ঘোষিত হবার আগেই শহর, বিশ্ববিদ্যালয় এবং উত্তর-দক্ষিণ জেলার দায়িত্বশীলদের বৈঠকে চাকসু নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্ব আমার উপর অর্পিত হয়। সাথে সাথে শহর ও জেলার সকল জনশক্তিকে নির্বাচনী কাজে জড়িত করা, প্রচার ও প্রকাশনা, নির্বাচনী বাজেট তৈরি ও অর্থ-সংগ্রহ, নিরাপত্তার ব্যবস্থাপনা, বিশ্ববিদ্যালয় ও শহরে নির্বাচনী প্রচারণা প্রভৃতি কাজ পরিচালনার জন্যে পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। নির্বাচনের আর্থিক প্রয়োজন পূরণের কাজে সহযোগিতার জন্যে শুভাকাঙ্খীদের অনেকে স্বতঃস্ফুর্তভাবে এগিয়ে আসেন। তাদের মধ্যে মাওলানা শামসুদ্দীন, শাহ জাহান চৌধুরী, মাওলানা মুমিনুল ইসলাম চৌধুরী, সালাহ উদ্দীন কাদের চৌধুরী প্রমুখ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
আল্লাহর রহমতে নির্বাচনের দিন ভোটগ্রহণ পর্যন্ত কোথাও বড় ধরণের কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। সকল ছাত্র সংগঠনের অংশ গ্রহণের মাধ্যমে উৎসব মুখর পরিবেশে তা সম্পন্ন হয়। এরপর শুরু হয় অপেক্ষার পালা। বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বশীলগণ নিজ নিজ হলে অবস্থান করছিলেন। আমি জেলা এবং শহরের কয়েকজন দায়িত্বশীলকে নিয়ে শ’ পাঁচেক কর্মীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের একস্থানে অবস্থান গ্রহণ করি। আমাদের কাজ ছিল ওয়াজ-নসিহতের মাধ্যমে কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা এবং শৃঙ্খলা ও সহনশীলতার সাথে যে কোন পরিস্থিতি মুকাবেলার জন্যে তৈরি রাখা।
এক সময় একজন সুখবরটি নিয়ে এলেন। আলহামদুল্লিাহ বলে অপেক্ষমান কর্মীদের তা আবহিত করলাম। সবাই খুশিতে আত্মহারা। তাদের চোখ-মুখের ভাষা পড়ে বুঝলাম, তারা এক্ষুণি বিজয় মিছিল নিয়ে বেরিয়ে যেতে প্রস্তুত। তাদের বললাম, দায়িত্বশীলরা এখনই বসছি। সেখানে যা সিদ্ধান্ত হয় সে অনুযায়ী আমাদের কাজ করতে হবে। আমার অনুপস্থিতিতে কর্মীদের সাথে কথা বলার দায়িত্ব, যতটুকু মনে পড়ে, উত্তর জেলার সভাপতি নুরুল আবসারের কাছে দিয়ে আমি বৈঠকের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লাম।
বৈঠক নির্বাচন পরিচালনা কমিটির, তাই এর সভাপতির দায়িত্ব আমার উপর বর্তায়। সেখানে কেন্দ্রিয় অতিথি আহমদ আব্দুল কাদের উপস্থিত ছিলেন। সে সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সভাপতি অথবা কেন্দ্রিয় প্রশিক্ষণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছেন। উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক মফিজুর রহমান, জসিম উদ্দীন সরকার, আব্দুল গাফফার, মুহাম্মদ শামসুল ইসলাম প্রমুখ। শহর ও বিশ্ববিদ্যালয় শাখার আরো কয়েকজন সেখানে ছিলেন। বিজয় হয়েছে, সুতরাং বিজয় মিছিল হবে, অন্ততঃ চট্টগ্রামের এটাই নিয়ম।উপস্থিত সবাই এ ব্যাপারে প্রায় নিশ্চিত ছিলেন।এটা কোন ছোটখাটো বিজয় ছিল না। চাকসুতে পূর্ণ প্যানেল এবং হলসমূহের প্রায় সকল পদে শিবিরের প্রার্থী জিতেছেন। বিজয় মিছিল অবশ্যই করতে হবে। সেটা আজ রাতে হবে, না কাল হবে – সেটা ছিল তাদের আলোচনার বিষয়।
কয়েক জনের মতামত শোনার পর আমি বললাম, আমি বিজয় মিছিলের পক্ষে নই। আল্লাহর হুকুমে বিজয় হয়েছে। কুরআনের সুরা নসর অনুযায়ী বিজয় হলে আল্লাহর প্রশংসা ও ইস্তেগফার করতে হবে। গৌরব বা অহংকার প্রদর্শন না করে বিনয় ও নম্রতা দেখতে হবে। নির্বাচনের ফলাফলঘোষিত হবার পর বিজয় মিছিল না করলে কেউ এ বিজয় ছিনিয়ে নিতে পারবে না। এখন শান্তিপূর্ণভাবে অভিষেক সম্পন্ন করা আমাদের প্রধান টার্গেট হওয়া দরকার। নির্বাচনের আগে বিরোধীরা পরস্পর বিভক্ত ছিল। একে অন্যের বিরুদ্ধে কাঁদা ছোড়াছুড়ি করেছে। শিবির বিজয়ী হবার পর এখন তারা ঐক্যবদ্ধভাবে শিবিরের বিপক্ষে অবস্থান নেবে। বিজয় মিছিল আজ হোক বা কাল হোক, আমি নিশ্চিত তারা মিছিলে আক্রমণ করবে। শিবিরকে বাধ্য হয়ে প্রতিরোধের ব্যবস্থা করতে হবে। সংঘর্ষ বাঁধলে সেটা হবে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগেও এ রকম ঘটনা ঘটেছে। মাত্র কিছুদিন আগে বিভিন্ন হলে শিবিরের উপর আক্রমণ হয়েছে। বহু কর্মীর রুম তারা পুড়িয়ে দিয়েছে। বিজয় মিছিল বের করলে একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটবে। অবস্থা বেগতিক দেখে কর্তৃপক্ষ বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে দেবে। অভিষেক করা তখন অনিশ্চিত হয়ে পড়বে। করতে পারলেও সেটা শান্তিপূর্ণ উপায়ে করার নিশ্চয়তা থাকবে না। আমাদের এতো বড় একটা বিজয়কে এ ভাবে নষ্ট হতে দেয়া ঠিক নয়।
আমার কথা শেষ হলে তা হজম করতে অনেকে সময় নেন। তারপর ঘন্টা খানেক এ নিয়ে বিতর্ক হয়। এক ফাঁকে কেন্দ্রিয় প্রতিনিধির মতামত জানতে চাইলাম। তিনি বললেন, চট্টগ্রামের পরিস্থিতি আমার চেয়ে আপনারা ভালো জানেন। আপনারা যে সিদ্ধান্ত নিবেন সেটাই আমার মতামত। দীর্ঘ বিতর্কের উপর মতামত গ্রহণ করলাম। এক বা দু ভোটে আমার প্রস্তাব গৃহীত হলো। সিদ্ধান্তের পর পরই দ্রুত কর্মীদের সমাবেশে গিয়ে হাজির হলাম। কর্মীরা সেখানে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং এর প্রেক্ষাপট তাদের অবহিত করলাম। এটাও বললাম, তারা যেন নিজ নিজ হলে বা বাড়িতে চলে যান। সতর্ক করে দিলাম, যাওয়ার পথে যেন সাবধানে যান এবং পথে যেন কোন বিরোধে জড়িয়ে না পড়েন।
সবাইকে বিদায় করে দিয়ে সে রাতে শহরে ফিরে না গিয়ে হলেই থেকে গেলাম। আমি মনে হয় সে রাতে আলাওল হলে রাত কাটিয়েছি। আমার সাথে আরো কেউ কেউ ছিলেন। হলে ঢুকতে গিয়ে দেখলাম ইতোমধ্যে শিবির বিরোধী মিছিল শুরু হয়ে গেছে। শ্লোগান দেয়া হচ্ছে, ‘চাকসুতে রাজাকার – মানি না মানবো না।’ আমরা সতর্কতার সাথে মিছিলকে পাশ কাটিয়ে রুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলাম।
ছয়.
চট্টগ্রামের কাছে আমার অনেক ঋণ, এর সাথে অনেক গভীর প্রেম। চট্টগামের মানুষের মেধা, সাহস এবং ভালোবাসা এখনো আমাকে টানে। চট্টগ্রামের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং সম্পদের কথা তো আছে-ই। শেষবারের মতো সেখানে গিয়েছি চট্টগ্রাম শহরের নির্বাচন করতে। আমার ঘাড়ে তখন অবিভক্ত ঢাকা শহর এবং চট্টগ্রাম শহরের দায়িত্ব। দু রাত সেখানে থেকে চট্টগ্রাম শহরের দায়িত্ব সে সময়ের সেক্রেটারী নুরুল আমিন চৌধুরীর মাথায় তুলে দিয়ে চলে আসি।
আমি ঢাকায় এসেছি [ঢাকা থাকাকালীন সময়ের ঘটনা জানতে আগ্রহিগন পড়তে পারেন; বিরাশি সালের অকথিত কথকতা]। চট্টগ্রাম থেকে বার্তা পেলাম, তারা একটা স্মারক বের করবেন। এর জন্যে কবিতা দিতে হবে। কিশোর বয়স থেকে কবিতার সাথে আমার প্রেম। এ প্রেম বাপ-দাদা থেকে উত্তরাধিকার সুত্রে প্রাপ্ত। আমার জন্যে তা একই সাথে শখ ও অলৌকিক আনন্দের সামগ্রী। কিন্তু দীর্ঘদিন থেকে কবিতার সাথে আড়ি চলছে। কবি-বন্ধু রাগিব হোসেন চৌধুরী কারণটা ঠিক মতই চিহ্নিত করেছেন। বিভিন্ন সময় আলাপচারিতার সময় এবং বার কয়েক লিখিতভাবে তিনি তা অনুযোগ আকারে প্রকাশ করেছেন। তাঁর ভাষায়, ছাত্র রাজনীতির কারণে রেজা ভাই কবিতা পাড়ায় স্থায়ী আবাস গড়তে পারেননি।
তাঁর কথায় যুক্তি আছে। কিন্তু কোন কথায় যুক্তি থাকলেই যে তা সঠিক বা সত্য তা নিশ্চিত করে বলা যায় না। কার মেধা বা যোগ্যতা কখন কোন ময়দানের জন্যে উপযোগী কেউ জানে না। সে নিজেও বলতে পারে না। ষাটোর্ধ জীবনের বর্তমান সময়ে তা নিয়ে ভাবার মন বা অবসর কোনটা-ই নেই। স্রোতের টানে জীবন কাটছে, সময় দ্রুত চলে যাচ্ছে। আদি কোথায়, অন্ত কোথায় কেউ জানে না। কী করলাম তা বড় কথা নয়। বড় কথা, এখন বা এ মুহুর্তে যা করছি, তা কি তৃপ্তি ও আনন্দের সাথে করছি? আমি কি নিজেকে নিয়ে সন্তুষ্ট? নিজের কাছে আমি কতটুকু বিশ্বস্ত? প্রভূর সাথে আমার প্রেমে কি কোন খাদ আছে? আমার চারপাশে যারা আছে তাদের প্রতি কি আমার ভালবাসা বা হৃদ্যতা আছে? বিশ্বস্ততা আছে? এ প্রেম এবং এ বিশ্বস্ততা-ই আমার সম্পদ।
আসলে অন্যদের মতো আমি চট করে কবিতা লিখতে পারি না। অনেকে প্রত্যহ একটা দুটা কবিতা লিখতে পারেন। আমার একটি কবিতা শেষ করতে কয়েকদিন, কোন কোন সময় মাস লেগে যায়। চট্টগ্রামের অনুরোধ এবং তাগিদে নানা ব্যস্ততার ফাঁকে ফাঁকে কোন রকম একটা কবিতা দাঁড় করালাম। এর শিরোনাম ছিল কুরআনের সুরা কাহাফ থেকে নেয়া। ইন্নাহুম ফিতইয়াতুন, ‘ওরা একদল যুবক’।
জীবনের সুবর্ণ অধ্যায়গুলো কথা বলে শাতিল গঙ্গায়
একদিন চারাগাছ বড় হবে ঠিক
ফলেফুলে সুশোভিত হবে
ভরত পাখির গানে মুখরিত হবে এই অপয়া পৃথিবী
লিখে রাখো অঙ্গীকার সাহসী কলম।
লাশের পাহাড় দিয়ে একদল সতেজ জোয়ান
রাখতে চায় স্বাধীনতা
রাখতে চায় স্বদেশের নিহত সম্মান
রক্ত দিয়ে লিখে যায় – বার বার লিখে
আমানত শাহের নাম……………..
শাহ জালাল নিসার আলী তোমাদের নাম……
প্রতিটি রক্তকণা ড্রাগনের দাঁত
অজস্র জীবন্ত প্রাণ জন্ম দেয় মুহূর্তে মুহূর্তে।
পৃথিবীর দীর্ঘশ্বাস ঢেউ তুলে পতেঙ্গা বন্দরে
অযুত কোরবানী বুকে সুনীল সাগর আজো জীবন্ত উদ্দাম
আহত আত্মার মুখে বিশ্বাসের গান
আমাকে দিয়েছে এক অগ্নিঝরা অঙ্গীকার
চট্টলার সমুদ্র সৈকত
বাকলিয়া…….. আল-করন………. শুলক বহর।
কবিতায় যে কথা আকারে ইঙ্গিতে বলা হয়, তা গদ্যে বললে স্পষ্ট হয়ে উঠে। আমি কী চাই, কী ভাবে চাই তা বার বার কবিতায় বলার চেষ্টা করেছি। কাছের বন্ধুদের কেউ বুঝে এবং অনেকে না বুঝে আমাকে বাহবা দিয়েছেন। এখনো তারা তাই করেন। চট্টগ্রামকে নিয়ে লেখা কবিতায় চট্টলার প্রশংসা করার সাথে সাথে বাংলাদেশের মানুষের কাছে সুপরিচিত তিনটি প্রতীকি নাম সেখানে এসেছে। শাহ জালাল, শাহ আমানত এবং নিসার আলী বা তিতুমীর। তাদের সকলের প্রতি আমাদের অপরিসীম শ্রদ্ধাবোধ আছে, কিন্তু আমরা খুব কমই তাদের পাঠ করি। অথচ বাংলার মাটি অত্যন্ত গভীর ও বলিষ্ঠ ভাবে তাদের উত্তরাধিকার ধারণ করে আছে। সে উত্তরাধিকারে অনেক সম্পদ আছে, আছে একই সাথে লড়াই এবং আপোসের সোনালী ঐতিহ্য। আছে পরাজয়ের শিক্ষা এবং বিজয়ের বিস্ময়কর ইতিহাস।
বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ কাফির-মুশরিক নয়, ইহুদি-খৃস্টান নয়। তারা মুসলমান। তবে জন্মগত মুসলমান। তারা ইসলাম গ্রহণ করেছেন শাহ জালাল, শাহ আমানত, শাহ মখদুম, খান জাহান আলী প্রমুখ সুফি-দরবেশের নিকট থেকে।খিলজি-মোগলদের নিকট থেকে নয়। তাদের মাইন্ড-সেট আমাদের বুঝতে হবে। বুঝতে হবে, লড়াই করে মানুষের মন জয় করা যায় না, ভালোবাসা ও উদারতা দিয়ে করতে হয়। ‘তোমার প্রভু ইচ্ছা করলে পৃথিবীর সকল মানুষ ঈমানদার হয়ে যেতো। তবে কি তুমি মানুষকে ঈমান আনার জন্যে জবরদস্তি করবে?’ (ইউনুস ১০: ৯৯)। জোর করে বা আইন করে হেদায়াত বা সংশোধন – কোনটাই হয় না। দেহ নয়, মনকে জয় করতে হবে। শরীর নয়, ক্বলবের সাথে কথা বলতে হবে।
ইবনে কাইয়িম আল-যাওজিয়া বলেন, ‘ইসলাম ক্ষমাশীলতার নাম। এর পরিবর্তে নিষ্ঠুরতা দেখলে বুঝতে হবে এর নাম ইসলাম নয়। ইসলাম হলো বিচক্ষণতা। যদি সেখানে মূঢ়তা এবং বোকামী থাকে তা হলে এর নাম ইসলাম নয়। ইসলাম ন্যায়পরায়ণতার নাম। যদি দেখা যায় নিপীড়ন হচ্ছে তা হলে এটা ইসলাম নয়।’
আমরা আপোস চাই না, লড়াই চাই। মহানবী(স)’র কাছে ওহি আসতো। এর পরও বহু রাজনৈতিক, সামাজিক ও যুদ্ধনীতির বিষয়ে তিনি সাহাবাদের অভিমত গ্রহণ করে নিয়েছেন। অনেক সাহাবা নানা বিষয়ে তাঁর সাথে মতপার্থক্য করেছেন। সাহাবারাও পরস্পর মতপার্থক্য ও বিতর্ক করেছেন। এ কারণে তারা একে অপরের চরিত্র হনন করেননি বা কাউকে জাহান্নামে পাঠাননি। আমাদের সাথে কেউ দ্বিমত করলে তাকে আমরা চট করে মুনাফেক অভিধায় ভূষিত করি। আমাদের দল ত্যাগ করে কেউ চলে গেলে দলত্যাগীকে জাহান্নামে পাঠিয়ে দেই। আমাদের মতো করে অথবা আমাদের নিজের তৈরি ইসলামী আন্দোলনের সংজ্ঞা অনুযায়ী কেউ কাজ না করলে সেটাকে ইসলামী আন্দালনই মনে করি না।অথচ আমরা কেউ নিজেদের আল-জামাত বলার অধিকার রাখি না। মুসলমানদের মুশরিক, মুনাফিক বা কাফের ফতোয়া দিয়ে বিভক্ত করি।ইসলামের মৌলিক বিষয়ে যাদের কোন ধারণা নেই তাদের রাজনীতি বুঝাই। তাদের কাছে রাজনৈতিক ফতোয়া ব্যাখ্যা করি। তারপর বাক-বিতন্ডা এবং লড়াই করি। দাবি, লড়াইটা হচ্ছে ইসলাম এবং কুফরের মধ্যে। আম-জনতা হা করে তাকিয়ে থাকে। দূরে দাঁড়িয়ে তামাশা দেখে। তারা কিংকর্তব্য বিমূঢ়।
মহানবী (স) মুশরিক ও ইহুদিদের সাথে সহাবস্থানের সুযোগ তালাশ করেছেন, অনেক বড় বড় এবং জটিলতর বিষয়ে। আমরা মুসলমানদের সাথে-ই সহাবস্থানের ফর্মুলা খুঁজে বের করতে পারি না। কেন? আমরা কি ইসলামের একক ইজারাদার? ইসলাম বা জাতির জন্যে যা অপ্রয়োজনীয় বা কম-গুরুত্ববহ সে বিষয়ে পর্যন্ত ছাড় দিতে আমরা রাজি নই। হোদায়বিয়ার সন্ধির কথা আমরা জানি। মহানবী (স) সেখানে শান্তির প্রয়োজনে অসম-শর্তে সন্ধি করেছেন, অনেক বেশি ছাড় দিয়েছেন। ছাড় দেয়ার কারণে বিনা লড়াইয়ে, নিরাপদে আরবের সকল মানুষের কাছে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছানোর সুযোগ লাভ করেছেন। আমরা হলে কী করতাম? বলতাম, ‘আপোস না সংগ্রাম – সংগ্রাম সংগ্রাম’। অথবা বলতাম, ‘লড়াই লড়াই – লড়াই চাই।’
কুরাইশ প্রতিনিধি সুহাইল ইবনে আমর হোদায়বিয়ার সন্ধিপত্রে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ লিখতে আপত্তি করে বলেছে, ‘রহমান’ কে? তাকে আমরা চিনি না। লিখুন ‘বি-ইসমিকা আল্লাহুম্মা’, তোমার নামে হে আল্লাহ। আরবে তখন এর প্রচলন ছিল। মহানবী (স) মেনে নিয়েছেন। মুহাম্মাদুর ‘রাসুলুল্লাহ’ লিখতে আপত্তি তুলেছে। বলেছে, লিখুন মুহাম্মাদ ইবনে আব্দুল্লাহ। আপনাকে রাসুল মানলে আমরা আপনার সাথে লড়াই করতাম না। সাহাবারা কষ্ট পেয়েছেন, ক্ষুব্ধ হয়েছেন। মহানবী (স) মেনে নিয়েছেন। বৃহত্তর স্বার্থে আল্লাহর ‘রহমান’ নাম এবং নবী(স)’র আসল পরিচয় ‘রাসুলুল্লাহ’বাদ দিয়েছেন। কারণ লক্ষ্য ছিল ইসলামের বিজয়।
আমাদের ভাবতে হবে, আমরা কী ইসলামের বিজয় চাই? না কি বিশেষ কোন দল, গোষ্ঠী বা কোন মহান ব্যক্তির বিজয় চাই?না শুধু ক্ষমতা-ই আমাদের প্রধান লক্ষ্য
বিষয়: বিবিধ
১৪০০ বার পঠিত, ৬ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
তিনি লিখলেন "এক মুসলমান অপর মুসলমানকে হত্যা করতে পারে না।"
মুসলমানতো একটা পিপড়াকে অকারনে হত্যা করে না।
এর আগের লাইনে লিখলেন,
"নিহত তবারক অমুসলমান ছিলেন, এর কোন প্রমাণ নেই।"
তার মানে কি? অমুসলমান হত্যা জায়েজ নাকি?
জানতে ইচ্ছা করে
"সেকুলাররা মুসলমান নয়, এটা একটা রাজনৈতিক ফতোয়া।"
এই ফতোয়া কারা দিয়েছে এবং কবে?
আমি আগেই তাঁর এক লেখাই মন্তব্য বলেছিলাম রেজা ভাই হচ্ছেন বিএনপি-আওয়ামিলিগের গ্রাম্য মোড়লদের মত। এই ভাইটা কিভাবে শিবিরের মত মেধাবী সংগটনের নেতার স্থানে যেতে পারলো বুঝে আসে না।
লন্ডনের মত উন্নত শহরে থেকে মন-মানশিকতা আর একটু উন্নত আশা করা নিশ্চয় অন্যায় হবে না। বিনিত
ধন্যবাদ
প্লিজ, যদি আপনি রেজা ভাইয়ের পক্ষে নেন আমার পয়েন্টগুলির জবাব দিন।
বিনিত
মন্তব্য করতে লগইন করুন