অনিবার্য জিহাদ

লিখেছেন লিখেছেন মনসুর আহামেদ ০৮ মার্চ, ২০১৩, ০৮:৪৭:৩৭ সকাল



মু’মিনের জীবনে মূল এজেণ্ডাটি কি? ঈমানের পরীক্ষাটিই বা কীরূপে? কীরূপে আল্লাহর করুণাপ্রাপ্তি? জান্নাতপ্রাপ্তি এবং প্রকৃত সাফল্যই বা কীভাবে? আল্লাহর ক্রোধ এবং আযাবই বা কীরূপে জুটে? মুসলমানদের মাঝে এ প্রশ্নগুলো অতি সনাতন। কিন্তু এ বিষয়গুলো নিয়েছে রয়েছে প্রচণ্ড অবহেলা,অজ্ঞতা ও বিভ্রান্তি। সে অজ্ঞতা ও অবহেলার থেকে জন্ম নিয়েছে ইবাদত ও নেক আমলের নামে নানারূপ বিভ্রান্তি। সিরাতুল মোস্তাকিম থেকে বিচ্যুত করতে ধর্মের নামে যেমন নানা মিথ্যা পথ আবিস্কৃত হয়েছে,তেমনি জিহাদ থেকে দূরে হঠাতেও নানা কর্মকে পূর্ণকর্ম রূপে প্রতিষ্ঠা দেয়া হয়েছে।

ঈমানদার হওয়ার অর্থ শুধু আল্লাহ ও তার দ্বীনকে বিশ্বাস করা নয়,বরং সে বিশ্বাসক কর্মে পরিণত করা। সেটি না হলে বিশ্বাসের কোন মূল্য থাকে না। এবং সেটি ঘটে মহান আল্লাহর এজেণ্ডা পূরণে তাঁর অনুগত খলিফা হয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে। আল্লাহতায়ালার নিজের ভাষায় সে এজেণ্ডাটি হলো “লিউযহিরাহু আলাদ্দিনি কুল্লিহী” অর্থঃ সকল ধর্মের উপর তাঁর নিজ ধর্ম ইসলামকে বিজয়ী করা। দ্বীনের এমন বিজয় হলো আল্লাহতায়ালার ভিশন। ঈমানদার হওয়ার অর্থই হলো আল্লাহর সে ভিশনের সাথে একাত্ম হয়ে যাওয়া। ফলে মুমিনের জীবনে ঈমান একাকী আসে না,সাথে আনে আল্লাহর ইচ্ছাপূরণে আপোষহীন জিহাদ। সে জিহাদ ভাষা,বর্ণ,ভূগোল বা গোত্র দ্বারা সীমিত হয় না, বরং তা বিশ্বময়ী হয়। এমন জিহাদে সমাজ ও রাষ্ট্র কতটা পাল্টে গেল সেটি মূল বিষয় নয়,সমাজ ও রাষ্ট্র পাল্টে না গেলেও তাতে পাল্টে যায় সে জিহাদে অংশগ্রহনকারি মোজাহিদের নিজের জীবন ও জগত। এবং কতটা পাল্টে গেল তার উপর ভিত্তি করে জান্নাত মিলবে। এমন একটি আমৃত্যু জিহাদ গড়ে উঠেছিল প্রতিটি সাহাবীর জীবনে। সে জিহাদে তারা নিজেরা যেমন বদলে গেছেন,সে সাথে পাল্টিয়ে দিয়েছেন আরবের জাহেলী সমাজকে। মু’মিনের নিজ জীবনের বিপ্লব আর রাষ্ট্রীয় বিপ্লব তখন একত্রে এগিয়ে চলে। পুরাতন জাহিলী সমাজের বদলে সাহাবগণ তাই সম্পূর্ণ নতুন ধরণের সমাজ,সংস্কৃতি ও রাষ্ট্র গড়েছিলেন। সে বিপ্লবের ঝাণ্ডা নিয়ে তারা নানা দেশের নানা জনপদে ঘুরেছেন।

কোরআন শুধু মানব জীবনের টার্গেটটিই নির্ধারণ করে দেয় না,সে টার্গেটে পৌছার পথও দেখিয়ে দেয়।এ পথে চলা পূ্র্ববর্তী যাত্রীদের ইতিহাসও বলে। সে টার্গেটটি হলো জান্নাত। বস্তুত মু’মিনের জীবনে পথচলার মূল রূপরেখাটি নির্ধারিত হয় জান্নাত পাওয়ার সে বাসনা থেকে। জান্নাতে পৌঁছার পথে পরীক্ষা যে কঠিন ও লাগাতর পবিত্র কোরআন সে হুশিয়ারিটিও শোনায়। যেমন বলা হয়েছে,“তোমরা কি এমন ধারণা করে বসেছো,এমনিতেই জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ সে অবস্থা তোমাদের উপর এখনও আসেনি যা এসেছিল তোমাদের পূর্বে যারা অতীত হয়েছে তাদের উপর। তাদের উপর এসেছিল এমন (কঠোর)বিপদ ও কষ্ট, তাতে রাসূল এবং তাঁর উপর যারা ঈমান এনেছিল তাঁরা এতটাই শিহরিত হয়েছিল যে তাদেরকে পর্যন্ত একথা বলতে হয়েছিল,“কখন আসবে আল্লাহর সাহায্য?” তোমরা শুনে নাও,আল্লাহর সাহায্য অতীব নিকটবর্তী।”–(সুরা বাকারা আয়াত ২১৪)। আল্লাহতায়ালার যে হুশিয়ারিটি উপরুক্ত আয়াতে সুস্পষ্ট তা হলো,ঈমান এনেছি,নামায-রোযা নিয়মিত করি,হজ-যাকাতও পালন করি -শুধু এ টুকুতেই পরকালে সাফল্য জুটবে না।জান্নাতও মিলবে না। সে জন্য তাকে লাগাতর পরীক্ষা দিতে হবে এবং সেসব পরীক্ষায় পাশও করতে হবে। সে পরীক্ষা থেকে পাশ কাটানোর কোন রাস্তা নেই। নবীজী (সাঃ) ও তাঁর সাহাবাগণও সে পরীক্ষার মধ্য দিয়েই অগ্রসর হতে হয়েছে।

তথ্য সূএে: http://drfirozmahboobkamal.com/

বিষয়: বিবিধ

১০৩২ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File