গ্লোবাল ওয়ার্মিং
লিখেছেন লিখেছেন আহসান সাদী ২২ মে, ২০১৫, ০১:০৯:১৪ রাত
খুব আশংকা হয় আমার। এমন দিন না চলে আসে, আমাদের দেশে মানুষজন গরমে হাহাকার করবে, এসি হয়ে যাবে অন্ন-বস্ত্র-বাসস্থান পর্যায়ের একটা মৌলিক চাহিদা। এমন একটা সময় চলে আসাটা এখন মোটেই আযৌক্তিক মনে হচ্ছে না। তখনকার বাংলাদেশ কেমন হবে একটু দেখা যাক।
মোটামুটি অবস্থাপন্নদের কাছে ভিক্ষুকের আরজ থাকবে, 'জনাব, গত দশদিন ধরে আমার বাসায় এসি বন্ধ। একটু যদি সাহায্য করেতেন তবে প্রিপেইড মিটারে টাকা রিচার্জ করতাম। বাসায় বউ-ছেলেমেয়ে গরমে সেদ্ধ হয়ে যাচ্ছে'। সেই অবস্থাপন্ন লোকটি আহত হৃদয়ে বলবেন 'আহারে'। ওয়ালেট খুলে দুইশ টাকা বের করে দেবেন অথবা ভিক্ষুকের bKash একাউন্টে টাকাটা ট্রান্সফার করে দেবেন।
নাগরজীবনের বাইরেও দারিদ্রের রূপটা হবে একই ছাঁচের। গরম আসার সাথে সাথেই ফেইসবুকে ইভেন্ট খোলা হবে, বিভিন্ন এন.জি.ও. থেকে প্রজেক্ট নেয়া হবে, মহল্লায় মহল্লায় সাহায্য সংগ্রহ করা হবে। গ্রামের অসহায় দরিদ্রদের মাঝে এসি বিতরণের এমন হাজারো কর্মসূচি বিপুল উদ্যমে শুরু হবে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ এবং জনপ্রতিনিধিগণ এসি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন। সরকার থেকে 'একটি ঘর একটি এসি' প্রকল্প হাতে নেয়া হবে। উদ্ভট মস্তিষ্কের কিছু লোক এসির জন্যে কনসার্ট আয়োজন করবে এবং দশ টাকার লটারীর টিকেটে লেখা থাকবে 'সংগৃহীত অর্থ দরিদ্রদের মধ্যে এসি বিতরণ কাজে ব্যয় করা হবে'।
তবুও দারিদ্র থাকবে। UNDP'র হিসেবে যাদের ঘরে নূন্যতম একটি এসি নেই, এরা হবে দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসরত জনগোষ্ঠী। 'World Health Organization: WHO' থেকে ডকুমেন্টারি তৈরী হবে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে দেখানো হবে, এই গরমে কিছু লোক কীভাবে এসি ছাড়া অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে জীবন কাটাচ্ছে। মিলিয়ন ডলার ডোনেশন সংগ্রহ হবে।
দূরপাল্লার একটি বাস ঢাকা-চট্টগ্রাম হাইওয়ের পাশে দাঁড়িয়ে আছে। যাত্রীরা সবাই বাস থেকে নেমে গাছের নিচে দাঁড়িয়ে আছে। এই বাস আর চলাচলের উপযোগী নেই। বাসটির এসি নষ্ট হয়ে গেছে। ঢাকা থেকে রিপ্লেসমেন্ট বাসের জন্যে তাই সবাই অপেক্ষা করছে।
ঈদের কয়েকদিন আগে টিভি সাংবাদিক এক রিকশাওয়ালাকে প্রশ্ন করলেন, 'এবারে ঈদ উপলক্ষ্যে আপনি কি কেনাকাটা করলেন'? ক্লান্ত রিকশাওয়ালা উত্তর দেয়, 'ভাইরে, এসির বিল দেয়ার টাকাই পাই না, আবার ঈদের বাজার'!
বিষয়: বিবিধ
১৫১৩ বার পঠিত, ১৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
গ্লোবাল ওয়ার্মিং এর অনেক কুফল ইতিমধ্যেই প্রকাশিত হয়ে পড়ছে! পৃথিবীকে জান্নাত বানানোর প্রচেষ্টার ফলাফল এই ওয়ার্মিং!
বাংলাদেশে এখন যে গরম পড়ে তা ইউরোপের সমান! আগামি ১০ বছর পর কি হবে সেটা আপনার পোস্টেি লিখিতচিত্র ভিডিওধারন করা হয়েছে!
ব্যতিক্রমধর্মী লিখা পড়তে ভালো লাগে! ভাবনাগুলো ছড়িয়ে যাক সবার মাঝে শুভ কামনা রইলো!
জাযাকাল্লাহু খাইর!
আপনাকে ধন্যবাদ।
তাই এসি ব্যাবহার কমান গ্লোবাল ওয়ার্মিং কমবে!
আমি মোটেও অবাক হবো না যদি এমন পরিস্থিতি আমাদের দেশে আসলেই তৈরী হয়ে যায়।
আপনাকে ধন্যবাদ সবুজ ভাই।
লাগালাম তো...।
মন্তব্য করতে লগইন করুন