পরিমিতি
লিখেছেন লিখেছেন আহসান সাদী ১০ মে, ২০১৫, ০২:৩৬:৪৭ রাত
১.
টেলিভিশনে 'ক্ষুদে গানরাজ' প্রতিযোগিতা দেখে আমার পরিচিত এক মহিলা তার ছোট্ট ছেলেকে গান শেখানোর উদ্যোগ নেন কিছুদিন আগে। ছোট্ট ছেলেটি কথাবার্তায় খুব চটপটে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত তার গানের গলাটা মোটামুটি ভয়ানক কর্কশ। মায়ের কানে কর্কশ অংশটা ঢাকা পড়ে যায় সবসময়। ছেলেকে একজন 'ক্ষুদে গানরাজ' হিসেবে দেখার অলীক কল্পনা তার ছেলের গান গাইতে না পারার অক্ষমতাটা আড়াল করে দেয়। ছেলেকে তাই হারমোনিয়ামের তালে বেসুরো গলায় গাইতে হয় 'একতারা তুই দেশের কথা...'। গানের উস্তাদ চলে যাবার পর হুজুরের আগমন পর্ব। তিনি এসে ছেলেটিকে সূরা মুখস্ত করান। নামায শেখান। সন্তানের প্রতি তীব্র ভালোবাসা থেকেই সেই মা তার সন্তানকে একজন সঙ্গীত তারকা বানাতে চান এবং খানিকটা নামায-কালামের মাধ্যমে বেহেশতটাও নিশ্চিত করে ফেলতে চান। এক ঢিলে দুই পাখি (সম্ভব হলে আরো অনেক বেশী) শিকার করে ফেলার এমন ধূর্ত বুদ্ধির চর্চাটা কেবল আমার পরিচিত ওই পরিবারে নয়, এটা মোটামুটি দেশের অধিকাংশ নাগরিক পরিবারের সাধারণ দৃশ্য।
মানুষ মানুষকে ভালোবাসবে। সম্পর্কের ভিত্তিতে ভালোবাসাটাও হবে বিভিন্নরকম। একজন মানুষ মাত্রই একজন সন্তান, একজন পিতা অথবা মা, একজন ভাই অথবা বোন, একজন বন্ধু, একজন নাতি অথবা নাতনী, একজন প্রতিবেশী, একজন সহকর্মী, একজন সহযাত্রী, একজন জীবনসঙ্গী ইত্যাদি। পুরোটা জীবন জুড়েই একজন মানুষকে এরকম বিভিন্ন ভূমিকায় দায়িত্ব পালন করতে হয়। প্রতিটা ভূমিকায়ই অন্যের প্রতি ভালোবাসা থাকবে। ভালোবাসার তারতম্যও থাকবে। ভালোবাসার এই বিশাল প্রক্রিয়ায় যেই বিষয়টা সবচাইতে বেশী প্রয়োজন তা হলো পরমিতিবোধ। কাকে কতটুকু ভালোবাসতে হবে এ সম্পর্কে অসচেতন হলেই সর্বনাশ। মনুষের ভালোবাসাগুলো হবে মানুষের প্রতি আল্লাহর ভালোবাসার একেকটা 'Sub-Set'। আল্লাহ মানুষকে ভালোবাসেন। আল্লাহর ভালোবাসাটা যদি হয় মূল সেট তাহলে মানুষের পারস্পরিক ভালোবাসাগুলো হবে আল্লাহর ভালোবাসার একেকটা 'Sub-Set'। মানুষের মধ্যে ভালোবাসা তো আল্লাহই দান করেছেন। আমরা তাই কাউকে ভালোবাসবো আল্লাহর জন্যে। যতটুকু ভালোবাসার অনুমতি আল্লাহ আমাদেরকে দিয়েছেন, ততটুকুই।
একজন মা অবশ্যই চান সন্তানের সুন্দর ভবিষ্যত। সুন্দর ভবিষ্যত নির্মাণে মা সবার চাইতে বেশী সহযোগিতা করেন। একজন মুসলিম মা তার সন্তানের জন্যে সবচাইতে ভালো কী চাইতে পারেন? নিঃসন্দেহে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং জান্নাত। একজন মানুষের জন্যে এর চাইতে বড় চাওয়া আর কী হতে পারে! কিন্তু, কোনো কিছু শেখার জন্যে সর্বোত্তম বয়সটায় আপনার সন্তানকে ভালোবেসে আপনি গিটার বা হারমোনিয়াম কিনে দিলেন, উস্তাদ রেখে সারেগামা শেখালেন, একজন সঙ্গীত তারকা হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করলেন। কাজগুলো কি আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করলো, নাকি সন্তানকে ভুল পথে ঠেলে দিলো? চিন্তা করুন। অপরিমিত ভালোবাসার দরুণ নিষ্পাপ সন্তানের ভালো চাইতে গিয়ে সন্তানকে ভয়ানক পাপের রাস্তায় তুলে দেয়াটা কখনোই যৌক্তিক কোনো কাজ নয়। বাবা-মা হিসেবে কর্তব্যটা হলো সন্তানকে আল্লাহর আনুগত্য করার শিক্ষা দেয়া। অভিভাবক হিসেবে এই কর্তব্য পালনের মাধ্যমে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন করা। যখন কোনো মুসলিম অভিভাবক সন্তানকে সঙ্গীতশিল্পী বা এমন ধরনের কিছু হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যগী হোন তখন কে সবচাইতে সন্তুষ্ট হয় তা কি আমরা চিন্তা করি? আর কেউ না, খোদ শয়তান, যে আল্লাহর কাছে মানুষকে পথভ্রষ্ট করার আঙ্গীকার করে এসেছিলো। মুসলিম হয়েও বিপুল উদ্যমে আমরা কী শয়তানকেই খুশী করে চলছি না?
আমাদের একটা বিষয় জেনে রাখা উচিত, ইবলিশ কোনো 'রিটায়ার্ড' বা 'অবসরপ্রাপ্ত' স্বত্তার নাম নয়। মনুষের সৃষ্টির সময় থেকেই তার প্রধান কাজ হচ্ছে মানুষকে ধোঁকা দেয়া। এই কাজ সে কিয়ামত পর্যন্ত করতে থাকবে। ইবলিস সেই আদিকাল থেকে এখনও পর্যন্ত মানুষকে ধোঁকা দেয়ার কাজ করে চলছে। সে বসে নেই। সতর্ক না হলেই প্রতারণার ফাঁদে পড়ে যাবার আশংকা খুব প্রবল।। একজন মুসলিম হিসেবে এই তথ্যগুলো শুধু জানলেই চলবে না। এটাও জানতে হবে যে শয়তান খুব উত্তমরূপ ধারণ করে মানুষকে ধোঁকা দেয়। আপনার সন্তানকে একজন 'ক্ষুদে গানরাজ' বানাবেন, এই বিষয়টা যে কত নির্দোষ, ইবলিশ এবং তার দোসররা সেই বিষয়টাকেই খুব চমৎকারভাবে ফুটিয়ে তুলবে। একজন অভিভাবক যদি এমন প্রতারণায় পড়ে তাঁর নিষ্পাপ শিশুকে পাপের পথে যাত্রার প্রথম পদক্ষেপে সহায়তা করে বসেন তবে শেষবেলায় বোকার হাসিটা একান্ত তাকেই হাসতে হবে, বিজয়ীর হাসি হাসবে স্বয়ং ইবলিশ।
২.
আমি এক মহিলার কথা জানি যিনি সন্তানকে ভালোবসতেন খুব। বড় হয়ে যেনো ইসলামের একজন সেরা সৈনিক হতে পারে এজন্যে অন্তর উজাড় করা স্নেহ আর মমতা দিয়ে নিজ সন্তানকে গড়ে তুলতে চেষ্টা করেন তিনি। এই মা তার ছোট্ট সন্তানকে কোলে তুলে দোলাতেন আর কবিতার পংক্তি আওড়াতেন। তিনি আবৃত্তি করতেন, 'সে হবে ধারালো চকচকে তরবারীর মতো শ্বেত-শুভ্র'। এই সন্তানকে পেটে নিয়ে তিনি মক্কা থেকে মদীনায় হিজরত করেন। হিজরতের পর মুহাজিরদের ঘরে জন্ম নেয়া প্রথম শিশুটিকে তার মা ইসলামের এক বীর সেনা হিসেবে গড়ে তুলতে চেয়েছিলেন। আল্লাহ মায়ের চাওয়াকে কবুল করেন। এই মা হয়ে যান ইতিহাসের শ্রেষ্ঠ মায়েদের একজন। তিনি হলেন আসমা বিনত্ আবী বকর (রাঃ)। প্রথম খলীফা আবু বকর সিদ্দিক (রাঃ) এর মেয়ে, উম্মুল মু'মিনীন আয়েশা (রাঃ) এর বোন আর রাসূল (সাঃ)'এর হাওয়ারী যুবায়ের ইবনে আওয়াম (রাঃ)'র স্ত্রী। এই মায়ের সেই কৃতি সন্তান হলেন ইসলামের বীর সেনা আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রাঃ)। আসমা (রাঃ) সন্তানকে ভালোবাসতেন আল্লাহর জন্যে। একজন সন্তানকে যেভাবে ভালোবাসতে হয় তিনি সেভাবেই ভালোবাসতেন। আল্লাহর দেয়া সীমাটা মেনে চলতেন।
খিলাফতের উত্তরাধিকারী হিসেবে ইয়াজিদের রাজতান্ত্রিক অভিষেকটা মুসলিম বিশ্ব মেনে নিতে পারে নি। এমতাবস্থায় মক্কাকে খিলাফতের রাজধানী ঘোষণা করেন আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ)। প্রায় পুরো মুসলিম বিশ্ব আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ)'কে খলিফা হিসেবে মেনে নেয়। পরবর্তীতে আব্দুল মালিক ইবনে মারওয়ানের সময় হাজ্জাজ বিন ইউসুফের দ্বারা আব্দুল্লাহ ইবনে যুবায়ের (রাঃ)'র বিরুদ্ধে মক্কায় প্রায় ছয় মাস ব্যপী যুদ্ধ চলতে থাকে। এক পর্যায়ে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ)'র বাহিনীর বিজয়ের সম্ভাবনা কমে যায়। অবশেষে হাতেগোনা কয়েকজন অনুসারী নিয়ে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ) কা'বার হারাম শরীফে অবস্থান নেন। অবস্থা এমন ছিলো যে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ)'র পারাজয় এবং মৃত্যু তখন স্রেফ সময়ের ব্যপার। উমাইয়্যাদের বিরুদ্ধে চূড়ান্ত মুকাবিলার আগে তিনি তাঁর মা আসমা (রাঃ)'র সাথে শেষ সাক্ষাত করতে যান। মায়ের বয়স তখন প্রায় একশো বছর। চোখে দেখতে পান না। প্রিয় সন্তানের বিপর্যয়ের সংবাদটা খুব ভালোভাবেই তিনি জানতেন। মায়ের সাথে ছেলের এই বিদায়ী কথোপকথনটা ইতিহাসের এক অমলিন অধ্যায়, ত্যাগের এক বিরল দৃষ্টান্ত আর আল্লাহর প্রতি ভালোবাসার একটা অতুলনীয় উদাহরণ। সংক্ষেপে সেই কথোপকথনটা নিচে তুলে ধরা হলো,
- মা, আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ও বারাকাতুহু।
- আব্দুল্লাহ! ওয়া আলাইকাস সালাম। এমন চরম মুহুর্তে তোমার আগমন কি উদ্দেশ্যে।
আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ) বলতে থাকলেন,
'আমার সাথে এখন আর কোনো লোক নেই। নামে মাত্র চার-পাঁচ জন আছে, যারা বাহ্যত আমাকে সাহায্য করতে প্রস্তুত। আমার সাথে লোকেরা ঠিক সেরূপ প্রতারণামূলক আচরণ করেছে যেরূপ আচরণ করেছিলো কূফীরা হুসাইন ইবনে আলী (রাঃ)'র সাথে। কিন্তু তাঁর ছেলেরা যতক্ষণ জীবিত ছিলো ততোক্ষণ পিতার সামনে তরবারী নিয়ে শত্রুার মোকাবিলা করেছে। কিন্তু আমার ছেলেরাও ঐ ফাসিকের নিরাপত্তায় চলে গেছে। এখন হাজ্জাজ বলছে, তুমিও আমার নিরাপত্তায় এসো। এরপর তুমি যা কিছু চাও আমি তোমাকে তাই দিতে রাজী আছি। শেষ পর্যন্ত আমি আপনার খিদমতে হাযির হয়েছি। আপনি এই মুহূর্তে আমাকে কি করতে বলেন'
উত্তরে আসমা (রাঃ) বলেন,
- 'তোমার সঙ্গীরা আল্লাহর পথে শাহাদাতবরণ করেছে। তুমিও এ পথে অটল থেকে শাহাদাতবরণ করো। তুমি নিজেকে বনু উমাইয়্যার হাতে সঁপে দিও না। মৃত্যু তার নির্ধারিত সময়ে অবশ্যই এসে হাযির হবে। তোমাকে সুপুরুষের মতো বাঁচতে হবে এবং সুপুরুষের মতো মরতেও হবে। অবমাননাকর জীবনের চেয়ে সম্মানের সাথে তরবারীর আঘাত খেয়ে মৃত্যুবরণ করা অনেক শ্রেয়। তুমি শহীদ হলে আমি খুশী হবো। আমি সান্ত্বনা খুঁজে পাবো'।
- 'মা আমি নিহত হবার ভয়ে ভীত নই। আমি চিন্তিত যে তারা আমার হাত-পা কেটে, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ বিচ্ছিন্ন করে আমাকে বিকৃত করে ফেলবে'।
- 'বেটা! নিহত হবার পর মানুষের ভয়ের কিছু নেই। যবেহ করা ছাগলের চামড়া ছিলার সময় সে কষ্ট পায় না'।
মায়ের এমন কথা শুনে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ)'র মুখের দীপ্তি উজ্জ্বল হয়ে উঠলো। ঠিক এরকম কথাই তিনি মায়ের থেকে শুনতে চাচ্ছিলেন। তিনি বললেন-
- 'আমার কল্যণময়ী মা, আপনার সুমহান মর্যাদা আরো কল্যাণময় হোক। এ সংকটময় মুহুর্তে আপনার মুখ থেকে কেবল এ কথাগুলো শোনার জন্যেই আমি আমি আপনার সামনে এসেছিলাম। আল্লাহ জানেন, আমি ভীত হইনি, আমি দুর্বল হইনি। তিনিই সাক্ষী, আমি যে জন্যে সংগ্রাম করছি, তা কোনো জাগতিক সুখ-সম্পদ, মান-মর্যাদা বা ভালোবাসার কারণে নয়। আমি শহীদ হলে আমার জন্যে আপনি কোনো দুঃখ করবেন না'।
- 'তুমি যদি অসত্য ও অন্যায়ের উপর নিহত হও তাহলে আমি ব্যথিত হবো'।
তখন তার ছেলের উত্তর ছিলো,
'আম্মা, আপনি বিশ্বাস রাখুন, আপনার এ সন্তান কখনও কোনো অন্যায়, অশ্লীল ও অশালীন কাজ করেনি, আল্লাহর আইন অমান্য করেনি, কোনো মুসলমানের উপর যুলুম করেনি এবং আল্লাহর আদেশের বাইরে কিছু করিনি। একথা দ্বারা নিজেকে পবিত্র ও নিষ্পাপ বলা আমার উদ্দেশ্য নয় কারণ আমার সম্পর্কে আল্লাহ ভালো জানেন। হে আল্লাহ, আপনি ভালো করেই জানেন আমি আমার মাকে যা কিছু বলেছি তা কেবল সান্ত্বনা দেয়ার জন্যেই বলেছি'।
আসমা (রাঃ) বললেন,
'আমার ছেলে, আমি আশা করি তোমার ব্যপারে আমার ধৈর্য হবে এক অতুলনীয় ধৈর্য। আল্লাহর নাম নিয়ে এগিয়ে যাও... বাবা, তুমি একটু আমার কাছে এসো, শেষবারের মতো একবার তোমাকে স্পর্শ করি। ইহজীবনে এটাই যে তোমার সাথে আমার শেষ সাক্ষাৎ'।
আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ) খানিকটা ঝুঁকে এসে মাকে জড়িয়ে ধরলেন। তার পরণে ছিলো বর্ম। আসমা (রাঃ) সন্তানের গায়ে বর্ম পরাটা পছন্দ করলেন না। তিনি বললেন,'যারা শাহাদাতের প্রত্যাশী, এ পোষাক তাদের নয়'। আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ) বললেন, 'মা, আপনার হৃদয়ে প্রশান্তিদানের জন্যে আমি এ পোষাক পরেছি'। আসমা (রাঃ) তখন বললেন,
- তুমি এটা খুলে ফেলো। তোমার ব্যক্তিত্ব, তোমার সাহস এবং তোমার আক্রমণের পক্ষে এটাই উচিত কাজ হবে। এতে তোমার চলাফেরা সহজ হবে। তুমি বরং শক্ত করে পাজামা পর, তোমাকে মাটিতে ফেলে দেয়া হলেও তোমার 'সতর' অপ্রকাশিত থাকবে।
মায়ের কথামতো বর্মটা খুলে পাজামা পরে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ) শেষ আক্রমণের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়ে গেলেন। যেতে যেতে তিনি মায়ের উদ্দেশ্যে বলছিলেন, 'মা, আমার জন্যে দু'আ করতে ভুলবেন না, আমার নিহত হবার পূর্বে ও পরে উভয় অবস্থায়'। মা বলতে থাকলেন, 'আল্লাহর দরবারে দু'আ করতে আমি কখনো ভুলবো না'।
আকাশের দিকে মুখ তুলে, দুই হাত উঁচু করে আল্লাহর কাছে এই মা দু'আ করলেন। তিনি বলতে থাকলেন,
'হে আল্লাহ, রাতের অন্ধকারে যখন মানুষ গভীর ঘুমে অচেতন থাকে তখন রাত জেগে জেগে তার দীর্ঘ ইবাদত ও উচ্চকন্ঠে কান্নার জন্যে তার উপর দয়া করুন। হে আল্লাহ, রোযা অবস্থায় মক্কা ও মদীনাতে মধ্যাহ্নকালীন ক্ষুধা ও পিপাসার জন্যে তার উপর দয়া করুন। হে আল্লাহ, পিতামাতার প্রতি সদাচরণের জন্যে তার প্রতি আপনি করুণা বর্ষিত করুন। হে আল্লাহ, তাকে আমি আপনারই নিকট সোপর্দ করছি। তার জন্যে আপনি যে ফয়সালা করবেন আমি তাতেই রাজী। এর বিনিময়ে আমাকে আপনি ধৈর্যশীলদের প্রতিদান দান করুন'।
মায়ের উদ্দেশ্যে আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ)'র শেষ কথাগুলো ছিলো,
'আমার মা আসমা, আমি নিহত হলে আমার জন্য কাঁদবেন না। আমার অভিজাত্য ও আমার দ্বীনদারী ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট নেই। অবশিষ্ট আছে কেবল একখানি ধারালো তরবারি যা দিয়ে আঘাত করতে করতে আমার ডানহাত দুর্বল হয়ে গেছে'।
সেইদিন সূর্য অস্ত যাবার আগেই আব্দুল্লাহ ইবনে যুবাইর (রাঃ) শাহাদাতবরণ করেন। মথার অংশটা নিচের দিকে করে তার লাশটা ঝুলতে থাকে কয়েকদিন যাবৎ।
৩.
বেশ কিছুদিন আগে এক বন্ধুর কাছে শুনেছিলাম গল্পটা। এক চালাক মহাজনের তিনটি ছেলে ছিলো। সবচাইতে সুদর্শন ছেলেটাকে তিনি ভর্তি করান স্কুলে। উদেশ্য, এই ছেলে যেনো বড় ডিগ্রী নিয়ে বংশের ইজ্জত বাড়াতে পারে। আরেক ছেলে একটু চালাক-চতুর। সেই ছেলেকে বাবা ব্যবসা বা কারবারে লাগিয়ে দিলেন। একদম পাকা ব্যবসায়ী বানাতে নিজ হাতে ট্রেনিং দিতে থাকলেন। বাকী রইলো একদম হাবাগোবা ছেলেটা। একে দিয়ে তো কিছু হবার নয়। কী আর করা! অগত্যা তাকে মাদ্রাসায় পাঠিয়ে দেয়া হলো, এর উছিলায় যদি বেহেস্ত পাওয়া যায়। চালাক মহাজন কোনো কিছুতেই ঠকতে রাজী নন! এটা নিশ্চয় পরিমিত ভালোবাসা নয়।
অতিরিক্ত ভালোবাসার পাশাপাশি বাবা-মায়ের পার্থিব চাওয়াগুলোর আনিয়ন্ত্রিত চাপে সন্তানরা ভুলভাবে বেড়ে উঠে। ডাক্তার-ইন্জিনিয়ার বানানোর মরিয়া চেষ্টাগুলো মুসলিম হিসেবে গড়ে উঠার পথে প্রায়ই সাংঘর্ষিক হয়ে যায়। শেষমেষ তারা ডাক্তার-ইন্জিনিয়ার হয়ে উঠে কিংবা ভালো ক্যরিয়ার গড়ে নেয় ঠিকই কিন্তু একজন মুসলিম হয়ে উঠাটা হয়না কেবল। বাবা-মা'র এই একচোখা চেষ্টার ফসল হিসেবে সমাজে রাজপথ কাঁপানো গণতন্ত্রের সৈনিক তৈরী হয়। ইসলামটা না শেখানোর ফলে সমাজ পায় লাক্স-চ্যনেল আই সুন্দরীদের, টেন্ডারবাজ ঠিকাদার, দূর্নীতি আর ইয়াবা-গাঁজা-ফেন্সিডিলের সমঝদারদের। বাবা-মা সন্তানের পার্থিব জীবনটা সাজিয়ে দিতে চান। অনন্ত জীবনটা সাজানোর বিষয়টা গুরুত্ব পায় না খুব।
সেই চালাক মহাজনের মতো সুবিধাবাদী মুসলিম হয়ে বেঁচে থাকতে চাইলে পার্থিব জীবনটা হয়তো মোটামুটি কেটে যাবে। আমাদের নিয়তটা তো আল্লাহ জানেন। সেই নিয়ত অনুযায়ী আমাদের কাজের প্রতিদান দেয়া হবে। অতি সূক্ষভাবে বিচারের সেই দিনে এমন সুবিধাবাদী মনোভাবগুলো কাজে আসবে না, নিশ্চিত। আমাদের Priority ঠিক করতে না পারাটা এখানে খুব বেশী দায়ী। আমরা যদি জানতাম যে ঈমানদার হতে গেলে আল্লাহ আর আল্লাহর রাসূলকে সবকিছুর চাইতে বেশী ভালোবাসতে হবে তবে আমাদের চোখটা খুলে যেতো।
আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, 'যার হাতে আমার জীবন, তাঁর কসম, তোমাদের কেউ ঈমানদার হয় না, যতক্ষণ পর্যন্ত না আমি তার কাছে তার পিতা-মাতা ও সন্তান সন্তানাদি থেকে প্রিয়তর হই- (বোখারী, কিতাবুল ঈমান পর্ব, হাদীস নং-১৩)।
এই হাদীসটা লিখতে গিয়ে ভয়ে একদম শিউরে উঠতে হয়।বাবা-মা ছাড়াও আরো কতো তুচ্ছ বিষয় আমার কাছে এখনও অনেক প্রিয় রয়ে গেছে, এমনটা চিন্তা করলেই চোখে অন্ধকার দেখি! আল্লাহ হেদায়াত দান করুন। আসমা (রাঃ) তার সন্তানকে ভালোবাসতেন এবং তার চাইতে বেশী ভালোবাসতেন আল্লাহ আর তাঁর রাসূলকে। তাই তিনি বিদায় দেবার সময় সন্তানের নিশ্চিত মৃত্যুর কথা চিন্তা না করে মৃত্যুর পর সতর প্রকাশ হয়ে যাবার আশংকা করছিলেন, বর্ম খুলে ফেলতে বলেছিলেন! বিনিময়ে মা হিসেবে কেবল ধৈর্যের প্রতিদানটুকু চেয়েছিলেন আল্লাহর কাছে। এমন মায়ের ছেলেও তেমনি আল্লাহ আর রাসূল (সাঃ) কে পার্থিব সবকিছুর উপরে স্থান দিতে পেরেছিলেন। ঠিক যেমনটা একজন ঈমানদারের করা উচিত। মা-ছেলের এমন ঈমান যুগে যুগে আমাদের জন্যে এক অনুপম শিক্ষা। আমাদের হিন্দি সিরিয়ালপ্রেমী মুসলিম মায়েরা কি একদম প্রথম থেকে একটু চিন্তা করবেন?
আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, তিনটি বিষয় যার মধ্যে আছে, সে ঈমানের মিষ্টতার স্বাদ পায়। তা হলো, ১. তার কাছে আল্লাহ আর আল্লাহর রাসূল সর্বাপেক্ষা প্রিয়তর হওয়া, ২. কাউকে ভালোবাসলে আল্লাহর জন্যেই ভালোবাসা আর ৩. আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে অপ্রিয় জানার ন্যায় কুফরিতে প্রত্যবর্তনকেও অপ্রিয় মনে করা। - সহীহ বোখারী, কিতাবুল ঈমান পর্ব, হাদীস নং-১৫।
আপনি যদি মুসলিম হয়ে থাকেন তবে সন্তানকে সেরাকন্ঠ, ক্লোজআপ ওয়ান, লাক্স-সুন্দরী, সেরা মডেল, নাচো বাংলাদেশ নাচো কিংবা ক্ষুদে গানরাজের মাধ্যমে পৃথিবীতে প্রতিষ্ঠিত করতে চাওয়ার আগে একজন অভিভাবক হিসেবে কি চিন্তা করবেন আরেকবার, আপনার অপরিমিত ভালোবাসা আর সুবিধাবাদী ধূর্ত বুদ্ধিগুলো আপনাকে এবং আপনার প্রাণপ্রিয় সন্তানকে জাহান্নামের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, নাকি জান্নাতের দিকে?
গ্রন্থ সহায়িকাঃ
১. ইসলামের ইতিহাস (তারিখে ইসলাম বইয়ের বঙ্গানুবাদ, ইফাবা প্রকাশনী) ২য় খন্ড- আকবর শাহ খান।
২. আসহাবে রাসূলের জীবনকথা (৬) - ড. মুহাম্মদ আব্দুল মাবুদ।
বিষয়: বিবিধ
২১০৫ বার পঠিত, ৬৯ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
অনেক অভিনন্দন , সুন্দর লেখাটির জন্য !
আর মডারেশন টিম এর কাছে আবেদন পোষ্টটিকে স্টিকি করা হোক।
জাজাকাল্লাহু খাইরান
সবার জন্যে দোয়া থাকলো, জাযাকুমুল্লাহ। আমার জন্যে দোয়া করবেন।
গুণগত মান জয় করে স্টিকি! !!! অভিনন্দন।
জ্বি ভাই, আই এম ফ্রম এস.বি. ব্লগ। এসবি'তে আপনার নাম কি এটাই ছিলো?
জ্বি ভাই, আই এম ফ্রম এস.বি. ব্লগ। এসবি'তে আপনার নাম কি এটাই ছিলো?
কিছু কিছু লেখা টুডে ব্লগে প
মন্তব্য করলে পরিচিতি বাড়ে পরিচিত জনকে সবাই সম্মান ও স্নেহ করে।
লেখকের মান অনেক সময় মন্তব্যেও প্রকাশ পায়। ধন্যবাদ
কথাটা দারুন বলেছেন
অনেকদিন পর মন ছুঁয়ে যাওয়া একটি লিখা পড়লাম আলহামদুলিল্লাহ! আপনার শ্রম, মেহনত এবং মেধায় আল্লাহ আরো বারাকাহ দান করুন! লিখায় আদ্রশ সন্তান প্রতিপালনে মহিলা সাহাবী আসমা রাদিয়াল্লাহু আনহার যে চমৎকার দৃষ্টান্ত ফুটিয়ে তুলেছেন সেখান থেকে শিক্ষা গ্রহন করে আমরা সবাই উপকৃত হই এই দোআ! আমীন! ইয়া রব্বুল আ'লামীন!
আরো লিখুন এই প্রত্যাশায়! আসলে ব্লগে আপনাদের এই ধরনের লিখাগুলো আসা খুবই প্রয়োজন! নানামুখী লিখার স্বাদ থেকে পাঠক বেশি আনন্দদায়ক পাঠানুভূতি লাভ করে থাকেন!
স্টিকি পোস্টে অনেক অনেক অভিনন্দন। মডারেশন টিমকে শুকরিয়া চমৎকার পোস্টটি স্টিকি করে সবাইকে পড়ার সুযোগ করে দেয়ার জন্য!
জাযাকিল্লাহ।
ধন্যবাদ।
সুযোগ হলে জানানোর অনুরোধ রইলো। জাযাকাল্লাহ।
ধন্যবাদ ভাইয়া।
এই হাদীসটি আসলেই যদি আমরা প্রত্যেক মুসলিম আমলে আনতে পারতাম মুসলিম বিশ্বের চেহারা অন্যরকম হতো!
আজকাল বাবা-মায়ের ভিতর একটা ট্রেন্ড কাজ করে সেটা হলো বাচ্চাকে অলরাউন্ডার বানানো! নাচে, গানে, চারুকলায়, ইসলামে সবমিলিয়ে হ- য-ব-র-ল অবস্থা!
আপনার পোস্ট পড়ে খুবি ভালো লাগলো! চমৎকার ভাবে মুসলিম প্যরেন্টিং এর দিক- নির্দেশনা ফুটিয়ে তুলেছেন! ধন্যবাদ রইলো!
যাইহোক, আপনাকে ধন্যবাদ।
আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।
আন্তরিক দরদ নিয়ে, উম্মাহ কে সচেতন করার অভিপ্রায়ে চমৎকার উপস্হাপনার জন্যে শ্রদ্ধেয় লেখক কে 'জাযাকুমুল্লাহু খাইরান'জানাচ্ছি!
মুগ্ধময় ভাল লাগা রেখে গেলাম!!
ধন্যবাদ...
আমাদের বড় দূর্বলতা হচ্ছে, আমরা সংস্কৃতিকে ইসলামাইজ করতে পারিনি সময় মত । ফলে সুস্থ সংস্কৃতির অভাবে মুসলমানরা অসুস্থ সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়েছে ।
আপনাকে আন্তরিক ধন্যবাদ সুন্দর পোষ্টের জন্য ।
আপনার কথার সাথে সম্পুর্ণ একমত, 'আমরা সংস্কৃতিকে ইসলামাইজ করতে পারিনি সময় মত । ফলে সুস্থ সংস্কৃতির অভাবে মুসলমানরা অসুস্থ সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়েছে'।
জাজাকাল্লাহু খায়রান।
বাসায় হুজুরও রাখা হত ক্বুরআন শিক্ষার জন্য ।
স্কুলের পাঠ্যক্রমে (শিক্ষা পাঠ্যক্রম অনুসারে) ইসলাম ধর্ম শিক্ষার বিষয় থাকতো ক্লাস থ্রি থেকে টেন পর্যন্ত - ১০০ মার্ক এর।
এসবে কিছু না কিছু হলেও মানুষ ধর্মীয় রীতি নীতির শিক্ষা পেত ।
বিগত দুই যুগ ধরে পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে গেছে । সেই মক্তব এখন আর নেই , নেই বাসায় পড়াতে আসা হুজুরও । আর ধর্মীয় শিক্ষা নাকি কারিকুলাম থেকে উঠিয়ে নেওয়া হচ্ছে !
ফলে বাবা মায়েরা এই প্রতিযোগিতার বাজারে সন্তানকে ''টু মাচ '' একটিভ বানাতে নেমে গেছেন ।
স্কুল ও তার পরে টিউশনি তো আছেই , সাথে আছে নাচের ক্লাস , গানের ক্লাস ও আর্টের ক্লাসে যাবার তাড়া । এতটুকু বাচ্চা ছেলেকে যে এসব চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে এতে তার সঠিক বিকাশ হতেই পারে না ।
ফলে এসব বাচ্চা এরকম অসুস্থ প্রতিযোগিতায় নেমে একজন অসুস্থ মানুষে পরিনত হয় এবং এর ফলে তার প্রজন্মও।
সমাজ হয়ে যায় কলুষিত এবং রাষ্ট্রে নেমে আসে বিশৃঙ্খলা ।
এত হানাহানি , এত অনাচার , এত দূর্নীতি - আগে তো খুব একটা শোনা যেত না । এখন প্রতিদিন সকালে খবরের কাগজে এসব খবর না থাকাটাই অস্বাভাবিক ।
এসব ঘটনার জন্য একটু চিন্তা করলেই বোঝা যাবে যে প্রকৃত ধর্মীয় শিক্ষা থেকে বের হয়ে যাওয়াই আমাদের এই অধঃপতনের কারণ ।
শান্তির ধর্ম ইসলামকে পাশ কাটিয়ে তো আমরা কখনই শান্তিতে থাকতে পারবো না !
মাশা আল্লাহ খুবই সুন্দর পোস্ট হয়েছে । স্টিকি হবার মত । এরকম পোস্টই তো স্টিকি হবে ।
মাঝের ঘটনাটা খুবই হৃদয়গ্রাহী । তন্ময় হয়ে পড়ে গেছি এবং মনে মনে ভেবেছি যে আমরা এরকম ইমানদার নই । খুবই নিম্নস্তরের ইমান আমাদের ।
আল্লাহ আমাদের সকলকে হেদায়েত করুন সঠিক পথে আসবার এবং থাকবার -আমিন।
আমার মনে পড়ে, বেশ ক'বছর আগে, আমার পাশের বাসার চোট্ট ছেলেটা একদিন ভোরে স্কুলে যাচ্ছিলো। ফজরের নামাজের ঘন্টাদেড়েক পরে হবে হয়তো। হাঁটাহাটি শেষে আমি বাসায় ফিরেছি কেবল। আমাদের দরজার সামনে দাঁড়িয়ে আছে। পাশের বাসার ছেলেটা স্কুলে যাচ্ছে, বাবার হাত ধরে এবং তার বিশাল ব্যাগটা কাঁধে ঝুলানো ছিলো। ব্যাগের ভারে তার পেছেন দিকে উল্টে পড়ে যাবার কথা, আবার তার চোখদুটো ভালো করে মেলতে পারছিলো না। খুব টায়ার্ড দেখাচ্ছিলো তাকে। হেঁটে যাচ্ছিলো এবং হঠাৎ আমাকে দেখে হাত নেড়ে বলে উঠলো, 'হ্যালো সাদী চাচ্চু'। সাতসকালে এই পরিস্থিতিতে মোটামুটি ভড়কে গিয়ে আমি বলে উঠলাম 'ওহ, হাই চ্যাম্প'!
আপনাকে ধন্যবাদ চমৎকার মন্তব্যের জন্যে। ব্লগের এটাই দারুন একটা ব্যাপর, এখানে লেখকের সাথে পাঠকরাও সক্রিয় অংশগ্রহণ করতে পারে। মন্তব্যগুলো লেখার একেকটা সংযোজনের মতো কাজ করে, কোনো বিষয়কে সমৃদ্ধ করে তোলে এবং আন্তরিক একটা পরিবেশ তৈরী করে দেয়।
আল্লাহ আমাদের সকলকে হেদায়েত দান করুন সঠিক পথে আসবার এবং থাকবার -আমিন।
পাদটিকা : সাহাবীদের শিক্ষনীয় ঘটনাগুলো সকলের অবগতির জন্য আরো বেশি বেশি লিখুন । পোস্টে অভিনন্দন
ইনশাআল্লাহ। দোয়া করবেন ভাই।
১.সময়ের কসম।
২.নিশ্চই মানুষ বড় ক্ষতির মধ্যে রয়েছে।
৩.তবে ঐ সকল লোক ব্যতীত যারা ঈমান এনেছে,নেক আমল করেছে,একে অপরকে সত্য কথার উপদেশ দিয়েছে,এবং একে অপরকে ধৈর্য ধারনের উপদেশ দিয়েছে।
সুতরাং সেই সকল মা'ই লাভবান হবে যারা শুধুমাত্র আল্লাহর পথে তার সন্তানদের চলতে এবং অটল থাকতে শিক্ষা ও পরামর্শ দিয়েছে।
অসংখ্য ধন্যবাদ। খুব সুন্দর উপস্থাপনের জন্য।
লেখাটি চমৎকার এবং শিক্ষনীয়।
তবে লেখার আকার আরো ছোট হলে ভাল হতো।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
ছোট লেখা আমারও ভালো লাগে। 'হাইকু' কিংবা 'অনুকাব্য' আমার বিশেষ পছন্দের। এই বিষয়টাই এমন, সংক্ষিপ্ত করার সুযোগ এখানে সীমিত। আমার তো মনে হয় এরপরও অনেক কমই লিখলাম!
JazakAllah...
মন্তব্য করতে লগইন করুন