ভালবাসার মানুষকে ভালো রাখার অর্থই আপনি তাকে ভালবাসেন !!!!
লিখেছেন লিখেছেন মাহবুব রহমান ৩১ আগস্ট, ২০১৫, ০১:০৯:৩২ দুপুর
প্রতি বাবা মায়ের ভালবাসা চিরন্তন তবুও যখন সন্তান খারাপ কাজ করে, ইসলামী জীবন যাপন করেনা, খারাপ ছেলেদের সাথে সময় কাটিয়ে গভীর রাতে বাসায় ফিরে, অনেক বেলা পযন্ত ঘুমিয়ে থাকে, বড়দের সম্মান করেনা, তখনও যদি বাবা মা নিশ্চুপ থাকে তবে কি ঐ সন্তান ইহকাল ও পরকালে ভাল থাকবে? ? যে বাবা মা তাদের সন্তানদের সুশিক্ষা দেয়না তারা কিভাবে বলে তাঁরা তাদের সন্তানকে ভালবাসেন? ?? ভালবাসলে অবশ্যই তাদের ভাল চাইতো! !
আবার বিপরীতে আপনি সন্তান হয়ে অবশ্যই বাবা মায়ের জন্য ভালবাসার কোন কমতি নাই. কিন্তু আপনি কী বাবা মাকে ভালরাখার চেষ্টা করেছেন? ?? আপনি ভালো ফ্লাটে এসি রুমে বসবাস করেন. অনেক নামীদামী পোশাক পড়েন, মাছ মাংস ছাড়া ভাত খাননা কিন্তু আপনার বাবা মা ??? ছয় মাস একবছর অন্তর কিছু কাপড় ফল ফলাদি নিয়ে বাবা মা কে দেখে আসলেই কী আপনি তাদের ভালবাসেন সেটা প্রকাশ হয়ে গেল? ? আপনার দ্বায়িত্ব শেষ? ? কখনোই এটা ভালবাসার নমুনা হতে পারেনা কারণ প্রত্যেকেই তার ভালবাসার মানুষের কাছাকাছি থাকতে চাই. কিন্তু আপনি করছেন তার বিপরীত.
বন্ধুদের সাথে নিয়ে চাইনিজ হোটেলে অতি উৎসাহে বাবার কষ্টের উপাজিত টাকা খরচ করার সময় একবারও ভাবনা কতোটা পরিশ্রমের ফলে বাবা এ টাকা উপাজন করেছে.???? অথচ তোমার মুখে বাবার কথা শুনলে মনে হয় তুমিই একমাত্র সন্তান যে তাঁর বাবাকে সবচেয়ে বেশী ভালবাসে.
কি প্রয়োজন ছিলো এমন ভালবাসার? ???
যে ভালোবাসা বাবাকে শুধু কষ্ট দিয়ে যাবে? ???
তাই আমি বিশ্বাস করি ভালবাসার মানুষকে ভালো রাখার অর্থই আপনি তাকে ভালবাসেন !!!!
প্রতিটি স্ত্রী তার স্বামীকে ভালবাসে (গুটিকয়েক স্ত্রী ছাড়া) কিন্তু সেই ভালবাসা যদি স্বামীর জন্য অসস্তিকর হয় তবে সেটাকে কিভাবে ভালবাসা সংগায়ীত করবেন? ??
আপনার স্বামী যা অপছন্দ করে আপনি কী সেটা পরিত্যাগ করতে পেরেছেন? ? স্বামী যা পছন্দ করে (অন্যায় কিছু না) আপনি কী স্বামীকে খুশি রাখতে সেই কাজ করেন?? আপনি কী স্বামীর আদেশ পালন করেন, না স্বামীকে আপনার আদেশ পালন করতে বাধ্য করেন? ?? যখন টাকা খরচ করেন তখন কী একবারের জন্যে ভাবেন আপনার স্বামী কতটা কষ্ট করে অথ উপাজন করেছে??? আমি হলফ করে বলতে পারি বতমানে অধিকাংশ মহিলা এসব বিষয়ে ভাবেননা, তাহলে তাঁরা কিভাবে দ্বাবী করে তারা তাদের স্বামীকে ভালোবাসে??????
প্রকৃতির ভাবেই পুরুষরা সংসার জীবনের প্রয়োজনীতা অনুভব করে. কিন্তু পরিবারের জন্য আপনি কতটা ত্যাগ স্বীকার করছেন. কিছু টাকা রোজগার করেন বলেই কি সংসারের যাবতীয় দ্বায়িত্বে বৌয়ের উপর চাপিয়ে নিশ্চিন্তে আছেন? ? নিজের চেনা জানা পরিবেশ বাবা মাকে ছেড়ে এক নতুন পরিবেশে এসে নতুন নতুন মানুষের সাথে কেমন দিন কাটাচ্ছে সেটা কী নিয়মিত খবর নিচ্ছেন? ? না এ ভেবে বসে আছেন যে পোশাক খাবারের সংস্থান আপনি করছেন বলে আপনার সব কথা পালন করতে বাধ্য? ??
আপনার সংসারে এসে সে ভাল আছে না কষ্টে আছে তা কী আপনি বলতে পারবেন? ??
কেননা অধিকাংশ পুরুষ একটা নিদিষ্ট সময় পর নিজের পরিবারের প্রতি উদাসীন হয়ে যায় যা কখোনোই কাম্য নয়. যেহেতু আপনার স্ত্রীকে ভালোবাসেন তাই তাঁকে ভাল রাখাটাই আপনার দ্বায়িত্ব. আর ভাল রাখার মধ্য দিয়েই প্রকাশ পাবে আপনার ভালোবাসা.
তাই ভালবাসার মানুষকে ভালো রাখার অর্থই আপনি তাকে ভালবাসেন !!!!
আমরা সমাজে চলতে গিয়ে এমন হাজারো মানুষের ভালবাসার বন্ধনে জড়িয়ে পড়ি. আর তাদের প্রতি ভালোবাসার বহিপ্রকাশ করতে গিয়ে এমন সব আচরণ করি যা অধিকাংশে ভালোর চেয়ে মন্দটাই বেশী হয়. তাই সকলের প্রতি অনুরোধ আপনার ভালবাসার মানুষটিকে এমন ভালবাসবেননা যে ভালোবাসা তাঁর জন্য কষ্টের কারণ হয়. আপনার সামথ্য অনুযায়ী আপনার ভালবাসার মানুষকে ভালো রাখার চেষ্টা করুন.
বিষয়: বিবিধ
১৭০৫ বার পঠিত, ৭ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
আপনার প্রতি স্ত্রীর ভালবাসা কি অব্যাহত থাকবে ?
আমার স্ত্রী যদি সত্যি আমাকে ভালোবাসে তবে কখনোই আমার সামথ্যের অতিরিক্ত কোন কিছুই চাইবেনা. আর আমি যেহেতু আমার স্ত্রীকে ভালোবাসি তাই আমার সামথ্য থাকা সত্যে কখনোই তার প্রাপ্য অধিকার থেকে বন্চিত করবোনা.
সা‘দ বিন আবী ওয়াকক্বাছ (রাঃ) হ’তে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ (ﷺ) এরশাদ করেন-
চারটি বস্ত্ত হ’ল সৌভাগ্যের নিদর্শন:
পুণ্যবতী স্ত্রী, প্রশস্ত বাড়ী, সৎ প্রতিবেশী ও আরামদায়ক বাহন।
আর চারটি বস্ত্ত হ’ল দুর্ভাগ্যের নিদর্শন :
মন্দ স্ত্রী, সংকীর্ণ বাড়ী, মন্দ প্রতিবেশী ও মন্দ বাহন।
*************
রাসূলুল্লাহ (ﷺ) বলেন-
‘আমি কি তোমাদেরকে জান্নাতী লোকদের বিষয়ে খবর দিব না? নবী জান্নাতী, ছিদ্দীক জান্নাতী, শহীদ জান্নাতী, ভূমিষ্ট সন্তান জান্নাতী, ঐ ব্যক্তি জান্নাতী যে শুধু আল্লাহকে খুশী করার জন্য শহরের এক কোণে বসবাসকারী ভাইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে এবং ঐ স্ত্রী জান্নাতী, যে তার স্বামীর প্রতি সর্বাধিক প্রেমময়ী, অধিক সন্তান দায়িনী ও স্বামীর দিকে অধিক প্রত্যাবর্তনকারিনী। স্বামী অসন্তুষ্ট হ’লে সে দ্রুত ফিরে আসে ও স্বামীর হাতে হাত রেখে বলে, আপনি খুশী না হওয়া পর্যন্ত আমি ঘুমের স্বাদ নেব না।
[বায়হাক্বী শু‘আব হা/৮৩৫৮, ছহীহাহ হা/২৮৭। ]
অন্যদিকে উত্তম স্বামী সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন-
‘পূর্ণ মুমিন সেই যার চরিত্র সবচেয়ে সুন্দর। আর তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম’।
[তিরমিযী হা/১১৬২; মিশকাত হা/৩২৬৪; ছহীহাহ হা/২৮৪]
অন্যত্র তিনি বলেন-
‘তোমাদের মধ্যে উত্তম সেই যে তার স্ত্রীর কাছে উত্তম। আর আমি আমার স্ত্রীদের কাছে উত্তম’।
[তিরমিযী হা/৩৮৯৫; মিশকাত হা/৩২৫২; ছহীহাহ হা/২৮৫]
অতএব, বুঝা গেল যে-
জান্নাতী হওয়ার জন্য স্বামী ও স্ত্রী উভয়ের জন্য উভয়ের সাক্ষ্য প্রয়োজন।
আল্লাহতায়ালা আমাদের সবাইকে তাঁর সন্তুষ্টির পথে চলার তাওফীক দিন, আমীন
অনেক ধন্যবাদ, জাযাকাল্লাহ
গঠন মূলক মন্তব্যের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ. জাযাকাল্লাহ.
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহি ওয়া বারাকাতুহ..
নির্ভেজাল নিঃস্বার্থ শরীয়াসম্মত ভালবাসার পূরোটাই ভালো!!
মন্তব্য করতে লগইন করুন