জিহাদ ফি-সাবিলিল্লাহ বা ইসলামী আন্দোলন ফরজ (৪র্থ ও শেষ পর্ব)

লিখেছেন লিখেছেন মাহবুব রহমান ৩১ জুলাই, ২০১৩, ১২:২৮:২৯ রাত



ইসলামী আন্দোলন করলে লাভ?

মুমিনগন আমি কি তোমাদের এমন এক বানিজ্যের সন্ধান দিব, যা তোমাদেরকে যন্ত্রনাদায়ক শাস্তি থেকে মুক্তি দিবে? তা এই যে---

তোমরা আল্লাহ ও তার রাসুলের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করবে

এবং আল্লাহর পথে নিজেদের ধন-সম্পদ ও জীবনপন করে জেহাদ করবে, এটাই তোমাদের জন্য উত্তম: যদি তোমরা বোঝ।

তিনি তোমাদের পাপরাশি ক্ষমা করবেন এবং

এমন জান্নাতে দাখিল করবেন যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত এবং বসবাসের জান্নাতে উত্তম বাসগৃহ। এটা মহাসাফল্য। এবং

আরও একটি অনুগ্রহ দিবেন যা তোমরা পছন্দ কর। আল্লাহর পক্ষ থেকে সাহায্য এবং আসন্ন বিজয়। মুমিনদেরকে এর সুসংবাদ দান করুন। (সুরা আছছফ্: ১০-১৩)

ইসলামী আন্দোলন না করার পরিনাম?

জিহাদ ফিসাবিলিল্লাহ বা ইসলামী আন্দোলন ফরজ এই কাজ হচ্ছে আল্লাহর কাজ। এই ফরজ কাজ থেকে যখন কোন মুসলিম বিরত থাকবে তখন সেই জাতির উপর বিভিন্ন ধরনের শাস্তি নেমে আসবে। যেমন--

মুসলিম জনগনের উপর দুষ্টু প্রকৃতির চরিত্রহীন ও অনাচারী লোকদের কতৃত্ব ও শাসন প্রতিষ্ঠিত হওয়া,

আল্লাহর রহমত নাযিল বন্ধ হয়ে যাওয়া,

আল্লাহর নিকট দোয়া কবুল না হওয়া,

আযাবের পর আযাব এসে বিভিন্ন জনপদকে ধ্বংস করে দেয়া ইত্যাদি।

জিহাদ ফিসাবিলিল্লাহ বা ইসলামী আন্দোলন না করার পরিনাম সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা পবিত্র কুরআন শরীফে বলেছেন-

তোমরা যদি যুদ্ধ যাত্রা না কর, তাহলে--

আল্লাহ তোমাদেরকে কঠোর শাস্থি প্রদান করবেন এবং

তোমাদের পরিবর্তে অন্য কোন জাতি সৃষ্টি করে দিবেন

আর তোমারা আল্লাহর কোনই ক্ষতি করতে পারবেনা। তিনি সর্ব বিষয়ে শক্তির আধার। (আত-তওবা-৩৯)

পূরো আলোচনা হতে কোরআনের আয়াত ও হাদিসের আলোকে আমরা যা জানলাম তা হলো ঈমান আনার সঙ্গে সঙ্গে ত্বগুতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে হবে আর এ জন্য তাকওয়ার অধিকারী হতে হবে। তাকওয়ার অধিকারী হতে হলে যা যা করতে হবে-

১.নামাজ আদায়: আমাদের কর্মব্যস্থতা যতোই থাকুকনা কেন কোন ভাবেই নামাজ আদায় করার ক্ষেত্রে গাফলতি করা যাবেনা। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ জামায়াতের সহিত (পুরুষের জন্য) আদায় করতে হবে। নামাজ কাজা করা যাবেনা। নামাজের বিষয়ে আল্লাহ পবিত্র কোরআনে বলেছেন-

নামাজ কায়েম করো। নি:সন্দেহে নামাজ অশ্লীল ও খারাপ কাজ হতে বিরত রাখে। (সুরা-আনকাবুত:৪৫)

২.কুরআন অধ্যায়ন: শুদ্ধ ভাবে কোরআনের তেলাওয়াত জানতে হবে এবং প্রতিদিন অন্তত একবার হলেও কোরআন তেলাওয়াত করতে ও অর্থ পড়তে হবে। যে সকল ভাই-বোন কোরআন তেলাওয়াত জানেন না তাদের কোরআন তেলাওয়াত শিখতে হবে। সম্পূর্ন কোরআনের বাংঙানুবাদ (ব্যাখ্যা ছাড়া) অন্তত একবার পড়তে হবে এবং আল্লাহ আমাদের জন্য কী কী আদেশ-নিষেধ ও নিয়মনীতি নির্ধারণ করেছেন তা জানতে হবে।

৩.হাদীস অধ্যায়ন: রাসুল স: যেভাবে কুরআনের আদেশ নিষেধ মেনে চলেছেন তা জানতে হবে। তাই নিয়মিত হাদীস পড়ার বিকল্প নাই।

৪.ইসলামী সাহিত্য অধ্যায়ন: বিষয় ভিত্তিক জ্ঞান অর্জন করতে হবে। বিষয় ভিত্তিক ইসলামী সাহিত্য পড়তে ও দুনিয়ার নিত্যদিনের জ্ঞানের খবর জানতে হবে।

৫.নিজে মেনে চলতে হবে: কথা বার্তা ও আচরণে, আহার পোষাক ও চলাফেরায়, একান্ত ব্যক্তিগত (আর্থিক ও সংস্কৃতি) বিষয়ে, অন্য মানুষের প্রতি কর্তব্য পালনে সততা ও নিষ্টার নিদর্শন রাখতে হবে। সকল ক্ষেত্রে আল্লাহর বিধান মেনে চলতে হবে।

এই কাজগুলো কখনোই একা করে ঈমানের উপড় পতিষ্টিত থাকা সম্ভব নয় তাই সকলে মিলে যৌথ প্রচেষ্টায় ত্বগুতের বিরুদ্ধে বিজয়ী হতে জ্ঞান অর্জন করতে হবে আর এ জন্য নির্ভরযোগ্য সংগী, অভিভাবক ও শিক্ষক হচ্ছে সংগঠন এবং সহকর্মীবৃন্দ তাই আল্লাহর সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে ইসলাম কায়েমের লক্ষে নিজেকে সম্পৃক্ত করার জন্য ইসলামী আন্দোলনে শরীক হওয়ার বিকল্প নাই। তাছাড়া ইসলামের অন্যান্য ফরজ কাজের ন্যায় ইসলামী সংগঠন করাও ফরজ। তার পরেও যদি ইসলামী আন্দোলন থেকে দুরে থাকতে বা বিরোধীতা করতে চান তাহলে----------

আর এই দুনিয়ার জীবন কিছুই নয়, শুধু একটি খেলা ও মন ভুলানোর ব্যাপার মাত্র। আসল জীবনের ঘর তো পরকাল। হায়! একথা যদি উহারা জানত!! (সুরা-আনকাবুত: ৬৪)

আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহমাতুল্লাহ।

সমাপ্ত।

.

.

৩য় পর্ব এখানে . . . . . .

.

২য় পর্ব এখানে . . . . . .

.

১ম পর্ব এখানে . . . . . .

বিষয়: বিবিধ

৪০৮৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File