গুরোজ়ী ও ইব্রাহীম (আঃ) স্বার্থপরতা !

লিখেছেন লিখেছেন তানিয়া আলিয়েভা ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৩, ০১:৩৭:৪৯ রাত

হঠাৎ ক্লাসে একটা থাপ্পড়ের শব্দ শোনা গেল।সবাই সেদিকে তাকিয়ে পড়লেন।মশা মারার শব্দ।গুরুজী বললেন,কপাল ভাল এখানে মাত্র কয়েকটা মশা আছে।আরো বেশি থাকলে সবার রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হতো।

“জ্বী গুরুজী” ভট্ট বলল, “ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গু ,ফাইলেরিয়া-এই মারাত্বক রোগ গুলো মশাই ছড়ায়।মশার প্রকোপ বেশি হলে রক্ত খারাপ হয়ে যায়।”



“উল্টো বললেন” বললেন গুরোজী,'কারন আপনার দেশের ডাক্তারগন আপনাকে আসল কথাটা বলেননি।মশার প্রকোপ বাড়লে রক্ত খারাপ হয় একথা ঠিক নয়,বরং রক্ত খারাপ হলে মশার প্রকোপ বাড়ে।’

“সে কেমন ?” অনেকেই একযোগে প্রশ্ন করলেন।

“আমরা একে অপরের রক্ত খাচ্ছি,নির্যাতন করছি।শোষন করছি,ফাঁকি দিচ্ছি।ফলে আমাদের অনেকের গায়ে অবৈধ,কৃএিম চুরি করা রক্ত।ফলে এ রক্ত বিনে পয়সায় খাওয়ার জন্য মশার উদ্ভব ঘটে।আমরা যদি পরস্পরের রক্ত পান না করতাম,তাহলে মশাও আমাদের রক্ত পান করত না।ভালোই তো হচ্ছে।সবকিছুর একটা ভারসাম্য থাকা তো চাই।

পবিএ কোরআনে আছে যে ফেরাঊনের রক্তচোষা রাজ্যে মশার উৎপাত বেড়ে গিয়েছিল।তার সাথে বেড়ে গিয়েছিল ব্যাঙও।

“কিন্তু ব্যাঙের সাথে মশার সম্পর্ক টা কী ?”জানতে চাইল অনির্নেয়।

“কেন, একটু মাথা খাটান।মশা বেড়ে গেলে তো তা জলাভূমিতে বেশি বেশি ডিম পাড়বে।সেই ডিম খেয়ে কমিয়ে দেয়ার জন্য ঐ জলাভূমিতে বেশি বেশি ব্যাঙের জন্ম হবে-এটাই তো স্বাভাবিক।”

গুরুজীর ব্যাখ্যায় সবাই চুপ হয়ে গেলেন।তিনি ব’লে চললেন, শুধু তাই নয়,তাদেরকে রক্ত দ্বারাও শাস্তি দেয়া হয়েছি্ল।এখানে রক্তের রহস্যের ক্ষেএে ভেতরে ও বাইরের উভয় অর্থই প্রযোজ্য।”

‘তাহলে তো নির্ঘাত আগে আমাদের রক্ত পরিষ্কার করতে হবে।না হলে তো মশার উৎপাত জীবনেও কমবেনা’ ভট্ট বলল।

“ঠিক বলেছেন”, গুরুজী বললেন।

“কিন্তু কিভাবে তা করা যায় ?”

‘তা আমি বলতে পারি, কিন্তু তার বিনিময়ে আপনারা আমাকে কী দেবেন ? আমি আপনাদের গোটা জাতির মূল সমস্যাগুলো সমাধান করে দিতে পারি।তাহলে বলুন আমাকে কী দেবেন ?আপনাদের দেশের একজন ছোট-খাট ডাক্তারের মাসিক আয় দেড় লাখ টাকা।একজন ঘোষখোর অফিসারের আয় দুই থেকে তিন লাখ টাকা।আমার আয় মাএ দশ হাজার টাকা-তার উপরই আমার গোটা সংসার আত্বীয়স্বজন চলে।যে ডাক্তার আপনাদের নাকের সর্দির জন্য ঔষধ দেন আপনারা তাকে দুই মিনিটের জন্য ভিজিট দেন ৫০০ টাকা।আপনাদের মানসিক রোগ বাড়িয়ে দেয়ার জন্য সাইকিয়াট্রিস্ট আপনাদের কাছ থেকে নেন ১০০০ থেকে ২০০০ টাকা।আপনাদের ভাগ্যের চাকা ১৮০ ডিগ্রি ঘুড়িয়ে দেয়ার মিথ্যা প্রতুশ্রুতি দিয়ে কেউ নেয় ১০,০০০ টাকা।তাহলে বলুন আমি আপনাদের গোটা জাতির চেহারা পাল্টে দেব-আপনারা আমাকে কী দেবেন ?

কেউ তার কথার জবাব দিতে পারলেন না।

গুরুজী বললেন,আমি আপনাদের কাছ থেকে কিছুই চাইনা।আপনারা সুখী হলে সেটাই হবে আমার বড় পাওনা।তাহলে রক্ত পরিষ্কারের কৌশলটা বলি ।”

গুরুজীর গলার ভাইব্রেশনটা শুনে কুন্ড বুঝে ফেলল এবার তিনি গল্প বলবেন, “জানতাম আপনি সঠিক মুহূর্তে গল্প ছাড়া কিছুই বলবেন না।”





গুরুজী বললেন, তুমি কিছুকাল ধরে ঠিক জেনে এসেছ।তোমাকে ধন্যবাদ।সুতরাং নীরব থাক।তোমাকে অপমানিত করার জন্য উপযুক্ত লোক এখানে আছে।”

(চলবে)-

বিষয়: সাহিত্য

১২৭৪ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File