জাহেলিয়াতের মোকাবেলায় আল-কোরআন-২

লিখেছেন লিখেছেন ইহসান আব্দুল্লাহ ৩০ মার্চ, ২০১৩, ০২:০৫:৩৬ দুপুর

বুদ্ধিজীবী-যখন আদর্শের প্রবক্তা




“বিধান তো একমাত্র আল্লাহ্‌র ছাড়া কারো নয়, তাঁর ওপরই আমি ভরসা করি এবং যার ভরসা করতে হয় তাঁর ওপরই করতে হবে৷”(ইউসুফঃ৬৭)

হযরত ইয়াকুব (আঃ) সন্তানদের এই কথা বলেছিলেন, যা কোরআনে উল্লেখ করা হয়েছে। সুতারাং এটা স্পষ্ট যে বিধানদাতা একমাত্র আল্লাহ্‌, তাঁর বিধান অনুযায়ী এই বিশ্ব জাহানের সব কিছু পরিচালিত হবে। আপনার আমার পরিবার থেকে শুরু করে জাতীয় জীবনের সবকিছু। কিন্তু যারা আল্লাহ্‌র বিধানকে শুধু মাত্র মসজিদের মধ্যে আটকে রাখতে চায়, শুধু মাত্র ব্যাক্তি জীবনের মাধ্যে সীমাবদ্ধ রাখতে চায়, এটা তাদের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতা বলেই আমার মনে হয়। মসজিদে সীমাবদ্ধ নয় বরং বলা হয়েছে মসজিদ হবে সব কিছুর কেন্দ্র। অর্থাৎ আজ যারা সংসদে বসে দেশে নতুন নতুন আজগুবি আইন প্রণয়ন করছেন, এটা মোটেও মুসলমানদের কাম্য নয়। আজ সংসদে আলোচনার নামে যে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করা হয়, যদি এই আলোচনা মসজিদ কেন্দ্রিক হতো এটা কখনো সম্ভব ছিল না। আর নিজের ভোগ বিলাসের স্বার্থে অন্যকে জুলুম করার বিধান সমাজে প্রতিষ্ঠিত হতো না। আর যারা এসব আইন কানুন প্রণয়ন করে অন্যায়কে ন্যায়ের কাতারে নিয়ে আসেন তারাতো শয়তানের কাজই সহযোগিতা করছে। তাদের সম্পর্কে আল্লাহ্‌ তালা বলেনঃ

হে লোকেরা! আমি তোমাদের জানাবো শয়তানরা কার উপর অবতীর্ণ হয়?

তারা তো প্রত্যেক জালিয়াত বদকারের উপর অবতীর্ণ হয়৷

শোনা কথা কানে ঢুকিয়ে দেয় এবং এর বেশির ভাগই হয় মিথ্যা৷ (আশশুয়ারাঃ২২১-২২৩)


এসব জালেম সম্প্রদায় যাদের কথার ভিত্তিতে সংবিধান রচনা করেন, যাদেরকে এরা আদর্শ মানে তাদের পরিচয় তুলে ধরে আল্লাহ্‌ বলেন,

আর কবিরা! তাদের পেছনে চলে পথভ্রান্ত যারা ৷

তুমি কি দেখ না যে তারা নিঃসন্দেহ প্রত্যেক উপত্যকায় লক্ষ্যহীনভাবে ঘুরে বেড়ায়।

এবং এমনসব কথা বলে যা তারা করে না? (আশশুয়ারাঃ২২৩-২২৬)

তারা আল্লাহ্‌কে ছেড়ে দিয়ে তাদের পন্ডিতগণকে ও সন্ন্যাসীদের প্রভুরূপে গ্রহণ করেছে,(আত-তওবাঃ৩১)


আর আল্লাহ্‌ পাক যখন এসব পণ্ডিতদের পাকড়াও করবেন তখন তারা যা বলবেন সে সম্পর্কে আল্লাহ্‌ বলেন,

যাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য সত্যপ্রতিপন্ন হয়েছে তারা বলল -- "হে আমাদের রব! নিশ্চয়ই এ লোকদেরকেই আমরা গোমরাহ করেছিলাম৷ এদেরকে ঠিক সেভাবেই গোমরাহ করেছিলাম যেভাবে আমরা নিজেরা গোমরাহ হয়েছিলাম৷ আমরা আপনার সামনে দায় মুক্তির কথা প্রকাশ করছি৷ এরা তো আমাদের বন্দেগী করতো না৷ (কাসাসঃ৬৩)

এর অর্থ দাড়ায় এমন যে তারা বলবে, আমরা জোর করে এদেরকে গোমরাহ করিনি। আমরা এদের দৃষ্টি ও শ্রবনশক্তি ছিনিয়ে নিইনি। এদের চিন্তা ও অনুধাবন শক্তিও কেড়ে নিইনি এবং এমন অবস্থারও সৃষ্টি করিনি যে, এরা সঠিক পথের দিকে যেতে চাচ্ছিল কিন্তু আমরা হাত ধরে টেনে জোর করে ভুল পথে নিয়ে গিয়েছিলাম। বরং আমরা যেমন স্বেচ্ছায় ভুলপথ অবলম্বন করেছিলাম, তেমনি এদের সামনেও আমরা ভুলপথ পেশ করেছিলাম এবং এরা স্বেচ্ছয় তা গ্রহন করেছিল। কাজেই আমরা এদের দায়িত্ব গ্রহন করছি না। আমরা নিজেদের কাজের জন্য দায়ী এবং এরা এদের নিজেদের কাজের জন্য দায়ী।

আমাদের অনেকে হয়তোবা এমন যুক্তি দাড় করান যে, আমি এসব পণ্ডিত ও জালেমদের সাথে আছি কৌশল করে। আমার পরিবার আছে, সন্তান আছে, আছে আমার বৃদ্ধ বাবা-মা। তাদের ভরন পোষণের জন্য কৌশলে তাদের সাথে আছি, আসলে আমি মন থেকে তাদের সাথে নাই। তাদের জন্য আমি এই আয়াতটি নির্বাচন করেছি, আল্লাহ্‌পাক বলেন

''আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে তোমরা তো শুধু প্রতিমাদের পূজা করছ, আর তোমরা একটি মিথ্যা উদ্ভাবন করেছ। নিঃসন্দেহ তোমরা আল্লাহ্‌কে বাদ দিয়ে যাদের আরাধনা করছ তারা তোমাদের জন্য জীবিকার উপরে কোনো কর্তৃত্ব রাখে না, কাজেই আল্লাহ্‌র কাছে জীবিকা অণ্বেষণ কর ও তাঁরই উপাসনা কর, আর তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কর, তাঁর কাছেই তো তোমাদের ফিরিয়ে আনা হবে।(আনকাবুতঃ১৭)


আল্লাহ্‌ আমাদেরকে ইসলামের পথে কবুল করে ইসলামী বিধি-বিধান অনুযায়ী সমাজ জীবন অতিবাহিত করার তৌফিক দান করুন।–আমিন

বিঃদ্রঃ আমি কোরআনের ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করি নি, কারণ কোরআন সম্পর্কে জ্ঞানের পরিসীমা খুবুই খুদ্র। আমি শুধু সমন্বয় করার চেষ্টা করেছি। কোথাও ভুল হয়ে থাকলে সংশোধন করে দিয়ে আমার জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার প্রচেষ্টাতে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিবেন ইনশাআল্লাহ্‌।

বিষয়: বিবিধ

১২৪৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য


 

পাঠকের মন্তব্য:

মন্তব্য করতে লগইন করুন




Upload Image

Upload File