তুমি আমাকে ৫২ দেখিয়েছিলে, ৭১ দেখিয়েছ। কিন্তু এই হতভাগা কিছুই শেখে নি।
লিখেছেন লিখেছেন ইহসান আব্দুল্লাহ ১৩ মার্চ, ২০১৩, ১২:৫৯:৫৭ রাত
মৃত্যুর কোলে অগনিত শিশু, সরকারের ভিটামিন এ ক্যাপসুলে
ইয়া আল্লাহ্, এই বাংলাদেশ নামক নরক থেকে আমাদের তুলে নাও। এখানে মানুষ বসবাস করে না, থাকে শুধু জানোয়ারের দল। এরা অনেক দলে দলে বিভক্ত। এরা দেশের সাংবিধানিক সন্ত্রাসী। এরা রাজনীতির নামে দেশের মানুষের রক্ত চুষে খাচ্ছে, মাংস ছিরে খাচ্ছে। যেমন ইচ্ছা তেমন নিয়ম বানাচ্ছে, যখন তখন হাজারও মায়ের বুক খালি করছে। এদেরকে ঠেকানোর মতো কোন মানুষ বাংলাদেশে নাই। এরা যখন যা চায় তাই করে। এদেরকে আমি শুয়োর বলবো না, কারণ শুয়োরও এদের মতো নোংরা না। ইয়া আল্লাহ্ তুমিই তো এসব জানয়ারদের সৃষ্টি করেছ, হয়তো এসব অত্যাচারী জালেমদের প্রতিহত করার জন্য সৎ যোগ্য মানুষও সৃষ্টি করেছ। এইসব মানুষ রুপী ফেরেস্তাদের তুমি কোথায় লুকিয়ে রেখেছ? আর কত দিন এভাবে আমাদের পরিক্ষা নেবে? আমরা পারি না এসব অত্যাচার সহ্য করতে, আর না পারি প্রতিবাদ করতে। হাজার হাজার পোষা কুত্তা তাদের। ঘর ছেড়ে বাইরে বেরোলেই রক্তে রঞ্জিত করে ছিরে খাবে। ইয়া আল্লাহ্ আমাদের বুকে সাহস দাও, এদের ধর থেকে মস্তক আলাদা করার শক্তি দাও। আর যদি না পারি, এই দুনিয়াই আমি বাচতে চাই না। আমার বাচার কোন অধিকার নাই। ইয়া আল্লহ ওরা বলে আমার মায়ের বুকে নাকি আকা সবুজের মাঝে লাল সূর্য। ইয়া আল্লাহ্ ওরা মিথ্যা বলে, আমার মায়ের সবুজ বুকটাতে ওরা একে দিয়েছে রক্তের লালিমা। আমার ভাইয়ের রক্ত দিয়ে ওরা এঁকেছে সবুজের মাঝে লাল। আমার বাবার তাজা রক্ত দিয়ে এসেছিলো স্বাধীনতা, সত্যি বলছি! বাবা আমার জন্য যুদ্ধ করেছিল যেন আমি শান্তিতে থাকি। বাবা তোমায় বলছি, আমি শান্তিতে নাই। যে স্বাধীনতার জন্য যুদ্ধ করে শহীদ হয়েছ, আমি সেই স্বাধীনতা পাইনি। শুধু তোমার রক্ত মারিয়ে পেয়েছি একটা চাকরি। বাবা তুমি শহীদ, থাকবে জান্নাতে। কিন্তু আমি যে বাংলাদেশ নামক এই জাহান্নামে জলে মরছি! আমাকে নিয়ে যাও, আমি এখানে থাকব না। বাবা তুমি জান না, যে আমার জন্য তুমি জীবন দিলে। সেই আমার সামনে এমন এক দুই বছরের শিশু জীবন দিল, যার জন্য আমার জীবন দেয়া উচিৎ ছিল। বাবা আমায় মাফ কর, আমি ভিরু, কাপুরুষ। তোমার যোগ্য উত্তরসূরি আমি হতে পারি নি। তুমি আমাকে ৫২ দেখিয়েছিলে, ৭১দেখিয়েছ। কিন্তু এই হতভাগা কিছুই শেখে নি। যতটা ত্যাগ স্বীকার করে তুমি দেশ সাধিন করেছ, ঠিক তার চেয়ে বেশী ভোগবিলাস করে আমি দেশটা বিক্রি করে দিয়েছি। বিক্রি করে দিয়েছি এই নরপিচাসদের হাতে। এদের সাথে থাকতে হলে নিজেকেও হতে হয় কলিজা চিবানো ভালুক। কিন্তু আমি যে তা হতে পারব না। তুমি আমাকে তা শেখাও নি। তোমার মায়ের বুকটা খালি করে তুমি আমার মায়ের মুখে হাসি দেখতে ছেয়েছিলে। কিন্তু তুমি যে পারলে না বাবা! এদের সাথে তুমি পারবে না, এদের রাজনীতি তুমি বুঝতে পার নি। তুমি জান না বাবা, এরা মানুষের জীবন পর্যন্ত নিয়ে রাজনীতি করে, একটা দুইটা নয়, হাজার হাজার, লক্ষ্য লক্ষ্য। তুমি কি এটা জানতে যে তুমি যখন যুদ্ধ করেছ তখন এরা আরাম কেদারায় বসে হুক্কা টানত....জানতে?
না...... মিথ্যা বলবে না, তুমি জানতে না। তুমি যদি জানতে তাহলে ওরা তোমার বুকের মানিককে কেরে নিতে পারত না। আজ হাজারও মায়ের কান্নার রোল পড়ত না। কোণ মায়ের বুক অকারনে খালি হতো না। আমার হাসি পায়, এখন বাঙলার মায়েরা শুধু কাদে আর কাঁদে। এদের আর কোন কাজ নাই। ছেলেকে বুকে জড়িয়ে কাঁদে, আবার দূরে গেলেও কাঁদে। জালিমের অত্যাচারে কাঁদে, আবার ছেলে রুখে দাঁড়ালেও কাঁদে। ময়দান থেকে ফিরে আসলেও কাঁদে, আমার শহীদ হলেও কাঁদে। বাবা এই কান্না শেষ হবে কবে? তোমার মাও কি এমন করে কাদত? তাহলে তোমরা দেশ স্বাধীন করলে কীভাবে? যদি আমার মায়ের মতো মা, আমার মতো সন্তান দিয়ে এই দেশটা ভরে যায় আর আবারও ৭১ আসে, তাহলে শুনে রাখ বাবা কিয়ামত হয়ে যাবে কিন্তু এই দেশ আর স্বাধীন হবে না। রাগ করে অনেক কথা বললাম কি কারনে জান! পাশের গ্রামে প্রায় দশটা শিশু মারা গেছে। বয়স তাদের ০-৫ বছরেরে মধ্যে। তোমার যে আদরের টুনিটা ছিল ওর পায়েল নামের ছেলেটার এবার পাঁচ হল। কাজের চাপে বলতে ভুলে গেছলাম যে প্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার যে ভিটামিন এ ক্যাপসুল দিচ্ছে ওটা খাওয়াস না। বুড়িটা ফ্রি পাইছে ,আর খাওয়াইছে। পায়েল খুব অসুস্থ, খুব। জানিনা পারবে কিনা, পারলে ওর জন্য একটু দোয়া করো।
বিষয়: বিবিধ
৩৬২৮ বার পঠিত, ০ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
মন্তব্য করতে লগইন করুন